গল্প গুলো
উত্তর পূর্ব দুই দিকে উঁচু উঁচু জানালা, পশ্চিম এ দরজা। জনলায় কোন গ্রিল নেই, পর্দা গুলো উঁচুতে গিঁট দেয়া। শুধু জানালা গুলোতে একক ভাবে চোখ রাখলে একেকটা ছবির ফ্রেম মনে হয়। কোনটার অর্ধেক জুড়ে আকাশ ছোঁয়া ইমারাত সাথে একটুকরো সাদা নীল আকাশ, কোনটার সবুজ থেকে আকাশি হয়ে যাওয়া পাহাড়। উত্তরের জানালা গুলো তে আমগাছ আর তার নিচে পরিপাটি বাগান। প্রতিদিন হিসাব করে তাদের সবাইকে এক ই মাপে রাখার চেষ্টা করা হয়। পুরনো দিনের উঁচু খাট এ শুয়ে গান শুনতে শুনতে নির্দিষ্ট বিরতিতে হাওয়া বদল হয় শব্দ করে। মাথার উপর ঘুরতে থাকা পাখা তার গতি ঠিক রাখতে পারছে না বাইরের হাওয়ার তোড়ে। দুপুরের রোদ, পাখার বাতাস, মাঝে মাঝে দমকা হাওয়া বার বার ছুড়ে ফেলে বর্তমানের গানএর সুর গুলো। মাথার ভিতর আরও কিছু সুর এসে ভিড় করে। সেই সুরের সাথে চলে আসে দুপুরের হাওয়া। এই দুপুরের হাওয়ায় এক যাদুকরী বিষয় থাকে, এক ধরনের শূন্যতা থাকে, হাহাকার থাকে, থাকে নিজের কাছে ফিরে যাবার তাড়া। থেমে থেমে ডেকে যাওয়া কাক সঙ্গী খুঁজে। সব কিছু শূন্যতা পুরনের খেলা। কোন কিছু ই অপূর্ণ থাকে না। প্রম শূন্যতা বলে ও কিছু নেই। এই যে নির্লিপ্ত বসে থাকা, নিরন্তর দেখে যাওয়া, সেখানে ও কিছুএসে ভরিয়ে দিয়ে যায়। হয়তো অতীত, নয় বর্তমান চারপাশে ঘটমান সেখানে নিজের উপস্থিতি নাই হয়তো, স্বীকৃতি ও নাই কোন। আর কিছু নাই থাকুক কল্পনা রা এসে একেকটা দৃশ্য তৈরি করে, বাস্তবতা বা একেবারে ই অবাস্তব কোন চিন্তা।
আমি যে মুহূরতে বেচে আছি, একই সময় এ কোথাও যোদ্ধা রা তার জীবন হাতে নিয়ে বসে আছে অন্য কারো জীবন নেয়ার জন্য, কেউবা অনেক বড় কিছু আবিস্কার করে ফেলছে, কেউবা চেষ্টা করে ও কিছু করে উঠতে পারছে না, আর আছে অনেক অনেক অভিনয় শিল্পী, যারা যা না সেই জীবন যাপন করে চলতে চলতে কোন ট্রাফিক সিগন্যাল এ বসে নিজেকে যখন ই খুঁজে পেতে শুরু করল মাত্র, জানলার কাচ ঘেঁষে দাঁড়িয়ে অভিবাদন নিতে হল, অভিনেতা হিসেবে। সে হিসাবে ভাবলে সবাই কোন না কোন ভাবে সেই অভিনয় শিল্পির মতো ই। যে যোদ্ধা সে কি মৃত্যু ক্ষেত্রে বসে জীবনের কথা ভাবছে না। আমি যেমন সংসার এ বসে নিঃসঙ্গতার চিন্তা করছি, বা শুধু ই একটা নীল সাদায় মিশেল একটা আকাশ ধরতে চাচ্ছি।
কোথাও পুরুনো আধুনিক গান বাজছে। বেশ চেনা.।সাবিনা ইয়াসমিন এর গাওয়া। কোন সিনেমায় ছিল ঠিক মনে পড়ছে না। গান টা শুনতে চাচ্ছি না। চারদিক দেখায় ব্যস্ত থাকতে চাচ্ছি। কিন্তু কোন ভাবে ই নিজেকে সরাতে পারছি না। চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে এল।এই কান্না আমি থামাতে চাচ্ছি না, আবার কাঁদতে ও চাচ্ছি না। সুর আর শব্দ টেনে নিয়ে যাচ্ছে কোতেনেসেখানে ও যেতে চাই না। আমি এই বর্তমানে আশটে পৃষ্ঠে জড়িয়ে আছি। সেখানে অতীত আবেগ এর কোন স্থান নেই। এর জন্য ই কান্না আসে বার বার। আমি চাইলে ওখানে যেতে পারি না কিন্তু খুব কাছের খুব আপন, যেমন আপন এই একাকী বিকেল। এই কান্না অতীত সুখ বা দুঃখের কান্না নয় কোন ভাবে ই। এই কান্না বেঁচে থাকার কান্না। আমি ও বেঁচে ছিলাম এতোটা পথ পাড়ি দিয়ে এসে বলতে পারি।
মন্তব্য করুন