মাগো ভাত খাবো
( এটা আমার লেখা প্রিয় কবিতার একটি তাই পুরান হলেও এ ব্লগে শেয়ার করার লোভ সামলাতে পারলাম না। আমার এ ইচ্ছাকৃত অপরাধ কি ক্ষমা করা যায় না!)
লোভাতুর রক্তপিপাসু মাছিগুলো
বারবার কাটাফাটা রক্তাক্ত শরীরে
হানা দেয়।
অবচেতন শরীর ও মন,
নরম ঘুমের বারবার ব্যঘাত ঘটায়।
প্রায় অবশ হাতে মাছিগুলোকে
তাড়াবার ব্যর্থ চেষ্টা?
আর রুক্ষ্ম মরুর দু-স্বপ্নের মাঝে
সু-স্বপ্ন দেখা।
দেশ স্বাধীন হয়েছে, রুদ্ধশ্বাসে সবাই
ছুটে চলেছে গগন বিদারি জয় বাংলা
জয় বাংলা স্লোগানে।
আচমকা নরশ্বাপদের ঊচ্চ চীৎকার,
আর দুপায়ের স্বজোর লাথি,
উঠ শালে, শালে জয় বাংলা ঊঠ।
হরমড়িয়ে তাকিয়ে দেখে-----
কোন কিছু বুজে উঠার আগেই
নাকে মুখে কিল ঘুসি ও থাপর
বাতা শালে বাতা, কৌন কৌন হ্যায়
তোমহারা সাথ..................।
কিন্তু মা যে বলে দিয়েছে
যত নির্যাতনই করুক না কেন বাবা
কারো নাম বলবি না।
তাইতো নিশ্চুপ সব অত্যাচার সহ্য করা।
ধীরে ধীরে ভাঙ্গা জানালা ও ভেন্টিলেটরের
ফাঁক গলিয়ে আসা আলোর রেখাগুলো
ক্ষীন হতে ক্ষীণতর হতে লাগল।
বারবার চোখের পাতা ঘসেও
আলোর রেখাগুলোকে স্বাভাবিক করা গেল না।
ক্ষুধার জ্বালা,তৃষ্ণা ও নির্দয় নির্যাতনে
শরীরের শক্তিও ধীরে ধীরে লোপ পেতে লাগল।
মাকে বলেছিলাম মা ভাত খাব।
মার কি ভাত রান্না হয়নি,
না কি মা ভুলে গেছে।
শরীরের ক্ষতস্থানগুলো কেন যেন
একসাথে বিদ্রোহ করে ঊঠল।
প্রচণ্ড কষ্ট,সমস্ত শরীরের পেশী গুলো যেন
সংকুচিত হতে লাগল।
ক্ষীন হয়ে আসা আলোর রেখাগুলো
একেবারে কোথায় যে হারিয়ে গেল।
অন্ধকার একি ঘোর অন্ধকার,
এত অন্ধকার তো জীবনে কখনো দেখিনি...।
কিন্তু এত শান্তি, এত শান্তি কেন?
কোথায় গেল এত ব্যথা, কোথায়?
এ যে অসীম শান্তি,শান্তির যে আর শেষ নাই।
কারো কি সাধ্য আছে এ শান্তি কেড়ে নেয়।
এ কি স্বাধীনতা, এ যে স্বাধীনতার চেয়েও মহা স্বাধীনতা।
কোন রাজা বাদশার কি সাধ্য আছে
এ স্বাধীনতা কেড়ে নেয়।
এদিকে মা যে রান্না করা ভাত নিয়ে
এ বন্দীশালা থেকে ও বন্দীশালায়
পাগলিনির বেশে ছুটে চলেছে।
কিন্তু আজাদ কোথায়,কোথায় আজাদ,
আজাদের সন্ধান যে কেঊ দিতে পারছে না।
পরিচিত স্বল্প পরিচিত যাকে পেয়েছে।
তাকেই জিঙ্গেস করেছে আজাদ কোথায়?
রান্না করা ভাত প্রতিদিন ফিরে আসে
পুটলিতে বাধা অবস্থায়।
মা বালিশ ছাড়া খালি মেজেতে ঘুম আসে না
মার তাই বারবার মনে পড়ে, ভাত ,খালি মেঝে
তাইতো মারও আর হয়না ভাত খাওয়া,
হয়না বালিশে আরাম করে বিছানায় শোয়া।
আমৃত্যু মা কখনও ভাত খাননি
শোয়ে কাটাননি একটি রাত বিছানায়।
(আজাদ আমারা তোমাদেরই উত্তরসূরি
তোমাদেরই রক্ত আমাদের ধমনীতে প্রবাহিত।
আমরাও পরাভব কখনও মানব না।)
কেন বুঝলাম না?
মন্তব্য করুন