মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি-৩
বাবা গ্রামের বাড়িতে আমাদের রেখে পর দিন ঢাকায় চলে গেলেন। মেজ ভাই ছিলেন ঢাকায়। গ্রামের বাড়িতে যুদ্ধের প্রভাব তেমন একটা বুঝতে পারলাম না। তবে রেডিও অন করলে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে প্রচারিত খবরে যুদ্ধ পরিস্থিতি সম্পর্কে জানা যেতো। মনে আছে এম আর আখতার মুকুলের কণ্ঠে উচ্চারিত ‘কি পোলারে বাঘে খাইলো....’। যুদ্ধে পর্যুদস্ত পাক হানাদারদের নানা কর্মকাণ্ড এভাবে রম্যরসিকতার মাধ্যমে তুলে ধরে এম আর আখতার মুকুল মুক্তিযোদ্ধাদের উৎসাহ-প্রেরণা জোগাতেন এবং দেশের মানুষকে প্রবোধ দিতেন। সন্ধ্যার পর রেডিওতে বিবিসির খবর শোনার জন্য রীতিমতো ছেলে-বুড়োদের ভিড় জমতো। মুক্তিযুদ্ধের সময় বিবিসির খবর বেশ প্রাধান্য দেয়া হতো। এ খবরের মাধ্যমে দেশের সার্বিক পরিস্থিতি সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যেতো। তাই রেডিওতে বিবিসির খবর শোনার জন্য কাজকর্ম সেরে সন্ধ্যার সাথে সাথে সবাই হুমড়ি খেয়ে পড়তো। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে গ্রামের লোকজন খোঁজ রাখতেন কে ঢাকায় গেলো আর কে ঢাকা থেকে এলো। তাদের কাছ থেকে পরিচিতজন বা স্বজনের খোঁজখবর জানার চেষ্টা করতো। যুদ্ধকালীন গ্রামের বাড়িতে কতো দিন ছিলাম তা মনে নেই। যদ্দুর মনে পড়ে মাঝে কুমারভোগ বড় বোনের বাড়ি থেকে কোলাপাড়া মেজ বোনের বাড়ি গিয়েছিলাম। সেখানেও কাটিয়েছি বেশ কিছু দিন। খবর পেলাম ঢাকায় পাক হানাদারদের অত্যাচার বড্ড বেড়ে গেছে। বাড়ি বাড়ি তল্লাশি করে কিশোর-যুবকদের অজ্ঞাত স্থানে ধরে নিয়ে যাচ্ছে। অবস্থা বেগতিক দেখে বাবা এবং মেজ ভাই গ্রামে ফিরে এলেন। তারা ইসলামবাগের চাঁদনীঘাট থেকে বুড়িগঙ্গা নদী সাঁতরে জিঞ্জিরা পার হয়ে গ্রামে এসেছিলেন। সেদিন তাদের পিছু নিয়েছিল পাক হানাদার বাহিনী। তাদের হাঁকডাকে সাড়া না দিয়ে তারা নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়তেই গুলি চালিয়েছিল কয়েক রাউন্ড। পাক হানাদারদের ছোড়া একটি গুলি সেদিন মেজ ভাইয়ের মাথা ছুঁই ছুঁই চলে যায়। ডুব সাঁতারের কারণে আল্লাহর ইচ্ছায় তারা প্রাণে রক্ষা পান। আল্লাহ সহায়, নয়তো মুক্তিযুদ্ধে স্বজনহারাদের কাতারে যোগ হতো আমাদের পরিবারও। এসব কথা মায়ের কাছ থেকে শোনা। যেদিন তারা শহর ছাড়েন, সেদিন রাতেই পাক হানাদাররা ঢাকা কেরানীগঞ্জের জিঞ্জিরায় আগুন দেয়।
যুদ্ধের সময়ের কথা আরও জানতে চাই।
যথাসম্ভব জানাতে চাই..
পড়তেছি...
টুটুল ভাই, পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
পড়ার আগেই তো শেষ হয়ে গেল।
পরের পর্ব একটু বড় কইরা দিয়েন।
অল্পতুষ্টি মহৎ গুণ। জো আজ্ঞা রাসেল ভাই।
যুদ্ধের সময়ের কথা আরও জানতে চাই।
স্মৃতি ডালিতে যতোটুকু আছে, জানাতে চাই।
রোমহর্ষক।
চলুক.....আরেকটু বড় করে দিতে পারেন।
চেষ্টা করবো। ধন্যবাদ।
পড়ছি ...............।।
পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
আলী ভাই, আরেকটু বড় করেন। ভালো লাগছে।
ধন্যবাদ।
মন্তব্য করুন