ধান্ধাবাজির অারেক নাম রিচ অ্যান্ড ফেমাস
রিচ অ্যান্ড ফেমাস নামের আড়ালে দেশের রিচ অ্যান্ড ফেমাস ব্যক্তিদের নিয়ে বাণিজ্য চালাচ্ছে পত্রিকাটির প্রধান সম্পাদক ও প্রকাশক মনজুর সাদেক খোশনবিশ। যিনি শেয়ার বিজ্ করচা নামে একটি পত্রিকারও প্রতিষ্ঠাতা প্রধান সম্পাদক।
সরকারি কোনো অনুমোদন (ডিক্লিয়ারেশন নম্বর) ছাড়াই গত ৩-৪ বছর ধরে প্রকাশিত হয়ে আসছে রিচ অ্যান্ড ফেমাস। এর নেই কোনো সরকারি নিবন্ধন বা ডিএ নম্বর, নেই কোনো ডেটলাইন বা প্রকাশনার দিন-তারিখ। অথচ বাহারি প্রিন্টার্স লাইনে রয়েছে অসাংবাদিকদের প্রাধান্য। প্রতিষ্ঠাতা প্রধান সম্পাদক ও প্রকাশকের নামের পাশাপাশি বেশকিছু নামের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া গেলেও বাস্তবে এ পত্রিকায় কোনো লোকবল নেই। উপ-সম্পাদক হিসেবে যে নামটি (হাসিনা সাদেক) উল্লেখ আছে, তিনি প্রধান সম্পাদকের স্ত্রী। এস এম জাহিদ-নির্বাহী সম্পাদক পদধারী ব্যক্তি শেয়ার বিজ করচার কম্পিউটার সেকশনে গ্রাফিক ডিজাইনার হিসেবে কর্মরত। সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার হিসেবে উল্লিখিত তানিয়া আফরোজ প্রধান সম্পাদকের সাবেক ব্যক্তিগত সহকারী (পিএ)।
জানা যায়, দেশের প্রতিষ্ঠিত শিল্পপতি ও ব্যবসায়ীদের টার্গেট করে তাদের জীবন-বৃত্তান্ত ছাপিয়ে মোটা অঙ্কের ডোনেশনের নামে চাঁদা আদায় করে তাদের হাতে এ পত্রিকা ধরিয়ে দেয়া হয়। আর এ কাজটি করেন প্রধান সম্পাদক নিজে। সরকারি ডিক্লিয়ারেশন ছাড়া কিভাবে এ ধরনের একটি পত্রিকা কয়েক বছর ধরে প্রকাশিত হয়ে আসছে, তা নিয়ে মিডিয়া অঙ্গনে প্রশ্ন উঠেছে। অভিনব ধান্ধাবাজির মাধ্যমে রিচ অ্যান্ড ফেমাস বের করে এখন সফল প্রকাশক ও প্রধান সম্পাদক হিসেবে গর্বিত। মগবাজারের গুলফেঁশা প্লাজার ৯ম তলায় একটি ফ্লোরের অংশবিশেষ ভাড়া নিয়ে (বর্তমান ঠিকানা রামপুরা নিজ ফ্ল্যাটে) তিনি গড়ে তুলেছেন এ ধান্ধাবাজির সাম্রাজ্য। শেয়ার বিজ্ করচার প্রধান সম্পাদক ও প্রকাশক হিসেবে তিনি খুব অহঙ্কার বোধ করেন। তাই বিশিষ্ট সাংবাদিক মতিউর রহমানকেও গোনায় ধরেন না।
জানা যায়, কয়েক বছর আমেরিকায় থাকার কারণে সেখানকার শেয়ার মার্কেটে তার ছিটেফোঁটা বিচরণ ছিল। তাই প্রবাস থেকে দেশে ফিরে এ মার্কেট নিয়ে ধান্ধার বিষয়টি তার মাথায় শুধুই ঘুরপাক খায়। সারাক্ষণ ভাবেন দেশের পুঁজিবাজার থেকে কিভাবে টুপাইস কামানো যায়। এ চিন্তা বাস্তবে রূপায়িত হয়। পুঁজিবাজার নিয়ে শেয়ার বিজ্ করচা নামে একটি পত্রিকার মাধ্যমে তিনি আবিভর্‚ত হন। ফলে ’৯৬ সালে দেশের পুঁজিবাজারের ধস তার টুপাইস কামানোর পথ আরো প্রশস্ত করে দেয়। আরো জানা যায়, শেয়ার বিজের নেশা তাকে অক্টোপাসের মতো জড়িয়ে রেখেছে। তিনি দাবি করেন, সাংবাদিক-কর্মচারীদের বেতন পরিশোধ করতে একবার তার স্ত্রীর গহনা বিক্রি করতেও কুণ্ঠাবোধ করেননি। বাস্তবতা হলো, রিপোর্টার হিসেবে নিয়োগ দিয়ে ভালো কমিশনের প্রলোভন দেখিয়ে তাদের বিজ্ঞাপন সংগ্রহে উৎসাহিত করেন। এভাবে কিছুদিন চলার পর যখন বিজ্ঞাপন আনতে ব্যর্থ হয়, তখন তাকে টিস্যু পেপারের মতো ছুড়ে ফেলেন। তবু তিনি থেমে থাকেন না। নতুন কাউকে পূর্বের ট্রায়াল দিয়ে আবার শুরু করেন। এভাবে চলে আবার কয়েক মাস। তার এ কৃতকর্ম অফিসে ওপেন সিক্রেট। বর্তমানে তিনি লাখ লাখ টাকা ধান্ধা করছেন এ সেক্টর থেকেই। আর আবিষ্কার করছেন ধান্ধার নতুন নতুন পথ। শেয়ার বিজ্ করচা থেকে পয়দা করেন শেয়ার বিজ্ লারনার্স ফোরাম, স্টক মার্কেট জার্নাল, রেডিও এসএমজে ইত্যাদি। হঠাৎ গজিয়ে ওঠা খোশনবিশের খায়েশ তার প্রতিষ্ঠানে যারাই নতুন আসে, তাদেরকে সাংবাদিক বানিয়ে দেয়া। ভাবটা যেন তিনি সাংবাদিক মেকার। আর সে যদি হয় নারী, তাহলে তো কথাই নেই। এ ক্ষেত্রে তার কেরামতি রিপোর্টার হিসেবে নিয়োগ দিয়ে তার ব্যক্তিগত সহকারী বানিয়ে ফেলা, দ্বিতীয়বার অ্যাকাউন্টসের দায়িত্বভার, অতঃপর সাব-এডিটর হিসেবে পদোন্নতি লাভ। সিঁড়িগুলোর ধাপ লংড্রাইভেই শেষ হয়। এক সময় গুডবাই জানানো। এ পত্রিকার প্রধান সম্পাদকের আচরণে মিডিয়া অঙ্গনের অনেকে ক্ষুব্ধ। তাদের প্রশ্ন- সাংবাদিকতার নামে এ ধান্ধার অবসান ঘটবে কবে?
নানা মানুষ নানা ধান্ধা
বার রকমের মানুষ।
দুনিয়ায় ধান্ধাবাজীর শেষ নাই

ধান্ধা করে যে ফান্দে পড়ে সে।
মন্তব্য করুন