আমাকে অন্ধ করে দিয়েছিলো চাঁদ
এক ভুলে ভরা গল্পের বৃত্তের ওপর বসে বসে অথবা শুয়ে শুয়ে আমি সকাল দেখি, বিকেল দেখি, দেখি বৃক্ষ, স্মৃতির বৃক্ষ। দেখি মেঘে লুকায় একটি নাম, সেই নাম, যে নাম বলিনি কোনদিন, যে নাম ভেসে ভেসে একদিন ডুবে গেছে আকাশের গভীরে। তারপর আমি হেঁটে হেঁটে বিরাণ পথ ধরে কতো ভুল ঘরে খুঁজেছি, খুঁজে খুঁজে ক্লান্ত হয়েছি; ক্লান্ত হয়েছে পথ ও পথিক, ছুঁয়েছি কান্নার রং, নিজেকে ভাসিয়ে দিয়েছি জ্যোৎস্নার নেশায় আর নিজের মনেই বলেছি পাগল তুমি জ্যোৎস্না খাও, স্মৃতির জ্যোৎস্না খাও, জ্যোৎস্না খেয়ে বাঁচো আর শরীর জুড়ে চাষ করো দুঃখ তবু নিঃস্ব হয়ো না। নিঃস্ব হইনি। এখনও রাতের মাদকতায় হয়ে উঠি প্রেমিক, হয়ে উঠি তোমার না দেখা স্বপ্ন।
হাতছাড়া হয়ে যাওয়া সময় ফেরারি বাতাসে মিশে দূর দূরাশয়। হারিয়ে যাওয়া পথ খুঁজে পাই না। নতুন পথে হেঁটে যাবার সাহস হারিয়েছি পুরান পথ খুঁজতে, তবু অবেলার অবসরে পুরানের খুঁজে পরাণ হাঁটে।
একদিন এক বসন্তমাখা বিকেলে শহরের পথ ধরে হেঁটে যেতে যেতে আমার চোখে সুন্দর নামে, আমাকে কিনে নেয়, আমাকে অন্ধ করে দেয় আর দূরে কোথাও সঞ্জীব দা’ গেয়ে যান ‘আমাকে অন্ধ করে দিয়েছিলো চাঁদ।’ আর আমি বলে যাই ভাঙাচোরা জীবনটাকে হঠাৎ লাগে ভালো। সেই ভালোলাগায় আমি সময়ে অসময়ে কতো উড়েছি, নিজের মধ্যে অন্য আরেক আমিকে আবিস্কার করেছি। সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে মনে হয় নি জানালার পাশে দাঁড়িয়ে আছে একলা সকাল। আমার হৃদয়ের দাবীতে, আমার অন্তরের আহ্বানে এসেছে উড়ে কতো শত প্রজাপতি আমি তাদের রঙে রাঙিয়েছি আমার সময়। সেই সময়ে ডুবেছি, ডুবে ডুবে ভেসেছি, ভেসে ভেসে বেসেছি ভালো সময়কে, ডেকেছি কাছে চাঁদকে আর বলেছি, ভালোবাসো। আমাকে ভালোবাসো চাঁদ।
চাঁদ চলে গেছে। সূর্য তাড়িয়ে দিতে হয়নি। রাত ডুবে যায়, চাঁদ না ডুবলেও পারতো। তবু চাঁদ ডুবে, ডুবে যেতে হয়; চাঁদ হারিয়ে যায়। বিস্তারিত জানি না বা জেনে ও ঝিনুক নিরবে সহে যাচ্ছে। চাঁদ হারিয়ে গিয়ে তার নাম রেখে যায়। নামের মায়া ছড়িয়ে দিয়ে যায়। ধূলো উঠে, ধোঁয়া উড়ে, পথ বেঁকে যায়, আয়না ভাঙে, চাঁদের বাড়ি বিলিন হয়ে যায়, ভাঙা আয়নায় একটি গল্পের ছায়া নামে। সেই ছায়া ছুঁয়ে, কিছু স্বপ্ন, কিছু বোবা কথা অথবা কিছু না বলা কথার নীরবতা পুড়ে মরে, আসলে মরে না, ছাই হয়, হতে হয় বলে, আর সেই ছাই দিয়ে এক ব্যর্থ বিশোর আলপনা আঁকে। হৃদয়চুরির আলপনা।
তার দীর্ঘকাল পরে। কয়েক বসন্ত শেষে। অলস একলা এক দুপুরে একলা কোকিল ডাকে তার সঙ্গীকে! সঙ্গী কোথায়? এতো করুণ সুরে ডাকছে, ছুঁয়ে যায় মর্মমূল। পাঁজরে করুণ বাজে। সেই ডাক বুকের গভীরে পৌছালে ব্যর্থ কিশোরটি সেই করুণ ডাকের তরজমা করে আর ব্যাখা করা যায় না এমন বেদনায় কাতরাতে থাকে। আকুল হয়ে ওঠে তার চিত্ত এবং আবারো আরো এক ব্যর্থতার ভার নিজের করে নিয়ে নিজের দহনে নিজেই পুড়ে নিঃসঙ্গ পাখিটির সঙ্গী না হতে পেরে।





শেষের প্যারাটা যাস্ট অসাম...
জেনে ভালো লাগলো। ধন্যবাদ জানানোর জন্যে।
বাহ্। সুন্দর।
ধন্যবাদ
'এক ভুলে ভরা গল্পের বৃত্তের ওপর বসে বসে অথবা শুয়ে শুয়ে আমি সকাল দেখি, বিকেল দেখি, দেখি বৃক্ষ, স্মৃতির বৃক্ষ। দেখি মেঘে লুকায় একটি নাম, সেই নাম, যে নাম বলিনি কোনদিন, যে নাম ভেসে ভেসে একদিন ডুবে গেছে আকাশের গভীরে। তারপর আমি হেঁটে হেঁটে বিরাণ পথ ধরে কতো ভুল ঘরে খুঁজেছি, খুঁজে খুঁজে ক্লান্ত হয়েছি; ক্লান্ত হয়েছে পথ ও পথিক, ছুঁয়েছি কান্নার রং, নিজেকে ভাসিয়ে দিয়েছি জ্যোৎস্নার নেশায় আর নিজের মনেই বলেছি পাগল তুমি জ্যোৎস্না খাও, স্মৃতির জ্যোৎস্না খাও, জ্যোৎস্না খেয়ে বাঁচো আর শরীর জুড়ে চাষ করো দুঃখ তবু নিঃস্ব হয়ো না। নিঃস্ব হইনি। এখনও রাতের মাদকতায় হয়ে উঠি প্রেমিক, হয়ে উঠি তোমার না দেখা স্বপ্ন।' ---- আহা !!!
বাহ্ বেশ তো।
তাই না?
ভালোতো....
ধন্যবাদ।
বেদনার্ত হলাম
বুকের ভেতর একটু তীব্র ব্যাথা লাগা সুন্দর।
সুন্দর মন্তব্য। ধন্যবাদ। ভালো থাকুন।
সুন্দর এজ অলওয়েজ
ছুঁয়ে কান্নার রং ----- আমার চিরকালের ফেভরিট
ধন্যবাদ আপু।
মন্তব্য করুন