ইউজার লগইন

আলমগীর হোসেন অড্রে হেপবার্নকে ভালোবেসে ছিলো

"In a cruel and imperfect world, Audrey Hepburn was living proof that God could still create perfection." - Rex Reed

আপনাদের অথবা সেগুনবাগিচার আদি বাসিন্দাদের, কারোরই জানার কথা না যে ১৯২৯ সালের মে মাসের ২ তারিখ জন্ম নেওয়া মাজেদা খাতুনের একমাত্র পুত্র আলমগীর হোসেন অড্রে ক্যাথলীন হেপবার্নের চেয়ে বয়সে দুইদিনের বড়। আলমগীর হোসেন জন্মের পর তার পিতাকে দেখেছে বলে মনে করতে পারে না এবং এই প্রসঙ্গে মাজেদা খাতুনের নীরবতার কোন গোপন তাৎপর্য থাকলেও থাকতে পারে বলেও সেগুনবাগিচার আদি বাসিন্দারা মনে করে। কিন্তু সেটি আলমগীর হোসেনের কাছে তেমন কোন বিশেষত্ব বহন করেনি কখনো এবং মাজেদা খাতুন যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হলের পেছন দিকে ভাত বিক্রয় করে সেটাও সেগুনবাগিচার লোকেদের পছন্দের বিষয় না হলেও আলমগীর হোসেন কখনো তা নিয়েও ভাবেনি। এটা জানাই যথেষ্ট যে সেগুনবাগিচার বর্তমান বাসিন্দারা প্রায় সবাই অড্রে হেপবার্নকে দেখেছেন- কিন্তু আলমগীর হোসেনকে দেখেছেন কেবল আদি বাসিন্দারাই; অথবা হয়ত তাদের একটা ছোট অংশ।

হয়তো সেগুনবাগিচার বাসিন্দাদের এই অপছন্দনীয় আবহ থেকে মুক্তি দিতেই অথবা হয়তো ৪৭'এ সদ্য গঠিত হওয়া পূর্ব পাকিস্তানের ঢাকা শহরের অভূতপূর্ব বিস্তারের কালে আজিমপুর এস্টেটের পেছনে আবাস বদলে আসে তারা দুইজন, আলমগীর হোসেন এবং চল্লিশোর্ধ মাজেদা খাতুন। অথবা হয়তো তখন যেহেতু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পলাশী এলাকায় নিজেকে সম্প্রসারণ করছে এবং নিউ মার্কেট নির্মাণাধীন- সেহেতু নিজ ভাতের হোটেলের বৃহত্তর ভবিষ্যৎ কামনায় মাজেদা খাতুন এই অভিবাসন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে, এটাও হতে পারে। তখন পগোজ স্কুলে তিন ক্লাস পড়ার পর পড়াশুনা ছেড়ে দেয়া আলমগীর হোসেন একুশ বছরের ধর্মে আদর্শিত। ভাতের হোটেলে আধবেলা ক্যাশবাক্স সামলায়, বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছাত্রদের আদলে লম্বা জুলফি রাখে এবং বন্ধুদের সাথে নিছক আড্ডায় সময় নষ্ট করে। এখন হয়তো আজিমপুরের লোকেরা বলে যে এটা মাজেদা খাতুনেরই দোষ- যেহেতু এলাকার বিবাহযোগ্য তরুণীরা যেমন জমিলা, পাকিজা কিংবা রেহনুমার সাথে আলমগীর হোসেনের বিবাহ দেবার কোন জোর প্রচেষ্টা সে করেনি- কিন্তু এটাও তারা জানে এই দোষ জমিলা, পাকিজা অথবা রেহনুমার না। এই দোষ কিছুটা আলমগীর হোসেনের - সেই সাথে এই দোষ অড্রে হেপবার্নের।

আলমগীর হোসেন হয়তো ভালোবাসতে চায়নি , কিন্তু বন্ধুদের সাথে যেহেতু ১৯৫৪ সালের কোন এক শীতের সন্ধ্যায় সে গুলিস্তানের নাজ সিনেমা হলে 'রোমান হলিডে' দেখতে প্রবেশ করে- সেহেতু তাকে ভালোবাসতেই হয়। প্রকৃতপক্ষে সে সন্ধ্যাতেই ঘরপালানো রাজকুমারীটিকে প্রত্যক্ষ করে আলমগীর হোসেনের প্রথম বোধ হয় ভালোবাসা কী বস্তু এবং তারপর সে আক্ষরিক অর্থেই অড্রে হেপবার্নে ভেসে যায়। হুরপরী বলে একটা কিছুর অস্তিত্ব আছে- এই কথাটা শৈশবে মাজেদা খাতুনের মুখে শুনেছে বলে আলমগীর হোসেনের স্মরণ হয় এবং তার মস্তিষ্ক স্বীকার করে নেয় যে পুরাণে কথিত সেই সৃষ্টি দেখতে অড্রের চেয়ে কুৎসিতই হবে। কাজেই সেই শীতের রাত্রিতে আজিমপুরের তিন কামরার টিনের ছাপড়াটির মাঝে আলমগীর হোসেনের ঘরে শীত নামে না- নেমে আসে অড্রে হেপবার্ন এবং মাজেদা খাতুন তাকে দেখতে না পারায় আলমগীর হোসেন ক্রোধান্বিত হয়ে পড়ে।

এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হতে থাকে অতি দ্রুতই এবং অড্রে হেপবার্নকে প্রায় নিয়মিত নিজের শয়নকক্ষে আবিষ্কার করে আলমগীর হোসেন। মাজেদা খাতুনের চিন্তা ক্রমশঃ তার পুত্রের মানসিক বিকৃতি পর্যন্ত বিস্তার লাভ করে কিন্তু আলমগীর হোসেন এখন আর ভাতের হোটেলের ক্যাশবাক্স সামলানোর দিকে মন দেয় না - বরং সে ঘুরে বেড়ায় নাজ সিনেমা হলের আশেপাশে এবং গেটম্যান সবুর মিয়াকে একাধিক বার ক্যাপস্টানে টান দেবার সুযোগ করে দেয়ার বিনিময়ে সে জানতে সমর্থ হয় এই 'হুরপরী'কে লোকে অড্রে হেপবার্ন নামে চেনে। অথচ অড্রের জন্যে আলমগীর হোসেনের একান্ত নিজস্ব ভালোবাসা এই নামকরণ মেনে নিতে চায় না, পরিবর্তে সে অড্রের নতুন নাম স্থির করে নেয়। তাই প্রায় রাতে শয়ন কক্ষে অড্রে হেপবার্নের আগমনের সাথে সাথে যখন আলমগীর হোসেন মাজেদা খাতুনকে "মা- ও মা, চায়া দ্যাখো- অরদে কী সোন্দর কইরা হাসে... " এই বাণীর পুনরাবৃত্তি করতে থাকে তখন দেরী করে হলেও মাজেদা খাতুন রেহনুমা অথবা পাকিজাদের খোঁজ নেন। কিন্তু এই কাজে লাভ হয় না। আলমগীর হোসেন আত্নহত্যার হুমকি দেয় এবং নিশ্চিত হয় মাজেদা খাতুন পূর্বে স্বচক্ষে অরদে'কে দেখেনি বলেই তার অস্তিত্ব অনুধাবনে ব্যর্থ হচ্ছে। অতএব মাজেদা খাতুনকে তার ভালোবাসার সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে এবং স্বয়ং অড্রেও যে আলমগীর হোসেনের প্রতি অমোঘভাবে আকৃষ্ট তা বোঝাতে- যে আকর্ষণে রাত হলেই অড্রে হেপবার্ন ছুটে আসে আজিমপুর টিনের ছাপড়ায়- আলমগীর হোসেন মাজেদা খাতুনের জমানো টাকার একটা অংশ সকলের অগোচরে সরিয়ে নিতে সক্ষম হয়। চারমাসের সাধনায় নাজের গেটম্যান সবুর মিয়া এবং তার করাচি প্রবাসী শ্যালক সম্পর্কীয় কারো সাহায্যে 'রোমান হলিডে'র একটি পোস্টার আলমগীর হোসেনের হাতে আসে এবং, বলাই বাহুল্য, সেই পোস্টার হতে গ্রেগরী পেককে হটাতে আলমগীর হোসেন দেরী করে না। অরদে ঠাঁই পায় আলমগীর হোসেনের ঘরের দেয়ালে। মাজেদা খাতুন কেবল অঝোরে চোখের জল ফেলেন, কিন্তু তাতে কেবল আলমগীর হোসেনের ক্যাশে বসা পুনরায় নিয়মিত হয়। অথচ টিনের ছাপড়ায় অড্রে হেপবার্নের আগমন চলতেই থাকে এবং চলতে থাকে তার সাথে আলমগীর হোসেনের অলৌকিক দাম্পত্য জীবন। অবশেষে একসময় পুত্রের এই জীবনকে ভবিতব্য বলে মেনে নেয়ায় মাজেদা খাতুনের চোখের পানি কমে আসে। নাজ, বলাকা এবং গুলিস্তান সিনেমায় আসতে থাকে অড্রের নতুন নতুন সিনেমা সব। আসে 'সাবরিনা', আসে 'ওয়ার এন্ড পিস', আসে 'ব্রেকফাস্ট এট টিফানিস' , 'মাই ফেয়ার লেডি'। আলমগীর হোসেনেরও মধ্যবয়স আসে যৌবন পেরিয়ে। ষাটের দশক পেরিয়ে আসে ১৯৭১।

মার্চ থেকে অক্টোবরে, ১৯৭১ এ আলমগীর হোসেন কী করেছিলো সেটা এই কাহিনীতে অবান্তর। তবে এটা নিশ্চিত যে সে শান্তিবাহিনীতে যোগ দেয়নি কিংবা ইতিহাসে নাম লেখানোর আশায় আগ্নেয়াস্ত্র হাতে নেয়নি। কাজেই এপ্রিলের শেষের দিকে ঢাকা ত্যাগ করা আলমগীর হোসেন এবং মাজেদা খাতুন যে কোথাও আত্নগোপন করেছিলো সেটা অনুমান করা কঠিন নয়, বরং পালানোর সময়ও আলমগীর হোসেন যে অড্রে হেপবার্নের পোস্টারটি সাথে নিয়ে যায়; এটা অনুমান করা অনেকের জন্যে একটু কঠিন হতে পারে। মাজেদা খাতুন অবশ্য ঢাকা ত্যাগের প্রাক্কালে সঙ্গে নিয়ে যায় তার জমানো টাকার ক্যাশবাক্স আর তাই নভেম্বরে ঢাকায় ফেরার পর কোন এক অদ্ভূত কারণে বিপর্যস্ত চারপাশের মাঝে আজিমপুরের ছাপড়া ঘরটির সামান্যতম ক্ষতি হতে না দেখে তারা দ্রুতই আবার ভাত রান্নায় ফিরে যায়। কাজেই স্বাধীনতার প্রথম প্রহরের ঢাকা শহরের সাক্ষী হয়ে থাকা এই দুইজনের জীবনযাত্রায় স্বাধীনতা আসলেই কোন রকম প্রভাব ফেলে না। অড্রে আসতেই থাকে, আলমগীর হোসেন তাকে দেখতেই থাকে- এমন কী মাজেদা খাতুনও তাকে আজকাল দেখে থাকে।

তবুও ১৯৮৯ সালের অক্টোবর মাস আলমগীর হোসেনের এক বিয়োগান্তক ঘটনা বহন করে আনে। এখন যদিও পাড়ার লোকে বলে যে- যেহেতু মৃত্যুশয্যায় মাজেদা খাতুন শেষবারের মত চারপাশ তাকিয়ে আলমগীর হোসেনকে দেখতে পাননি এবং ' ও আলমগীর হুশেন, পুত আমার- তুই কনে গেলি...' এই বলে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছিলেন- সেইজন্যে মাতৃভক্ত আলমগীর হোসেন শোকে বিপর্যস্ত হয়ে দুইদিন খাবার গ্রহণ করেনি; এটি প্রকৃতপক্ষে সঠিক নয়। আলমগীর হোসেনের অনুপস্থিতির কারণ অন্তঃত মাজেদা খাতুন জানতেন এবং মরণাপন্ন মাকে রেখে ইউনিসেফের শুভেচ্ছাদূত হয়ে বাংলাদেশ সফর করতে আসা অড্রে হেপবার্নের সাথে আলমগীর হোসেনের দেখা করতে যাওয়া ছিলো মাজেদা খাতুনের অনুমতি সাপেক্ষেই। অড্রে যে আলমগীর হোসেনকে স্বামী বলে স্বীকার করে নিয়েছে- সেটা আলমগীর হোসেন জানলেও তার চারপাশের মানুষেরা জানতো না এবং তাদের জানানোর উদ্দেশ্যেই অড্রের স্বীকৃতি আদায় করতেই সে শিশুদের সেই স্কুলের দিকে গিয়েছিলো; যেখানে অড্রে হাসছিলো- শিশুদের সাথে সাইকেল চালাচ্ছিলো। অথচ স্থানীয় পুলিশেরা অড্রে হেপবার্নের উপর আলমগীর হোসেনের স্বত্ব অস্বীকার করে এবং তার মাত্রাতিরিক্ত অনুরোধে বিরক্ত হয়ে একসময় আঘাত পর্যন্ত করে। আহত আলমগীর হোসেন এই ঘটনাকালে অড্রের নীরবতায় কঠোর আঘাত পায় এবং নিজের মাঝে ফিরে আসতে দুইদিন বাড়ি ফেরে না। মাজেদা খাতুনের দাফনবেলায় আলমগীর হোসেনের অনুপস্থিতি তাই অন্যেরা সহজভাবে গ্রহণ করলেও অড্রের আচরণ আলমগীর হোসেন সহজভাবে গ্রহণ করতে পারে না। আশ্চর্যের বিষয়, বাড়ি ফেরার পরের রাতেই অড্রে আবার এসে উপস্থিত হয় এবং যথারীতি তাকে গ্রহণ না করে আলমগীর হোসেনের উপায় থাকে না। আলমগীর হোসেন অড্রে হেপবার্নকে ভালোবাসে এবং বাসতেই থাকে।

অড্রে হেপবার্ন শেষবারের মত আলমগীর হোসেনের শয়নকক্ষে আসে ১৯৯৩ সালের ১৯শে জানুয়ারী। আজিমপুরের সেই টিনের ছাপড়া ততদিনে একতালা একটা পাকা দালানে পরিণত হয়েছে। সেই রাতের পরদিন সকালে আলমগীর হোসেন নিজের হোটেলের ক্যাশবাক্স সামলানোর ফাঁকে টিভিতে চোখ বুলাতে বসে অড্রের মৃত্যুসংবাদ পায় এবং সেটি অবিশ্বাস করে। আলমগীর হোসেন জানে যে অড্রে রাত হলেই তার শয়নকক্ষে দেখা দেবে আবার - কিন্তু আলমগীর হোসেন জানে না- তার এই জানাটা ভুল ছিলো।

অড্রে হেপবার্ন সে রাতে আসে না। পরের রাতেও আসে না। এমনকী তারপরের রাতেও না। চতুর্থ রাত্রে ভালোবাসা হারানো বিশ্বের বাকি লোকগুলোর মতই বিষণ্ণ হয়ে পড়া আলমগীর হোসেন হঠাৎ বুঝতে পারে সে হয়তো আর অড্রে হেপবার্নের দেখা পাবে না। আলমগীর হোসেন তখন আর কিছু দেখে না, বরং প্রতিবেশীদের মুখে অগণিতবার উদ্ধৃত হওয়া মাজেদা খাতুনের অন্তিম বাণী ' ও আলমগীর হুশেন, পুত আমার- তুই কনে গেলি...' শুনতে পায়।

...অথচ আলমগীর হোসেন অড্রে হেপবার্নকেই ভালোবেসে ছিলো।

পোস্টটি ৭ জন ব্লগার পছন্দ করেছেন

ভাস্কর's picture


গল্পের পরতে পরতে শহিদুল জহিরের অস্তিত্ব টের পাইলাম। গল্পের বিষয় নির্বাচনে মুন্সীয়ানা আছে। আলমগীর হোসেনগো সামাজিক অস্তিত্ব যে আসলে ব্যক্তিগত ফ্যান্টাসীতে পর্যবসিত হওয়া বঞ্চনার ইতিহাস তার গল্প আপনি অনেক ভালোভাবেই বলছেন।

তবে একটা ছোট সমালোচনা আছে। শহিদুল জহিরের এই ভাষারীতি কিন্তু কেবল আমরা টের পাই যে বা পাড়ার লোকে জানতে পারে যে বললেই প্রতিষ্ঠিত হইয়া যায় না। ঐটা আঙ্গিক। এর পেছনে তার একটা গল্প কাঠামোর দশর্ন কাজ করতো বইলাই যদ্দূর বুঝি। শহিদুল জহিরের গল্পের মোড় ঘুরতো আসলে কালেকটিভের সচেতনতায়। কালেকটিভ আকাঙ্খায় যা আসলে ম্যাজিক রিয়ালিজম হইয়া উঠে, তার বাস্তবতা পাঠকের অনুসন্ধানী চোখে কখনো কখনো ধরাও পড়ে।

তার গল্পের সাথে পার্থক্য যদি আপনি সচেতন ভাবে অন্য কোন মতাদর্শিক চিন্তা থেইকা কইরা থাকেন, তাইলে তা জানবার আগ্রহ হইলো।

সুহান রিজওয়ান's picture


ছোটগল্প পড়তে ভালোবাসি, লিখতে চেষ্টা করি...

ম্যাজিক রিয়েলিজম নিয়ে টুকটাক লেখার চেষ্টা করবার সময় মাসছয়েক পূর্বে ঐধারার গুরু গার্সিয়া মার্কেজের ছোটগল্পগুলো পড়বার অব্যবহিত পর হাতে আসেন শহিদুল জহির। বলতে গেলে প্রথম পাঠেই আমি সে ভাষার প্রেমে পড়ে যাই, ম্যাজিক রিয়েলিজমের বর্ণনা যে স্বয়ং 'ম্যাজিকাল' হতে পারে- সেটা বুঝে নিই। সেই সময়েই ঝোঁকের মাথায় -শহিদুল জহিরে সচেতনভাবে ভাবে মুগ্ধ,অচেতনভাবে প্রভাবিত হয়ে - লেখা দুয়েকটা গল্পের মাঝে রয়েছে এ গল্পটাও।

... ম্যাজিক রিয়েলিজম ধারার ছোটগল্প নিয়ে ভবিষ্যতে কাজ করবার ইচ্ছে আছে। যদি সে এলেম করে উঠতে পারি, তবে আবার পাঠকের সাথে আলোচনা হবে।

ভাস্কর's picture


মার্কেজরে গুরু মানছিলেন কীনা শহীদুল জহির তা জানি না, কিন্তু ম্যাজিক রিয়ালিজমের কালেকটিভ কনশাসনেসের এই ধারাটা আসছিলো আফ্রিকান বুম সাহিত্য থেইকা...আমি তাগো সবাইরে পড়ি নাই যদিও, তবু আমোস টুটুওলার দুইটা লেখা পড়ছি, ইংরেজীতে আর বাংলা অনুবাদে। চিনুয়া আচিবে'র লেখায়ও এর টোন পাওন যায় খানিকটা...

মার্কেজের লেখাতে এই কালেকটিভ কনশাসনেসের বিষয়টা এতোটা নিহিত ছিলো না বইলাই ধারণা...তবে তিনিও একভাবে কালেকটিভিটির উপর আস্থা রাখছিলেন। আপনার উপস্থাপণ কিম্বা গল্প আমার বেশ ভালো লাগলেও শুরুতে কালেকটিভরে যে নাকচ করলেন সেইটারে বরং অনেক উল্লেখ্য লাগছে...

সুহান রিজওয়ান's picture


আফ্রিকান বুম সাহিত্য পড়া হয়নি- পড়াশোনার দৌড় আমার খুবই কম...

তবে কালেক্টিভ কনশাসনেসের কথা যেটা বললেন, সেটা মার্কেজের মাঝে কিছু কমই ছিলো। মার্কেজ (আমার মতে) 'ম্যাজিক' এর উপরই বেশি জোর দিয়েছেন...

ভাস্কর's picture


আমিও তাই বলতে ছাইছি...তয় শহীদুল জহির কিন্তু অনেক কালেকটিভ কনসাশনেসের আদলে তার রিয়ালিটি গইড়া তুলছে...

জ্বিনের বাদশা's picture


এর পেছনে তার একটা গল্প কাঠামোর দশর্ন কাজ করতো বইলাই যদ্দূর বুঝি। শহিদুল জহিরের গল্পের মোড় ঘুরতো আসলে কালেকটিভের সচেতনতায়। কালেকটিভ আকাঙ্খায় যা আসলে ম্যাজিক রিয়ালিজম হইয়া উঠে, তার বাস্তবতা পাঠকের অনুসন্ধানী চোখে কখনো কখনো ধরাও পড়ে।

ঠিক মতো বুঝতে পারলামনা। আরেকটু বিস্তারিত আলোচনা করবেন? অথবা একটা পোস্ট দিয়ে দেন ... ম্যাজিক রিয়ালিজম জিনিসটা একহনও বুঝে উঠতে পারলামনা, যদিও বোঝার আগ্রহটা টের পাই নিজের মধ্যে

সুবর্ণা's picture


ব্লগে স্বাগত জানাই। অনেক সময় নিয়ে পড়লাম। খুব ভালো লাগলো।

সুহান রিজওয়ান's picture


সময় ব্যায়ের জন্যে ধন্যবাদ।

মামুন হক's picture


সুহান গল্পটা আগে পড়ছি। আগের মতো আবারও ভালো লাগা জানিয়ে যাই। তবে তোমার নতুন গল্প চাই ভাই, নতুন গল্প চাই...Smile

১০

সুহান রিজওয়ান's picture


কী যে বলেন মামুন ভাই- নয়া গল্প এতৈ সোজা ?? !!!

১১

মামুন হক's picture


সুহান তোমার লেখনীর শক্তির সাথে আমি ভালোই পরিচিত। প্রচুর খেটেখুঁটে লেখ তুমি। জানি যে মানের গল্প তোমার হাত দিয়ে বের হয় সেগুলা লেখা সহজ কম্ম নয়, তবুও ভক্ত পাঠক তার আবদারের অধিকার প্রয়োগ করবেই Smile

১২

অদ্রোহ's picture


মামুন ভাই ,সুহান একজন চিন্তাশীল বিবেকবান পড়ুয়া ,এক্সাম টাইমে সে নতুন গল্প লেখার মত ঝুঁকি নেবে বলে মনে হয়না Wink.

১৩

সুহান রিজওয়ান's picture


@অদ্রোহঃ আসছে আরেক নাপ্তাল... ঐ, অফ যা...

@মামুন ভাইঃ কেনো লজ্জা দিচ্ছেন, কথাটা ঐ অর্থে বলি নাই। এখন আসলে 'নতুন কিছুর' ড্রাফটে কাটাকুটি চলছে- কাজেই কাজটা আরো বেশি কঠিন ঠেকছে।

...ঠিকাছে, নতুন গল্পের জন্যে অন্ততঃ একজন তৈরী পাঠক পেলাম। ভালো লাগ্লো শুনে।

১৪

মাহবুব সুমন's picture


কৈ জানি আগে পর্ছিলাম। তারপরো ভালো লাগ্ছে।

১৫

সুহান রিজওয়ান's picture


পুরোনো গল্প। পড়ে থাকতে পারেন...

১৬

অদ্রোহ's picture


ওয়েলখাম দোস্ত Laughing out loud

১৭

সুহান রিজওয়ান's picture


ছি, পরীক্ষার সময় ব্লগে ঘুর্তে নেই বাবু- যাও, পড়তে বসো... Laughing out loud

১৮

সোনাবীজ's picture


১৯৯০ সনের শুক্রবারে পৌনে চারটায় অড্রে হেপবার্নের সাথে আমার দেখা হয়েছিল। অড্রের হাসির মূল্য বাকি পৃথিবীর দামের সমান।

Audrey

১৯

বকলম's picture


গল্প ভাল লাগছে।

২০

সুহান রিজওয়ান's picture


ধন্যবাদ।

২১

একলব্যের পুনর্জন্ম's picture


ভালো লাগল স্টাইলটা ।

স্বাগতম এবিতে ।

২২

সুহান রিজওয়ান's picture


ধন্যবাদ।

২৩

নজরুল ইসলাম's picture


আগে পড়েছি, তাই পড়লাম না। নতুন গল্প চাই

২৪

সুহান রিজওয়ান's picture


যদি লিখতে পারি...

২৫

সাইফ তাহসিন's picture


ঐ মিয়া, এই লেখা আবার এইখানে দিলা, তবে তাতে আমার ভালো লাগা একটুও কমে নাই। আগেরবার দেখেছিলাম সবাই শহিদুল জহির নিয়া তোমার ঘাড়ে চড়েছিল লুকজুন Wink, কিন্তু তাতে কি, আমার কাছে দারুন লেগেছে। তোমার লেখার বিশাল ভক্ত আমি, হাত পা খুইলা গল্প লেইখা যাও বস! আর আমার মনে হয় তোমার নিকটা পাল্টায় আবার শব্দশিল্পী করা উচিত, কারন তুমি তাই

২৬

সুহান রিজওয়ান's picture


সাইব্বাই, ইক্টু না- বেশ বেশি বৈল্যা ফালাইতাসেন... ভালো লাগা না কমায় আশ্বস্ত হলুম।

২৭

তানবীরা's picture


গল্প ভাল লাগছে।

মন্তব্য করুন

(আপনার প্রদান কৃত তথ্য কখনোই প্রকাশ করা হবেনা অথবা অন্য কোন মাধ্যমে শেয়ার করা হবেনা।)
ইমোটিকন
:):D:bigsmile:;):p:O:|:(:~:((8):steve:J):glasses::party::love:
  • Web page addresses and e-mail addresses turn into links automatically.
  • Allowed HTML tags: <a> <em> <strong> <cite> <code> <ul> <ol> <li> <dl> <dt> <dd> <img> <b> <u> <i> <br /> <p> <blockquote>
  • Lines and paragraphs break automatically.
  • Textual smileys will be replaced with graphical ones.

পোস্ট সাজাতে বাড়তি সুবিধাদি - ফর্মেটিং অপশন।

CAPTCHA
This question is for testing whether you are a human visitor and to prevent automated spam submissions.