সাগর আর রুনি
সাগর আর রুনিকে আমি ব্যক্তিগতভাবে চিনি না। এ ঘটনা না ঘটলে কোনদিন তাদের নাম সেভাবে জানতাম কি না তাও জানি না। যদিও ফেসবুকে অন্যান্যদের স্ট্যাটাস আর কথোপকথন থেকে বেশ বুঝতে পারি, অনেকেই তাদেরকে ব্যক্তিগতভাবে চিনতেন। আবছা আবছা ভাবে মনে পড়ে, হয়তো কোন টিভি কভারেজে কখনো মেহরুন রুনি শব্দটা শুনেছিলাম। তারা বিখ্যাত কিংবা সংবেদনশীল পেশার লোক হন বা না হন, সর্বোপরি তারা বাংলাদেশের নাগরিক ছিলেন। দেশকে ভালবাসতেন, বিদেশের মোহ মায়া কাটিয়ে দেশে ফিরে এসেছিলেন।
আমাদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন আটচল্লিশ ঘন্টার আল্টিমেটাম দিয়েছিলেন, ফলাফল জানাবেন বলে। সেই আটচল্লিশ ঘন্টা পর তন্ন তন্ন করে যতো দেশি সংবাদ সাইটে ক্লিক করেছি, আর কোনদিন কোন ব্যাপারে করেছি কী না জানি না। আর একবার ভীষন অস্থির ছিলাম বাংলাদেশের ওয়ান ইলাভেনের দিন। তবে এটুকু বলতে পারি রুনি-সাগর থেকে অনেক কম টেনশন ছিল সেদিন। ফেসবুকটা তন্ন তন্ন করেছি যদি কোন নোট পাওয়া যায় কিংবা খবর পাওয়া যায় যা সংবাদ মাধ্যমে আসেনি এখনো। আজকে অনেক দিন হয়ে গেলো। সবাই রহস্যজনকভাবে চুপ। বারবার একই আশ্বাস সরকারের, একই বুলি পুলিশ থেকে। কিন্তু কাজের বেলায় লবঘন্ট।
অথচ ছোটবেলা থেকে শুনে এসেছি বাংলাদেশ পুলিশ চাইলে পারে না এমন কোন কাজ নেই। তাহলে কি পুলিশ আন্তরিকভাবে চাইছেন না? নাকি তার পারছেন না। তারা হেরে গেছেন অপরাধীদের শাতিলতার কাছে। যদি না পারেন তাহলে তারা কেন বিদেশী এক্সপার্টদের সাহায্য নিচ্ছেন না? অতীতেও অনেক ঘটনায় বিদেশী সাহায্য নেয়া হয়েছে। ভবিষ্যতেও তারা হয়তো অনেক ব্যাপার সমাধানের জন্য বিদেশী এক্সপার্টদের সাহায্য নিবেন, তাহলে এখন নয় কেন? খুন হওয়া মানুষদুটো কি যথেষ্ঠ গুরুত্বপূর্ন নন? নাকি এ ঘটনাটি যথেষ্ঠ চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেনি দেশে? প্রধানমন্ত্রী – স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ব্যাক্তিগত তদারকি ও আশ্বাসের পরও এতোদিন ধরে শূণ্যগর্ভ ফলাফলে কি মনে এ প্রশ্ন জাগায় না যে
১. পুলিশ আসলে সব জানে। তারা মুখ খুলছেন না। কারণ অনেক বড় কোন রাঘব বোয়াল এর সাথে জড়িত। অনেকের গোমর ফাঁস হওয়ার আশঙ্কা আছে।
২. তারা টাকা পয়সা দিয়ে পুলিশ - সরকার সব ম্যানেজ করে ফেলেছেন।
৩. পুলিশ অপেক্ষা করছে কখন পাবলিক সেন্টিমেন্ট থিতু হবে। এ অভাব যন্ত্রনার দেশে কার কথা কে কতোক্ষণ মনে রাখে। দৈনন্দিন কাজের ফাঁকে রুনি সাগর হারিয়ে গেলে, যাহোক একটা জজমিয়া নাটক মঞ্চস্থ করে দিবেন।
আমরা এখন কি করতে পারি? আমরা সেসব জনগন যাদের বেডরুমে নিরাপত্তা দিতে সরকার অপারগ বলে স্বীকার করেছেন। আমরা যারা হয়তো খুন হওয়ার অপেক্ষায় আছি আমাদের বেডরুমে তাদের এখন নিজেদের ভেবে ঠিক করতে হবে, আমরা নিজেরা নিজেদের নিরাপত্তা কি করে নিশ্চিত করতে পারি? সাগর রুনি খবরের কাগজের প্রথম পাতা থেকে সরে গেছেন। টিভির নিউজে অনেক শেষে চলে গেছেন। ব্লগেও প্রায় নেই। এভাবেই কি চলবে? আমি প্রস্তাব করবো খবরের কাগজে আগে যেমন প্রতিবাদের জন্য কলাম খালি রাখা হতো সেরকম ব্লগের একটা পোষ্টের জায়গা খালি রাখা হোক। যতোদিন সুস্পষ্ট বক্তব্য না আসে যথাযথ কর্তৃপক্ষ থেকে, আমরা রুনি – সাগরকে হারাতে দিব না। আমাদের প্রতিবাদ আমাদের প্রচেষ্টা অব্যহত থাকুক।
তানবীরা
০১/০৩/২০১২





আপু, আমি আপনার প্রথম আশঙ্কার সাথে একমত..
"পুলিশ আসলে সব জানে। তারা মুখ খুলছেন না। কারণ অনেক বড় কোন রাঘব বোয়াল এর সাথে জড়িত। অনেকের গোমর ফাঁস হওয়ার আশঙ্কা আছে।"
সাধারণ মানুষের সেন্টিমেন্ট manipulate করাই ইদানিং politics এর গুরুত্বপূর্ণ অংশ বলে মনে হয় আমার কাছে
হুমম, পিস্তল নিয়ে নাড়াচাড়া করতে করতে মানুষ মেরে ফেলে
ফেইসবুক,ব্লগ,পেপারে এই খুনের খবর পড়তে পড়তে আমি নিজেই মানসিক ভাবে অসুস্থ হয়ে গেসিলাম
।এখন মোটামোটি ঠিক আছি 
এখনো ভাবলে পেটে পাক দেয়। কি করে ওদের পরিবার সহ্য করছে কে জানে
আজকাল রাতে ঘুমাতে গিয়ে ঘুম আসি আসি মূহুর্তে হটাৎ সন্দেহ হয় দরজা-জানালা সব ঠিকঠাক বন্ধ আছে তো? আবার উঠে চেক করি। যেকোন অপরিচিত শব্দে বিচলিত হই। এরই নাম বোধহয় আতঙ্কে বসবাস।
~
আমার হুবুহু এক অবস্থা,আমেরিকায় থেকেও অনেক ভয় পেয়েছি,আব্বুকে জিজ্ঞেস করেছিলাম আমাকে কেউ খুন করার কোনো সম্ভাবনা আছে নাকি
খুব ভয় পেয়েছিলাম।
সময় বড়ই অস্থির।
আমাকে খুনের জন্য যেন আমিই দায়ী!!!
যারা একসময় সংবাদের শিরোনাম খুঁজে ফিরতেন.........আজ তারা-ই শিরোনাম হয়ে গেলেন।
আমাদের ক্ষমা করুন...সাগর-রুনি
==========================
নিজেদের প্রাণটাতো দিলই আবার ক্ষমাও করতে হবে? এ অন্যায়ের ক্ষমা হয় না
আমার ছেলে আজ বলছে, যখন আমরা বাসায় থাকি না তখন কি হবে? ওর মা এর কারণ জানতে চাইলে বললো, টিভিতে যে দেখছে সবাইকে মেরে ফেলছে। বাচ্চাদের মধ্যে প্রভাব পড়েছে ওই ঘটনায়
কিচ্ছু বলার নেই
বাস্তব জীবনে আমি এই সব বর্বরতা হত্যাকান্ড নিয়ে অতো ভাবি না কিন্তু এবার অনেক ভাবনা চিন্তা করলাম মেলা লেখা পড়লাম টিভি টক শো হজম করলাম আর মনে হলো কিছুই হবে না খুনীদের সাংবাদিকেরা যত কিছুই বলুক যাই করুক। সময়ের স্রোতে ভুলে যেতে চায় সবাই সব কিছু!
এটাই আসল ঘটনা। আমরা তো এখন হিরক রাণীর দেশে থাকি; তাই, এসব অনাচার দেখতে হচ্ছে।
)
(মন্তব্যটি আরো দু'বার করেছি। কিন্তু পুরোপুরি এলো না।
------------------------------------------------
পুরুষের দশ দশা; কখনও হাতি, কখনও মশা।
মাঝে মাঝে কোন টেকনিক্যাল কারণে এটা হয়, পুরো মন্তব্য আসে না
সময়টা বড়ই অস্থির
কয়েকটা জজমিয়া বুঝি আমরা ইতোমধ্যেই পেয়ে গেছি। এখন কী কী নাটক হয় সেটা দেখার ইচ্ছা আছে।
শেখার কোন শেষ নেই।
সবাই এতো জজমিয়া জজমিয়া করছে যে ভয়ে পুলিশ আর গল্পটা পাবলিশ করছে না। এটাও অবশ্য খারাপ না
পূরাই দুঃখজনক ঘটনা। সরকারের ভুমিকা এতই নিন্দনীয় যে, এই লিখা লিখতে গিয়েও আমার মুখে থু থু'তে ভরে যাচ্ছে।
হ্যা, অত্যন্ত নিন্দনীয় ভূমিকা সরকারের সাথে আমাদেরও। আমরাই কি করেছি? কে মনে রেখেছে আজ ওদের কথা?
মন্তব্য করুন