দ্যা করোনা ডায়রী অফ তাতা ফ্র্যাঙ্ক – ১০ (আগস্ট)
আঠারোই আগস্ট জানালেন প্রিমিয়ে মার্ক রুতে, দু সপ্তাহ আগের সাংবাদিক সম্মেলনের পর নেদারল্যান্ডসে করোনা পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে। সংক্রমনের হার আর হাসপাতালে ভর্তির হার দুটোই বেড়ে গেছে। এখনই যদি সর্তক না হই আবার সংকটে পরতে দেরী হবে না। আমরা কিছুতেই অর্থনৈতিকভাবে দ্বিতীয়বার এই পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে চাই না। আজকে রাতেই আমাস্টার্ডামের মেয়র জনবহুল এলাকার জন্যে তাদের আলাদা নিয়ম নীতির ঘোষনা নিয়ে আসবেন। এই পরিস্থিতিতে কোথাও কোথাও এলাকা ভিত্তিক নীতি বেশি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
দেশ জুড়ে যে নিয়মগুলো বলবৎ থাকবে তা হলোঃ
বাসায় নিজের বন্ধু, পরিবারের মধ্যে যেহেতু মানুষ “সোশ্যাল ডিসটেন্স” মেইনটেইন করছে না, হাত মেলানো, জড়িয়ে ধরা প্রভৃতি বন্ধ করছে না, দেখা যাচ্ছে বেশীর ভাগ সংক্রমনের উৎপত্তি এখানেই। তাই আপাতত বাসায় বড় গেটটুগেদার বন্ধ, রেস্টুরেন্টে বা বাইরে পার্টি হোক, বাসায় নয়। বাসায় ছয় জনের বেশি আপাতত গেস্ট ডাকা যাবে না। এর মধ্যে বারো বছর অব্ধি বাচ্চাদের ধরা হয় নি। দাওয়াত করার সময় জিজ্ঞেস করতে হবে, কারো কোন অসুস্থতা আছে কি না। জনগনের ওপর প্রিমিয়ের আস্থা আছে, পুলিশ দিয়ে তিনি কন্ট্রোল চেক করবেন না।
জন্মদিন, জুবলিয়াম, বিয়ের অনুষ্ঠান বাইরে করা যেতে পারে, তবে আগে রেজিস্ট্রেশান আর কন্ট্রোল চেক করে নিতে হবে। মেহমানদের প্রত্যেকের জন্যে আলাদা নির্দিষ্ট চেয়ার থাকতে হবে, একজনের চেয়ারে অন্যজন বসতে পারবে না। সবগুলো চেয়ার দেড় মিটারের সামাজিক দূরত্ব মেইনটেইন করে সেট করতে হবে। অনুষ্ঠানে “পোলোনাজ” ডান্স নিষেধ আর অভিনন্দন জানাতে হবে দূর থেকে। সব রেস্টুরেন্ট আর হল মালিকদের এ দিকে কঠোর দৃষ্টি রাখার জন্যে বলা হয়েছে।
“ওয়ার্কিং ফ্রম হোম” আপাতত পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত বলবত থাকবে, এর কোন পরিবর্তন হবে না।
সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা থাকবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো অবিশ্বাস্য প্রস্তূতি গ্রহণ করেছে দূরত্ব মেনে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে ক্লাশ চালানোর। কোন বাচ্চা অসুস্থ হলে বাসায় থাকবে, পরিবারের কেউ “করোনা পজিটিভ” হলে সেই পরিবারের বাচ্চা বাসায় থাকবে। এর কোন ব্যাতায় হবে না। সংক্রমিতদের তৃতীয় স্তরটি হলো পনেরো থেকে উনিশ বছরের মধ্যে। কোন স্কুল থেকে যদি সংক্রমনের হার বাড়ে জিজিডি সেদিকে আলাদা নজর রাখবে। মার্চ থেকে জুন আমরা সবাই মিলে প্রমাণ করেছিলাম যে ভাইরাস আমরা নীচে নিয়ে আসতে পারি আর এখন আমাদের সবার প্রমাণ করতে হবে, ভাইরাস আমরা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারি।
শুধু বয়স্ক মানুষরাই যে অসুস্থ হচ্ছে তা নয়, বিশ-ত্রিশের মানুষরাও অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। আমরা লকডাউনে যেতে চাই না। গত সপ্তায় প্রায় চার হাজার মানুষ “পজিটিভ” এসেছে, আরআইভিএম ধারনা করছে তাহলে হয় প্রায় পঞ্চাশ হাজার মানুষের মধ্যে এই ভাইরাসটি এই মুহূর্তে বিচরণ করছে। জিজিডি যখন পঞ্চাশ জনের একটি দলকে ফোন করে ট্রেস এন্ড ট্র্যাক করে এবং কেয়ারন্টিনে থাকতে বলে, তার ভেতরে চার-পাঁচ দিন চলে যায় বলে এই পন্থাটি তত কার্যকর হচ্ছে না। তবে কেয়ারন্টিনের সময় এখন চৌদ্দ দিনের বদলে দশ দিনে নামিয়ে আনা হয়েছে। মানুষ নিজ থেকে কেয়ারন্টিন না মানলে তাদেরকে আলাদা বাধ্যতামূলক কেয়ারন্টিন সেন্টারে রাখার প্রস্তাব করেছে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডি হুগো, পার্লামেন্ট যদিও এটাকে প্রচন্ড শক্তি প্রয়োগ হিসেবে আপাতত দেখছে তবে এর বিকল্প কি করা যায় তা নিয়ে পার্লামেন্ট এই সংশ্লিষ্ট অন্যদের সাথে আলোচনা করছে।
প্রথম সেপ্টেম্বর থেকে “করোনা এপ” চালু হবে। পাঁচ লক্ষেরও বেশি লোক এটি অলরেডি ইন্সটল করে ফেলেছে।
১৮/০৮/২০২০
মন্তব্য করুন