বদলে যাওয়া জীবনের গল্প
কিছুদিন আগে বিপুল উন্মাদনার মধ্যে দিয়ে এশিয়া কাপ ক্রিকেট খেলা হয়ে গেলো দেশে। আমি কোন কারণে তখন একজন ছোট ভাইয়ের সাথে কথা বলছিলাম। সে ভীষন উত্তেজিত। ক্রিকেটে ইনফো ডট কমে খেলার স্কোর দেখেই তার এতো উত্তেজনা। মুহুর মুহুর ফেসবুকে স্ট্যাটাস আপডেট করছে। আমার নিরুত্তাপ গলার জাগতিক ব্যাপার নিয়ে আলোচনা তাকে এতোটাই হতবাক করলো যে সে বলেই ফেললো, আপু খেলা দেখছেন না? আমি বললাম না, সময় নেই। তারপর সে বিস্ময় গোপন না করেই বললো, আপনি বোধহয় খেলা মানে ক্রিকেট ততো ভালবাসেন না। আমি তার কথার উত্তর না দিয়ে শুধুই হেসেছি। কিন্তু কথাটা দিনভর কেন যেনো মাথায় গেঁথে রইলো। “ভালোবাসা” --- কতো দ্রুত সময়ের সাথে বদলে যায়। জীবনের প্রায়োরিটি পরিবর্তন হয় আর তার সাথে এই ভালোবাসা। আমি ফিরে যাই আমার হারানো অতীতে।
নব্বই এর এরশাদ বিরোধী আন্দোলন আমার দেখা বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ছাত্র আন্দোলন। বায়ান্ন, উনসত্তর কিংবা একাত্তরতো আমি দেখিনি। স্কুল বন্ধ আর আমরা সবাই সারাদিন দৌড়ে দৌড়ে ছাঁদে যাই, আন্দোলন দেখি। তখন ঢাকা জুড়ে এতো হাই রাইজ ফ্ল্যাট ওঠেনি। সাধারন পাঁচ তলা, ছ’তলা বাড়ি থেকেও অনেকদূর দেখা যেতো। সায়েন্সল্যাব কিংবা শুক্রাবাদ নিউমডেল হাইস্কুল কাম কলেজের সামনে ছাত্ররা টায়ার পুড়ায়, আর পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে। আহা কাঁদানে গ্যাস। আমরা স্কুলে গোয়িং লিটিস পিটিসরা এর কথা শুধু পেপারে পড়ি, ইউনিভার্সিটির ছাত্ররা খায়, আহা আমাদের সে ভাগ্য কবে হবে। একদিন ছাঁদে কেমন যেনো চোখ জ্বালা করে উঠলো, আব্বু বললেন এই হলো কাঁদানে গ্যাস। কাঁদাতে দিয়েছে। কেঁদে কেঁদে ও মনে হলো জীবন সার্থক। আব্বু রেডিওতে বিবিসি শোনেন, আব্বুর বন্ধুরা, পাড়ার চাচারা আসেন, রাজনীতি, সিনেমা হরেক রকমের গল্প হয়। অনেক দূর থেকে পায়ে হেঁটে, গলির ফাঁক দিয়ে, আর্মি, পুলিশ ফাঁকি দিয়ে চলে আসা এটাও একটা বিরাট এডভেঞ্চার, সবাই গল্প করে। ভিডিও দেখি, পাড়ার ভিডিও ক্লাব খালি, সময়মতো না গেলে সবাই ফিল্ম হায়ার করে নিয়ে যায় কিচ্ছু পাওয়া যায় না। পাড়ার মধ্যেই সিনেমা এক্সচেঞ্জ হয়, আব্বুরা একসাথে তাস খেলেন আরো কতো কি। মুহু মুহু চা, পেয়াজু ভাজা, মুড়ি মাখা, আলুর চপ, শামি কাবাব। দুপুরে বিরিয়ানি কিংবা খিচুড়ি মাংস। হরতালে সব অচল। শাক, ডাঁটা খাওয়ার ঝামেলা নেই। আনন্দই আনন্দ। হই হই রবের এই খেলায় যিনি অনুপস্থিত তিনি হলেন আমার “মা”।
তিনি সারাদিন এইযে বাসায় মেহমান আসছে যাচ্ছে তাদের নাস্তা, খাবার, দাদুর খাবার, কাপড় ধোয়ানো, বাথরুম পরিস্কার করানো এগুলো নিয়ে তুমুল ব্যস্ত। উত্তেজিত গলায় এরশাদ সম্পর্কে বা টায়ার পুড়ানো নিয়ে কিছু বলতে গেলে মা চরম শান্ত মেজাজে তরকারী নাড়ার কাঠি দেখিয়ে বলতেন, যা এখান থেকে। সব কাজ শেষ করে মা আব্বুর কাছ থেকে সারাদিনের রাজনীতির সারাংশ শুনে নিতেন নিরুত্তাপ কিংবা অনাগ্রাহী মেজাজে। কিনতু বিরক্ত হয়ে বলতেন কবে যে এগুলো শেষ হবে, বাসায় কোন তাজা সব্জি নেই, কি করে সবাই খাওয়া দাওয়া করবেন। রোজ মাংস খেয়ে দাদুর শরীরটা কেমন যেনো করছে। দেশ নিয়ে তেমন কোন উল্লেখযোগ্য বাক্য নেই। মাকে কতোই না করুণা করতাম তখন। দেশের কোন খবর রাখে না, কোন সচেতনতা নেই, কি জীবন শুধু রান্না আর খাওয়া, কাপড় ধোয়ানো, কি সিলি মহিলা। এ জন্যেই দেশের এ অবস্থা, তসলিমা নাসরিন তাইতো বলে। আর নিজেকে ভাবতাম বড় সমাজ সচেতন কেউকেটা।
ক্রিকেটেও মা একটু আধটু যোগ দিতেন। কিন্তু সেই, আমাদের সবার আরামের রুটিন ঠিক রাখতে রান্নাঘর থেকে শোয়ার ঘর কিংবা অন্যদিকে দৌড়াতে দৌড়াতে যতটুকু দেখতেন। মাকে ভাবতাম এমন অনাগ্রাহী মানুষ হয় কি করে? ইঞ্জামামুল হক ব্যাটিং করছে, বলে বলে ছক্কা আর চার আর তুমি কি না বুয়া ঠিকমতো বাথরুম পরিস্কার না করলে দাদু পড়ে যেতে পারে তাই নিয়ে চেঁচামিচি করছো! হাউ সিলি ইউ আর। আমরা সারাদিন সচেতনভাবে ড্রইয়ংরুমে বসে মায়ের মাখিয়ে পাঠানো মুড়ি চানাচুর খেয়ে ক্রিকেট খেলা দেখছি। বিশ্বের প্রতি আমাদের একটা দায়িত্ব কিংবা কর্তব্য আছে না? সাথে বোম্বে রিং চিপস, চা কোকতো আছেই। সমাজে অবদান রাখছি। সারাদিন ক্রিকেট খেলা দেখে সন্ধ্যায় কথা বলতে পারতাম না, এতো উত্তেজনা এতো চিৎকার করতাম, গলা বসে যেতো। অনেকদিন মাথাও ধরতো, পড়ালেখা বাদ দিয়ে ঘুমাতাম সন্ধ্যা ভরে। এখন ছুটির দিনে ক্রিকেট খেলা হলে অনেকে আমার বাসায় আসে খেলা দেখতে। আমি কি করি? খেলা দেখি ওদের সাথে টিভির সামনে বসে? কিছুটা সময় অবশ্য দেখি আর বাকি সময়টা কি করি? হাউ সিলি এ্যাম আই নাউ? কখন মায়ের জায়গায় চলে গেছি নিজের অজান্তে নিজে কি জানি সেটা?
বাসায় যখন কেউ মহা উত্তেজিত সুরেঞ্জিতের সাংবাদিক সম্মেলনের নির্লজ্জ বক্তব্য নিয়ে কিংবা ইলিয়াসকে নিয়ে হাসিনা – খালেদার বাকযুদ্ধে আমি ভাবছি কাল কি বার? বুধবার হলে মেঘের ডান্স লেস, বৃহস্প্রতিবার হলে সুইম আর শুক্রবার হলে জিম। কোন ব্যাগটা গুছিয়ে দিবো? অনেকে মাঝে সাঝে বলেন, আপু অনেকদিন কিছু লিখেন না, একটা ভালো কিছু লিখেন। অনেক গল্প মাঝে সাঝে ভীড়ও করে মাথায়। ভাবি অবসর পেলে লিখতে বসবো, যখন সময় পাই ভাবি মাংসটা কষিয়ে রাখি বরং সেটা কাজে দিবে কিংবা মাছের আঁশ ক্লীন করে রাখি। প্রান্তিক পর্যায়ে পৌঁছে গেছি। একবেলার খাবার রান্না করা থাকলে মনে আনন্দ হয় যাক, একবেলার খাবারের ভাবনাতো ভাবতে হবে না। পুরনো অভ্যাস ছাড়তে পারিনি বলে এখনো কতো কি টুকে রাখি, বইয়ের নাম, সিনেমার নাম। শুধু শুধুই হয়তো। একদিন এই টুকে রাখা খাতাটাই হারিয়ে যাবে কোথাও। বাড়ি ফিরলে আমার ড্রয়ার, পুরনো চুড়ি, দুল, আমার বই, আমার গানের ক্যসেট এখনো হাতে পাই। প্রতিবারই কিছু কিছু ফেলে দিয়ে আসি, নষ্ট হয়ে গেছে কিংবা আর দরকার নেই। কাউকে দিয়েও দেই। মাঝে সাঝে যখন স্মৃতিতে ঝাপসা হয়ে গেছে এমন জিনিসের ওপর হাত পড়ে। আবৃত্তি ক্লাশের খাতা, পছন্দের টুকে রাখা কবিতা কিংবা লাইনগুলো অবাক হই, এ জীবনটাও কি আমারি ছিল? মাত্র কিছুদিন আগেও হয়তো ছিল। কিংবা হয়তো ছিল না, জন্মান্তরের সংশয়ে ভুগছি।
একটা জীবনে বৃষ্টি নামা অনেক আনন্দের ব্যাপার ছিল। রীতিমতো আয়োজন করে, পুরনো জামা পড়ে, আশেপাশের সব পিচ্চিদের ডেকে ছাঁদে যেতাম, বৃষ্টি ভেজা উৎসব আমাদের। সিড়ি ঘরে গান লাগিয়ে সব বোনেরা মিলে ঢং করে হিন্দি সিনেমার নায়িকাদের মতো বৃষ্টিতে নাচানাচি করতাম। খিচুড়ি খাওয়া, বাইরে না যাওয়া সব কিছুতেই উৎসব ছিল। এখন বৃষ্টি মানে কি? উটকো পানির ঝামেলা। শুধু ভাবি রাতে আমি ঘুমোলে যেনো বৃষ্টি নামে আর সকাল হওয়ার আগেই যেনো শেষ হয়ে যায়। তাহলে বাগানে পানি দিতে হবে না, গাড়িটা পরিস্কার ধোয়া হয়ে থাকবে আর আমি আরামসে মেয়েকে স্কুলে নামিয়ে নিজে অফিসে যাবো। বৃষ্টি আর মনে কাব্য আনে না। কাব্য বিদায় হয়েছে মাথা থেকে মন থেকে সেও এক শান্তি। নইলে ঘুরে ফিরে দুটো চারটে কবিতার লাইন মাথায় আসবে। মনটা ব্যস্ত থাকবে কবিতার মানে খুঁজতে, বুঝতে। কি হবে কবিতার মানে খুঁজে বুঝে? কবিতা নিয়ে ব্যস্ত থাকলে মেয়ের স্কুলের টিফিন যাবে মিস হয়ে তার থেকে কবিতা তোমায় দিলাম আজিকে ছুটি।
আজকাল বেশ ছোট ছোট মেয়েরা বিয়ে হয়ে স্বামীর সাথে সংসার করতে বাইরে আসছে। বেশির ভাগই পি।এইচ।ডির ব্যাপার। আমরা এখন আপুদের রোল প্লে করছি। খেতে বসেই শুরু করবে, এটা কি করে রান্না করেছো আপু? ঐটা কোথায় পাওয়া যায়? আমাকে শিখিয়ে দিবে, আমাকে রেসিপি দিবে। বড় ভালো লাগে জীবনের এই কলতান দেখতে। মাঝে মাঝে নিজেকে হারিয়ে যেনো পাই ফিরে ফিরে। মনে হয় এইতো সেদিন ঠিক এভাবেই ফোন কানে লাগিয়ে ম্যাকারনি, সর্ষে ইলিশ কিংবা কলাইয়ের ডাল রাধার রেসিপি নিয়েছি। নতুন কেক বানানোর উত্তেজনায়, কে খাবে সে কেক তার তোয়াক্কা না করে, সকালে এক স্বাদের কেক, বিকেলে অন্য স্বাদের আর এক কেক বানিয়েছি। আর আজকাল সুপার মার্কেটের বেকিং সেকশন দিয়ে যাওয়ার সময় ভাবি, দরকার কি, থাক। কলোস্টোরেল এর ডাব্বা এগুলো। আবার এটাও ভাবি পাঁচ টাকা দিলে এতো বড় কেক পাওয়া যাবে, দরকার কি এক ঘন্টা কষ্ট করার? বরং এক ঘন্টা ঘুমালে কাজে দিবে। এতো অনীহা কাজ করে সব কিছুতে। সবকিছু থেকে আগ্রহ চলে গেছে। অথচ নতুন মেয়েদের দেখলে মনে হয়, এইতো সেদিনের কথা কিন্তু কখন কাটল সেই সময়?
বাবা, ভাই, স্বামীর আশ্রয়ে থাকা আসলে একটা দুর্বল মানুষ আমি। যেকোন ঝাঁকুনিতেই বড় নড়বড় করি। আজকাল জাব উই মেট সিনেমার কারিনার ডায়লগটা খুব মনে পড়ে আর মহাবিশ্বের কাছে মিনতি করি, এক জীবনের জন্য অনেক এক্সাইটমেন্ট হয়ে গেছে, আর কোন এক্সাইটমেন্ট চাই না জীবনে। বাকি জীবনটা ঝাঁকুনিবিহীন শান্ত কাটাতে চাই। যারা সংসারের অনেক চড়াই উৎরাইয়ের মাঝে স্থির থাকতে পারেন তাদের নমস্য মনে হয়। হাজারটা চিন্তা মাথায় রেখে যারা হাসিমুখে ক্রিকেট উপভোগ করেন, কবিতা পড়েন, বৃষ্টি উপভোগ করতে পারেন তাদের হিংসে করি চরমভাবে। দ্রুত বিষন্নতায় আক্রান্ত হয়ে পড়া, খুব সহজে ঘাবড়ে যাওয়া দুর্বল চিত্তের আমি অনেক কিছুতেই আর আনন্দ খুঁজে পাই না।
তারপর ......... হ্যা তারপর একদিন মাথায় গল্পেরা আর আনাগোনা করবে না। লেখার প্রেষনাও চলে যাবে। এ সমস্ত আসা যাওয়া গান গাওয়া একদিন সব গল্প হয়ে যাবে। আচ্ছা যাক, যা গল্প হওয়ার তা গল্প হয়ে যাক। আসুন আমরা একটা গান শুনি
তানবীরা
২৮/০৪/২০১২
{অনেক চমৎকার সব মূল্যবান লেখায় এবির নীড়পাতাটা আজকাল ঝকমক করে। আমারো কেনো জানি হঠাৎ লেখা দিতে ইচ্ছে করল। তাই দিলাম বেহুলার ভাসান। আগের অফিসগুলোতে লুকিয়ে অভ্র ইন্সটল করে নিয়েছিলাম। এই অফিসের লক্ষীন্দরের বাসর ঘরে কোন সাপ গলছে না, তাই লেখালেখি আপাততঃ শিকেয়। যতোদিন কোন সাপ গলানো অফিস না পাবো, লেখালেখি বোধহয় এখানেই সমাপ্ত। অফিসে বসে না লিখলে আর লেখাই হয়ে ওঠে না। যারা না লেখার কারণ জিজ্ঞেস করেন, আপাতত এটাই কারণ}
অনেককে দেখেছি নিজেদের পরিবর্তন মানতে চাননা, মাঝে মাঝে বলে উঠেন ২০ বছর আগে আমি যেমন ভাবতাম, আজো তেমনি ভাবি। পরিবর্তনকে এভাবে বিশ্লেষন করতে পারা সাহসের ব্যাপার, তাতাপু। আর ঝাঁকুনিতেও সবাই নড়বড় করে, এক্ষেত্রেও কেউ স্বীকার করে, কেউ করেনা। খুব ভাল লাগল লেখাটা। কিছু জায়গায় রিলেট করতে পারি, বৃষ্টির ব্যাপারটা যেমন। একটা মন খারাপ মন খারাপ ভাব আছে যদিও। সেটাকে ফুঁ দিয়ে উড়ায়ে দিলাম। ভালো থাকবেন।
বিশ বছর ধরে যারা একই রকম থাকতে পারেন তারাতো নমস্যরে শর্মি। সোজা কথা না বিশ বছর একই রকম থাকা।
তুমি কেমন আছো? নতুন লেখা মিস করছি তোমার।
বুঈড়া হৈয়া গেছেং আফাজী বুঈড়া হৈয়া গেছেং
চুল পাকিলেই কি লুকে হয় বুড়ো?
গান্টির ভিডু দেক্তে গিয়া ভাবতেছিলাম কৈযানি দেকছি ভিডুটা। পরে দেহি কন্সেপ্টে স্বীকার করা আছে ভিডুটার কতা। যাউক পুরা চুরি কৈরা বানায়নাই।
ভালো জিনিস চুরি করলে গুনাহ হয় না, হাদিসে আছে
মাঝে মাঝে ভাবি, মানুষের জীবনে এত হাহাকার কেন? কেন মানুষকে তার ফেলে আসা অতীতকে নিয়ে হতাশায় নিমজ্জিত হতে হয়? আমাদের বতর্মানটা কেন অতীতের মত স্বর্ণালী হয়ে থাকেনা?
এতসব কেন'র ভীড়ে মনে হয় জীবনে কিছুই করতে পারিনি, হতাশায় মোড়া জীবনটা যেন এক মাকাল ফল।
অসম্ভব সুন্দর লেখার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ আপু, লেখাটা পড়ে আমি নিমেষেই আমার অতীতে চলে গিয়েছিলাম।
ভাল থাকুন সবসময় আপনার প্রিয়জনদের নিয়ে। শুভেচ্ছা রইল।
আপনিও ভালো থাকুন, শুভ কামনা আপনার জন্যে
বুড়া হয়ে গেছেন তো, তাই নির্লিপ্ত থাকেন।
রোজ কতো শিশু জবাই হচ্ছে, খুন হচ্ছে। বোমায় আগুনে অসুখে কতো মানুষ মারা যাচ্ছে। বুড়া হতে পারা ভাগ্যের ব্যাপার সাঈদ সাহেব। বুড়া যে হতে পারছি নিজেকে তাই ধন্য মনে করছি
জীবনে যে হঠাৎ করেই বড়ো পরিবর্তন এসে যায়, সামলে নিতে একটু তো সময় লাগেই আপু, দেন না নিজেকে সেই সময়টা। আর কত ঝড়-ঝামেলা মাথায় নিয়েও সবটা ঠিকঠাক মতোন করেও, এমনি করে আমাদের আড্ডাতে কথার ফুলঝুরি ছুটাতে পারেন, এমনি দারুন করে নিজের উপলব্ধির একাল সেকালের কথাগুলো লিখে দিতে পারছেন - এটা কি কিছু ইন্ডিকেট করে না? কেন দূর্বল ভাবছেন! আর তুলতুল করে আমাদের বড়ো করা হয়েছে বলেই যে পারবো না, তা কিন্তু নয়, ঝাকুনি গুলো আমাদের নড়বড় করে তো বটেই, কিন্তু দেইখেন আপু, নিজেই নিজেকে অবাক করে দিবেন সব গুছিয়ে আনার দক্ষতায়।
লেখাটা দারুন হয়েছে।
মাহফুজুর সাবের মতোন বস, এমনি করে অভ্র'রে বান মেরে রাখতে পারলো!! কি লাভ অই হাসি হাসি মুখ রেখে! হুহ!
তোমার কথাই যেনো সত্য হয় জেবীন। একটা অজানা ভয় তাড়া কড়ে বেড়ায়, নিজের ওপর আস্থা রাখতে পারছি না
দারুণ ! নষ্টালজিক ! অনেকদিন পরে একটা অসম্ভব ভাল লাগা উপহার দিলেন । ধন্যবাদ ! ভাল থাকুন । আপনার পিচ্চিটা কেমন আছে ? এখনো কি বলে, ' মা প্লীজ এখন মরোনা ?
আমরা ভালো আছি ধন্যবাদ, আপনাকে
দারূণ লেখা হইছে...
আর টেনশনে থাইকেন না। এভ্রিথিং উইল বি (বেটার সে মাস্ট বি) ফাইন সুন...
"তারপর একদিন মাথায় গল্পেরা আর আনাগোনা করবে না-----"
সেই অনাগত অনাহুত দিনগুলোর কথা ভেবে এখন থেকেই উদাস আছি
এমনি করে আমাদের দিনগুলো সোনালী অতীত হয়ে যায়, যাচ্ছে। এটাই নিয়ম। এটাই প্রকৃতি। এ থেকে কারো নিস্তার নাই। প্রকৃতি কোনো অনিয়ম সহ্য করেনা। লেখা ভালো পাইলাম, ক্যাপ্টেন
ধন্যবাদ দাদাভাই
অসম্ভব ভালো লাগলো। এই লেখা পড়ে নিজের ভবিষ্যৎ জীবনের একটা চিত্র দেখতে পেলাম।
আপনার অফিসের লক্ষিন্দরের অফিসে সাপ গলুক। এই প্রত্যাশা করছি।
ভালো থাকুন।
আমিও এই প্রত্যাশায় জীবন কাটাচ্ছি
গল্পগুলো আসলে এরকম অনেকগুলো জীবনের সমন্বয়।
হবে হয়তো
এরকম লেখা পড়ার পর কিছু বলাটা কঠিন হয়ে পড়ে। বলতে গেলে হয়তো নিজের মা'র কথা বলা শুরু করবো, সেই কথা আর ফুরোবে না। এক জীবন ধরে লিখে গেলেও মা'র কথা বলে শেষ করতে পারবো না...
একদিন সবকিছু গল্প হয়ে যায়... সত্যিই গল্প হয়ে যায়...
হুম গল্প হয়ে যায়
ভালো থাকুন।
লাইফ বড়ই আজিব একটা জিনিস।
কখন যে ঠিক কতটুকু বদলায় গেছে বা যাবে, খেয়ালই করা হয় না।
মাঝে মাঝে একটু অবাক ই লাগে ভাবতে,
জীবনের একেক ভাগে একেক রকম সত্ত্বার ভেতর কোনটা আসলে আমার আমি?!
লেখায়

এরপর একটা বাক্স দিও। এতো তারা আমি কোথায় রাখি?
এবি তে আমি প্রথম কমেন্ট করেছিলাম আপনার এক লেখায় অতিথি হয়ে, এত সহজ করে সত্য ভাবনাগুলো লিখেছিলেন. আজ আবার এই লেখাটা . মনে হচ্ছে যেন নিজেরই জীবন বইয়ের লেখায় পড়লাম..
জীবনের বাঁকগুলো এত দ্রুত বদলে যায়, তার সাথে যারা সামলে চলতে পারেন, তারা আসলেই নমস্য, আমার কেন জানি মনে হয় আপনিও সেই দলের..
অনেক শুভকামনা থাকলো..
আপনার কথায় আমি লজ্জা পেলাম। এতো বড় বিশেষণ পাওয়ার মতো আমি কেউ না। ভালো থাকবেন। সময় প্রমান করে দিবে আপুমনি আমি কোন দলের
দারুন...
~
আমি যেন নিজেকে দেখতে পাচ্ছি। একরাশ ভয় এসে ঘাপটি মেরে বসেছে মনের ভেতর

বিভিন্ন কারণে আমি আমার দুনিয়াটা ছোট করে রেখেছি। এর পরিধি আমি চাইলেই মাপতে পারি। একদিন হয়তো (হয়তো না, শিওর) আমি আবার কেন্দ্রে পৌঁছে যাবো।
==========================
লেখাটা অনেক ভালো লেগেছে, আপু
তুমি অনেক ছোট খুকি। তোমার অনেক কিছু দেখার আছে। অযথা টেনশান নিও না
......................................................................
অনেক আগেই লেখাটা পড়েছি । মনে হইছে, আরে!! এতো আমারই কথা!! কিছু বলতে ইচ্ছা হয়নি ।
খুব ভালো লিখেছো আপু । অনেক ভালো ।
ধন্যবাদ ভাই
লেখাটা যতবারই পড়ি তখনি মুগ্ধ হই!
লেখাটা আম্মুকে পড়তে দিবো।

পড়লাম। বুঝলাম। তবে আপনি যে লিখে যাবেন, তা বলতে পারি। থেমে যাবেন না।
এবার যখন বাড়ি যাব - এই লিখাটা নিশ্চয় আমার মা কে পড়ে শোনাব - ভালবাসা রইলো - রইলো অনেক শ্রদ্ধা আর শুভ কামনা - একজন সিলি (?) মায়ের জন্য.
চমৎকার লিখেছেন !

ভালো লেগেছে।মাকে কতোই না করুণা করতাম তখন। দেশের কোন খবর রাখে না, কোন সচেতনতা নেই, কি জীবন শুধু রান্না আর খাওয়া, কাপড় ধোয়ানো, কি সিলি মহিলা। এ জন্যেই দেশের এ অবস্থা, তসলিমা নাসরিন তাইতো বলে। আর নিজেকে ভাবতাম বড় সমাজ সচেতন কেউকেটা।
আমার মাকেও কেন জানি এমনই মনে হয় আমার।হয়তো আমার মেয়েও এক সময় আমাকে এমনই মনে করবে।মা বোধহয় কিছুই জানে না।ভাবনা গুলো নিশ্চয়ই বদলাবে কোনো একদিন।সেই একদিনটা কবে সেটা অবশ্য নিশ্চিত বলতে পারি না।
মন্তব্য করুন