কোমল অনুভূতিসম্পন্ন মানুষদের সমীপে দুটি কথা
বাংলাদেশের মানুষ কোমল অনুভূতিসম্পন্ন। ধর্ম নিয়ে একটি কথাও তারা সইতে পারে না। তাদের অনুভূতি বিপন্ন হয়ে পরে। যারা তাদের অনুভূতিতে আঘাত হানবে তাদের যেকোন ধরনের শাস্তি যথার্থ। রাস্তায় কুপিয়ে কুপিয়ে তারা বিশ্বজিৎ হত্যা দেখতে পারে, মোবাইলে ভিডিও করতে পারে, চোর সন্দেহে বিপুল বিক্রমে পিটিয়ে পিটিয়ে যেকোন মানুষকে রাস্তায় সাপ মারার মতো করে মেরে তার ভিডিও ফেসবুকে আপলোড করতে পারে, তাতেও কোথাও কারো কোন অনুভূতি বিপন্ন হয় না। শুধু প্লীজ ধর্মে হাত দিও না, নট টু টাচ ......... একজন মানুষও কী দ্বিধাহীন কন্ঠে বলতে পারে না, “আস্তিক-নাস্তিক নির্বিশেষে যেকোন মানুষের এ ধরনের মৃত্যু কোন সভ্য দেশের ভূখন্ডে কাম্য নয়। আমরা এই অন্যায়ের তীব্র নিন্দা জানাই।“ তারা কী তাহলে সৃষ্টিকর্তার ওপর আস্থা রাখতে পারছে না, পরকালের শাস্তি নিয়ে কী নিজেরাই দ্বিধায় আছে?
ধর্ম, বর্ণ, জাতি, গোত্র, ভাষা নির্বিশেষে যেকোন হত্যা বা অন্যায়ের বিরুদ্ধে যারা প্রতিবাদ করে, যারা কোন সীমার মধ্যে নিজেকে বাঁধে না, তাদের বিরুদ্ধে মানুষের অভিযোগের কিংবা ঘৃণার অন্ত নেই। মুক্তমনা, নাস্তিক প্রতিটি শব্দই অত্যন্ত ঘৃণার সাথে উচ্চারিত হয়। ব্যঙ্গ করে বলা হয়, মুক্তমনা আবার কী জিনিস?
মুক্তমনা হয়তো তারাই যারা হাজার হাজার বছর আগে অন্যে কী বলে গেছে কিংবা কী করেছে সেটাকে গুরুত্ব দেয়ার থেকে বর্তমান সময়ে নিজের শিক্ষা, বিবেক, বুদ্ধি, নৈতিকতার ওপর বেশি আস্থা রাখে। শোনা কথায় অন্ধ ভাবে বিশ্বাস করার চেয়ে যুক্তিকে বেশি প্রাধান্য দেয়
কোমল অনুভূতিসম্পন্নদের বলছি, মহানবী তাঁর বাবা দাদার ধর্ম প্রচার করেননি। তিনি নতুন চিন্তা ভাবনা প্রচার করেছিলেন, প্রচলিত বিশ্বাসের বাইরে যেয়ে নতুন ভাবনা প্রচার করলেন, সেই অর্থ তিনি মুক্তমনা ছিলেন না? তিনি আক্রান্ত হননি সনাতন বিশ্বাসীদের দ্বারা? তিনি তার সময়ের প্রয়োজন অনুযায়ী তার আশপাশের দেখা অনাচার, অবিচারের বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলেননি? পরিবর্তন আনেনি আরব সমাজে?
ছোট বড় অনেক যুদ্ধের পর, হাজার মানুষের কল্লা কেটেই আজকের শান্তির ধর্ম প্রতিষ্ঠা হয়েছিল। পূর্ব পুরুষদের পূজার মূর্তি ভেঙ্গেই কাবা ঘর প্রতিষ্ঠা হয়েছে, তখন কোমল অনুভূতি কোথায় ছিলো? গ্যালিলিও, ব্রুনো, সক্রেটিস কেউই কোমল অনুভূতি পায়নি। কোন যুগেই পায়নি। নবী বোধহয় তখনো জানেননি আরবদের পরেই যেই বর্বর জাতি পৃথিবীতে আছে তার নাম বাঙালি। জানলে তার পরবর্তী নবী বাংলাদেশেই আসতো। যুগে যুগে যেখানে হেদায়তের দরকার সেখানেই নবীর আবির্ভাব।
শুভানাধ্যায়ী, বন্ধুরা পরামর্শ দিচ্ছেন, ধর্ম নিয়ে কিছু লিখলে যেনো নিজ নামে আর না লিখি, ছদ্মনামে লিখতে। কোমলপ্রাণের মানুষদের অনুভূতিতে আঘাত দেয়ার ফল ভাল হবে না। কিছু উদাহরণতো চোখের সামনেই আছে। লিখবো না কিছু তাই আপাতত ভাবছি। আর যদি কিছু কখনো লিখি তাহলে নিজ নামেই লিখবো। আর কতোদিন কোমল অনুভূতিসম্পন্ন মানুষের ভয়ে মুক্তমনারা নিজের নাম পর্যন্ত লুকিয়ে ফেলবে? কবে কাটবে এই অমানিশা ...............
" আমি ভেবে পাইনে দিশে
সব জিনিস যে পয়দা করলো
সে পয়দা হইলো কিসে?"
~লালন
সহমত
ধন্যবাদ
একটা ভয়ের সংস্কৃতিতে আমরা ক্রমশ নিমজ্জিত হচ্ছি। আমাদের ঠেলে দেয়া হচ্ছে ভয় আর অভ্যস্থততার মধ্যে। জানি না এর শেষ কোথায়?
শেষ নেই -------- বাঙালি মারাত্বক ভন্ড জাতি
কোনভাবেই এমন মৃত্যু কাম্য নয়। কোনভাবেই না। তীব্র নিন্দা সবসময়। এতে করে আমার মত সাধারণ মানুষের সৃষ্টিকর্তার উপর থেকে এতটুকু আস্থা কমে যায় না। কমবে কেন? কমার প্রশ্ন আসে কেন? যারা বলে একজন নাস্তিক মারা গেলে নিন্দা/ ক্ষোভ জানালে সৃষ্টিকর্তার প্রতি আস্থা কমে যাবে সে তো সৃষ্টিকর্তার শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি না। সে মানুষ????? এসব নিয়ে কথা বলতেও ইচ্ছা করে না। বিষয়গুলি বড় বেশী তিক্ত হয়ে গেছে। একটা মানুষকে এতজনের সামনে এভাবে মারা হলো আমার দেশে এইটা বিশ্বাস করতেও অনেক কষ্ট। কিন্তু এটাই বাস্তবতা।
ধর্মকে, সৃষ্টিকর্তাকে বিশ্বাস করা / না করা যার যার বিশ্বাসেই থাকুক। যে বিশ্বাস করবে না তার যেমন যুক্তি আছে, যে গভীরভাবে বিশ্বাস করে সে তো এই বিশ্বাস ধারণ করে, লালন করে। আমি কঠিনতম বিপদে আমার সৃষ্টিকর্তার কাছেই আশ্রয় চাই। এইটা আমার আশ্রয়, আমার বিশ্বাস। আমি বিশ্বাস করি একজন আমাকে সৃষ্টি করেছেন, আমি এমনেই আসিনি। আমি চাইলে পারি না একটা ধুলি কণাও সৃষ্টি করতে। যার যার যুক্তি, বিশ্বাস তার কাছেই থাকুক। কেউই কাউকে আঘাত না করুক।
জ্যোতিকে এখানে দেখে ভাল লাগলো
আমি তো এখানকারই মানুষ আপু
মন্তব্য করুন