আমি এখন চাটগায়ে (প্রথম পর্ব)
আমি এখন চাটগায়ে
আব্দুল মোনেম লিঃ,কন্সট্রাকশন কোম্পানি গুলোর মাধ্যে এই মহুর্তে আমার মনে হয় সবচেয়ে বড় কোম্পানি। এই কোম্পানিতে যোগ্যতা সম্পন্ন চাকরি হলে খুশি হবারই কথা আমিও খুশী।আমি একটু বেশীই খুশী, কারন সৌম্য চেহেরার আমার যে বস(ডাইরেক্টার, আক্তারুজ্জামান বাবু)তিনি যে প্রতিষ্ঠান থেকে গ্রাজুয়েট ডিগ্রী অর্জন করেছেন, আমিও সে প্রতিষ্ঠান থেকেই গ্রজুয়েশন করেছি।একে তো সৌম্য চেহেরা। তদুপরি অমায়িক ব্যবহার, আমাকে এতটুকুই মোহাবিষ্ট করল যা আর একবার ছাত্রবস্থায় হয়েছিলাম, বর্তমানে জেলবাসি জাতীয়তাবাদী দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব জনাব ফকরুল ইসলাম আলমগীর স্যারকে কলেজে দেখে।
বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমী (বি,এম,এ) ভাটীয়ারীতে আব্দুল মোনেম লিঃ ১২০০কেডেটের বাসস্থান নির্মাণ কাজের একটি প্রকল্প পেয়েছেন, অনেক বড় প্রকল্প, সাইট মোবিলাইজেশন হবে তাই পরদিন (আমার নিয়োগের) স্যারেরা ভিজিটে যাবেন আমাকেও যেতে বললেন। কিন্তু উনাদের টিকিট কাটা হয়ে গেছে, আর এত স্বল্প সময়ে টিকিট পাওয়া যাবে কি না তাই স্যার বললেন আমি আর জি,এম সাব (জোহা স্যার) আগে যাই, আমরা তো দুই তিন দিন থাকবো, তুমি একদিন পরে এসো। আমার সাথে কোন ইয়ার লাইনের ঠিকানা বা ফোন নম্বর ছিল না। স্যার নিজেই নেট থেকে কটা এয়ার লাইনের ফোন নম্বর দিলেন। ওখানে বসেই কথা বললাম, কিন্তু কনফার্ম করলাম না।
যেহেতু দেশে নিরবিচ্ছিন্ন হরতাল অবরোধ জালাও পোড়াও চলছে তাই এয়ারের টিকিট পাওয়া অনেক কষ্টকর। লো কষ্টের টিকিট তো সোনার হরিণ তার উপর আমার যে এয়ার লাইন পছন্দ তার ভাড়া কেন যে চিটাগাং লাইনে এত বেশী বুঝলাম না।রিজেট এয়ারে টিকিট পেলাম তাও এক ঘন্টার মাঝে সংগ্রহ করতে হবে,না হয় পাওয়া যাবে না। সে ক্ষেত্রে বিজনেস ক্লাস নিতে হবে। যাক বিসমিল্লাহ বলে রওনা দিলাম। গুলশান এক এ ওদের অফিসে যখন পৌছলাম তখন দেড় ঘন্টা পার, তবুও অফিসে ডুকলাম। রিসিপ্সনে ঢুকেছি,রিসিপসনিষ্ট বললেন। দু,জন কাষ্টমারকে ফেরত দিলাম আপনি দুই বার ফোন করেছেন তাই। এটা উনার বিজনেস পলিশি না সত্যি, বুঝলাম না তবে টিকিট পেয়েছি তাতেই আমি মহাখুশি।
এবার হরতাল অবরোধে যেভাবে মানুষকে মিষ্টি আলু পুড়া পুড়ছে তাতে বাসা থেকে বের হলে নিজেই তেমন পরিস্থিতির শিকার হব কিনা তা শুধু ভবিতব্যই জানেন।আর চিটাগাং এয়ার পোর্ট থেকে ভাটিয়ারী সে তো অনেক দূর। সেটা জানলাম জাতীয়তাবাদী দলের একনিষ্ট কর্মী নেতা এবং জনাব রিজভী ভাইয়ের একনিষ্ট সহচর নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, জনাব ইকবালুর রহমান রুকনের কাছ থেকে, কারন সে ফোজ়দার হাট ক্যাডেট কলেজ থেকে এইচ এস সি পাশ করেছিল। নিরহংকারী পরোপকারী এই বন্ধুটির সাথে বি, আ্ই, টি (রুয়েট) রাজশাহীতে পড়ার সৌভাগ্য আমার হয়েছিল।
এয়ার পোর্টে নেমে সি,এন,জি নিয়ে বি,এম,এ র পথে চলছি।এই প্রথম এয়ারে চিটাগাং, তাই রাস্তার পাশের নয়ন ভুলানো দৃশ্য আগে চোখে পড়েনি। দুবাইতে সুমুদ্র শাসন দেখেছি। সমুদ্রের দুই তীর বাঁধানো তবে সমুদ্র তীরবর্তী রাস্তা কদাচিত দু এক জায়গায় সমুদ্রের কাছে এলেও আবার দূরে হারিয়ে গেছে।
এয়ার পোর্ট থেকে সমান্তরাল সড়ক মাইলের পড় মাইল ছুটে চলেছে, সমুদ্রে ভাসমান বিশাল বিশাল জাহাজ, ছোট বড় কত রকমের জলযান আপ্ন আপন কাজে নিয়াজিত থেকে সমুদ্রের সৌন্দর্যকে আকাশ চুম্বী করে তুলেছে। আর আমার বাহ্ন সি এন জি তার স্মস্ত শক্তিতে আমাকে নিয়ে এগিয়ে চলছে গন্তব্যের দিকে। দুবাইয়ের রাস্তা, সেখানে সবুজের ছায়া তো দুরের কথা কোথাও একটি গাছও চোখে পড়ে না। আর এখানে, চাটগায়ে, পুড়ো রাস্তার দুপাশে কত রকমের গাছ, যাদের ছায়ায় ভর দুপুরেও যেন গরমের পরিবর্তে শান্ত শীতল স্নিগ্ধতায় শুধু মুগ্ধই করেনি, সৃষ্টি কর্তাকে শত সহস্র বার স্বরণ করিয়েছে আর কৃতজ্ঞতায় আঁখি বন্ধ করে মনের অজান্তেই বির বির করে বলছিলাম, হে মাবুদ তুমি আমাকে/আমাদের এত সুন্দর একটা দেশে জন্মিয়েছ,সার্থক জনম খোদা, আমার জনম সার্থক।
(স্ংগৃহীত গান)
তোমার নামে যদি গান গাওয়া হয়
গান সুন্দর হয়
তোমার সৃষ্টি পানে যদি চাওয়া হয়
চোখ সুন্দর হয়।
তোমার নূরের আলো
চাঁদকে দিলে চাদ জোৎস্না পেল
তোমার স্নিগ্ধ মায়া শিশির পেয়ে
সে যে শুভ্র হল
তোমার গন্ধ যদি ফুলে দেয়া হয়
ফুল সূরভিত হ…য়।
( গানটি টিভিতে শুনে যতটুকু পেরেছিলাম লিখেছিলাম, কোন বন্ধু যদি জান বাকি অন্তরা টুকু লিখে দিও। আমি কোথাও গাওয়ার সুযোগ পেলে এই গান্টি প্রথম গাই)
(চলবে)
অভিনন্দন!
জীবন্টা অনেক কঠিন, আর আমার প্রফেশান, সেটা এম্ন একটা জায়গা যে লেখালেখি কে অনেকে ফালতু সময় নষ্ট করা মনে করে। কিন্তু আমি তো জানি আমি কি মিস করি কাদের মিস করি।
তাই অনেকদিন পর এলেও আপ্নারা যে আমাকে সানন্দে বরন করেন তখন আবেগাপ্লুত হয়ে যাই।
অভিনন্দন
ভালো লাগলো। আজ যেটা সমসাময়িক ঘটনা সেটাই একদিন স্মৃতির আয়নায় উকি দেবে।
সুন্দর লেখার জন্য ধন্যবাদ।
মন্তব্য করুন