সাদাসিধে কথা
আজ তেইশ দিন হল বাংলার দামাল ছেলেরা পথে নেমেছে রাজাকারদের ফাঁসির দাবিতে আর তাতে সমর্থন জানিয়ে যোগ দিয়েছে লাখো জনতা। মন ভরে যায়। সচরাচর এই দেশের প্রেক্ষাপটে মন ভালো হবার মতো কিছু তো ঘটে না। তাই ব্যাক্তিগত অনেক সুখদুঃখ ভুলে এই শাহবাগ প্রজন্ম চত্বরে ডুবে আছি দিনরাত।
এরই মাঝে খেয়াল হল আজ আমার গুড়ি মেয়েটার বয়স ছয়মাস হয়ে গেলো।আমার দুই মেয়ে –রাইসা রাইমা, ওদের নিয়ে আমার এই নন্দনকানন। বড়টির আট বছর।
ছোটটি অর্ধবছর পার করে দিল কী করে তাতেই অবাক হচ্ছি ! দ্রুত সময় যাচ্ছে, অথচ সে যখন আমাতে যুক্ত ছিল তখন এক একটা দিন অনেক লম্বা মনে হতো। কারন ওকে পেতে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে । তিন বছর আগে আমার আরেকজন অনাগত সন্তান এই পৃথিবীর রঙরূপ দেখার আগেই ঝরে পরেছে আর রাইমাকে কনসিভ করার পর থেকে সেই লক্ষণ গুলোই আবার দেখা যাচ্ছিলো আমার মধ্যে, নানান শারীরিক জটিলতায় ছিলাম। এমন অবস্থায় ছিলাম যে প্রথম পনের দিন ওর অস্তিত্ব আছে কি নেই তাও স্পষ্ট ছিল না । তারপর হৃদস্পন্দন পাওয়া গেলো.. সে অনুভূতি বুঝানো যাবে না ! অতঃপর শুরু হলো বুক ভরা আশঙ্কা নিয়ে প্রহর গোনা ।সেই প্রথম থেকে ওর জন্মের আগের দিন-মোট তের বার আলট্রাসাউন্ড করা হয়েছে, প্রতিবারই আমি ভয়ে ঠাণ্ডা হয়ে ডক্টরের মুখের দিকে তাকিয়ে থাকতাম- কি জানি ভয়ংকর কিছু শুনবো ! বেবি ভালো আছে শুনে ঘাম দিয়ে জ্বর ছাড়ত। এরই মধ্যে দুটো কিডনিই প্রায় অকেজো করে নিয়ে আমার বাবা ভীষণ অসুস্থ হয়ে ঢাকায় এলেন। হসপিটালে গিয়ে সারাদিন বাবার পাশে বসে থাকতাম। আল্লাহর অশেষ রহমতে বাবা মোটামুটি সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেলেন । শান্তি পেলাম। দুঃখও পেলাম মারাত্মক। কিন্তু থাক,সে প্রসঙ্গ ভিন্ন। শেষের দিকে বাথরুমে পরে গিয়ে তো ধরেই নিলাম আর রক্ষা হল না, এখানেও সৃষ্টিকর্তার দয়া।কোন ক্ষতি হয় নাই। তারপর আরও কিছু সমস্যা পেরিয়ে সে এলো। ভয়ে ভয়ে ডক্টরকে প্রশ্ন করেছিলাম- সে ঠিক আছে তো ?
এরপর থেকে সময় ছুটে চলেছে । কিন্তু আসল কথাই বলিনি আমার এই সময়টাতে সুখেদুঃখে, নির্ঘুম রাতে, ব্যাথাভরা দিনে যিনি সবসময়য় আমার পাশে ছিলেন –আমার দিপি খালামনি। খালামনি বিনা এই কঠিন পথ পার করা ভীষণই কঠিন হতো আমার জন্য। আরও একজন পাশে থেকে সাহস দেয়(মাঝে মাঝে ভয়ও দেখায়) সে লিটন, যার অভিধানে দুশ্চিন্তা শব্দটাই নাই।
২৭-০২-২০১৩
সাদাসিধে কথা খুব ভাল লাগল।
সবাই ভাল আছে জেনে আরো ভাল লাগল।
আহারে! সবাই ভালো থাকুক সবসময়। শুভকামনা আপনাদের জন্য
আপনি জীবনে বেশ বন্ধুর(উঁচু-নিচু) পথ দিয়ে অতিক্রম করেছেন। জীবন এমনিভাবে দ্রুত কেটে যায়। যদিও নিজের সন্তান এখনো নেই তবুও আমার ছোট্ট দুই ভাগনে-ভাগনীকে নিয়ে অতীতে বেশ মধুর সময়ে অতিবাহিত করেছি, তাই আপনার অনুভূতি বর্তমানে কেমন তা কিছুটা হল উপলব্ধি করতে পারি। আপনার জন্য শুভকামনা রইল।
দুঃসময় কেটে গেছে, এটাই আসল কথা।
সবাইকে নিয়ে ভাল থাকুন, সবসময়।
ভাল থাকুন
মন্তব্য করুন