একটা অদ্ভুত পলিসি!!!!
দেশের অবস্হা কেমন? এই কথাটা এখন আর কেউ এক কথায় দিতে পারে না। কারো কাছে এই প্রশ্নের উত্তর নেই এটা ভুল কথা। রাস্তার টোকাইটাও এই প্রশ্নের উত্তর দিতে পারবে খুব ভালো ভাবে।
একটা সময় রাস্তার টোকাই যারা তারা টিকটিকির লেজ দিয়ে নেশা করতো। রাংতা পুড়িয়ে চামচে গরম করে ভাব নিতো, রাস্তায় উপুড় হয়ে শুয়ে থাকতো। যারা মেয়ে হয়ে জন্মাতো তারা প্রতিরাতে এরকম নেশার ঘোরে কতবার ধর্ষিত হতো তার কোনো হিসেব থাকতো না।
সাভারের অদূরে জায়গার নামটা ভুলে গেছি এক খ্রিষ্টান পাদ্রির দেখা পেয়েছিলাম। গ্রামীন ফোন থেকে আমাদের একটা টিম পাঠিয়েছিলো তার জন্য ফ্রিতে ইন্টারনেট কানেকশন ঠিক করে দিতে।
খুব সুন্দর একটা জায়গা ছিলো। যতদূর চোখ যায় শুধু ধান ক্ষেত, তার এক কোনে দাড়িয়ে ৫ তলা পাকা বিল্ডিং। ওখানে ঢুকতেই দেখি বিশাল একটা কক্ষে অনেকগুলো ছেলে মেয়ে বিভিন্ন বয়সী গ্রুপে গ্রুপে ভাগ করা। সবাই বিশাল একটা থালে রাখা চাল আছে সেগুলো থেকে ময়লা আলাদা করছে।
খুব লক্ষ্য করে দেখার মতো কিছু ছিলো না, কিন্তু যখন দেখলাম এসব ছেলের বেশীরভাগেরি হাতে অনেকগুলো কালো দাগ তখন বোঝা যায় এরা কি পরিমান এডিকশনে ছিলো। খ্রিষ্টান পাদ্রীটা এই দেশে এসেছিলেন ৮০ দশকের সময়। দেশটার প্রেমে পড়ে যান, চেষ্টা করেন টোকাই পথশিশুদের বিনামূল্যে চিকিৎসা দিয়ে এদেরকে দিয়ে হাসপাতাল বানানো। ও আচ্ছা, আমি ভুলেই গিয়েছিলাম ওটা একটা পুনর্বাসন কেন্দ্র প্লাস হাসপাতাল যেখানে মাতৃত্ব প্রসূতিজনিত বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা প্রদান করা হতো। ওখানে যারা কাজ করছেন তারা বেশীরভাগই নার্স। ভ্যাটিকানে পাদ্রীটি ঢুকেছিলেন ডাক্তার হয়েই তাই তিনি শিখিয়ে যাচ্ছেন কিভাবে রোগীর চিকিৎসা করাতে হবে।
লোকটা কিছু সুন্দর কথা বলেছিলো। যদিও গ্রামীন ফোনের মটো বড় ব্রান্ডের দল দেখে তাকে মনে হচ্ছিলো তিনি আমাদের মোটেও পছন্দ করছেন না এবং তার চেহারাতে স্পষ্টতই ছিলো আমরা কখন তার এখান থেকে বিদেয় হই।
উনি ওদেরকে শেখাতে চেয়েছেন ধৈর্য্য আর সহনশীলতা। বেচে থাকার জন্য কিছু নীতিবোধ আর ছোটখাটো কিছু কাজ। উনার হাসপাতালে ওষুধ তখনও ফ্রি ছিলো।
একটা মেয়েকে দেখেছিলাম বয়স মনে হয় ১১ কি ১২। যা শুনলাম তা ভয়াবহ অনেকটা উপরের ঘটনার মতোই।
ওখানে আমাদের সাথে এক রিসার্চার গিয়েছিলো বলেছিলো বাংলাদেশে এইডসের মহামারী নেই এটা ডাহা মিথ্যা কথা। এইডসের মহামারী জোন যাকে বলা হয় সেটা হলো ঢাকা মেডিক্যালের আশেপাশের এলাকাটা। ওখানে একিউট এইডসের রোগী থেকে শুরু এইচআইভি পজিটিভ প্রচুর পাওয়া যায়। কিন্তু যেহেতু পথে শুয়ে থাকা এসব মানুষরা সমাজে একটা নেড়ী কুকুরের মর্যাদা পায় সেহেতু এদেরকে নিয়ে কেউ ভাবে না।
আশ্চর্য লাগে আমরা ভয়াবহ ডাইনামাইটের উপর বসে আছি।
সময়টা খুব খারাপ। সাইফুর রহমানের রক্ষনশীল অর্থনীতি অথবা ফখরুদ্দিনের সামরিক নিয়ন্ত্রন বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দাকে ঠেকিয়ে রাখলেও বর্তমান সরকারের অব হেলা এবং বড় বড় ভুলের কারনে আমরা পুরোপুরি সে ছন্দটা হারিয়ে ফেলেছি। এক সময় আমরা বেশ গর্ব করেই বলতাম আমাদের দেশে রিসেশন নামের জিনিসটা নেই, কিন্তু এখন সেটা বলার আর উপায় নেই।
পলিসি মেকাররা কি চিন্তা করছে?
হাস্যকর হলেও যেটা মনে হচ্ছে তারা একটা আকাশ কুসুম স্বপ্ন নিয়ে খেলছে।
কিছু প্রশ্ন রেখেছিলাম:
- জিনিস পত্রের লাগামহীন বেড়ে যাওয়াটাকে কিভাবে দেখা হয়?
উত্তরের আড়ালে যেটা আছে সেটা হলো এটা নাকি নিয়ন্ত্রিতভাবেই করা হচ্ছে। ঢাকা শহর একটা মেগাসিটি এটা অস্বীকার করার উপায় নেই। এই শহরটাতে বেচে থাকার জন্য সবকিছুই আছে। কয়েকটা ভালো ইউনিভার্সিটি, সরকারী অবকাঠামো, পার্ক সবকিছুই। কিন্তু সব পরিকল্পনা ভেস্তে যায় ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার আধিক্য। তাহলে কিভাবে কমানো যায়? সেটা হলো জিনিসপত্রের দাম বাড়িয়ে। ঢাকা থেকে সব তাড়াতে হবে। তারপর ঢাকা শহরটাকে একটা প্লানে তৈরী করতে হবে।
ডিসেন্ট্রালাইজেশন ছাড়া কি ভাবে সম্ভব?
গলা শুকিয়ে যাবে এর উত্তর শুনলে। দেশের অধিকাংশ মানুষের সেই দক্ষতা নেই যেটা দিয়ে ডিসেন্ট্রালাইজেশন করা যাবে। তবে একবার যদি ঘাড় থেকে বোঝা নেমে যায় তখন বিশ্ব ব্যাংক স হ অন্যান্য দাতা সংস্হা এসবে সাহায্য করবে। যদিও বিশ্ব ব্যাংক যাই করছে সেটা নাকি একটা অভিনয়। দেশের জন্য খুব ভালো একটা সময় অপেক্ষা করছে যদি এই আত্মঘাতী (এটা আমার ভাষায়) প্লান গুলো সফল হয়।
আর কিছু প্রশ্ন করার রুচীতে বাধলো না। উপরের প্রশ্ন ছিলো ইউরোপে আসা কোনো এক সচিবের। দেশে থাকলে একে খুন করা যেতে পারতো কারন এরকম লুনাটিক চিন্তাভাবনা এদের মাথা থেকে আসছে যার ফলে একটা কৃত্রিম দুর্ভিক্ষের আগমন অতি আসন্ন।
এই পোস্টের সারাংশ এটাই, দুর্ভিক্ষ আসছে, খুব শীঘ্রই আসছে। টাকার এতো অবমূল্যায়ন আমরা হয়তো কখনো দেখিনি, দুটো বছরে ডলারের বিপরীতে টাকার ২০ টাকা অবমূল্যায়ন: এবার আরো দেখবো। মানুষের হাতে টাকা থাকবে কিন্তু বাজার থেকে প্রায় খালি হাতেই আসতে হবে।
কতগুলো মানুষ মারা যাবে এটা বড় কোনো কথা নয়, খুব জানতে ইচ্ছে করে দেশের মানুষ কি তখনো অস্ত্র হাতে নিয়ে এসব লুটেরা, দুর্নীতিবাজ, অযোগ্য নেতা, নেত্রী আমলাদের বিরুদ্ধে দাড়াবে না? তারপর কি হবে? আবারও কি আরও খারাপ শয়তানের হাতে নিজেদের ভাগ্যকে তুলে দেয়া হবে?
জানতে ইচ্ছে করে!
আসসালামু আলাইকুম দুলাভাই। দেশ জাতি নিয়া দুলাভাইয়ের এই পাড়ায় এই পোষ্টটা ভালো পাইলাম। নিয়মিত লিখেন!
এখানে স্বাগত জানাইলাম। লেখাও পড়লাম
২০১২ তে দুর্ভিক্ষের আশংকা হয়তো নেই তবে সামনে সময় খুব খারাপ!
টাকার অবমূল্যায়ন সবসময় খারাপ জিনিস না । বাংলা শব্দটা যানি ক্যামন । চোখের সামনে একটা ছবি ভাসে, মনে হয় এক লোকের নাম টাকা । সে ধনী কারো ঢুকছে, আর চৌধুরি সাহেব তার দিকে না তাকিয়ে দারোয়ানকে বলছেন এইসব ছোটলোককে ঘরে ঢুকতে দিস না । দারোয়ান ঘাড় ধাক্কা দিয়ে অশীতিপর বুড়া লোকটাকে বের করে দিচ্ছে ।
শব্দবন্ধটা টাকার মূল্যহ্রাসকরণ বা টাকার সরবরাহ বৃদ্ধিকরণ হিসাবে অনুবাদ করলে মনে হয় এতো খারাপ লাগতো না ।
এখানে স্বাগত জানাইলাম। লেখাও পড়লাম
টাকার বিষয়টা আসলেই ভাবার বিষয়।
কিন্তু যার ভাব্লে কাজে আসবে তাদের অত সময় কোথায়!
এবি তে সুস্বাগত।
মন্তব্য করুন