বাবা
আজ কিছুতেই ভলো নেই ত্রিনয়নী। কদিন ধরেই মেঘলা আকাশ। মাঝে মাঝে সূর্যটাকে রুদ্রমূর্তিতে দেখা গেলেও একটা সময় ঝিমিয়ে পড়ে। এটা হওয়াটাও স্বাভাবিক। ঝড়-বৃষ্টি হবে তা ঠিক আছে। কিন্তু তারপরেও এই সব যেন তার কখনও খুব ভালো লাগে না। আবার যে খুব একটা খারাপও লাগে তাও না। কিছু একটা করতে মন চাচ্ছে। ত্রির্শোব্ধ এই রমনীর কোন কিছুই ভালো লাগছে না। অনেক কিছুই মিলে। মন চাচ্ছে একটি ছায়া শীতল হাতের স্পর্শ পেতে। ছোটবেলায় যেমন করে মা আদর করে দিতো। তুলতুলে নরম হাতের স্পর্শে নিদ্রাদেবীর কোলে চলে যেত ত্রিনয়নী। কিন্তু আজ মায়ের হাতের স্পর্শ পেতে ইচ্ছে করছে না। মনে হচ্ছে বাবার আদর পেতে। বাবার আদর! এটা তার কাছে স্বপ্নের মতো। বহুবছর ধরেই বাবা নামক একজন মানুষ খুঁজছে। জন্মদাতাকে বাবার মতো কখনো পাইনি। তবে বছর পাঁচেক হলো একজন মানুষকে সে পেয়েছে। যাকে দেখলে ত্রিনয়নীর, বাবা ডাকতে ইচ্ছে করে। ডাকে, কিন্তু সামনে নয়। মাঝে মাঝে মেসেজ পাঠায়। যখন ত্রিনয়নী কোন কিছু মিলাতে পারে না। হতাশা লাগে, তখনি ছুটে যায় সেই বাবার কাছে। যে তাকে সাহস যোগায়। যে তাকে লড়াই করবার জন্য আবার উদ্যমী করে তোলে। ঘন্টা দুয়েক আগে এই বাবার সাথে তার কথা হয়েছে। কিভাবে প্রান্তিক মানুষগুলোর কাছাকাছি আরও যাওয়া যায়। আজ সেই বাবার হাতে ছোয়া পেতে মন চাচ্ছে ত্রিনয়নীর। মনে হয়, বাবার হাতের স্পর্শ পেতো। তবে বোধহয় ওর আর কোন কষ্ট থাকতো না। বুকের মধ্যে খুট খুট করে যে যন্ত্রণা বহমান নদীর মতো বয়ে যাচ্ছে। তা জুড়াতো। মনে পড়ছে আজ, সেই দিনকার পাগলামীর কথা। কোন কথা-বার্তা নেই। হঠাৎ করেই বলে ওঠে মোবাইল ফোনে "স্যার আপনি আমার বাবা হবেন? আমার একজন বাবা দরকার। বাবার মতো বাবা। হাওমাউ করে কেঁদেছিলেন। ওপার থেকে স্যার বলেছিলেন, "এই পৃথিবীতে তুমি তো একাই চলতে পারো ত্রিনয়নী। তারপরেও তোমার একজন বাবা চাই।" ত্রিনয়নী বলেছিল, "আমি একজন বাবা চাই, আপনি আমার বাবা হবেন স্যার।" ত্রিনয়নী তার সেই স্যারকে একসময় শ্যাডোট্রি নাম দিয়েছিল। যেদিন সোহাগ সব কিছুর দায়িত্ব ত্রিনয়নীর উপর দিয়ে আর বলে গিয়েছিল, দিদি তুমি কিন্তু দেখো। আমার স্বপ্ন বৃথা যেতে দিওনা। আমি ঈশ্বর দর্শনে যাচ্ছি। সেদিন থেকেই এই মানুষটা ত্রিনয়নীকে সাহস যুগিয়ে যাচ্ছে। স্বপ্নটাকে সত্যি করবার জন্য উদ্যমী করে তুলছে। মাঝির মতো পথ দেখাতে চেষ্টা করছে। ত্রিনয়নী কাছে তিনি একজন মাঝিই তো।
চলবে
চলুক....
বুঝে ওঠার আগেই শেষ হয়ে গেল!
বুঝে ওঠার আগেই শেষ হয়ে গেল!
প্রকৃতি নাকি শূন্যতা পছন্দ করে না কিন্তু মা-বাবার শূন্যতা কেউ পূরন করতে পারেনা।
হুমম
মন্তব্য করুন