দালাল আইন এবং দালালবান্ধব সামরিক শাসক
৫৬ হাজার বর্গমাইলের এই ছোট দেশটি পৃথিবীর মানচিত্রে স্থান করে নিতে সাগর পরিমান রক্ত দিতে হয়েছে। আর সেই স্বাধীনতার বিরোধিতাকারী একটি শ্রেণী সেসময় দেশব্যাপী চালিয়েছে গণহত্যা, গণ ধর্ষন, রাহাজানি, মুক্তিযোদ্ধাদের বাড়িতে আগুন দেয়া, লুট এবং মানবতা বিরোধী আরো অনেক কাজ। তারা ভেবেছিলো এসব করে দেশকে স্বাধীন হওয়া থেকে রক্ষা করতে পারবে, আর আমরা আজীবন অধিকারবঞ্চিত পরাধীন জাতি হয়েই থাকবো।
এই যে একটি শ্রেণী ধর্মের দোহায় দিয়ে পাকিস্তানীদের দালালীতে লিপ্ত ছিলো গোটা নয়টি মাস, তাদের শাস্তির জন্যই ১৯৭২ সালে ১০ই জানুয়ারী বঙ্গবন্ধু দেশে ফিরেই উদ্যেগ নিয়েছিলেন বলেই মাত্র ১৪দিনের মাথায় ২৪শে জানুয়ারী "দ্যা বাংলাদেশ কোলাবোরেটরস অর্ডার ১৯৭২" বা "দালাল আইন আদেশ" শিরোনামে আইন প্রনোয়ন করা হয়। নতুন দেশ, নতুন সবকিছু, তাই এই আইনটি চুড়ান্ত হতে আরো তিন দফা সংশোধন করা হয় যথাক্রমে ঐ বছরেরই ৬ই ফেব্রুয়ারী, ১লা জুন এবং ২৯শে আগষ্ট।
জানা যাক, এই দালাল আইনের কিছু উল্লেখযোগ্য ঘটনাবলীঃ
১৭ই মার্চ, ১৯৭২ঃ শহীদ পরিবারের সদস্যরা পাকিস্তানী যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবীতে ঢাকায় মিছিল বের করে।
২৬শে মার্চ, ১৯৭২ঃ বঙ্গবন্ধু জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া ভাষনে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের ব্যাপারে কথা বলেন। অপরদিকে এই বিচারের সাথে পাকিস্তানে আটকে পড়া পাঁচ লাখ বাঙ্গালীকে ফেরত পাঠানোর সাথে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট জুলফিকার আলী ভুট্টো সম্পৃক্ত করায়, জবাবে বঙ্গবন্ধু আটকে পড়া বাঙ্গালীদের ফিরিয়ে দিতে বলেন এবং এই ইস্যু যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের সাথে কোন ভাবে সম্পর্কযুক্ত নয় বলে উল্লেখ করেন। বঙ্গবন্ধু আরো বলেন, শতাব্দীর নৃশংসতম হত্যাকারীদের বিচার হবেই।
১৬ই মে, ১৯৭২ঃ সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, পাক হানাদার বাহিনীর যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের উদ্দেশ্যে বিশেষ ট্রাইবুন্যাল গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় অর্ডিন্যান্স প্রনোয়নের জন্য কাজ এগিয়ে চলছে এবং অচিরেই এই বিচার শুরু হবে।
২রা জুলাই, ১৯৭২ঃ বঙ্গবন্ধু আবারো তার ভাষণে বলেন, বাংলার মাটিতে যুদ্ধাপরাধিদের বিচার হবেই। কেউ তা ঠেকাতে পারবে না।
২৯শে আগষ্ট, ১৯৭২ঃ এদিন তৎকালীন আইনমন্ত্রী ডঃ কামাল হোসেন বলেন, সেপ্টেম্বর মাসে যুদ্ধাপরাধীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের এর তদন্তের পূর্ণাঙ্গ পর্যালোচনা প্রকাশ করা হবে।
অতঃপর পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর এদেশীয় দোসরদের বিচার শুরু হয়ঃ
১১ই ফেব্রুয়ারী, ১৯৭৩ঃ বাংলার বাণী পত্রিকার একটি সংবাদের শিরোনাম, "দালালমন্ত্রী ইসহাকের যাবজ্জীবন কারাদন্ড"। বর্তমান ১৮দলীয় জোটের শরীক খেলাফতে মজলিস এর একাংশের আমীর মাওলানা মোহাম্মদ ইসহাক সেই দালাল মন্ত্রী।
১৪ই মার্চ ১৯৭৩ঃ দৈনিক পূর্বদেশে প্রকাশিত খবরের শিরোনাম, "দালাল আইনে সা-দ আহমেদের যাবজ্জীবন কারাদন্ড।"
১৭ই এপ্রিল, ১৯৭৩ঃ সরকারী এক প্রেস বিজ্ঞপ্তীতে জানানো হয়, গনহত্যা, যুদ্ধাপরাধ, মানবতাবিরোধী অপরাধ, জেনেভা কনভেনশনের আর্টিক্যাল তিন এর লঙ্ঘন, হত্যা, ধর্ষণ, লুটের অপরাধে পাকিস্তানী দখলদার বাহিনীর মধ্যে ১৯৫ জনকে চিহ্নিত করা হয়েছে।
১৮৭ এপ্রিল, ১৯৭৩ঃ অধ্যাদেশ জারির মাধ্যমে গোলাম আযম সহ ৩৮জন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের নাগরিকত্ব বাতিল করা হয়।
১১ই জুন, ১৯৭৩" দৈনিক বাংলার প্রধান শিরোনাম ছিলো, "দালালীর দায়ে মৃত্যু দন্ড"।
১৯৭৩ সালের অক্টোবর পর্যন্ত দালাল আইনের আওতায় দায়ের করা মামলার সংখ্যা ছিলো, ২,৮৮৪। এসব মামলায় মৃত্যুদন্ড, যাবজ্জীবন কারাদন্ড সহ বিভিন্ন মেয়াদে সাজা হয় ৭৫২ জনের। এই আইনের অধিনে ৩৭হাজারের বেশি গ্রেপ্তার হয়। ১৯৭২ এবং ১৯৭৩ সালের পত্রিকার সমূহ পর্যালোচনা করে দেখা যায় কয়েকদিন পরপরই বিভিন্ন পত্রিকায় দালাল আইনে সাজা হবার সংবাদ প্রকাশিত হতো।
অতঃপর ১৯৭৩ সালের ৩০শে নভেম্বর, যেসকল অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি তাদের সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করা হয়। এই সাধারণ ক্ষমায় গ্রেপ্তারকৃত ৩৭হাজারের অধিক এর মধ্যে প্রায় ২৬হাজার ক্ষমা পায়। সাধারণ ক্ষমায় খুব স্পষ্টভাবেই উল্লেখ করা আছে কোন কোন অপরাধগুলো সাধারণ ক্ষমার আওতাধীন নয়। বর্তমানে যেভাবে ঢালাওভাবে অপপ্রচার চালানো হয় যে, বঙ্গবন্ধু সবাইকে সাধারণ ক্ষমা করে দিয়েছেন, ব্যাপারটা আসলে একেবারেই মিথ্যা প্রপাগান্ডা ছাড়া আর কিছুই নয়। এই সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পরেও ১১হাজারের বেশী ব্যক্তি কারাগারে আটক ছিলো। তাদের অনেকের বিরুদ্ধে মামলা বিচারাধীন ছিলো, কেউ কেউ আবার সাজাপ্রাপ্ত হয়ে সাজা ভোগ করছিলো।
কিন্তু হায় অভাগা জাতি, ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগষ্ট স্বপরিবারে হত্যা করা হয়, সেই মহাপুরুষকে যেই মহাপুরুষের কারণে জাতি পেয়েছিলো একটি পতাকা, একটি দেশ, বিশ্বের কাছে নিজের পরিচয়। অতঃপর ক্ষমতা দখলের পালা বদলে ক্ষমতায় আসে সেনাশাসক জেনারেল জিয়াউর রহমান। সামরিক অধ্যাদেশ জারীর মাধ্যমে ঐ একই বছরেই ৩১শে ডিসেম্বর বাতিল করা হয় দালাল আইন। বন্ধ করে দেয়া হয় যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কার্যক্রম। মুক্তি দেয়া হয় সকল যুদ্ধাপরাধীকে। একের পর এক অধ্যাদেশ জারির মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর জারি করা আইন সমূহ বাতিল করা হয়।
এই সামরিক শাসকের আস্থায় পাকিস্তানী পাসপোর্ট নিয়ে দেশে ফিরে রাজাকার শিরোমণি গোলাম আযম, অবস্থান করে নাগরিকত্ব এবং ভিসা ছাড়াই ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত।
এরপর বাকি ইতিহাস আমাদের চোখের সামনেই.......
নতুন কিছু জানলাম!
অসাধারন পোষ্ট। সর্বত্র প্রকাশ করা হউক।
@ মিশু সাহেব
যে তথ্যগুলো দিয়েছেন সেগুলো বিভিন্ন ব্লগে বিভিন্নজনের পোষ্টে বহুবার প্রকাশিত হয়েছে । যা আলোচনায় আসেনা তা হচ্ছে ১৯৫ জন পাকি যুদ্ধাপরাধী জাতির পিতার জীবদদশায় কি করে মুক্তি পেয়ে পাকিস্তান চলে যেতে পারল ? বা খান এ সবুর, কবি তালিম হোসেন, এ রম আরো কিছু বড় দলাল বন্গবন্ধুর হাত ফসকে বঁেচে গেছিল কিকরে ?
গু আজমদের পুণর্বাসিত করে জিয়া যেমন কুখ্যাত হয়েছেন, তেমনি তত্কালীন রথী মহারথীদের চরণে সরণ নিয়েও বঁেচে গেছিল অনেক দালাল ।
১৯৫ জন পাকিস্তানীদের ক্ষমা করা হয়নি। কথাছিলো পাকিস্তান সরকার তাদের বিচার করবে এই শর্তেই চুক্তি সাক্ষরিত হয়েছিলো। এটা অজানা কিছুই নয়। এই ধরনের কথা ইচ্ছে করেই বিভ্রান্তি ছড়ানোর উদ্দেশ্যে বলা হয়
দ্বিতীয়ত, সাধারণ ক্ষমার আওতায় তারাই পড়েছিলো যারা উল্লেখিত অপরাধসমূহের অভিযোগে অভিযুক্ত ছিলো না কিংবা কোন প্রমাণ পাওয়া যায়নি। বিচার ছিলো চলমান, বিচার শেষ হবার আগেইতো বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে দালাল আইন বাতিল করা হলো। তাহলে আমরা কি বিচার চালাচ্ছিলো যেই সরকার তাদের দোষারোপ করবো নাকি আইন সহ বাতিল করে দেয়া সামরিক শাসককে দোষারোপ করবো? নিজের বিবেকের কাছে প্রশ্নটি করুন।
আমি বল্লাম কি আর মশাই শুনলেন কি ?
যেভাবেই হোকনা কেন পাকিরাতো মুক্তি পেয়েইছিল নাকি ? বন্গবন্ধুর সারে তিন বছরে শুূধূ এক ছিচঁকে রাজাকারের ফাসঁির রায় হয়েছিল । তাও পরে আর কার্যকর হয়নি ।
যার নাম বলেছি সে খান এ সবুর জাতির পিতার জীবদ্দশায় মুক্তি পেয়েছিল । এরম আরো অনেকে । পিতা বলেছিলেন, "কার বিচার করব ! সবাইতো আমার ভাই !" গু আজমের নাগরিকত্ব বাতিল করা হয়েছিল ঠিকই, কিন্তু কোন মামলা হয়নি সে সময় । দালাল আইনের জালে আটকা পড়েছিল কেচকী-পুঁটিরা শুধু, রাঘব-বোয়ালরা কেউনা ।
বাংলাদেশে দীর্ঘ ৪২ বছরে ক্রস ফায়ারে কত লোকইতো মারা গেছে । এ ক'টা হায়েনাকে মারতে আইনের এত কচকচি কেন ? ইস্যুটার নিস্পত্তি হোক কেউ কি চায় ?
যেভাবেই হোকনা কেন, পাকিরাতো মুক্তি পেয়েছিলো। এই কথাটা মোটেই অন্য কোন পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে বলা নয়। কথা ছিলো পাকিস্তান সরকার তাদের বিচার করবে। এই চুক্তিতে সাক্ষর করতে বাংলাদেশ বাধ্য হয়েছিলো পাকিস্তানে আটকে পড়া বাঙ্গালীদের ফিরিয়ে আনার জন্য। এটাকে কি মুক্তি দেয়া বলে
বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন কার বিচার করবো, সবাইতো আমার ভাই? এই কথাটা তিনি কখনো যুদ্ধাপরাধীদের ক্ষেত্রে বলেন নি। আমি উপরে পরিষ্কার বলেছি কাদের মুক্তি দেয়া হয়েছিলো সেই সাধারণ ক্ষমার আওতায়। সেই সকল অপরাধে অভিযুক্ত নন কিন্তু পাকিস্তানকে সমর্থন করেছে এমন অনেকেই মুক্তি পেয়েছে।
গোলামের যখন নাগরিকত্বই বাতিল করা হয়, তখন যার নাগরিকত্বই নেই, তার নামে কি মামলা হবে? বিচারতো শুরুই হয়েছিলো আমাদের আভ্যন্তরীন আদালতে। এটা কেমন যুক্তি যে নাগরিকত্ব বাতিল করা হয়েছে কিন্তু মামলা করা হয়নি।
বেড়ে লিখেছেন ভা'য়া ! বূঝলাম নাগরিকত্ব ছিলনা কুত্তাটার, তাই বলে তার বিচার হবেনা ? আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ আদালত কি সে সময় ছিলনা ?
খান এ সবুরের নাম দু'বার লিখেছি আমি, ভা'য়ার চোখে পড়েনিক্কা ? নাকি এড়িয়ে যাওয়া হলো?
আমার বলার কথা হচ্ছে যুদ্ধাপরাধীদের ইস্যুটি জিইয়ে রাখার ব্যাপারে সবাই যতটা আন্তরিক, নিস্পত্তির ব্যাপারে ততটা কেউনা । দায়ে পড়ে পাকিদের ছাড়তে হয়েছিল এটা যেমন ঠিক, হেগের আন্তর্জাতিক আদালতে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা যেত এটাও সমান ঠিক ।
খান এ সবুরের কথা আমি জবাব দিয়েছি, আপনি বুঝতে পারেন নি। সাধারণ ক্ষমার আওতায় তারাই পড়েছে যাদের বিরুদ্ধে সরাসরি ঐসকল অপরাধের প্রমাণ কিংবা অভিযোগ পাওয়া যায় নি।
দায়ে পড়ে পাকিদের ছাড়তে হয়েছিলো যেমন তেমনি যেই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিলো যেখানে পাকিস্তান সরকার তাদের বিচার করবে এই শর্তে তাদের ফিরিয়ে নিয়েছিলো, সেখানে আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা করা সেই চুক্তি অবমাননা করার সমান হতো। এই ব্যাপারটা বুঝতে নিশ্চয় আইনজীবি হবার প্রয়োজন পড়ে না।
মিশু সাহেব, যে চুক্তির কথা বলেছেন সেটা সম্বন্ধে আমার নাই । রেফারেন্স দিন । আমি যতটুক জানি, ৭৪ এ স্বাক্ষরিত যে সাপ্লিমেন্টারি সিমলা চুক্তির মাধ্যমে ভারত পাকি অপরাধীদের ছেড়ে দিয়েছিল তাতে বাংলাদেশ কোন পক্ষ ছিলনা, এমনকি ৭২ এর মূল সিমলা একর্ডেও নয় । চুক্তি গুলো ছিল দ্বিপাক্ষিক , ভারত-পাকিস্তানের মাঝে । স্বীকৃতি পাবার আগ পর্যন্ত পাকিস্তানের সাথে কোন চুক্তি হয়েছিল এমনটা জানা নেই ।
অহেতুক পেঁচা পেঁচি করে লাভ নেই। ভারত-পাকি মিলিত স্বার্থ ও নেতৃত্বের কাছে সে সময় আমাদের হার হয়েছিল নি:সন্দেহে ।
খান এ সবুর কি ৭১ এ এতই নিস্পাপ ছিল যে দালাল আইন তার বাল ভি ছোঁ নাহি ছেকা ?
শেখ মুজিবের সময় কয়টা যুদ্ধপোরাধীর বিচার হয়েছিলো সেটা জানতে চাচ্ছি।
বিচার প্রকৃয়ায় কোনো বিশেষ আদালত কি করা হয়েছিলো ?
খান সবুরের মতো লোক কি ভাবে মুক্তি পাইলো ?
শুধু আইন করলেই হয় না, সেইটার "আন্তরিক" প্রয়োগ করতে হয়। বিচার হলে সেটা কার্যকর করতে হয়।
পোস্টটা আবার পড়ুন, আপনার অনেক প্রশ্নের জবাব পেয়ে যাবেন।
পড়লাম এবং আরো পড়তে চাইই
পড়লাম জানলাম।
সবুর এ খান নিয়ে একটা ডিটেইলস পোস্ট চাই মিশু। কোন ইনপুটের দরকার হলে কাদের ভাইয়ের সাহায্য নিয়েন।
ভালো লেগেছে। লেখা ও কমেন্ট থেকে অনেক কিছুই জানতে পারলাম। ধন্যবাদ মিশু ভাইয়া।
পড়লাম। চলুক এরকম আরো
মুজিবনগর মন্ত্রী পরিষদ যুদ্ধাপরাধের বিচারের জন্যে আনুষ্ঠানিক আলোচনা শুরু করে নভেম্বরের মাঝামাঝি, বাংলাদেশের অভ্যন্তরে কর্মরত বাঙালী সরকারী কর্মকর্তাদের নোটিশ পাঠানো শুরু হয় এই সময়েই( সূত্র: নূরুল কাদের খান- আমার একাত্তর, তিনি সংস্থাপন সচিব ছিলেন, এইচ টি ইমামের মুজিবনগর সরকারের ইতিহাসেও বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে) ১১ই ডিসেম্বরের মন্ত্রী পরিষদের আলোচনায় বিষয়টার প্রধান আলোচ্যসূচিতে ছিলো সুতরাং এখানে শেখ মুজিবুর রহমানের কৃতিত্বটা অহেতুক আলোচ্য সূচিতে এসেছে।
দ্বিতীয় যে বিষয়টা এখানে আসে নি, ১৯৭২ এর ২১শে ফেব্রুয়ারী সুফিয়া কামাল সহ অন্যান্যরা শহীদ মিনারে গণ অনশণ করেছিলেন বুদ্ধিজীবী হত্যার বিচারের দাবীতে, সেটার ধারাবাহিকতায় ১৭ই মার্চ এবং ২৬শে মার্চের কর্মসূচি দেওয়া হয়েছিলো, কিন্তু বিচারের দাবিটা প্রথম উত্থাপিত হয়েছে দৈনিক বাংলার বানী পত্রিকায় ডিসেম্বরের ১৮ থেকে ২২ তারিখের ভেতরেই।
রাসেল ভাই , আলোচনায় অংশ নেয়ার জন্য ধন্যবাদ । দূঃজনক হলো আমরা অনেকেই ইতিহাস নাজেনেই ইতিহাস লেখা শুরু করি ।
মন্তব্য করুন