মুরগা কাহানী
সেই কোন অতীতে এক মনিষী বলে গেছিলেন শুয়োরের খোয়াড়। তারপর কত দিন আর রাত-কত সকাল-কত দুপুর-কত নীরব-কত চান্নি রাইত-কাটাখালীতে কতো স্রোত-কতো কচুরীপানা-কতো ব্রীজ-কতো কালভার্ট-কতো বাত্তি-কতো খাম্বা-কতো জঙ্গল-কতো ষ্টেশান-কতো মাষ্টার-কতো সারেং-কতো নদী মরে গেলো-কতো নারী ভালোবাসাহীন প্রেমেবিক্রির খেলায় মাতলো-কতো পুরুষ তার কাপুরুষোচিত পৌরুষ দিয়ে এসিড নিক্ষেপ করলো-কত শিশু পপকর্ণ-পপকর্ন বলে রাস্তায় রাস্তায় চিতকার দিলো-কতো হকার এক টাকা-দুই টাকা-তিন টাকা দামে পেপার বিক্রি করলো-কতো গাড়ীর নীচে তারেক মাসুদ-মিশুক মুনীরেরা মারা গেলো-কতো এয়ার আহমেদ দেশের মাটিতে শেশ শয্যা পাতবে বলে প্রান দিলো-কতো তাজুল-কতো দিপালী সাহা-কতো রউফুন বসুনিয়া-কতো মোজাম্মেল-কতো মাষ্টার’দা-কতো প্রীতিলতা-কতো ময়েজউদ্দিন-কতো তাজউদ্দিন-কতো মুক্তিযোদ্ধা লাথি-উষ্ঠা খেলো।তারপরে ব্রয়লার প্রজাতির মুরগা জন্ম নিলো ঘরে ঘরে; আনাচে কানাচে। ভরে গেলো মুরগায়। মাংশ খাওন যাইবো মাগার আন্ডা দিবোনা। আন্ডার হালি হইলো ৪০ টেকা। আন্ডা খাইবার চাইতাছো তো তাইলে লেয়ার নামে আরেকটা মুরগা আছে হেইডা লালন পালন করো।
ব্যাপুক খাওন-দাওন খাইয়া তাহারা খাঁচায় কইরা বাজারে আসে। তাদের প্রান আছে কিনা বোঝা যায়না। তারা খাঁচায় ঝিমায়। দোকানদার ক্যাঁক কইরা ধইরা সাঁই কইরা জবাই দিয়া ড্রামে ফেইল্লা দেয় এক ঝাড়ি। এক ঝাড়িতে একদম ল্যাংটা। ভদ্রলোক খায় আর কয়ঃ খাইতাম মুরগা-মায়ে পালতো-সারাদিন বাড়ীর আশে-পাশে ঘুরা-ফেরা করতো-ধান-ভাত খাইয়া চর্বি হইতো। আহারে! মায়ের কথা মুনে নাইক্কা। মায়ের মুরগার কথা মনে পড়তাছে। মায়ে এখনো উচ্চরক্তচাপ শরীরে নিয়ে ছয় রোজা রাখে আর ভাবেঃ আহারে আমার পুলাডা ফার্মের মুরগা খাইতে খাইতে জিহবায় চড়া ফেইল্লা দিতাছে।আহারে মা।
মুরগা পালন কইরা ভ্যাঁ ভ্যাঁ কইরা ঘুইরা বেড়াইন্না পুলাডা আইজকা ঘর দিছে-বিয়া করছে একখান-টিনের ঘর দিছে-সকাল বিকাল মুরগীর গুয়ের গন্ধের সাথে থাইক্কা-থাইক্কা এখুন পায়খানা করতে গেলেও টের পায়না; পায়খানাতে আসছে না-গোসলখানায় আসছে, আইজকাইল আবার পায়খানা আর গোসলখানা এক জায়গায় ঢুইক্কা গেছেগা। এক লগে দুই কাম-সবাই বলো বার্মা বাম।
বার্মা বাম থাকলে সমস্যা নাইক্কা।প্রেমিকা বসুন্ধরায় আষ্ট তলায় বইসা সেই মুরগা’র ঠেং ছিবাইবো কইয়া কানতাছে আর কানতে কান্তে মাথায় ব্যাথা কইরা হালাইছে-লাগাইয়া দেন বার্মা বাম। নিমিষে ফক ফকা। এক্কেরে ফক্কা চৌধুরী। জাইতের জিনিষ। আবার যুদ্ধ হইলে সেই ফক্কা আবার বন্দুক লইয়া মানুষ মারবার বাইর হইবো।মানুষ কারে কইতাছে-আরে সব শালা মালাউন।মালাউন মাইরা সাফা কইরা পুরা দেশেরে জান্নাতুল ফেরদাউস ডিক্লেয়ার দিয়া দিবাম। আফসুস সেইদিন বসুন্ধরাও ছিলোনা-ফক্কা চৌধুরীর ডার্লিংরে লইয়া ব্রয়লার মুরগার ঠ্যাং ছিবানো হইলোনা। আফসুস।
কাহিনী সেইখানে না-কাহিনী হইলো অন্যজায়গায়-ফক্কা দ্য জুনিয়র মুরগা’র ঠ্যাং অনেক খাইছিলো মাগার আইজ-কাইল নাকি মুরগার ঠ্যাং খাইতে না পাইয়া নিজের ঠ্যাং চিবাইয়া চিবাইয়া খাইতাছে। আর দাঁত কিড়বিড়াইয়া কইতাছে-আমারে ব্রয়লার মুরগীর ঠ্যাং খাইতে দিতাছেনা-পরকালে ৭০ ডা হুরের ঠ্যাং চাবাইয়া-চিবাইয়া-লেহিয়া এমুনভাবে খাইমু যে তোরা মুখের লোল ফেলিয়াও কুল পাইবিনা। হায়রে ব্রয়লার! এতো ডিমান্ড তোর!
এখানেই কাহিনী শেষ হইলে ভালো হইতো। কাহিনী শেষ হইলোনা। একদা এক ব্রয়লার কি না কি করিয়া এক রোগের জন্ম দিয়া দিলো তার নাম বিজ্ঞানীরা অনেক চিন্তা-ভাবনা কইরা দিলোঃ ব্রয়লারাটিস ঝুরান্তিয়ানা। কিছুটা ল্যাটিন-ল্যাটিন লাগতেছেনা? এসব আবিস্কারের নাম ল্যাটিন টাইপ না দিলে আবার আবিস্কারের ইজ্জত থাকেনা। আর এই রোগে ভুগিয়া পৃথিবীর অনেক মানুষ খাঁচায় বসিয়া ঝিমাইতে লাগিলো। কিন্তু নিমকি মার্কা আদমী মুগদাপাড়ার অদূরে মান্ডা নামক স্থানে এই রোগের ধন্বন্তরী ওষুধ আবিস্কার করছে বইল্লা শুনা গেলো। শুধু শুনা গেলোনা-দেখা গেলো ফার্মগেটে বোরখাওয়ালী কিছু রমনী জানালা দিয়া সাঁই কইরা সেই ওষুধের ঠিকানার কাগজ ছয় নাম্বার বাসের জানালা দিয়া ছুঁড়িয়া মারিতে লাগিলো। এইরোগের চিকিতসার নাম হইলো আবার আরবীতে-‘শেফায়ে কুল কুলা’। মাইনে হইলো ওইসব ওষুধ খাইলে এই ‘ব্রয়লারাটিস ঝুরান্তিয়ানা’ নামক রোগ সারিয়া যাইবেক।
হঠাত এক পাগল রাস্তায় নামিয়া কহিলোঃ আমরা মানুষ-এই আচোদা রোগে মরার লাইগ্যা দুনিয়াতে আসি নাইক্কা। রাস্তা আছে। লাখো মানুষ আসো হাতে হাত রাখি। এই দেশ ক্ষুদিরামের-এই দেশ মাষ্টার দা’র-এই দেশ বঙ্গবন্ধু’র-এই দেশ কিশোর মনু মিয়ার রক্তে স্নাত দেশ। এইদেশ কোনো ব্রয়লার কিংবা লেয়ার স্বাধীন করে নাইক্কা। এইদেশ কামাল্পুর-বিলোনিয়া-কুমিরা-আখাউড়াসহ সারাদেশে দাঁতে দাঁত কামড়িয়ে ইঞ্চি ইঞ্চি জমি দখল করার দেশ। রুমি-বদি-চুল্লু’র শত্রুর চখে ধুলো দিয়ে ঢাকা শহর দাপিয়ে বেড়ানো গেরিলার দেশ। এই দেশ ঋনখেলাপি কিংবা ৪০০০ কোটি আন্ডা পাচারকারীর দেশ না-এই দেশ কোনো ব্রয়লার মুরগা শাসন করবে বলে স্বাধীন হয়নি।
হ্যাপি ব্লগিং!
এখানে ফ্লাডিং ইস্যুতে কোন ভেজাল নাই??
না দেবা ভাই দুইটা দেওন যায়।

এবার বইসা থাওন লাগবো-একটা দ্বিতীয় পেজে যাওনের লাইগ্যা।
ট্রাফিক অনেক কম!!
আমি তো মাঝে মাঝে লিখি-ভালো লাগে।

দেবা ভাই-নীতিমালা দেখেন।
জ. বিশেষ প্রয়োজন ব্যাতিরেকে ২৪ ঘন্টায় ২টার বেশি পোস্ট দেওয়া যাবে না।
দেখলাম। আমার কবিতাটা না আবার অশ্লীলতার দায়ে ঘ্যাচাং কইরা দেয়!!
আমার লেখায় মুনে হয় টুক টাক অশ্লীলতা সব সুময় থাকে।

এটা পড়ে আপনার লেখা বলে মনে হল না। অন্যরকম ।
আমি চেইত্তা গেলে এই ভাষায় লিখি।

কালকে রাইতে চেইত্তা ছিলাম।
আমুতে অনেক আছে এমুন দেইখেন।
অনিমেষ, দুর্দান্ত হইসে!
একদিন এভাএই সবপাগলরা রাস্তায় নেমে আসবে, ভেঙ্গে চুরমার করে দিবে মুরগীদের ঝিম সাম্রাজ্য--- এই অপেক্ষায় থাকলাম।
ধন্যবাদ শর্মি।
সবকিছু ভেঙ্গে পড়বেই।
ভাল হয়েছে।
ধন্যবাদ!!
বিপ্লবী লেখা হইসে অনিমেষ ভাই! এইরকম লেখা আরো চাই!
এইভাবেই তো দেশ জাতি রে জাগিয়ে তুলতে হইব!
সাথে থাকার জন্য ধইন্না।
অন্যরকম...ভাল
~
ধন্যবাদ!!
আবারো পড়লাম !
মুরগা কাহিনী চরম হইছে উস্তাদ !
মুরগাদের জ্বালায় অস্থির!
চরম হইছে। হিট কম থাকিলেও এই ব্লগের কারনেই আমার আপনার লেখা ভালো পাওয়া শুরু অথচ সেই কবে থেকেই আপনি আমু তে লিখেন!
জ্বী ভাই আমুতে এখনো নিয়মিত লিখি!!
সাথে থাকার জন্য ধইন্নাবাদ।
অনিমেষ, দুর্দান্ত হইসে!
ধন্যবাদ!!
মন্তব্য করুন