ইউজার লগইন

রিক্যাপচারিং পাস্ট -৪

হতে পারে বরিশাল থেকে খুলনা আমরা স্টিমারেই যাইনি। গিয়েছি অন্যভাবে। বাসে। সে সময়ের বাস ছিল লক্করঝক্কর, মিনিবাস টাইপ নয়। শৈশবে কোনো ক্ষুদ্রকায় বাস দেখা স্মরণে নেই। বিশাল একটা বাহন, অসংখ্য আসন, প্রচন্ড ঝাঁকুনি আর বেজায় ভিড় মনে পড়ে। সামনে বাম দিকে লাগানো লম্বা সিটে মায়ের পাশে বসার স্মৃতিও আছে। তবে কোন ট্রিপে বলা মুশকিল। ৮২ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে আমাদের সেই অভ্যন্তরীণ অভিবাসন সম্পন্ন হয়েছিলো কিনা সেটাও মুখ থুবড়ে পড়ছে স্মরণে। বিচ্ছিন্ন কিছু স্মৃতির সাথে গণিতের মাপ ঝোপে মাসটা চিহ্নিত করছি বটে, কিন্তু একে খনন বলে না, রীতিমত ধোলাই।

স্টিমারে বা বাসে যেভাবেই যেয়ে থাকি না কেনো - গমন সুনিশ্চিত। এখন সুবিধা হলো এত বছর পরে আমি দুটোকেই সম্ভাবনা ভাবতে পারছি। নির্মাণের গন্ধে বিভোর, যার ভেতর থেকে সেই সময়টুকুকে ঋদ্ধ করা যাচ্ছে, নিজের প্রশ্নে নিজেই দুটো উত্তরে অবিচল সত্য মানা যাচ্ছে। স্টিমারের গল্প থেকে সুবাস নেয়া যাচ্ছে। সপ্রশ্ন সন্দেহটা হচ্ছে - এরপরে কখনই আমি স্টিমারে চড়ি নাই। বরিশাল-ঢাকা স্টিমার রুট অজনপ্রিয় ও দীর্ঘসূত্রী হয়ে পড়ায় যখন সুযোগ ছিলো তখন এড়িয়েছিলাম। আর এখন তো ঢাকার বাইরে যাবার সুযোগই ঘটে না বলতে গেলে। ফলে স্টিমার বিষয়ক একটা কাতরতা আমার ছিলো। সুযোগ বুঝে ডালপাতা গজিয়ে অপূর্ণতার বিকাশ ঘটাচ্ছে, সত্য কি সে প্রশ্ন অপ্রয়োজনীয় অনুসন্ধানের।

যদি সেটা ফেব্রুয়ারী মাসের স্টিমার ভ্রমণ হয় নিশ্চিত বলতে পারি, কীর্তনখোলার কচুরীশোভিত নদীর বাঁকে রূপালী আলোয় কিছু নৈসর্গ গাঁথা রয়েছে, চোখ এড়ায়নি। দুইপাশের গ্রামকে দেখার জন্য পর্যাপ্ত আলো ছিলো আকাশে। অবিকল যেমন দেখা যাবে এখনও হয়তো। কেউ যদি বরিশাল থেকে সুন্দরবন যায় নৌভ্রমণে - দিনের বেলায়, তার জন্য লোভনীয় রোমন্থনের উপাদান জমবে লাইফটাইমের। সাধারণত বরিশাল-ঢাকা-খুলনা নৌযাত্রার ব্যবস্থা থাকে রাত্রিকালে, ফলে 'সাইট-সিয়িং' হয় না। স্টিমারের সময়টা ছিল দিনের বেলা। এই নদীগুলো, বিশেষত বঙ্গোপসাগরে পতিত হবার আগে, তেজস্বিনী হয়ে ওঠে। যখন একবার আমি সুন্দরবন গেলাম বরিশাল থেকে দিনের বেলা - বিশাল এক ক্রুজে, সেসময়েও মনে হয়েছিলো - কবে যেনো এ-পথ পাড়ি দিয়েছিলাম, অনেক চেনা পথ!

পোস্টটি ৬ জন ব্লগার পছন্দ করেছেন

নাজ's picture


চলুক Smile

লীনা দিলরুবা's picture


এই পর্বটা ভালো লেগেছে, বেশী। কচুরিপানায় ভরাট নদী ভালো লাগে? লাগে না তো। মাইকেল মধুসূধনের বাড়ির লাগোয়া কপোতাক্ষতে কচুরিপানা দেখে হতাশ হয়েছিলাম।

বিস্মৃতি আর গল্প বানিয়ে নেয়া নিয়ে অভিযোগ করেছিলাম। সেটি উঠিয়ে নিলাম, আপনার কল্পনা আর স্মৃতিচারণ বরং এভাবেই সিরিজটাকে বিশেষত্ব দিক।

লিজা's picture


নদী আর নৌকা, আমরা যারা দক্ষিনের লোক তাদের জন্য প্রিয়তম বস্তু । নৌপথে একবার সুন্দরবন ভ্রমণ করতেই হবে । স্মৃতি'র আকাশ পরিষ্কার হোক, সেই আশায় আছি Smile

লীনা দিলরুবা's picture


তোমাদের যাদের বাড়ি নদী এলাকায় তাদের হিংসাইলাম।
নৌপথে সুন্দরবন ভ্রমণ আমারও করার ইচ্ছে। বাগেরহাট- মোংলা হয়ে সুন্দরবনের করমজল পর্যন্ত গিয়েছিলাম। তাতে তৃপ্তি পাইনি। ঢাকা স্টিমারে করে সুন্দরবন যাবার ইচ্ছে আছে। আহা! কবে যাবো Sad

নাজ's picture


ঢাকা স্টিমারে করে সুন্দরবন যাবার ইচ্ছে আছে। আহা! কবে যাবো Sad

চলেন সবাই মিলে একদিন রওয়ানা হই Big smile

লীনা দিলরুবা's picture


কবে কবে কবে Smile

জ্যোতি's picture


হাত তুললাম।
মেসবাহ ভাইরে খবর দেন।

কৌশিক আহমেদ's picture


বৃষ্টি ঝড়, সুন্দরবন........জম্পেস একটা ভ্রমণ হবে! সাথে যদি বাঘের দেখা পাওয়া যায় এবং কেউ যদি বাঘের পেটেও যায় কোনো অসুবিধা নাই!

লীনা দিলরুবা's picture


কি কল্পনা! বাঘের পেটে কৌশিক যাবে। আমরা ছবি তুলবো Laughing out loud

১০

কৌশিক আহমেদ's picture


বাঘের পেট থেকে বের হয়ে সে ছবি দেখাটা কি রোমাঞ্চকর হবে!

১১

নাজ's picture


Nail Biting

১২

নাজ's picture


আসলেই, মেসবাহ ভাই'রে খবর দেন। Big smile

কিন্তুক, মেসবাহ ভাই তো আজ-কাল আমাদের কুনু খবর রাখে না। Sad

১৩

মীর's picture


নদীপথের বর্ণনা পড়তে ভালো লেগেছে।

১৪

কৌশিক আহমেদ's picture


থ্যাংকস।

১৫

আহমাদ মোস্তফা কামাল's picture


এইটাও যে পড়েছি, তার প্রমান রাখার জন্য এই মন্তব্য... Wink

১৬

কৌশিক আহমেদ's picture


থ্যাংকু বস।

১৭

তানবীরা's picture


কীর্তনখোলার কচুরীশোভিত নদীর বাঁকে রূপালী আলোয় কিছু নৈসর্গ গাঁথা রয়েছে, চোখ এড়ায়নি। দুইপাশের গ্রামকে দেখার জন্য পর্যাপ্ত আলো ছিলো আকাশে। অ

অদ্ভূদ সুন্দর একটা লাইন

১৮

কৌশিক আহমেদ's picture


ধন্যবাদ তানবীরা।

মন্তব্য করুন

(আপনার প্রদান কৃত তথ্য কখনোই প্রকাশ করা হবেনা অথবা অন্য কোন মাধ্যমে শেয়ার করা হবেনা।)
ইমোটিকন
:):D:bigsmile:;):p:O:|:(:~:((8):steve:J):glasses::party::love:
  • Web page addresses and e-mail addresses turn into links automatically.
  • Allowed HTML tags: <a> <em> <strong> <cite> <code> <ul> <ol> <li> <dl> <dt> <dd> <img> <b> <u> <i> <br /> <p> <blockquote>
  • Lines and paragraphs break automatically.
  • Textual smileys will be replaced with graphical ones.

পোস্ট সাজাতে বাড়তি সুবিধাদি - ফর্মেটিং অপশন।

CAPTCHA
This question is for testing whether you are a human visitor and to prevent automated spam submissions.

বন্ধুর কথা

কৌশিক আহমেদ's picture

নিজের সম্পর্কে

ঠিক যে সময়ে তুমি অ-সিদ্ধান্তের স্থির ভলকানো
হরতাল-বিভ্রমে অফিস নামক খাঁচার জন্য অনিরাপদ
উদ্দেশ্যবিহীন রিমোট ঘুরিয়ে দুচোখের আশ্রয়ে
এক অথবা একাধিক নিউজ নিউজে বিচারক
একটু কি অবসর হবে? এক কাপ চা?

এই যে ধরুন বিগলিত ডিনারের পাশে অপেক্ষমান শ্রোতা
আমাদের ডাল-ভাত সকাশে বিনিদ্র মূল্যযান
রোজগেরে টমোটো-শশার উপরিতে
ভদ্রলোকের মত চামচ বাজিয়ে আলাপের করতল
একটু কি অবসর মেলে? কি হচ্ছে দেশে?

দুই দিকে যাচ্ছি বিলক্ষণ
তোমার দয়ার্দ্র রাজনীতির ভেতরে আমার গোরস্থান।