২০৩৬ - এ ব্লগ স্টোরি
হঠাৎ ডান হাতে চাপ বোধ হলো। কোনভাবে দূর করতে পারছি না। মনে হলো নিচের দিকে নেমে যাচ্ছে। মাংসের মধ্যে কিছু একটা কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে। চাকা চাকা পিন্ড জোট পাকাচ্ছে। ভয় পেয়ে গেলাম, প্যারালাইজড হয়ে যাচ্ছি না তো!
মাউস ধরতে গিয়ে বিপত্তি। একমাত্র নাতিটা এ নিয়ে বেশ কথা শোনায়। “এখনও তুমি মাউস ব্যবহার করো? কবে যে একটু আধুনিক হবে! সেই পুরানো ওয়েবে পড়ে আছো ত্রিশ বছর যাবত!” কিন্তু মেমরী স্ক্রিনে তেমন সুবিধা পাই না। মাউস, কীবোর্ড চেপে এখনও শান্তি মেলে। হাতের ভেতরে জোট পাকানো ক্লাস্টার গুলো আলগা হলো। মাংস আর রক্তের মধ্যে স্বাভাবিক ত্বরণ শুরু হয়েছে।
ব্লগসাইটটা ওপেন করতে পারলাম। গেল বিষ্যুদবার হাই-ঢাকাতে (গাজীপুর থেকে ত্রিশ কিলোমিটার উত্তরে কৃত্রিমভাবে আচ্ছাদিত একটা উদ্যান) অনিয়মিত নিশ্বাস জনিত সমস্যায় আক্রান্ত পুরাতন ব্লগারদের একটা সমাবেশ হয়ে গেলো। বিরক্তি লেগে যায় কারো আচরণ দেখে। নিকোটিন আলাদা করার ক্যাপসুল গিলে অনেকেই একটার পর একটা সিগারেট টেনে যাচ্ছিলো।
এরপরে এধরণের সমাবেশে ধূমপান নিষিদ্ধ করা উচিত। আরে বাবা বয়স তো ৬০ পেড়ুলো!
২
আগের মত দীর্ঘক্ষণ পড়তে পারি না বলে ব্লগে আসা হয় না। বয়সের নানা ধর্ম, রঙ ক্রমশ বুঝতে পারছি। ৬২ পেড়িয়েও মনে হয় একটু রঙচঙা হই, সেদিন শেখ হাসিনা এভিনিউতে (প্রাক্তন ভিআইপি রোড) নতুন যে এজেড হোম হয়েছে তাদের একটা আউটলেট দেখলাম, থিমটা বেশ অভিনব। সেলসে সব বয়োবৃদ্ধাদের বসিয়েছে, সেখানে দেখলাম টাপুরের মাকেও। আমি দুটো গেঞ্জি কিনে ফেলেছি – সাকিরার ছবিওয়ালা, সত্তর বছরের সাকিরাকে দেখতেও উত্তেজনা জাগে। টাপুরের মাকেও দেখলাম আমূল পাল্টে গেছে, কফি খাবার প্রস্তাব দিলো!
তোমার ম্যানেজার কিছু বলবে না? জিজ্ঞেস করলাম। কারণ বৃদ্ধদের ভীড় লেগেই আছে, আর সবাই মনে হয় টাপুরের মায়ের জন্যই এটা সেটা কিনছে।
আরে রাখো তোমার ম্যানেজার! চার জিয়ার সমাধি বেশ দেখার মত একটা জায়গা হয়েছে!
আমি যাইনি। এসব নেতটেতা মরে গেলে জায়গা নষ্ট। চমৎকার একটা জায়গায় তাদের সমাধি গড়ে ওঠে। পুরো নগরী এখন সমাধিতে পূর্ণ। এ শহরে বেঁচে থাকে কেবল মৃতরাই, জীবিতদের চলতে হয় মৃতের মত।
চলো যাই!
টাপুরের মা ছিল আমার ঘনিষ্ঠ বন্ধু রিজভীর স্ত্রী। পছন্দটা সেই বিশ বছর যাবতই ঝুলছে, কিন্তু অতটুকুই। টাপুর আবার আমার মেয়ের ঘনিষ্ঠ বন্ধু হওয়ায় যোগাযোগটা ছিল।
চার জিয়ার সমাধিতে আমরা বাদাম খেলাম, হাত ধরাধরি করে হাঁটলাম। আমার খুক খুক কাশিতে টাপুরের মা বেশ উদ্বেগ প্রকাশ করলো। বলেছে বাসায় ফিরে একটা সফটওয়ার পাঠাবে, যেখানে এসব কাশি চিকিৎসার ডেমো আছে।
৩
আগের মত ড্রাইভ করতে পারি না। উত্তরা-যাত্রাবাড়ী ফ্লাই ওভার দিয়ে অনেক রাতেই দেড়শ স্পিডে গাড়ি চালিয়েছি। জোরে গাড়ী চালানোর রাস্তা নেই ঢাকা শহরে। ট্রাফিকগুলোতে বৈষম্য। দুটো বাসের সিগনাল পরে একটা প্রাইভেট কারের সিগনাল আসে। তারপরেও রিজভীর স্ত্রীর সাথে দেখা করার জন্য সেই পুরানো ২০২৫ সালের নাভানা গাড়ীটা নিলাম। বাংলাদেশে তৈরী এই একটা গাড়ী আমার মনে ধরেছে। দশবছর যাবত চালাচ্ছি,মনে হয় এখনও নতুন।
তবে গত পাঁচবছর যাবত এনার্জি সেক্টরে অস্থিরতার কারণে গাড়ীগুলোর গতি কমে গেছে। ওয়াটার ফুয়েলিং স্টেশনগুলোতে প্রচন্ড ভীড়। সোলার সিস্টেমে কনভার্ট করার পর বিশেষ কেমিকেল মিশ্রিত ওয়াটার নেবার দরকার পড়ে। ওয়াটার-ফুয়েলের দাম অবশ্য বেশ সস্তাই কিন্তু গতি পাওয়া যায় না, হেঁটেও এর চেয়ে তাড়াতাড়ি যায় মানুষ।
ইদানীং টাপুরের মা দু'জন হেলপার ছাড়া চলতে পারে না। প্রতি ঘন্টায় পার্কিনসনের ইনজেকশন দিতে হয়। এ মাসে তার অসুস্থ্যতটা বাড়াবাড়ি রকমের। বয়স হলে এইসব রোগশোকের সাথেই প্রেম করতে হয়। তারপরেও অর্ধশতাব্দীর পুরাতন ব্যাধি, ষাটোর্ধ্ব রমনীটিকে দেখলে কামভাব জাগে।
৪
বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী ছ'টি দেশ নিয়ে গঠিত জোটকে বিলুপ্ত ঘোষিত সার্কের মতই অকার্যকর মনে করি। আসাম ও মিজোরামের সীমান্ত-সংঘর্ষ নিয়ে উপর্যুপরি বৈঠকের পরেও ঢাকা ঘোষণা তেমন কোন ফলপ্রসু দিকনির্দেশনা বয়ে আনতে পারে নি। ওদিকে বঙ্গের সাথে মেঘালয়ের বিরোধও ক্রমশ বাড়ছে। মূলত বঙ্গকে শক্তিশালী সেনাবাহিনী গড়ে তুলতে বাংলাদেশ সরকার সহযোগিতার আশ্বাস দেয়া মাত্রই ইন্ডিয়া এখন মেঘালয়ের সাথে সম্পর্ক উন্নয়নে উদগ্রীব হয়ে উঠেছে। ফলে অত্র অঞ্চল আবার অশান্ত।
বঙ্গ, মেঘালয়, আসাম, ত্রিপুরা, মিজোরাম, মায়ানমার ও বাংলাদেশের এই জোট বিভিন্নভাবে আশার সঞ্চার করেছিল। বাংলাদেশের সীমান্তে কোন ইন্ডিয়া না থাকায় বঙ্গের পশ্চিম সীমান্তকে অত্র জোটের প্রধান সীমান্ত হিসাবে রক্ষা করার প্রত্যয় ব্যক্ত হয়েছিল।
কিন্তু অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে স্বাধীনতার ত্রিশ বছর পরেও মেঘালয় ইন্ডিয়ার দাসত্ব থেকে মুক্ত না হতে পারায় জোটের ভবিষ্যত এক প্রকার অন্ধকারচ্ছন্নই দেখি।
৫
কয়েক দিন পর্যন্ত শনির দশা চলছে। কিছু পড়েই মজা পাই না। কেউ নিজের কথা বলে না, সবাই কোন না কোন পন্যের প্রচার করে। ‘বিবর্ণ ধারাপাত’ আমার প্রিয় একজন লেখক, গতকাল তার একটা লেখা পড়ে হতাশ হলাম। সে লিখেছে,"সাত সকালে জিলেট আফটার শেভের (এই কোম্পানীর আফটার শেভ বিশ্বের মধ্যে সেরা, ব্যবহার করে দেখতে পারেন, তাদের সম্বন্ধে বিস্তারিত জানতে চাইলে এখানে ক্লিক করুন) মত তৃপ্তিকর আর কিছুই হতে পারে না। ষাটোর্ধ্ব কুচকানো গালেও কেমন একটা কমনীয়তা চলে আসে।"
আমি বিবর্ণকে ফোন করলাম, তুমি জিলেটের এমন প্রশস্তি গাঁথা লিখেছো কেন? সে বললো, ওরা আমার ব্লগকে স্পন্সর করছে। বুঝতেই পারছো এখন আমার সব গল্প কবিতায় জিলেটের নাম নিতে হবে।
এরপরে তার কবিতা দেখলাম।
‘নদীর মাঝে হাহাকার ফেলে
এখন বিষ্যূদবারের হিসেব নিকেষ
জিলেটের শেভে বিদ্যুৎ চমকায়
তপস্যা কাল ঘুরে স্বস্তি নামে!’
আমার অবাক লাগে, মানুষ এখন নিজের কথা বলতে ভুলে গেছে। প্রতি শব্দে শব্দে লিংক, মাল্টিমিডিয়া,অডিও,ভিডিওর ছড়াছড়ি। কারো তিন লাইনের লেখা পড়তে হাজারটা উইন্ডো চলে আসে, এই বিজ্ঞাপন, সেই নিমন্ত্রণ।
মনে হচ্ছে এখন প্রিন্টেড মিডিয়াতে মনের দু'কথা লিখতে পারবো প্রাণ খুলে। কোন বিজ্ঞাপনের ঝামেলা নেই, উৎপাত মুক্ত। কিছুদিন আগে ‘দ্বিতীয় আলো’ নামক একটা আন্ডারগ্রাউন্ড প্রিন্টেড পত্রিকা থেকে আত্মজীবনী লেখার অনুরোধ এসেছিলো, ভাবছি সেটাই শুরু করবো।
৬
নতুন পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি নিয়ে আমার বিস্তর আপত্তি। পুরাতন যুগের মানুষ বলেই হয়তো, কিন্তু আধুনিক যুগের ছেলেপেলে দেখি বেশ সহজভাবে নিয়েছে বিষয়টা। মাইনাস গ্রোথ রেটের জন্য প্রি-ম্যারেজ সার্টিফিকেট, এরপর পাঁচবছর পরে বিয়ে, বিয়ের আগে কোন সন্তান জন্ম দেয়া যাবে না এবং এর পরে এক সন্তান পর্যন্ত সীমা বেঁধে দেয়াটা আমার কাছে অমানবিক মনে হয়েছে। বিগত পাঁচ বছর যাবত যা দেখেছি তা হলো বেশীরভাগ কাপল প্রি-ম্যারেজ সার্টিফিকেট নিয়ে আর পরে বিয়ে করে না। সম্পর্কগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে এবং তারা নতুন কোন পার্টনারের সাথে প্রি-ম্যারেজ সার্টিফিকেট নিচ্ছে।
এছাড়া দ্বিতীয় বাচ্চা হলে বিনিয়োগে আয়কর রেয়াতের সুবিধা বাতিল করা হয়েছে। অথচ স্বাস্থ্য বিভাগ এখন পর্যন্ত স্থায়ী বিরতিকরণ কোন ব্যবস্থা বাধ্যতামূলক করেনি। ফলে হতভাগা অনেক নাগরিকই অসতর্কভাবে দ্বিতীয় সন্তানের জনক-জননী হয়ে চরম আর্থিক সংকটে পড়ছে।
গতকাল প্রথম আলোতে দেখলাম প্রায় সাতজন এমন ভুক্তভোগীর ভিডিও আপলোড করা হয়েছে। সেখানে প্রচুর বিতণ্ডা চলছে - অনেকেই দাবী করেছে সরকারের পরিবার পরিকল্পনা কৌশল অমানবীয়, মাইনাস রেট অর্জনের জন্য বিশ্ব ব্যাংকের ফর্মুলা বাস্তবায়ন করছে মাত্র - অথচ ২০০৬ সালে যেখানে দেশের জনসংখ্যা ছিল ১৫ কোটি সেখানে ৩০ বছর পরে ৮ কোটিতে নেমে যাওয়াতে আমি ভঙ্গুর এক সমাজের বীভৎস চিত্র ফুটে উঠতে দেখি।
৭
একসময় গান ভেসে আসতো। ফোনগুলোতে এখন লোকেশন ইনফো। জানিয়ে দেয় টাপুরের মা অমুক জায়গায় আছে। এছাড়া ফিজিক্যাল মুডের ইমোটিকনও ভেসে আসে, যত সব আজাইরা সিনড্রম। সোনারগাঁও-জনপথ এভিনিউ ধরে বোটানিকাল গার্ডেন যেতে যেতে ফ্লাইরেলে আমি একপ্রকার মনরথের সন্ধান পাই। মনে আছে ত্রিশ বছর আগে উত্তরা তখন ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের অন্তর্ভূক্ত। আমি মিরপুর থেকে উঠে এসেছিলাম ১১ নম্বর সেক্টরে। এই সড়কে স্তুপিকৃত ময়লায় নাক চেপে হাঁটতে হতো। টাপুরের মা আর আমি নবখাল পর্যন্ত প্রতিদিন হেঁটে যেতাম। সেইদিনগুলো ঠিক যেন চল্লিশ ফিট নিচে নামলেই ছোঁয়া যাবে - অথচ পেড়িয়ে এসেছি ত্রিশটা বছর!
টাপুরের মার ফিজিক্যাল হেলথ চেক করে দেখলাম। পাঁচঘন্টা অবচেতন থাকবে। এই সময়টা আমার ভাল লাগে না। যৌনতা বলতে কোন কিছু অবশিষ্ট নাই বটে, কিন্তু হাত ধরে বসে থাকতেও ভাল লাগে। আজকাল তো ছেলেমেয়েদের সামনেই হাত ধরে বসে থাকি। স্কিন ট্রান্সপ্লান্ট এখন খুবই সস্তা হলেও আমার বুড়ো হতেই ভাল লাগছে। টাপুরের মা অবশ্য অনেক কাল যাবতই থুতনি, ভুরু আর শরীরের সংবেদনশীল জায়গাগুলো টানটান রেখেছে, অথচ আমার আঙুলের চামড়াও ঝুলে গেছে।
একটা কাজ ঝুলে আছে কয়েকদিন। সরকারী একটা কমিটিতে আমার একটা ইনপুট আছে। ব্লগারদের নিয়ন্ত্রিত স্বাধীনতা প্রদান বিষয়ক। সেখানে আমাদের প্রস্তাব ছিল ব্যক্তিগত ব্লগ চালু করার জন্য ন্যাশনাল আইডি এবং ইনকাম ট্যাক্স সার্টিফিকেট প্রদানের নিয়মটা শিথিল করা। এমন হলে দীর্ঘদিন যাবত ছদ্মনামে লেখার ব্লগীয় দাবী হয়তো পূরণ হবে। উল্লেখ্য ২০১৫ সালের এক প্রজ্ঞাপনে ছদ্মনামে ব্লগ লেখা নিয়ন্ত্রন করার জন্য সমস্ত ব্লগারদের ন্যাশনাল আইডি ও ট্যাক্স সার্টিফিকেট প্রদান করার বিধান চালু হয়।
৮
দুই যুগ আগেও টিভি ও কম্পিউটার নামে দুটো আলাদা যন্ত্র ছিল। এখন মনে হয় সেটাই ভাল ছিল, টাপুরের মা'র সাথে আমার ঝগড়া কম হতো। মাস খানেক হলো টাপুরের মা আমার ফ্লাটে উঠে এসেছে। আমার মেয়ে, মেয়ে জামাই তার হুইল চেয়ার ঠেলে স্বাগত জানিয়েছিল। বলেছে,এবার যদি বাবার কিছু ব্লগ আসক্তি কমে!
কিন্তু এই মিডিয়া স্ক্রিনগুলো নিয়ে যত ঝামেলা। দেয়ালে একটা মাত্র স্ক্রিন, সেখানে টিভি চলতে পারে, ইন্টারনেট সাইট ওপেন হতে পারে, সিসিটিভিও সেখানে। অবশ্য আলাদা আলাদা বক্স হিসাবে থাকলেও মনযোগ প্রদানও তো বিশাল ঝক্কির। আর কিসব টিভিতে যে হয়, মাথা খারাপ হবার মত অবস্থা। অবিবাহিত পিতা-মাতার সন্তানদের উত্তরাধিকার আইন ও ষড়যন্ত্র নিয়ে জটিল জটিল সব কাহিনী। ডিএনএ টেস্ট জালিয়াতি, মাল্টি ম্যারেজ এমন সব বিষয় এখন ড্রইং রুম এন্টারটেইনমেন্ট।
তবে টাপুরের মা আজকে বেশ ফুরফুরে। নিত্য নতুন নতুন খাবারের আইডিয়া দেয়। লাপুটা নামে একটা রেস্টুরেন্ট আছে। তাদেরকে বললেই হলো, এইসব জিনিস পত্তর দিয়ে এই রান্না করে দেবেন, ব্যাস, হয়ে গেলো। আজকে তার মাথায় এসেছিল ইলিশের পিৎজা। কিছুক্ষণ আগে পিৎজা হাজির। ভালই লাগছে। কিন্তু মিডিয়া স্ক্রিনে লাপুটার বিল ভেসে উঠতেই আমার টনক নড়লো। দুটো ইলিশ মাছ লেগেছে, যার দাম ধরা হয়েছে পনের হাজার টাকা ইচ্! অথচ বাজারে এখন দশ হাজার টাকা দামে ১ কেজির ইলিশ পাওয়া যায়।
৯
গতকাল ছিল বাৎসরিক সংগম দিবস। আমরা যৌবনে কখনও ভাবতে পারিনি সংগম বিহীন একটা দিনের কথা। অথচ এ-সময়ের যুবারা বাৎসরিক সংগম দিবস বানিয়েছে। আমাদের যৌবনে শুনেছিলাম বন্ধু দিবসের কথা, প্রেম দিবস, বাবা, মা আর নারী দিবসের কথা। যে সম্পর্কগুলো অবলুপ্ত হয়ে যায় তা স্মরণ করার জন্য বিশেষ একটা দিবসের তাৎপর্য্য রয়েছে হয়তো, কিন্তু সংগমও যে এমন দুর্লভ হয়ে যাবে কখনও মনে হয়নি।
অবশ্য বিশ্ব শত্রু দিবস যখন থেকে চালু হলো তখনই মনে হয়েছিল এ সময় আমার নয়। টেক-সংগম ধারণার উৎপত্তির পর থেকে প্রাকৃতিক সংগম এখন বিরল, কম-উত্তেজনাকর ও ব্যাক-ডেটেড হয়ে গেছে। তবে ঐতিহ্য ধরে রাখার জন্য এখনও মাঝে মাঝে ফেস্টিভেলের আয়োজন হয়, উৎসব হয়।
আমি ও টাপুরের মা এখনও শরীরে উদ্দীপ্ত হই। সম্ভবত বিগত প্রজন্মের বলেই। আমাদের সন্তানরা উইশ করলো, এ-দিনটা একান্ত আমাদের বলেই বাসায় একটা পার্টি দিল। টাপুর ও আমার মেয়ে ঋষী অবশ্য একটা এন্ডলেস বিতর্ক জুরে দিয়েছিল। টাপুরের বক্তব্য মানুষের শরীর হাইজেনিক নয়, প্রাকৃতিক সংগম তাই ঝুঁকিপূর্ণ। ঋষী জানালো, মানুষের শরীরের চেয়ে বড় পবিত্র আর কিছু হতে পারে না, দরকার কেবল বিশুদ্ধতর জীবন-পদ্ধতির উন্নয়ন।
আমরা অবশ্য তার আগেই বেডরুমের দরজা বন্ধ করে দিয়েছি।
১০
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সারাদেশ ব্যাপী এইডস টিকা দান কর্মসূচী উদযাপন করছে। ২০৪০ সালের মধ্যে দেশ থেকে নাকি এইডস মুক্ত করা যাবে। চল্লিশ বছর আগে এ দেশে পোলিও টিকা কর্মসূচী সফলভাবে পালিত হতো। তখন আমি রোটারাক্ট ক্লাবের সভ্য ছিলাম। সম্ভবত ২০০৪ এর দিকে হবে, দেশ পোলিও মুক্ত বলে ঘোষণা দিয়েছিল সরকার। কিন্তু এর কয়েক বছর পরে আবারও পোলিও কেস ধরা পড়েছিল।
সরকারী, বেসরকারী মিডিয়া ফলাও করে প্রচার করছে। গত কয়েক বছর যাবত দেশের সব শিশুদের বিনামূল্যে এই টিকা খাওয়াচ্ছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা - কিন্তু আমি ততটা আশাবাদী নই। টাপুরের দুই বছর বয়সী ছেলেকে নিয়ে আমি ইউনুস মেমোরিয়ালে গেলাম। বাইরে এই টিকার দাম ৫ হাজার টাকা, অযথা অপচয়ের কোন মানে দেখি না। যদিও কয়েকদিন আগে একটা ব্লগে এই টিকার কার্যকারিতা নিয়ে গবেষণা দেখলাম। ভার্চুয়াল ডাক্তার লিখেছিল, "আমেরিকাতে এইডসের প্রতিষেধক টিকা দান কর্মসূচী এখনও চালু হয় নি। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশের মত পঞ্চম বিশ্বের একটা রাষ্ট্রে এইডসের টিকা ফ্রি প্রদান করা ইংগিতবহ। নিতান্ত গিনিপিগ হয়ে গেছে আমাদের বাচ্চারা।"
আমি অনেকক্ষণ টাপুরের মা-কে বোঝানোর চেষ্টা করলাম। এইডসের টিকা পরবর্তীতে বাচ্চাদের অটিস্টিক বানাতে পারে এমন একটা আশংকার কথা বলেও লাভ হলো না। টাপুর আর তার ছেলের বাবা টিকাতে আস্থাশীল। অগত্যা মেমরিয়ালে ডঃ ইউনুসের বিশাল আবক্ষ মুর্তির সামনে লাইনে দাড়ালাম। টাপুরের পুত্রধন বিচিত্র লাইনে দাড়ানো সমবয়সীদের সাথে আলট্রাব্লুটুথে গেমস ট্রান্সফারে ব্যস্ত।
১১
গত কয়েকদিন আগেও আমার প্রিয় একজন মানুষের নাম জানতাম নিষিক্ত ভ্রূণ। নাম বিষয়ক প্রায় তিন যুগ পূর্বের এক বিতর্কের পরে যুগান্তকারী পরিবর্তন সূচিত হয়েছিল। অবশ্য সূত্রপাত ব্লগ থেকেই। ইচ্ছেমত নিক নেয়ার সুবিধা থাকায় মানুষগুলোর পরিচয় হয়ে উঠেছিল অভিনব। যেমন কেউ জানোয়ার স্বভাবের মানুষদের ব্যঙ্গ করতে গিয়ে নিক নিয়েছিল জানোয়ার। পরে তার মিডিয়া পরিচিতিই হয়ে গেল জানোয়ার রূপে। বিখ্যাত সেই ব্লগারকে ২০১২ সালের শ্রেষ্ঠ ব্লগার এওয়ার্ড প্রদানের জন্য জানোয়ার নামেই মঞ্চে ডেকেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। জানোয়ার এভাবে রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছিল,প্রতিবাদ করার কেউ ছিল না।
পরবর্তীতে দেশের প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে বিভিন্ন মন্ত্রী পর্যন্ত হয়েছিল অদ্ভুত নামধারীরা। যেমন ২০১৮-২০২০ সালে প্রধানমন্ত্রীর নাম ছিল পশ্চাতদেশে লাথি, প্রধান বিচারপতি হয়েছিল বিচারকের বুজরকি। এরা এইসব অদ্ভুত নিক নিয়ে প্রচলিত শাষণ ও বিচার ব্যবস্থার বিরুদ্ধে এত কঠোর সমালোচনা এবং সেই সাথে এত এত নতুন সম্ভাবনার স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন যে নিকধারীরা জনপ্রিয়তার তুঙ্গে উঠে যান। একসময় তারা ক্ষমতায় অধিষ্ঠিতও হয়ে যান। অবশ্য এ নিয়ে প্রায় দশ-বছরব্যাপী (২০১৫-২০২৫) রেস্টোরিং নেম নামে একটা ভার্চুযুদ্ধ সংগঠিত হয়েছিল। আজও যা ইতিহাসের পাতায় রোস্টোরেশন এরা নামে পরিচিত।
তবে আমার বন্ধু নিষিক্ত ভ্রুণ যে কারণে নাম পরিবর্তন করলেন সেটা একদমই ভিন্ন প্রেক্ষাপট। কিছুদিন যাবতই শুনছিলাম দেশি-বিদেশি কোম্পানীগুলো এখন থেকে ব্যক্তি বিশেষকেও স্পন্সর করবে। তাদের পুরো হিউম্যান বডি হয়ে যাবে এক একটা লাইভ বিজ্ঞাপন। যেমন স্কুল মাস্টার প্রার্থিত কুসুম কে এখন থেকে স্কুলে যাতায়তের খরচ স্পন্সর করেছে গ্রামীন কোম্পানী। সেটা নিয়ে প্রতিবেদন প্রচার করে এনটিভি। এমন হাজারো পদ্ধতিতে স্পন্সরের চরিত্র ও মানুষের খবর ইতিমধ্যে সবাই ভালোভাবে জেনে গেছে মিডিয়া কল্যাণে। কোম্পানীগুলো এখন নামও স্পন্সর করা শুরু করেছে। যেমন হারপিক কোম্পানী নিষিক্ত ভ্রুণের সাথে পাঁচ লাখ টাকার চুক্তি সাক্ষর করেছে। এক বৎসর সে হারপিক নামে পরিচিত হবে। তবে যেটা ইদানিং শুনছি, তা আরো ভয়াবহ। নবজাতকদের নাম গ্রামীনের নতুন প্রোডাক্ট ডোরবেল এর নামে রাখার জন্য নাকি প্রায় ১০০ কোটি টাকার প্রজেক্ট চালু হতে যাচ্ছে শীঘ্রই।
১২
সমস্ত হিসেব ঠিক থাকলে এবার সংসদ নির্বাচনে অল বাংলা বিদ্যুৎ কোম্পানী নিরঙ্কুশ সংখ্যা গরিষ্ঠতা পেয়ে যাবে। তাদের নির্বাচনী প্রচারণাও অভিনব। বিদ্যুৎ কোম্পানীর চেয়ারম্যান ঘোষণা করেছেন, তারা জয়ী হলে বিদ্যুৎ এর দাম ইউনিট প্রতি প্রায় ৫০% রিডিউস করবে। জনগণ এখন বেসরকারী এই বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানটির মনোনীত প্রার্থীদের ভোট দিতে মরীয়া হয়ে আছে। তবে তাদের সবচেয়ে বিপজ্জনক প্রতিদ্বন্দ্বী দাড়িয়ে গেছে নিখিল গ্যাস কর্পোরেশন। হুমকী দিয়েছে এবারের নির্বাচনে তারা জয়ী না হলে গ্যাসের দাম বেড়ে যেতে পারে।
ওদিকে কনজিউমার প্রোডাক্টস এসোসিয়েশনেরও রমরমা অবস্থা। নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির দাম কমিয়ে তারা ভোটার আকৃষ্টের চেষ্টা চালাচ্ছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা দাবী করেছেন, দেশ এখন এক গভীর সংকটে। পরাজিত দল যদি অসহযোগিতা শুরু করে সেক্ষেত্রে ক্ষমতাসীনদের কিছুই করার থাকবে না। এদিকে জাতীয় সড়ক অধিদপ্তর ও কৃষি পন্য উৎপাদনকারী কোম্পানীগুলোর সংস্থা বাকৃকো গ্রাসরুট লেবেলকে টার্গেট করেছে।
কর্পোরেটরা সরাসরি রাজনীতিতে নেমে পড়ার পরে এখন বড় বড় রাজনীতিবিদরা তাদের উপদেষ্টা হিসাবে মোটা বেতনের কাজ বাগিয়েছেন। একসময়ে দেশে যখন পিউর রাজনৈতিক দল ছিল তখন যারা কর্পোরেটদের থেকে কোটি কোটি টাকা ঘুস নেবার দক্ষতা অর্জন করেছেন কনসালটেন্ট হিসাবে তাদের দাম সর্বোচ্চ। প্রাক্তন রাষ্ট্রপ্রাধান ও সমরনায়কে এখন কর্পোরেট রাজনৈতিক দলগুলো পরিপূর্ণ। তবে তারা নির্বাচন করতে পারছেন না। স্থানীয় পর্যায়ে বড় বড় ডিলাররা এই সব কোম্পানীর মনোনীত প্রতিনিধি।
১৩
টাপুরের মায়ের সম্ভবত আর আধূনিক হয়ে ওঠা সম্ভব নয়। শুধু টাপুরের মা কেন, আমিও বোধহয় সেকেলে। নইলে একটা কিচেনের জন্য তার আহাজারিতে বিগলিত হয়ে বাথরুম-কাম ডাইনিংটা ছোট করে একটা কিচেন রুমের স্পেস বের করার জন্য প্ররোচিত হই কিভাবে! কত সাধের ডাইনিং ছিল আমার, এক পাশে খেতে খেতে অন্য দিকে কেউ রে-ওয়াল অন করে শিট-আউট করতে পারতো। এখন কোনও এপার্টমেন্টে কিচেন নেই,আজকালকার বাচ্চারা কিচেন শব্দটা জানে রেস্টুরেন্টের অংশ হিসাবে। ঘরেও যে কিচেন থাকতো এককালে,কে বোঝাবে তাদের!
আসলে টাপুরের মা'র সাধ হয়েছে আমাকে কিছু রান্না করে খাওয়াবে। আলু-সেদ্ধ করে পোড়া-মরিচ দিয়ে ভর্তা বানাবে। ঝোল ঝোল মাছ,মুরগী রান্না করবে। এপার্টমেন্টের রেস্টুরেন্টগুলোতে সব ড্রাই আর ফ্রাই। একবার সেই ত্রিশ বছর আগে টাপুরের মা আমাকে আলু ভর্তা দিয়ে ভাত খাইয়েছিল,সেই স্বাদ পুনরুদ্ধারের চেষ্টা বলা যায়।
আজকে সারাদিন কিচেন রুমের ডেকোরেশন হলো। যে দুটো ছেলে কাজ করছে তাদের রাজ্যের প্রশ্ন। আপনারা কি রেষ্টুরেন্ট চালু করছেন? বেশ তো! ঘরোয়া পরিবেশে তারা একদিন খেয়ে যাবে এমন আবদার করলো। টাপুরের মা অচেতন বলে আমার সামলাতে হচ্ছে সব। আরো তিনঘন্টা তার ঔষধের কার্যকারিতা থাকবে। এই সুযোগে আমি বহুদিন পরে সিক্রেট টিভি খুলে বসেছি। এই চ্যানেলটা বেশ মজার। একটা পরিবারের সব সদস্যের কার্যবিধি ধারণ করা হয় গোপনে। বেডরুম থেকে বাথরুম সর্বত্রই ক্যামেরা,একদম আনকাট পাবলিকেশন। আই লাভ সিক্রেট টিভি!
১৪
বিজ্ঞাপনের মাঝে এখন এতো বেশী নাটক দেখাচ্ছে যে বিরক্তি ধরে গেছে। টাপুরের মা তার নতুন রেসিপি বুক শপ নিয়ে ব্যস্ত। নাম দিয়েছে "ওয়াল্র্ড রেসিপি হেরিটেজ"। পৃথিবীর সব রেসিপির বই তার শপে পাওয়া যায়। অগত্যা আমি টিভি দেখতে বসেছিলাম। কিন্তু একটা বিজ্ঞাপনও ঠিকমত দেখতে পারি না। মাঝখানে কিছু উজবুক নাটকের প্যানপ্যানানী চলে আসে। তাও একটা দুটো নাটক হতো। প্রায় তিনচার মিনিটে চল্লিশ-পঞ্চাশটা নাটক দেখিয়ে ফেলে। আর আজকাল আবার নাটকে থাকে না কোন পাত্র-পাত্রী, পরিচালকের নাম। এ্যাবস্ট্রাক্ট ফর্মের এই নাটকগুলোও অদ্ভুত। একটা নাটকে দেখালো ঈদের দিন এক বাসায় দুজন বেড়াতে এসেছে। ক্লোজ শটে হোস্টের অবাক হয়ে থাকা চোখ, গৃহিণী বলছে, অবিশ্বাস্য,এখন তো কেউ আসতেই চায় না!
আমার মনে আছে ২০১০ সালের এক বিজ্ঞাপন বিপ্লবের পরে বিজ্ঞাপনগুলোতে নির্মাতার নাম দেখানো শুরু হয়েছিল। সেই সাথে বিজ্ঞাপনের কাস্টিং এরও বিশাল নামের বহর। রাতারাতি পরিবর্তন ঘটেছিল টিভি সম্প্রচারে। বিজ্ঞাপনগুলো লম্বা লম্বা হয়ে পড়লো। আগে যে লেন্থে নাটক হতো, এখন সেই লেন্থে বিজ্ঞাপন হচ্ছে। পুরো সময়টাতে প্রোডাক্টগুলোর একটা দারুন আবেগীয় সম্পর্ক দেখানো হ, যা মানব জাতির বিবর্তনে কিভাবে আত্তীকৃত হয়েছে। ২০১০ সালের বিজ্ঞাপন বিপ্লবের আগে একটা তিনচার লাখটাকার নাটকের জন্য তিন কোটি টাকার বিজ্ঞাপন প্রচারিত হতো। স্বাভাবিকভাবে বিজ্ঞাপন নির্মাতারা তাদের মেধার অপচয়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছিল। ফলশ্রুতিতে নাটক হয়ে গেলো বিজ্ঞাপনের মত আর বিজ্ঞাপনগুলো হলো মনোরম,নান্দনিক।
কিন্তু এখন আবার নাটকের আধিক্য দেখা যাচ্ছে। অবশ্য এর পেছনে বিজ্ঞাপনে গল্পের বাড়াবাড়িও একটা কারণ। একটা টিভিসিতে এত জটিল জটিল সম্পর্কের পন্যায়ন দেখানো হয় যে মানুষ ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র আবেগের প্রকাশ দেখতে উঠেপড়ে লেগেছে। যার জন্য নাটকগুলো এখন ঘনঘন দৃশ্যমান। কিন্তু আমরা তো বিজ্ঞাপন দেখতে অভ্যস্ত। ঈদের দিনগুলোতে একটা বিজ্ঞাপনও সুস্থ্য মত দেখতে পারলাম না।
চার জিয়ার সমাধিতে আমরা বাদাম খেলাম, হাত ধরাধরি করে হাঁটলাম। আমার খুক খুক কাশিতে টাপুরের মা বেশ উদ্বেগ প্রকাশ করলো। বলেছে বাসায় ফিরে একটা সফটওয়ার পাঠাবে, যেখানে এসব কাশি চিকিৎসার ডেমো আছে।
হেহেহে।
এখন কোনও এপার্টমেন্টে কিচেন নেই,আজকালকার বাচ্চারা কিচেন শব্দটা জানে রেস্টুরেন্টের অংশ হিসাবে। ঘরেও যে কিচেন থাকতো এককালে,কে বোঝাবে তাদের!
জটিল জটিল
আপনার ঘরে কিচেন আছে তো?
অনেক ধন্যবাদ কষ্ট করে বিশাল পোস্ট পড়ার জন্য।
১. পুরো নগরী এখন সমাধিতে পূর্ণ। এ শহরে বেঁচে থাকে কেবল মৃতরাই, জীবিতদের চলতে হয় মৃতের মত। - এইটা তো এখনো
২. বাসায় ফিরে একটা সফটওয়ার পাঠাবে, যেখানে এসব কাশি চিকিৎসার ডেমো আছে। শুরু হয়ে গেছে ...
৩. ‘নদীর মাঝে হাহাকার ফেলে
এখন বিষ্যূদবারের হিসেব নিকেষ
জিলেটের শেভে বিদ্যুৎ চমকায়
তপস্যা কাল ঘুরে স্বস্তি নামে!’
৪. "গতকাল ছিল বাৎসরিক সংগম দিবস। " "মানুষের শরীর হাইজেনিক নয়, প্রাকৃতিক সংগম তাই ঝুঁকিপূর্ণ।" - হাহাহাহা... সেইরম
৫. জাতীয় সড়ক অধিদপ্তর ও কৃষি পন্য উৎপাদনকারী কোম্পানীগুলোর সংস্থা বাকৃকো গ্রাসরুট লেবেলকে টার্গেট করেছে। - এর যদি জনগনকে সড়ক ব্যবহার করতে না দেয়?
আপনি নিশ্চিত থাকেন বস এসব ঘটতে যাচ্ছে
ওরে ফাটাফাটি। আপনে মিয়া একটা জিনিস!
থ্যাংকস হাসান ভাই।
১. মাইনাস
২. এইটাতেও মাইনাস। এসব খুকখুক কাশি, হাত কাঁপাকাঁপি....ওহ নো।
৩.
উফফ.... এই টাপুরের মার সাথে আপনি ঘুইরেন না তো!
৫. আত্নজীবনী লেখা শুরু করেন।
৬.
টাপুরের মার সাথে আমার ঘুরতেই হবে। বুড়োবুড়ির কষ্ট আসলে অন্য কেউ বুঝবে না!
পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
দারুণ! সিম্পলি সুপার্ব!
থ্যাংকুসসসসসসস
: ) দারুণ!
থ্যাংকসস।
চলতে থাকুক................ মজাই লাগলো........
সেরকম একটা ইমো! আপনাকে ধন্যবাদ পড়ার জন্য।
কল্পনাশক্তি বেশ ভাল। পড়তে পড়তে যেন নিজের চোখে দেখতে পারছিলাম।
ফাস্ট কেলাশ বেয়াই...
থ্যাংকু বেয়াই। অনেকদিন পরে আপনারে দেখলাম।
কী লিখলেন এটা! মাথা নষ্ট! আপনার কল্পনাশক্তির প্রশংসা করতেই হয়।
থ্যাংকু থ্যাংকু।
আপনে উপন্যাস লিখেন...
বস, উপন্যাস লেখার ইচ্ছা তো আছে, কিন্তু ক্লান্ত লাগে।
গল্পগুলা নিয়ে একটা বই বের করার জন্য পান্ডুলিপি তৈরী করা শুরু করেছি আপাতত।
আউটস্ট্যান্ডিং! জাস্ট সুপার্ব!
থ্যাংকুস
কী কমু! মানুষের কল্পনাশক্তি কতদূর গেলে এই জাতীয় লেখা প্রসব হয়! সুপার্ব!!
লাইনে লাইনে মজা...........
থ্যাংকুস।
তখনও প্রথম আলো থাকবে? সংবাদপত্র থাকবে?
ইউনুস মেমোরিয়াল থাকলো তাহলে তাসলিমা নাসরিন মিস কেনো?
সুপার্ব। রসগোল্লা হয়েছে। হায় কিচেন নেই সেযুগে যেনো আবার জন্ম নেই
তানবীরার কমেন্টে ডাবল লাইক
আর মাত্র ২৫ বছরে পরেই!
পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
ভাই, আপনি আসলেই একটা জিনিস। অসাধারণ হইছে। "পশ্চাতদেশে লাথি"র রাজনৈতিক দলটা কি ছিল বললেন না কিন্তু!
ভাই, আপনি আসলেই একটা জিনিস। অসাধারণ হইছে। "পশ্চাতদেশে লাথি"র রাজনৈতিক দলটা কি ছিল বললেন না কিন্তু!
বাপ্রে!!... দারুন লেখা...
থ্যাংকুস।
বাপ্রে, দারুণ হইছে।
আপনার মন্তব্যের জবাব না দিয়ে গর্হিত অন্যায় করেছি। মাফ করে দিয়েন ওস্তাদ।
আপনে বস আইডিয়া বিক্রি করেই তো মিলিয়ন ডলার কামাইতের পারতেন পশ্চিমা দেশে !~
হাহাহাহাহা। যা বললেন, শোনার পরে তো মনে হইতেছে....কেন জন্মাইলাম এই দেশে!
অসাম!! পুরাটা একটানে পড়ে শুধু এই একটাই শব্দ মাথায় আসলো।
থ্যাংকু ভাই। পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
জটিল...সংগম দিবস...হা হা..
চার জিয়ার সমাধি...হো হো..
চারজিয়ার মাজার মনে হচ্ছে ওসময়ে হবে না। তারেক সাহেব সম্ভবত আরো কিছুদিন বেচেবর্তে থাকবেন।
kowshik,
I have never ever read your blog, this is the first time I am reading your blog. You are awesome, simply great, I am proud that we were friends and are friends though we are not able to spend time together and we spend a hell lot of years together. Continue boss I will be your regular reader from now on, promise, send me the links always. A true student of Literature.
Regards
Shaheen
থ্যাংকু দোস্ত। তোমার প্রশংসা শুনে ভাষা হারিয়ে গেছে। পড়ার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
তুমি তো আগে লেখালেখি করতা, এখানে একটা রেজিস্ট্রেশন করে ফেলতে পারো কিন্তু।
মন্তব্য করুন