২০৭১ - এ ব্লগ স্টোরি (২০)
সেদিন পাশের বাড়ীতে একটা বড়সড় ডাকাতি হয়ে গেলো। তিনটা সিকিউরিটি এজেন্সি আগে থেকে বিষয়টা জানতো। টাপুরের মা যে মহিলার সাথে এন্টি-সুইসাইডাল থেরাপি নিতো তার বাসা। সিকিউরিটি এজেন্সি থেকে এলার্ট করা হয়েছিলো। এমনকি ডাকাত গ্যাং প্রস্তুতি নিচ্ছে এমন লাইভ কভারেজ ট্রান্সমিট করেছিলো তাদের বাসার সবকটি লেজার স্ক্রিন, সেলফোন, এমনকি যেকোন অপটিকাল সারফেসে। অদ্ভুত বিষয় হলো বাসার লোকজন নাকি বলেছে ডাকাতি ঠেকাবার সময় নেই। ছেলেমেয়েদের গেট টুগেদার হচ্ছে বারো বছরে প্রথমবারের মত, রাষ্ট্র যদি চায় তবে যেন ডাকাতদের ধরে। সমস্যা হলো সংবাদটা কোনো বখাটে ওয়েবার একটা ফান টিভিতে জানিয়ে দিয়েছে। যারা মুহূর্তে বিষয়টাকে রাষ্ট্রীয় তাৎপর্যময় সংকট হিসাবে উপস্থাপন করলো। বিশাল ডিবেট শুরু হয়ে গেলো রাষ্ট্র কেনো জনগণের মাইক্রো নিরাপত্তার দায়ভার নেবে – এসব নিয়ে। আমার পাশের বাড়ির ঘটনা আর আমি ডাকাতির সংবাদ পেয়ে হাত-পা গুটিয়ে ডিবেটে অংশ নেবো এটা মেনে নেবার মত অবস্থা এখনও আমার হয়নি। রবারী-এলার্ট সিগনাল এলাকার সবকটি সড়ক জুড়ে জ্বলছে, অথচ মানুষজনের মুখায়বে সচেতনতার কোনো চিহ্ন নেই। সম্ভবত এমন হাজারো এলার্ট প্রতিদিন জারি হচ্ছে বলে কোনটা কিসের সেসব হিসাব করা একদম ছেড়ে দিয়েছে বেশীরভাগ মানুষই।
টাপুরের মা এমন সব ক্রাইসিসে নানা ধরণের কুইজে অংশ নেয় সাধারণত। আজকে সে বাজিতে অংশ নিয়েছে। প্রশ্ন ছিলো এই ডাকাতিতে কি ৩ কোটি টাকার উপরে মাল/জিনিস লুটপাট হবে? বেটিং এর মূল্যমান ১:৩। ইয়েস যারা বলবে তারা বিজয়ী হলে তিনগুন ফেরত পাবে। বিরাট উৎসব মুখর ডাকাতি হয়ে গেলো। নানাধরণের চ্যানেল লাইভ দেখালো। ডাকাতদের সাক্ষাতকার নিলো। আর সরকার, সুশীল সমাজ তাত্ত্বিক নানাবিধ আলোচনায় মাঠ গরম করে রাখলো। ২০১২ সালের উদাহারণ টেনে একজন সরকারী চাটুমর্ষক বললো, ব্যক্তিকে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দেবার ফিজিক্যাল মুভমেন্টে বেশীরভাগ মানুষ অনিরাপদ বোধ করে। সে বললো, আপনাদের নিশ্চয়ই মনে আছে, রাষ্ট্র সাদা পোষাকে লোকজনকে গুম করে নিয়ে চাপিয়ে দিতো দুস্কৃতকারীদের কাজ হিসাবে অথবা দুস্কৃতকারীদের আইন-প্রয়োগকারী সংস্থার পরিচয়ে লুটে নেবার ঘটনাগুলো? তার কথা শুনে আমার সত্যি দুঃখ হলো। এমন সব প্রাগৈতিহাসিক চিন্তা-চেতনার মানুষগুলো কিভাবে সরকারের চাটুমর্ষক হয়! কাউকে কিছু না বলে আমি রাস্তায় নেমে গেলাম। মোড়ের বড় স্ক্রিনে দেখাচ্ছিলো তখন ডাকাতদের ফ্লাটে ঢোকার দৃশ্য। দু’জন টেকনো রিপোর্টার তাদের পেছনে ঘুরছে, আর কৃত্রিম ভীতিকর অঙ্গভঙ্গি করছে। এমনকি দুজন নৃ-বিজ্ঞানীও রয়েছেন, তাদের কাজও মজার। চুলচেরা বিশ্লেষণ করছিলেন লাইভ ডাকাতী বিষয়ে মানুষের নানামুখী দৃষ্টিভঙ্গী।
আমি সরাসরি ওই ফ্লাটে ঢুকে পড়লাম। ডাকাতদের একজন আমাকে দেখে বললো, আপনি তো আমাদের গ্রুপে নন! ওহ সরি, আপনি বোধহয় টিভি ক্রুদের একজন! উত্তর না দিয়ে তীক্ষ্ণ গলায় জিজ্ঞেস করলাম, প্রজেক্ট লিডারের সাথে কথা বলতে চাই। কুচকাতে গিয়ে তার ফলস ভ্রু পড়ে গেলো। নিয়ে গেলেন পাশের রুমে। সেখানে একজন বয়সী ভদ্রলোক মাস্টার-কম্পিউটারে ব্যাকটেরিয়া লোড করছিলেন। পপিনিথে পেচানো একধরণের জার্ম কম্পিউটারের সারফেসে মেখে দিলে সেটা যাবতীয় প্রোগ্রামিং কোডকে ওপেন করে দেয়। আমি বললাম, নেইবার হিসাবে আমি এটা মেনে নিতে পারছি না, ইউ সুড লিভ নাও! তিনি আমার দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে বললেন, আপনি কি এ্যাকটিভিস্ট? আমি না সূচক মাথা নাড়ালাম। তিনি এবার বললেন, বাঙালি সংস্কৃতির প্রতি শ্রদ্ধা থাকলে আপনি এভাবে অহেতুক নাক গলাতে আসতেন না। বিজাতিয় কৃষ্টি আমাদের সামনে দেখাবেন না। একজন বিপদে পড়েছে বলে তাকে উদ্ধার করবার মত কোনো দায়িত্ব আপনাকে রাষ্ট্র বা টেকপ্রফেট দেয়নি। কেটে পড়ুন! যে কোন প্রতিবাদই এক-ধরণের শক্তি বলে শিখেছিলাম বাল্যবয়সে। কিছু না হলেও ঘুরে দাড়াতে হবে। সেজন্য আবার বললাম, আমার প্রতিবাদটুকু করার কথা ছিলো করলাম। এবার ডাকাত-সর্দার অট্টহাসি দিয়ে বললো, এদেশের এজন্যই কিছু হবে না। সবাই প্রতিবাদ করে, কিন্তু প্রতিরোধ করতে পারে না! প্রতিরোধ করতে হলে আপনাকে আমার উপর শক্তি প্রয়োগ করতে হবে। যদি সেটা না পারেন তবে ফুটেন!
ইয়ার থ্রি সিক্স জাম্পিং টু সেভেন্টি ওয়ান এপ্রুভড বাই ন্যাশনাল ব্লগ এজেন্সি এন্ড কপিরাইট এনফোর্সমেন্ট অথরিটি থ্রু সেফ ভেনুলার প্রসেস।
সিনামার কাহিনীর লাহান লাগলো বেয়াই, মাগার শেষ লাইটা মাথার উর্পে দিয়া গেল
থ্যাংকস বেয়াই। সিরিজটার নাম ছিলো আগে ২০৩৬, এইটাকে এখন বানিয়েছি ২০৭১। বিজ্ঞজনেরা বললেন, এত চটজলদি এত কিছু হবে না, তাদের প্রত্যাশা এসব ঘটবে বটে, কিন্তু আরো কিছুদিন পরে....। আগে ভেবেছিলাম দেখে যেতো পারবো, এখন মনে হচ্ছে সম্ভব না। ২০৭১ এ আমার ডেথ ডের ৫০ ইয়ার্স পালিত হবে!
অদ্ভুত লাগলো!
আপনের ক্রিয়েটিভিটি অসাধারণ!
থ্যাংকস বস। বড় লেখার জন্য আপনার উৎসাহ টনিকের মত কাজ করেছে।
উরিব্বাপস.........
থ্যাংকস মেঘ।
আউট ল মানে ডাকাতগুলারে পছন্দ হইছে,,বাকিরা ক্যালাস...মানে রাষ্ট্র এবং জনতা!
আমাদের আউটল' হতে হবে। সেবার ওয়েস্টার্নের মত। ঠিসাও....
এই লেখাগুলো সবই অতি জোস্ হচ্ছে কৌশিকদা'। নিয়মিত পড়ছি।
থ্যাংকস ব্রো।
ইউ আর ওয়েলকাম।
জটিল জটিল। কেম্নে পারেন?
থ্যাংক ফর রিডিং বস।
হে হে হে হে.. হুদাই ঝাড়ি খাইতে গেলেন
কাহিনী আসলে এমনি হবে ভবিষ্যতে। তবে ঝাড়িটা আমার কাছে দারুন লাগলো
আর ইয়ে মানে, আপনি ২০৭১ এ এসেছেন বলেই কিনা জানিনা, আপনার এই সিরিজের একমাত্র এই পর্বটাই আমার বোধগম্য হয়েছে, বাকি গুলা পড়ে কিছুই বুঝি নাই
থ্যাংকুসসস। বুঝছি এখন সবগুলা নামই করে দিতে হবে ২০৭১
থ্যাংকুসসস। বুঝছি এখন সবগুলা নামই করে দিতে হবে ২০৭১
৩৬ থেকে এক লাফে ৭১ কেনো?
২০৩৬ এ এতসব হবে না নাকি! ভাবলাম ২০৭১ এ নিশ্চিতই এসব ঘটবে।
স্বাধীনতার একশত বছর।
অদ্ভুত লাগলো!
আপনের ক্রিয়েটিভিটি অসাধারণ!
থ্যাংকস বস।
মন্তব্য করুন