ইউজার লগইন

তিথি- শুধুই একটি গল্প

সারাদিন অনেক ধকল গেছে আজ তিথির।সেই ভোরবেলা ওঠে নাশতা তৈরি করে বাচ্চাটাকে স্কুলে আর স্বামীকে অফিসে পাঠিয়ে ঘরদোর গোছগাছ করতে করতেই পুরো সকালটা শেষ ওর।আজকে আবার ব্যাংকে গিয়েছিলো টাকা তুলতে।ব্যাংকের ক্যাশিয়ার পরিচিত থাকায় টাকা তুলতে বিশেষ বেগ পোহাতে হয়নি।তারপরও বাসায় আসতে আসতে অনেক দেরি হয়ে গেছে ওর।দুপুরের রান্নাবান্না শেষ হতে হতেই বাচ্চাটা স্কুল থেকে এসে পড়ে।ওকে গোসল করিয়ে,খাইয়ে ঘুম পাড়ানোর সময় নিজেও একটু ঘুমিয়ে নেয়।

সারাদিন কাজ করতে করতে নিজের জন্য একটুও সময় বের করতে পারে না ও।তাই বলে কি ও অসুখী?না বেশ সুখেই আছে ও।তিনজন মিলে বেশ ছিমছাম,গোছানো সংসার।এটাই কি চেয়েছিলো ও?হয়তোবা হ্যা,হয়তোবা না।স্বামীর ভালোবাসা পাচ্ছে,নিজের সংসার নিজের মতো চালাচ্ছে এইতো বেশ ভালো আছে ও।একটা মেয়ে জীবনে এর থেকে আর বেশি কি চায়?তিথিও আর কিছু চায় না।

তবুও মাঝে মাঝে একটু খচখচানি লাগে মনে।একটা শ্যামলা মুখ,আর দশটা সাধারণ মুখের মতই একটা মুখ যা সবসময় হাসিতে উদ্ভাসিত থাকতো।মাঝে মাঝে রাতের বেলা ঐ মুখটার কথা ভেবেই বুকটা খচ করে ওঠে ওর।কেমন আছে ও?এখন কোথায়?

উত্তর জানে না তিথি,জানতেও চায় না।সবাই নিজের ভালো চায়,তিথিও তো নিজের ভালোটাই চেয়েছে।বিকেলবেলা সাদা মেঘের ওড়াওড়ি আর রাতের বেলা আকাশে তারা দেখে ওর দিন চলবে না।শ্যামলা ছেলেটি তো তাই চেয়েছিলো।কিন্তু নিজের ভালো তো সবাই বুঝে। ও কি ভুল করেছে?না তিথি ভুল করেনি,ও শুধু নিজের ভালোটা বুঝেছে।

রাতের বেলা ঘুমটা ভেঙে গেলো তিথির।বারান্দায় এসে দাড়াতেই গা টা জুড়িয়ে গেলো ওর।ঐপাশের দোকানটা এখনো খোলা।প্রতিদিন ভোরবেলা পর্যন্ত খোলা থাকে দোকানটা।সারারাত চা খেতে আসে মানুষ দোকানটায়।মানুষের কি আর কাজ নেই?সারারাত ভর চা গিলতে হবে?

ছলিম মিয়া লোকটিকে দেখে একটু অবাক হয়।বিগত কয়েক সপ্তাহ যাবৎ প্রতিদিনই আসছে লোকটা দোকানটায়।এসে কিছু করে না,শুধু চা খায় আর সামনের বাড়িটার দিকে তাকিয়ে থাকে।ছলিম মিয়া প্রথমে ভেবেছিলো লোকটা খারাপ কিন্তু আচার আচরণে লোকটাকে বেশ ভদ্রই মনে হচ্ছে।খারাপ লোকের চেহারায় মায়া থাকে না,লোকটার চেহারায় মায়া আছে।শ্যামলা বর্ণের লোকটাকে বেশ ভালোই মনে হচ্ছে ওর।

প্রতিদিনের মতো আজো চা এর দোকানটায় এসে বসে আসিফ।কি কারণে আসে ও নিজেও জানে না।তিথির বাসার ঠিকানাটা জানার পর থেকেই এখানে আসাটা রুটিন হয়ে গেছে ওর।তিথিকে কখনো দেখতে পাবে এই আশা করে না ও,তবুও এখানে আসতে হবে ওর।

আজো অন্যান্যদিনের মতো তিথির বাসার সামনের দোকানটায় এসে বসলো আসিফ।সারাদিন এতো কাজের চাপ থাকে যে অফিস থেকে বের হবার সুযোগই পায় না ও।
হঠাৎই ওপাশের বারান্দায় কাউকে এসে দাড়াতে দেখে ও।

তিথি!!!

কতদিন পর ওকে দেখলো আসিফ।কতদিন পর!

একসাথে অনেক কথাই মনে পড়ে গেলো ওর।তিথি কি ভালো আছে?কে জানে?ওর ভালো থাকা না থাকাতে কিছু আসে যায় না আসিফের।

পোস্টটি ৫ জন ব্লগার পছন্দ করেছেন

সামছা আকিদা জাহান's picture


Smile

তানবীরা's picture


আমরা কি এই বাংলাদেশ চেয়েছিলাম তিথী Tongue

মন্তব্য করুন

(আপনার প্রদান কৃত তথ্য কখনোই প্রকাশ করা হবেনা অথবা অন্য কোন মাধ্যমে শেয়ার করা হবেনা।)
ইমোটিকন
:):D:bigsmile:;):p:O:|:(:~:((8):steve:J):glasses::party::love:
  • Web page addresses and e-mail addresses turn into links automatically.
  • Allowed HTML tags: <a> <em> <strong> <cite> <code> <ul> <ol> <li> <dl> <dt> <dd> <img> <b> <u> <i> <br /> <p> <blockquote>
  • Lines and paragraphs break automatically.
  • Textual smileys will be replaced with graphical ones.

পোস্ট সাজাতে বাড়তি সুবিধাদি - ফর্মেটিং অপশন।

CAPTCHA
This question is for testing whether you are a human visitor and to prevent automated spam submissions.

বন্ধুর কথা

প্রাগৈতিহাসিক অভী's picture

নিজের সম্পর্কে

সাধারণ হয়ে অসাধারণের মতো বাঁচতে চাই