একদিন খুব হাপুস হুপুস গ্রামের বাড়ি।
একদিন হাপুস হুপুস গ্রামের বাড়ি চলে যাবো। হুট করেই, যেদিন মনে হবে ঠিক সেদিন। মানে যদি অফিস বন্ধ থাকে পরদিন বা সেদিন বা অফিস খোলা থাকলেও যাবো-ই। কোন পিছুটান থাকবে না, কেউ বলবে না যাস নে, দায় থাকবে না, মনে হবে না এই কাজ সেই কাজ। খালি মনে হবে একদিন হাপুস হুপুস গ্রামের বাড়ি চলে যাবো। মনে হওয়া মাত্রই একটা ব্যাগ, না না ব্যাগ নিয়ে কি হবে, ব্রাশ, হা হা নিমের ডাল আছে না। ফলে ব্যাগ ছাড়াই, এক পোশাকে, হাপুস হুপুস গ্রামের বাড়ি। যদি সেদিন বাস পাই, বাস না পেলেও অন্য কোনভাবে যাবো-ই, ট্রাকে চেপে কি ট্রেনের ছাদে, একদিন খুব হাপুস হুপুস করবো। একেবারে লাস্ট ট্রিপের বাসের শেষ টিকিটটা কেটে, পেছনের কোণার জানলায় দুচোখ বেঁধে নিয়ে, আহ- এবার তবে গ্রামে যাবো। সেদিন যদি বৃষ্টিও থাকে, সিএনজি ভাড়া যদি হয় তিনগুণ, বলা যায় না, হয়তো কোন গাড়ি-ই আমি পাবো না, হেঁটে হেঁটে সায়দাবাদ, যার প্রয়োজন গাবতলি। যে যার যার বাড়িতেই যেতে হবে কে বলেছে, সবাই মিলে মহাখালিও যাওয়া যেতে পারে। সেদিন হয়তো যেতে যেতে আমরা ভিজে যাবো। আমাদের হাতে ব্যাগ এমনকি কেউ যেন ডাকতে না পারে সে জন্য মোবাইলটাও আমরা সঙ্গে নেব না। ফলে আমাদের বৃষ্টি ভেজা হবে নির্ভার। ভিজে ভিজে কাক হয়ে গেলে আমরা বাসে উঠবো। আমাদের গা ঝরা জলে বাসের মেঝে, কার্পেট এমনকি সিটও ভিজে যাবে। আর বাইরে তখন- অনিবার জলধারায় সিক্ত হবে মাঠ, জলা, এলিয়ে থাকা লতা, ঝিলিক মারবে বাজ হাইওয়েতে। সব ভীজে যাবে, ভিজতে থাকবে, আমাদের সেবারের ভ্রমণ হবে বৃষ্টি ভেজা।
আর যদি শরত থাকে। তাহলে তো তার আমল ধবল পালে নিরুদ্দেশের হাওয়া এমনকি আমাদের অন্য কোন ঠিকানায় নিয়ে যেতে পারে। সেখানে নদীর বাঁকে ছই নৌকায় কেরোসিনের তাপে হলদে নোনা ইলিশ সেদ্ধ হতে থাকবে, সেই ফাঁকে আমরা আমাদের শহুরে পোশাক খুলে উদাম স্নানে মন ভেজাবো। কাশফুল না থাক, চোখের পটে এঁকে নেব তা। আর আমাদের বাড়ির উঠান ভরা জোছনায়, একটা এঁড়ে বাছুরের চোখে লাগা চাঁদের আলোয়, অড়বরই-এর গাছে জমা আঁধার।
বাড়ি- তা সো হোক দালান কি খড়ের। সে তো ভাই গ্রামের বাড়ি। দুপুর হলে, সেই ছেলেবেলায়- চানাচুররররর, কিম্বা বৃষ্টি ভেজা জাম্বুরা, মটর ক্ষেত, আরো আরো কি যেন- সব কি আর আগের মতো থাকে। কোন কিছুই আগের মেতা থাকে না। সব পাল্টায়। একবার সেই যে, আঁধারে বসে- হুমায়ুন ফরিদি, সোহেল রানা, উম্মাহ ময়ুরী আইসা পড়ছেরে। এবং সেই সিনামা হলের পাশ দিয়ে চলে যাওয়া হাইওয়ে ধরে সেই যে ঢাকা শহরে এলাম। ধুরো, আর কতদিন। একদিন, ঠিক একদিন চলে যাবো। হাপুস হুপুস গ্রামের বাড়ি। ঠিকানা হয়তো নাই। তাহলে ঠিকানা খুঁজে নেব। কেউ কি দেবেনা তার গ্রামের বাড়িতে আমাকে থাকতে। দেবে না। অবশ্যই দেবে। না জানিয়েই চলে যাবো। ভেজা অথবা সিক্ত গায়ে। মাগো আমারে থাকতে দিবেন না গ্রামের বাড়িতে। দুই রাত একদিনের জন্য।





দারুণ লেখা। সালাহ উদ্দিন ভাই, কেমন আছেন? অনেকদিন পর দেখলাম।
হ্যাঁ অনেকদিন পরে।
আমি ভালো আছি। আপনি? ভালো থাকবেন সবসময়।
শুভ্রকে কম কম দেখা যায়
আমরা এমন চমৎকার লেখা মিস্করি
কি আর কইতাম দুঃখের কথা
শুনলে হবে মাথা ব্যাথা
আসতে তো চাই নিয়মিত। ভালো থাইকেন।
Can't say anything- just feel ur passion n like it much. Fantastic
এই হাপুস হুপুস দিন কবে যে আসবে রে ভাই?????????
লেখা উমদা হয়ছে।
হাপুস হুপুস একটা দিন আসলে আমারে জানাযেন।
ওকে বস।
'যাবো বলে থেমে থাকতে নেই',
জলদি হাপুস হুপুস গ্রামে যান ভাইটি!
সেখানে হালুম হুলুম কী কী খাইলেন,
সেটাও পোষ্ট লিখে জানান আমাদের।
সে পর্যন্ত ফাটাফাটি থাকুন।
যাবো যাবো.....একদিন ঠিক ঠিক যাবো...হু হা হা হা
একদিন খুব হাপুস হুপুস বাংলাদেশে চলে যাবো
উমমমমমম.....হাপুশ হুপুশ বাংলাদেশ।
একদিন আমিও...!
একদম উচাটন করে দিলেন প্রাণটা। এখুনি ইচ্ছে করছে বাসে চড়ে বসি.......চল যাই যাই.......

আহা গ্রামের বাড়ী!
কোনদিন পুরাতন হয়না------টান কমেনা।
আমার গ্রামের বাড়ি নাই ।
বিমা'র মতোন আমারও বাড়ি যাবার কোন টান নেই... কিন্তু আপনার লেখাটা দারুন লাগ্লো পড়তে... :)
চমৎকার একটা লেখা।
মন্তব্য করুন