একদিন আইসো বন্ধু শুনায়া যায়ো কোকিলের ডাক।
ঢং ঢং শব্দটা এই ঢাকা শহরে এতো নৈমিত্তিক কেন বুঝতে পারি না। আমার রুমের পাশে একটা দালান উঠলো ছয় তলা। টানা ছয়মাস আমি ওই ঢং শব্দে ঘুম থেকে জাগছি। অনাবশ্যক দুই দেড় ঘন্টা আগে আমার ঘুম ভাঙানোর কোন কৈফিয়ত ঢং কখনোই দেয় না। আমিও শুরুতে যে পরিমাণ বিরক্ত হইতাম পরে তা ছাইড়া দিলাম। জীবনের অনুষঙ্গ হিসেবে ঢং শব্দটারে মাইনা নিলাম। শব্দটা আসলে এতো বৈচিত্রহীন আর অগভীর যে প্রতিবারে একই রকম ঢং শব্দ হয়। বাসা থেকে বাইর হইলে এমন ঢং শব্দ অহরহ শোনা যায়। বাসে যাইতে যাইতে ঢং, অফিসে আইসাও দেহি সেই ঢং। মাথার ভিতরে ঠাঁই করে নিতে ঢং এর এতো চেষ্টা আমার মুখে একটা মুচকি আর ক্রুর হাসির রেখা তৈরি করে। তুমি বাবা যতোই চেঁচাও তোমার ঠাঁই আমার মাথায় হবে না। এখানে কতো কোকিলের ডাক জমায়া রাখছি।
কিন্তু মাথার ভেতর কোকিলটা শুকায়া আসে দিন দিন। তার ডাক আর শুনি না। তারে নকল কইরা আমি যে ডাক দিতাম তাই এখন অনুরণিত হয়। বাইরের ঢং ঢং শব্দের জালায় ওই নকল করা কোকিলের ডাকও ক্ষীণ হয়া আসে। বাইরে আর ভেতরে মরতে বসা কোকিলের ডাক ঢং ঢং শব্দদানোর কাছে দিন দিন কেবল অসহায়। বুঝি না। বুঝবার সময়ও পাই না। আগে যাও ব্লগে লিখতাম এটা সেটা, এখন তাও পারি না। মাইনষের লেখা পড়নের সময় পাই না। লেখা পড়লেও কমেন্টানোর সময় নাই। এখন ওই ঢং শব্দ যারা শোনে তারাই আমার পরিচিত, বন্ধু, কাজের মানুষ, আমি তাদের এবং তারাই আমার প্রয়োজন মেটায়। একদিন কোন বন্ধু আইসা কোকিলের ডাক শোনার গল্প কইরা যাইতো যদি। এক লগে গলা মিলায়া কোকিলরে নকল করতাম, ঢং শব্দ নাই এমন কোন জায়গায় যাইতে পারতাম।
সেদিন ঢাকার বাইরে এক বাসষ্ট্যান্ডে গোলাপ জামের ফুল দেখলাম। প্রথমে দেইখা ভাবছি পেয়ারার ফুল, কিন্তু মিলাইতে পারলাম না। পাতা মিললো না, সময় মিললো না। ঢাকায় ফিরতে ফিরতে সারা রাস্তা ভাবলাম, কি ফুল, কি ফুল। পরে ঘাঁটাঘাঁটি কইরা বুঝলাম। ওই ফুল গোলাপ জামের। রোঁয়া ওঠা, শাদা শাদা, ফুলগুলা কয়দিন লাইগা ছিলো আমার চোখে। আবার সেই ঢং শব্দ সব চুরমার কইরা ভাইঙ্গা দিল। এখনো কণা কণা গোলাপ জামের ফুল জমা আছে চোখে। কিন্তু এতো শব্দের ভিড়ে আর কয়দিন। গোলাপ জামও মিলায়ে যাবে। থাকবে শুধু ঢং। তাও ভাবি, একদিন একটা বন্ধু আসবে, শুনায়া যাবে কোকিলের ডাক। ঢং শব্দরে হার মানায়া একদিন আসো বন্ধু শুনায়া যাও কোকিলের ডাক। কু উ কু উ কু উ ।
শিরোনামটাই মন কেড়ে নেয় ..........
দারুন একটা লেখা পড়লাম.........
শুভ কামনা রইল শুভ্র ভাই .......
এইটা লেখার সময় হিমুরে মনে পড়ছিলো, অর দেখা পাইলেই হইত। দুইজন মিল্লা ঢাকা শহরের রাস্তায় কোকিলের ডাক ডাক্তাম।
হু আ'র খুব পছন্দ হইত নিশ্চয়।
শুভ্র ভাই কি হইছে ??? মেয়েটা কে ? কইয়া ফেলান , ম্যানেজ হইয়া যাইবে আল্লা ভরসা
মেয়েনাতো আমি কোকিলের কথা কইছি। কোকিলের ডাক ভালো দিতে পারে এমন কেউ আছে
নাকি। থাকলে আসতে কয়ো।
লেখাটা ভালো লাগছে। কোকিলের ডাক, ব্যাপারটা ইন্টারেস্টিং।
আসলেই ইন্টারেস্টিং। সময় থাকলে একদিন চইলা আইসেন।
দুইজন মিল্লা...............
আরে কন কি?? আমি তো প্রথম কোকিলের ডাক শুনছি ভার্সিটিতে উঠার পরে। আমাদের এইখানের কোকিল কিছুটা পাগলা কিছিমের!! সারা বছর ডাকে!!!
তুমি মিয়া, কি কও...
কোকিল চিন নাকি?
কোকিলের বাচ্চাগুলা ডাক প্র্যাক্টিস করে, ফলে বসন্তের পরেও দাক শোনা যায়। আর কিছু কোকিল আছে বসন্তের পরেও ডাকে।
একটা জমাট লেকহা পড়লাম...
দারূণ লাগলো...
আসলেই আর ঢং শুনতে ভালো লাগে না। আজ সকালে ধানমন্ডির লেকের পাশ দিয়ে আসার সময় শুনলাম কোকিলের ডাক। শুনতে চাইলে লেকের পারে গিয়ে বসতে পারেন। তবে সেখানেও ঢং এসে লন্ডভন্ড করে দিতে পারে সব।
ভাল লাগার কথা জানিয়ে গেলাম...............
কী খবর?
মন্টা উদাস হৈলো!
বরাবরের মত শুভ্র মার্কা লেখা।
এখানে প্লাস নাই, তাই পুরস্কার বুঝিয়া নাও শুভ্র।
হুমম;
মেয়েটা কে? বাস্তবের না স্বপ্নের?
গোলাপ জামের ফুলের গন্ধ কি সুন্দর? ছাতিম গাছের ফুলের গন্ধ রাইতে বেলা কি অশরীরি.....
ঘন্টার ঢং শুইনাই অস্থির....মাইনষের ঢন দেখলে তো ডাইরিয়া হই যাইবোনে...
কু উ কু উ কু উ । মেয়েটা কে? বাস্তবের না স্বপ্নের? ঃ)
মন্তব্য করুন