ইউজার লগইন

ষ্টেশন মাস্টারের গল্প

20.jpg

ষ্টেশন মাস্টারের গল্প
তৌহিদ উল্লাহ শাকিল
এক
লাকসাম রেলওয়ে জংশান।বিশাল এলাকা । অনেক রেল লাইন । চারদিকে রেলের রাস্তা। আখাউড়া , ঢাকা থেকে সব ট্রেন এক রাস্তা দিয়ে প্রবেশ করে ষ্টেশনে । এরপর ভাগ হয়ে যায় সেখান থেকে তিনটি লাইনে। একটি লাইন চলে গেছে চট্রগ্রামের দিকে , অন্যটি নোয়াখালীর দিকে আর বাকি'টি চাঁদপুর অভিমুখে। সবসময় কোলাহল লেগেই আছে ষ্টেশনের মাঝে। নিয়মিত বিরতিতে একটার পর একটা ট্রেন আসছে আর ছুটে যায় তার গন্তব্য অভিমুখে।কত রকমের মানুষ ষ্টেশনে থাকে তার হিসেব নাই । অনেক হকার , ফকির, ছদ্দবেশী পুলিশের লোক এবং নানামুখী যাত্রী তো আছেই। সেই সাথে এই ষ্টেশনে অনেক দিন যাবত আছে নুরু পাগলা।
বয়স পঞ্চাশ পেরিয়ে গেছে । চোখে তেমন দেখতে পায়না । গলার স্বর অস্বাভাবিক চওড়া। হাতে বহু দিনের পুরানো শাল কাঠের লাঠি । তার মাথায় পেছানো লাল শালু কাপড়। অনেকে বলে নুরু পাগলার কিছু অধ্যাত্নিক ক্ষমতা আছে । আমি অবশ্য এসব বিশ্বাস করিনা । হ্যা একথা ঠিক মাঝে মাঝে কিছু কথা একেবারে হুবুহ ফলে যায়। তাই বলে তাকে দরবেশ বা ফকির বলে মেনে নেয়া যায়না। আর আমার মত লোকের পক্ষে তা কখন সম্ভব নয় ।কারন আর সবার চেয়ে নুরুকে আমি সবচেয়ে বেশি জানি ।
আমি সোলাইমান শেখ। এই ষ্টেশনের ষ্টেশন মাস্টার । আমি যখন চাকুরী পেয়ে এই লাকসাম ষ্টেশনে আসি এর কিছু দিন পর থেকেই নুরু পাগলা'কে দেখে আসছি। আসলে নুরু পাগলা ছিল না । ছিল এক জোয়ান পুরুষ । যেমন ছিল গায়ের জোর তেমন ছিল আকর্ষণীয় চেহারা। পুরানো দিনের সেই সময়ের কথা আমার মনে আছে এখনও স্পষ্ট । এছাড়া ছোট বেলা থেকে ডায়েরী লেখার অভ্যাস আমার ছিল। আমি কখন ও নিজের কথা কখনও অন্যের কথা ডায়রির পাতায় লিখি । আমি সবসময় আমার চারপাশের মানুষদের নিয়ে লিখেছি । তাদের সংক্ষিপ্ত একটা পরিচয় এবং তারা কে কি করে । ষ্টেশন মাস্টার হিসাবে কাজের ফাঁকে ফাঁকে আমি লিখেছি।
আজ বসে আছি একাকী, রাত অনেক হয়েছে। ষ্টেশনে নীরবতা থাকে না মানুষের মুখরিত গুঞ্জনে। কিন্তু রাতের দ্বিপ্রহরে অনেক নীরবতা। কেমন যেন নিরব নিস্তব্দ এই ষ্টেশন । জীবনের বেশীরভাগ সময় আমি এই একাকীত্ব কে বুকে নিয়ে বেঁচে থাকি রাতের পর রাত , মাসের পর মাস। এই দুনিয়ায় আমি আমার শেষ প্রজন্ম। আমার পরে আর কেউ নাই। আমার আগে যারা ছিল তারা কেউ এখন বেঁচে নাই । এই পৃথিবীর মাঝে আমার বংশে শুধু আমি বেঁচে আছি। বাবা মারা গেছে মুক্তিযোদ্ধের সময়। রাজাকার সামসু তার সাথে করে পাকিস্তানীদের আমাদের বাড়িতে নিয়ে আসে । আমি সেই সময় ভারতের বর্ডারে যুদ্ধের মহড়া দিচ্ছি। রাজাকার সামসু বাবাকে আমার কথা জিজ্ঞেস করল। বাবা বলেছিলেন – "ছেলে আমার দেশ স্বাধীন করতে গেছে। তোর মত রাজাকার হয়নি হারামজাদা " । সামসু পাকবাহিনীর মেজর কে কি যেন বলেছিল । তারপর তারা বাবাকে উঠোনে নিয়ে এসে গুলি করে ঝাঁঝরা করে দেয় তার বুক । পরাধীন বাংলা বাবার সেই রক্ত চুষে মনে মনে স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষাকে আরো শক্তিশালী করে দেয়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তখন আমি যুদ্ধ করি । একদিন এমনি নিশুতি রাতে বাবার মৃত্যে সংবাদ শুনি নুরুর কাছে । সেই নুরু তখন টগবগে তরুন। আমার তো বাবাকে মেরে সামসু চলে গেছে । কিন্তু নুরুর পরিবারের কাউকে জীবিত রাখেনি সেই হায়না। নুরুর বাবাকে বেনেট দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে মেরেছে কুত্তার দল। সাথে ছিল আমাদের দেশী একদল নেড়ী কুত্তা। নুরুর ঘটনা আমি যুদ্ধের পর শুনি । তার বোন মালাকে স্কুলের ক্যাম্পে নিয়ে কি নির্যাতন করে। যুদ্ধ শেষে নুরুর বোন মালা গলায় দড়ি দিয়ে আত্নহত্যা করে দুর্বিষহ জীবন থেকে মুক্তি পায় । সেই সময় মালার মত আর অনেকে এভাবে মৃত্যে বরন করে তার হিসেব নাই।
আমার মা বাবার মৃত্যে দেখে আধা পাগল হয়ে গিয়েছিলেন শোকে । যেদিন বাংলাদেশ স্বাধীন হল সেদিন আমি বেশ খুশী মনে বাড়ী ফিরি। আমার মা তখন আমায় বলে
-দেশ স্বাধীন করেছিস রে বাপ
-হ্যা মা ।
-তাহলে তোর বাপকে নিয়ে আয় । বেচারা কোথায় আছে । যা না ।
যুদ্ধ জয়ের আনন্দ সাথে সাথে ক্ষীণ হয়ে যায় ।বাবার কথা মনে করে দুচোখ পানিতে ভাসাই । সেই বিকেলে নুরু আসে । এসে সব বলে । আর বলে প্রতিশোধ নিতে হবে , চরম প্রতিশোধ।
আমি নুরুকে শান্তনা দিতে চাই । নুরু কি আমার কথা শুনে । ছুটে চলে রাজাকার সামসুর খোঁজে। সামসুকে পাবে কোথায় সামসু তখন পালিয়ে গেছে গ্রাম ছেড়ে । অনেকদিন সামসুর কোন খবর পাইনি । নিজে বিয়ে করলাম পাশের গ্রামের লুতু মাস্টারের মেয়ে জরিনাকে। এরকিছুদিন পর মা মারা গেল বাবার শোকে । আমি একেবারে একা হয়ে গেলাম। সংসার আমার কাছে ভাল লাগেনা। এর মধ্যে জরিনা পোয়াতি হয়। আমি আবার ঘর মুখি হতে থাকি । বর্ষার এক রাতে জরিনার ব্যাথা উঠে । আমি ছুটি হাসিনার মায়ের জন্য। সারা গ্রামে একমাত্র দাঈ। দাঈ নিয়ে এসে দেখি জরিনার রক্তে সারা ঘর লাল হয়ে আছে। হাসিনার মা আমায় বাইরে রেখে ভেতরে যায়। কিছুক্ষণ পর ফিরে এসে বলে বাবা সোলাইমান তোর সর্বনাশ হইছে। মা এবং বাচ্চা দুজনকে আল্লাহ তার কাছে নিয়ে গেছে। বুকের মাঝে প্রচন্ড এক ধাক্কা খাই।
এরপর রেলের চাকুরীটা পাই। সেই থেকে আর সংসার করিনি । আমি জরিনা ছাড়া কাউকে ভালবাসব তা ভাবতে পারিনা । জরিনা আমার বংশের প্রদীপ জ্বালাতে গিয়ে মরে গেছে তাই আমার ভয় হয়। অনেক বয়স হয়েছে , একদিন আমি ও চলে যাব তখন আর কেউ থাকবে না । আমি অনেকের জন্য কেঁদেছি কিন্তু আমার জন্য কাঁদার কেউ থাকবে না পৃথিবীতে। এটা একদিক দিয়ে ভাল হয়েছে। আমি যা বেতন পাই তার অর্ধেক রেলের বস্তির এতিম খানায় দিয়ে দেই , বাকীটা দিয়ে আমার পুরু মাস অনায়াসে চলে যায়। লোকজন আমায় অনেক সন্মান করে । কিন্তু তারপর ও আমার কিছু ভাল লাগে না ।

দুই

একদিন ষ্টেশনে বসে দৈনিক খবরের কাগজ পড়ছিলাম , সেই সময় দেখি হাতে একটা শাল কাঠের লাঠি, পরনে ছিন্নবিন্ন ঘেরুয়া বসন নিয়ে এক পাগল আমার পাশে এসে বসেছে। আমি তার মুখের দিকে তাকিয়ে চমকে উঠি কিন্তু চিনতে পারছিলাম না। হঠাত করে সব মনে পড়ে যায়। আরে এই মুখ তো , সেই নুরুর মুখ।
-কিরে নুরু তোর একি হাল
-চিনেছিস তাহলে।
-চিনব না কেন। শুধু মুখের দাড়ীর কারনে একটু খটকা লেগেছিল। কোথায় ছিলি এতদিন।
-সে অনেক কথা । তুই কেমন আছিস ?
দুজন দুজনের কথা শুনলাম। এরপর দুজনে চুপ করে বসে রইলাম অনেক সময়। একসময় ট্রেনের হুইশেলে বাস্তবে ফিরে এলাম। নুরু সামসুর খোঁজে এই শহর থেকে সেই শহর ঘুরেছে। যখনি খবর পেয়েছে সামসু যেখানে আছে সেখানে ছুটে গেছে কিন্তু কোনদিন তার নাগাল পায়নি।যখন পায় একবার তখন তাকে মারতে গিয়েছিল । সামসু তখন নুরুকে পুলিশে দিয়ে দেয়। পুলিশ সামসুকে "এটেম্পট টু মার্ডার"মামলায় ফাসিয়ে দেয়। এলাকার অনেকে এবং সামসুর ভাড়া করা উকিল কোর্টে সেটা প্রমান করে । তারপর চৌদ্দ বছরের জেল। জেল থেকে আজ সোজা আমার কাছে চলে আসে । তবে এখানে আসার পেছনে অন্য উদ্দেশ্য আছে । কিন্তু কি সেটা বলছে না । শুধু বলছে আমি পাগল তুই আমাকে ছিনিস না । ব্যাস আর কিছু জানার দরকার তোর নাই। আমি এই ষ্টেশনে থাকব । সেই থেকে আজ বিশ বছর সামসু পাগলের অভিনয় করতে করতে বধহয় সত্যিকারের পাগল হয়ে গেছে ।
সামসু এখন অনেক পয়সা ওয়ালাহয়ে গেছে। রাজনীতি করছে।এবার বোধহয় সংসদ নির্বাচন করবে।প্রতিদিন বাজারে মিছিল হচ্ছে সেই মিছিলে সবাই সামসুর জয়গান গায়। টাকা থাকলে কিনা হয়। যে সামসু একদিন বাংলাদেশ বিরোধী ছিল সেই সামসু এখন বেশ স্বগর্ভে চলে। ইদানিং নাকি বলে বেড়ায় মুক্তিযুদ্ধের সময় সে যুদ্ধ করেছে। তরুন প্রজন্মের অনেকে বিশ্বাস করে । কারন তারা তো মুক্তিযুদ্ধ দেখেনি । যারা দেখেছে তারা এত কমজোর হয়ে আছে , তাদের পক্ষে সামসুর বিরুদ্ধে কিছু বলা দুঃসাধ্য । নুরু পাগলাকে দেখা যায় এসব মিছিল মিটিং এর দিকে নিস্পলক তাকিয়ে থাকতে। সেদিন রুমে ফেরার সময় দেখি নুরু একাকী ষ্টেশনের পূবদিকে বসে আনমনে কি যেন ভাবছে। আমাকে দেখে কিছু না বলে সোজা অন্যদিকে চলে যায়। এমন ভাব করল যেন সে আমাকে চিনেনা।
তিন
সকালে মানুষের চিৎকারে ঘুম ভেঙ্গে যায়। ষ্টেশনের কোনার দিকে অনেক মানুষের ঢল। এগিয়ে গিয়ে দেখি নুরু একটা চৌকির মাঝে শালু কাপড় বিছিয়ে আসন পেতে আছে। সবাই তারদিকে চেয়ে আছে। একজন একজন করে নুরুর সামনে এসে বসছে আর নুরু থুথু ছিটিয়ে তাকে দোয়া করছে । ভাবলাম এবার বুঝি সত্যি পাগল হয়ে গেছে। কিন্তু আমার দিকে চোখ পড়তে কি যেন ইশারা করল ,বুঝতে পারলাম না । চুপ করে নিজের কাজে চলে গেলাম। মালি মেয়েটা এসে বলল
-স্যার নুরু পাগলা নাকি দরবেশ হয়ে গেছে । সে যা বলে তা ফলে যায়।
-তাই নাকিরে।কি বলিস। পাগল আবার দরবেশ । তুই গিয়েছিলি নাকি রে
- না যাই নাই । তবে একটু পড়ে যাব।
-কেন যাবি তুই । তোর আবার কি হল?
-আপনাকে বলা যাবেনা স্যার।
-হুম । ঠিক আছে । এখন যা ।
কয়েকদিনের মধ্য নুরু পাগলা থেকে নুরু দরবেশ হয়ে গেল। এলাকায় তার নাম হয়ে গেল অনেকে তার কাছে আসতে লাগল। কোন এক চেয়ারম্যান নাকি নির্বাচনের আগে নুরু দরবেশের দোয়া নিয়ে নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছে। পুলিশের ওসি থেকে শুরু করে সবাই তার কাছে আসতে লাগল। কেউ কেউ উপকার পেতে লাগল। কিন্তু কি উদ্দেশ্য নুরু এসব করছে তা বুঝতে পারছি না। গতকাল রাতে আমি গেলাম নুরুর কাছে ।
-কি ব্যাপার নুরু এসব কি করছিস।
-কিছু না । দোস্ত আমার জন্য তোর কোন সমস্যা হবে না।
আমি জানিনা নুরু কেন এমন করছে । আমার সাথে বেশী কথা সে বলেনি । কিন্তু আমার মনে কেমন যেন খচখচ করতে লাগল। এলাকায় জাতীয় নির্বাচনের আমেজ । এমন সময় একদিন সকালে শুনলাম নুরুর সাথে দেখা করতে সামসু তার দল নিয়ে আসছে। নির্বাচনে বিজয়ের জন্য দরবেশের দোয়া নিতে। অনেক লোক জমে গেল ষ্টেশনে। সামসু তার দল নিয়ে দরবেশের কাছে গেল । দরবেশ তার সাথে একাকী কথা বলবে । সবাইকে হটিয়ে সামসু আর নুরু কথা বলল । কিন্তু কি কথা তা কেউ জানলো না। হঠাত করে নুরু চিৎকার দিয়ে উঠল
-হারামীর বাচ্চা । রাজাকার । দেশের শত্রু হয়ে তুই নির্বাচন করছিস। আমাকে মিথ্যে বলে জেল খাটিয়েছিস। আমার পরিবারের সবাইকে পাকসেনা দিয়ে নির্যাতন করেছিস।
নুরুর হাতে উঠে এল শাল কাঠের শক্ত লাঠি । জনতা একেবারে স্তব্দ হয়ে আছে । নুরু কম্পিত হাতে সে লাঠি দিয়ে সামসুকে লখ্য করে মারতে গেল কিন্তু লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে গেল। জনগন নুরুকে ঘিরে ধরল। সামসু তার দল নিয়ে চলে গেল। আমি ষ্টেশনের বারিন্দায় দাঁড়িয়ে সব দেখলাম।
চার
আজ সকালে বেশ ঘুম পাচ্ছিল । তাই আলস্য করে উঠছিনা। বিছানায় পড়ে রইলাম।আবারো মানুষের চিৎকার আর চেঁচামেচিতে ঘুমিয়ে থাকা সম্ভব হলনা। দাত ব্রাশ করে পেপার নিয়ে সবে বসেছি এমন সময় গার্ড লোকটি দৌড়ে আসতে দেখে উঠে দাড়ালাম। হাঁপাতে হাঁপাতে বলল
-স্যার সর্বনাশ হয়েছে , নুরু দরবেশ কে মেরে কারা যেন রেললাইনের উপর ফেলে রেখেছে। অনেক লোক সেখানে জড় হয়েছে। চলুন সাহেব । দেখতে যাবেন।
আমার কথা বলার শক্তি হারিয়ে ফেললাম । চুপ করে বেঞ্চিতে বসে পড়লাম। বিরাট একটা ধাক্কা খেলাম হৃদয়ে । আসতে আসতে হাটতে লাগলাম। নুরুকে দেখার জন্য। আমি এবার বুঝতে পারলাম নুরু কেন এসেছিল এখানে । রাজাকার সামসুকে সে মারতে এসেছিল কিন্তু নিজেই লাশ হয়ে গেল। এখন থানা পুলিশ হবে কিন্তু সামসু ধরা ছোঁয়ার বাইরে থেকে যাবে । নিজেকে বেশ ছোট মনে হতে লাগল। সামসুর প্রতি আমার এতদিন ক্ষোভ ছিল না কিন্তু এখন আমার পুরানো ক্ষত মাথা ছাড়া দিয়ে উঠল । আমি কি করব ভাবতে পারছি না । ধীরে ধীরে সামসুর লাশের কাছে গিয়ে দাড়ালাম। বাকরুদ্ধ হয়ে রইলাম। দু চোখের কোনা বেয়ে পানি বেরিয়ে এল বহুদিন পর। চারদিকে তাকালাম। সবাই চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে । সবাইকে বললাম লাশের দাফন কাফন করতে হবে । কিন্তু কেউ এগিয়ে এলনা । কারন পুলিশ কেইস হবে কেই এই লাশ ছুয়ে ঝামেলায় যেতে রাজি নয়।
থানা থেকে পুলিশ এল । অনেকের জবানবন্ধি নিল । শেষে লাশ পোস্ট মারটমের জন্য নিয়ে গেল । যাবার আগে বলে গেল আমাকে থানায় যেতে।
রাতে লাশ নিয়ে এলাম । ষ্টেশনের অনেক কে দিয়ে দাফন কাফনের ব্যাবস্থা করলাম। সমাধি স্থলে একাকী দাঁড়িয়ে রইলাম ভাবলেশহীন নিরব ভাবে। এক পা বাড়িয়ে ষ্টেশনের দিকে চলছিলাম। এমন সময় দেখলাম সামসু রাজাকারের নির্বাচনী মিছিল ষ্টেশনের পাশ দিয়ে পার হচ্ছে। আর কিছু ভাবার সময় নাই । মনে মনে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললাম। যা নুরু পারেনি তা আমি করব। বলে আধার রাতে কবর পেরিয়ে মিছিলের দিকে ছুটে চললাম ।হাতে রইল নুরুর সেই সেগুন কাঠের লাঠিটা .........

পোস্টটি ৮ জন ব্লগার পছন্দ করেছেন

তানবীরা's picture


গল্প ভালো হয়েছে। বেশ কয়েক জায়গায় নুরু লিখতে গিয়ে আপনি সামসু লিখে ফেলেছেন হয়তো।

আরো বেশি গল্প চাই।

তৌহিদ উল্লাহ শাকিল's picture


ব্যাপারটা দেখছি । অনেক ধন্যবাদ । শুভকামনা রইল আপনার জন্য।

মাহবুব সুমন's picture


গল্পে আবেগ বেশী বাস্তবতা কম

তৌহিদ উল্লাহ শাকিল's picture


আবেগ আর বাস্তবতা নিয়ে কিছু লিখতে গেলে এমনি হয় । আপনার মন্তব্যর জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

রশীদা আফরোজ's picture


ভালো লেগেছে।
লাকসাম রেল স্টেশন গিয়েছিলাম। ভালো লেগেছে। বেশ সুন্দর স্মৃতি আছে লাকসাম নিয়ে। মনে পড়ে গেল।

তৌহিদ উল্লাহ শাকিল's picture


এই ষ্টেশন নিয়ে অনেক সৃতি জড়িয়ে আছে । তাই গল্পটি লেখা । এতে অনেক বাস্তবতা আছে। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ ।

ফিরোজ শাহরিয়ার's picture


ট্রেন, স্টেশন এসব কিছু মানে শুধু স্মৃতি। একসময় ট্রেনে খুব চড়তাম।

তৌহিদ উল্লাহ শাকিল's picture


ধন্যবাদ

শামান সাত্ত্বিক's picture


এমন গল্প আরো লেখা হবে। শুভ কামনা।

১০

তৌহিদ উল্লাহ শাকিল's picture


অবশ্যই লেখা হবে । অনেক ধন্যবাদ

১১

আরিশ ময়ূখ রিশাদ's picture


গল্প ভালো হয়েছে।
স্টেশন মাস্টার নিয়ে পুশকিনের একটা চমৎকার গল্প আছে আর আমার খুব প্রিয় একটা গল্প সুবোধ ঘোষের জতুগৃহ, তবে সেটা ওয়েটিং রুম নিয়ে। পড়েছেন?

১২

তৌহিদ উল্লাহ শাকিল's picture


না ভাইয়া পড়ি নি। আপনার সংগ্রহে থাকলে আমাকে পাঠিয়ে দিন এই মেইলে(touhidullah82@gmail.com)

আপনাকে অনেক ধন্যবাদ

মন্তব্য করুন

(আপনার প্রদান কৃত তথ্য কখনোই প্রকাশ করা হবেনা অথবা অন্য কোন মাধ্যমে শেয়ার করা হবেনা।)
ইমোটিকন
:):D:bigsmile:;):p:O:|:(:~:((8):steve:J):glasses::party::love:
  • Web page addresses and e-mail addresses turn into links automatically.
  • Allowed HTML tags: <a> <em> <strong> <cite> <code> <ul> <ol> <li> <dl> <dt> <dd> <img> <b> <u> <i> <br /> <p> <blockquote>
  • Lines and paragraphs break automatically.
  • Textual smileys will be replaced with graphical ones.

পোস্ট সাজাতে বাড়তি সুবিধাদি - ফর্মেটিং অপশন।

CAPTCHA
This question is for testing whether you are a human visitor and to prevent automated spam submissions.

বন্ধুর কথা

তৌহিদ উল্লাহ শাকিল's picture

নিজের সম্পর্কে

দেশের বাইরে আজ এই শহর থেকে কাল অন্য শহরে যাযাবরের মত ছুটে চলছি বিরামহীন। । জন্ম ১৯৮১ সালের ৭ই ডিসেম্বর কুমিল্লা জেলার অন্তর্গত লাকসাম থানার কান্দিরপাড় গ্রামে। । বাবা বেঁচে নেই। তাই জীবিকা এবং কর্মসংস্থানে দেশ ছেড়ে পাড়ি জমাই ২০০৩ সালে । সেই থেকে এখন ছুটে চলছি । । মাঝে মাঝে কিছু লিখি । কি লিখি তা নিজে ও জানি না ।। কেউ বলে ভাল লিখি, কেউ বলে কিছুই হয়না । আসলে কি হয় আমি নিজে ও জানিনা । তাই ছুটছি এখন সাহিত্যের রস আস্বাদনে ।