এক বিদেশিনী মেয়ে এবং এক বাংলাদেশী ছেলের গল্প ।
প্রেমিক-প্রেমিকার ভালবাসার গল্প বিভিন্ন রকম হতে পারে । যদি মেয়েটি হয় বিদেশিনী এবং ছেলেটি হয় বাংলাদেশি ।
কাছে আসবে আসবে বলে আর আসতে পারলনা......
এভাবে আমি একটু কল্পনা করেছি আর কিছুই নয় ।
****************************************************************************
রিহানের সাথে মেয়েটির পরিচয় হয়েছিল একটি চ্যাট সাইটে । মেয়েটির নামছিল টিউলিপ পার্কার । অভাক হবার কারণ নেই । মেয়েটি বাংলাদেশি ছিলনা মেয়েটি ছিল বিদেশিনী ।
টিউলিপের দেশ ছিল ফ্রান্স ।
চ্যাটে ওরা দুজন অনেক কথা বলত । একদিন রিহান টিউলিপকে বলল, আমরাতো এখানে সবসময় চ্যাট করি এবার এসো ফেসবুকে চ্যাট করি এতে আমাদের দুজনেরই সুবিধা হবে।
টিউলিপ কোন আপত্তি না করে লক্ষি মেয়ের মত রাজি হয়ে গেল । এভাবে ফেসবুকেও ওরা অনেক কথা বলত । টিউলিপ রিহানকে একবার বলেবসে আমরা কেন ইয়াহু মেসেঞ্জারে চ্যাট করছিনা ? এটা দিয়ে আমরাতো ভয়েস চ্যাট করতে পারি ।
এরপর থেকে ওদের ভয়েস চ্যাটে আরও অনেক কথা হত ইয়াহু মেসেঞ্জারে । এভাবে ওরা একজন আরেকজনের সাথে প্রায় প্রতিদিন কথা বলত । ধীরে ধীরে বুঝতে পরে ওরা শুধু বন্ধু নয় । আরও অনেককিছু আরও অনেক কাছের কেউ একজন আরেকজনের ।
শুধু যে চ্যাটে কথা বলত তাই নয় মাঝে মাঝে ফোনেও ওদের অনেক কথা হত । ওয়েব ক্যামে একে অন্যকে দেখতে পারত । টিউলিপ মাঝে মাঝে রিহানকে তার দেশ থেকে এটা ওটা গিফট পাঠাত । রিহানও যে পাঠাতো না তা নয় । সেও মাঝে মাঝে বাংলাদেশ থেকে সেই ফ্রান্সে টিউলিপকে উপহার পাঠাতো । মেয়েটি দেখতে ছিল হালকা গড়নের মাঝারি উচ্চতা , যদিও ওরা একে অন্যকে শুধু ওয়েব ক্যামে দেখেছিল ।
একদিন টিউলিপ রিহানকে জিজ্ঞাস করে বসে, কিভাবে বাংলা শিখতে হবে ?
রিহান বলেছিল এটা তোমার জন্য অত সহজ হবেনা ।
টিউলিপ তবুও মিনতি করে বলেছিল , আমি তারপরও শিখতে চাই । বল কি করতে হবে ?
তখন রিহান তাকে বলে, ঠিক আছে তুমি আগে বাংলা ভাষার উপর বেসিক জিনিস নিজে থেকে শিখার চেষ্টা কর । আমি মাঝে মাঝে ইয়াহুতে তোমাকে শিখাব । এভাবে রিহান টিউলিপকে অনেকদুর শিখিয়েছিল । দেখতে দেখতে কেটে গেল প্রায় বছর তিনেক ।
টিউলিপ অনেক সময় রিহানকে তার দেশে আসার কথা বলত । শুনে রিহান বলত , সেটি এই মুহূর্তে তার পক্ষে সম্ভব নয় । তার পড়াশোনা এখনও শেষ হয় নেই । এবং এতো খরচ ওর পক্ষে সামলানো যাবেনা ।
একদিন টিউলিপই রিহানকে বলেবসে সে নিজেই বাংলাদেশে আসবে এরপর তার সাথে করে রিহানকে ফ্রান্সে নিয়ে যাবে ।
শুনে রিহান খুব অভাক হয়ে বলেছিল , সত্যিই কি তুমি তা করবে ?
টিউলিপ তাকে বলে হ্যাঁ তুমি কি ভেবেছ আমি তোমার জন্য এতটুকুও করতে পারবনা । সেটা তুমি কিভাবে ভাবলে ?
তাই ?
হ্যাঁ তুমি সব প্রস্তুতি নিয়ে নাও ।
অবশেষে পার্সপোর্ট- ভিসা সব রেডি করতে রিহানের আরও কয়েক মাস কেটে গেল । ততদিনে রিহানের অনার্সও শেষ হয়ে গেল । সে শুধু অধীর ভাবে অপেক্ষাতে আছে কবে সেই রাজকন্যা ওর কাছে আসবে । ওদের যোগাযোগ আগের মতই হত ।
টিউলিপের বাংলাদেশে আসতে আর মাত্র এক সপ্তাহ রয়েছে ।
এরই ভিতরে রিহানের মন মেজাজ মোটেও ভালনা । কয়েকদিন ধরেই টিউলিপ ফেসবুকে , ইয়াহুতে , এমনকি ফোনেও সাড়া দিচ্ছিলনা ।
পাঁচদিনের দিন রিহান মনমড়া হয়ে পিসির পাশে বসে ছিল । সেই সময় হঠাৎ ওর ফোন বেজে উঠল । ফ্রান্সের কোড নাম্বার দেখে সে ভাবল মনে হয় টিউলিপ ।
কিন্তু ফোনটি ধরেই সে পেল চরম দুঃসংবাদটি টিউলিপের বড় বোন সিন্থির কাছ থেকে । টিউলিপ তিন গাড়ি এক্সিডেন্ট করে হাসপাতালে ছিল , ওর আর জ্ঞান ফিরে নেই । কোমাতে থাকা অবস্থাতেই ওর মৃত্যু ঘটে ।
সংবাদটি জানারপর রিহান যেন নিজেকে আর নিয়ন্ত্রণ করতে পারলনা । সে পুরোপুরি মানসিক ভাবে ভেঙ্গে পরে । তাকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয় ।
প্রায় একমাস পর সে হাসপাতাল থেকে ফিরে এসে ফ্রান্স যাওয়া বাতিল করে দেয় । কারণ যেখানে ওর টিউলিপ নেই সেখানে গিয়ে ওর আর কি হবে ?
************************************************************************************************************************************************************************************************************************************************************
প্রায় বছর পাঁচেক হল রিহান টিউলিপকে হারিয়েছে । সে আজ উচ্চতর পড়াশোনার জন্য লন্ডনে । তার মেয়ে বন্ধুর কোন অভাব নেই । কিন্তু কাউকেই সে টিউলিপের মত পায়না । এখনও ওর মনে পরে সেই রাজকন্যার কথা । ওয়েব ক্যামে দেখা টিউলিপের সেই মিষ্টি হাসির কথা , মনে পরে তার সেই সুন্দর নীল চোখের কথা । আজও এতো মেয়ের মাঝে রিহান টিউলিপকে খুজে বেড়ায় বিক্ষিপ্ত ভাবে ।
কিন্তু তাকে কি আর কোনদিন সে পাবে খুজে ...।।
হুম!
সুন্দর হয়েছে। তবে এই ধরনের কাহিনী আগেও পড়েছি।
ধন্যবাদ ।
আমার সাধ না মিটিলো আশা না পুরিলো সকলই ফুরায়ে যায় মা .......
(
গল্পটা ভালই তবে ছবিটার কারনে বোকা বোকা লাগতেছে!
একটু দেড়িতে রি-প্লে দিলাম । পড়ার জন্য ধন্যবাদ আপনাদের ।

মন্তব্য করুন