শরবত পান করবেন জনাব।
অনেক গরমে জীবনটা যখন বের হয়ে যাবার দশায় পড়ে যায় তুখন এক গ্লাস ঠান্ডা শরবত খেয়ে দেখতে পারেন। কেমন লাগে! পুরা শরীরে একটা ঠান্ডার পরশ ছুঁয়ে যাবে, মনে হবে আহ কি শান্তি! শরবতের কথা আমি ছোট বেলা থেকে জানি, আমি দেখেছি আমার বাবা যখন দুপুরে কোথায়ও থেকে আসতেন তখন আমার আম্মা আমার বাবাকে লেবুর শরবত বানিয়ে দিতেন, মাঝে মাঝে পাকা বেলের। এক চুমুকে বাবা পান করে নিতেন। তার পর বের হত বাবার মুখে কথার ফুলঝুরি! (আজকাল কোন স্ত্রী তার স্বামীকে শরবত বানিয়ে দেন কিনা আমার জানা নেই!)
এরপর কখনো আমরা দুপুরের দিকে স্কুল থেকে রোদ্দে পুড়ে ফিরলে আম্মা আমাদেরও শরবত বানিয়ে দিতেন - লেবু, কাঁচা আম, কামরাঙ্গা, তরমুজ আরো কত কি দিয়ে! আমরা ভাই বোন কেহ শরবত পছন্দ করতাম না। তবুও আম্মা বানিয়ে দিতেন। বলতেন খেয়ে দেখ, মনে শান্তি পাবি! বাবার মত আমরাও এক চুমুকে পান করে সতেজতা ফিরে পেতাম। দুপুরের দিকে আমাদের বাসায় কোন মেহমান আসলে, শরবত মাষ্ট। (আজকাল মেহমানদের শরবত দিলে মাইন্ড খেতে পারে!) শরবতের জন্য আমার আম্মাকে আমার এক চাচী বলতেন - শরবতের মাষ্টার। নানা প্রকারের শরবত বানাতে আম্মার জুড়ি মেলা ভার ছিল। তবে আম্মাকে আমি কখনো শরবত খেতে দেখি নাই!
শরবতটা আমাদের সমাজে/ পরিবারে খুব একটা আর টিকে নেই। তবে একটা জায়গায় এখনো আছে। বিয়ে বাড়ীর দরজায়! বিয়ে বাড়ীর দরজায় দুলামিয়াকে ফিতা দিয়ে আটকে দেয়া হয়। তারপর টাকা পয়সা নিয়ে ফয়সালা হলে ফিতা কাটার পর দুলামিয়াকে শরবত খেতে দেয়া হয়। তবে পরীক্ষার একটা ব্যবস্থা থাকে! এক গ্লাসে থাকে লবন দিয়ে আর অন্য গ্লাসে চিনি দিয়ে। দুলামিয়াকে রুমালের ফাঁকে সঠিক গ্লাস চিনে নিতে হয় (এই শরবতের কোয়ালিটি একে বারে জিরো, কোন মতে পানিতে গুলানো, দুলামিয়ার সাথে প্রথম ঠাট্টা হয় শ্বশুর বাড়ীতে!)।
সে যাই হোক, আপনাদের বলা ভাল আমার বিয়েতে এ রকম শরবত খেতে হয় নাই, আলহামদুল্লিলাহে। সুযোগ ছিল না। লম্বা কাহিনী, পরে বলব। মায়ের হাতের শরবতের পর এ দুনিয়াতে আর একজনের হাতের শরবত পান করার সুযোগ হয়েছে, দুই দফায় অনেকবার। প্রথম দফায় তার হাতের শরবত পান করেছিলাম ১৯৯১ সালে, আর ২য় দফায় ২০১০ সালে। আমি তার হাতের শরবতের ভক্ত হয়ে উঠেছি। তার বানানো শরবতের মাঝে যে কি যাদু আছে, না পান করলে বুঝা যাবে না। সেই ছোট বেলা থেকে শরবত বানিয়ে আসছেন, প্রায় ২৫ বছর! একই জায়গায়! একই ধরনের লেবুর শরবত!
মোহাম্মদ সাব্বির
প্রতিটা লেবু নিজ হাতে বেঁছে আনেন
শরবত রেডী!
কলকাতা নিঊ মার্কেটের (স্যার স্টুয়াড হগ মার্কেট) প্রবেশের মুখে ডান পাশে তার দোকান।
আপনিও একবার পান করে দেখতে পারেন, জনাব।
প্রোমোশনিং ইন্ডিয়ান ব্র্যান্ড!!!
আর যতদূর জানি ওদের শরবত আমাদের শরবতের তুলনায় কিছুই না। অনেকের কাছ থেকে শুনেছি।
যাই হোক আপনে এখন দেশে না বিদেশে?
মীর ভাই, সত্যকে সত্য বলা ভাল। হা হা হা.।।
ফেরত এসেছি। অফিসে আছি। আপনি কেমন আছেন?
শরবত পান করবেন কবে!
জ্বি জনাব, হাতে সময় আছে।
শুধু শরবত পানের জন্য কোলকাতা গিয়ে পোষাবে না, স্পেশাল আর কি কি পাওয়া যায়,বলতে থাক....।
ঈশান, তেমন কিছুই দেখা হয় নাই। দিন গুলো মাটি হয়েছে।
খালি সুরাতে কাজ হবে না জনাব, সাকীরও খবর দেন।
হা হা, ভাইজান আমাদের কি আর সে চোখ/মুখ আছে? বুইড়্যা কালে কি নুপুর পায়ে দিমু!
সাকী (হাসানুজ্জামান সাকী) এখন বৈশাখী টিভিতে @ মাসুম ভাই
মানুষের হাতে বানানো শরবত
। থাক
কোলকাতার রাস্তার রোল, দইবড়া, চাওমিন, আলু টিক্কি এগুলো ভালো লাগে খেতে।
সিষ্টার তানবীরা,
কলকাতার রাস্তার রোল, দইবড়া, চাওমিন, আলু টিক্কি - না এসব দেখিনি, হয়ত চোখে পড়ে নাই। তবে মাটির কাপে চা খেয়েছি অনেকবার, রাস্তায় দাঁড়িয়ে।
কলকাতা জীবনেও দেখি নাই, একবার নেতাজী এয়ারপোর্ট না কি জানি নাম ঐ টা দেখছি। আর রাস্তআয় বানানো শরবত
থিও ভাই,

সারা দুনিয়াতে রাস্তায় খাওয়া দাওয়া পাওয়া যায়। মানুষ দিন দিন গরিব হয়ে যাচ্ছে। নেতাজী এয়ারর্পোট দেখুন।
নেতাজী এয়ারর্পোটে দামী মোবাইল হারিয়ে বেচারার অবস্থা দেখুন! ভ্রমনে নেতাজী এয়ারর্পোট নেমেই আমাদের কস্টের সীমা ছিল না।
জনাব উদরাজী, ভ্রমণকাহিনীর আবরণে শরবতের বিজ্ঞাপন ভাল লাগলো । কিন্তু পোষাবে না । মোহাম্মদ সাব্বিরের সাথে চুক্তির শর্ত-টর্ত ঠিক মত করেছেন তো !
হুদা ভাই, আপনার শরবত খাওয়ার দিন কিভাবে পার করছিলেন, জানতে ইচ্ছা হচ্ছে। মোহাম্মদ সাব্বিরের হাতের শরবত খেয়ে আসতে পারেন, পিছনের দিনের কথা ইয়াদ হয়ে যাবে।
কেমন আছেন? লিখছেন না কেন।
ত্বরিৎ জবাবের জন্য ধন্যবাদ । ভাল আছি । লেখার উৎসাহ পাচ্ছিনা কেন যেন ! সময়ও করতে পারছি না ।
গুলনাহারের শরবত কেমন?
রায়হান ভাই, আপনাকে চিনতে পারলাম না তবে আপনি আমার সব খবর রাখেন বুঝতে পারছি। গুলনাহারের প্রেমে দেখছি আপনিও মশগুল!
-আমিই হয়তো সেই ভাগ্যবান।
বাইরে থেকে ঘেমে নেয়ে এলে মা এগিয়ে দিতেন তেঁতুল আর গুড় অথবা চিনি মেশানো শরবত। মার কাছ থেকে তাঁর বউও ব্যাপারটা রপ্ত করে নিয়েছে।
এ লেখায় আমার জননীকেই যেন দেখতে পেলাম শরবত হাতে।
জুলিয়ান ভাই, আপনার লেখা পড়ে খুশি হলাম। ভাবী দীর্ঘজীবি হউক। আমার স্ত্রী ও আমাকে শরবত বানিয়ে দেয়, তবে বলতে হয়! না বললে পা নড়ে না! শরবত ভালবাসার প্রতীক। কথায় আছে - মায়ের হাতের পিঠা, শাশুড়ির হাতের পায়েস আর স্ত্রীর হাতের শরবত!
তেঁতুল আর গুড় দিয়ে শরবত আমিও আমার মায়ের কাছে থেকে পান করেছি।
যাই হোক আপনি আমার লেখায় মুল জায়গায় গিয়েছেন। আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ। আপনার পরিবারের জন্য শুভ কামনা।
আমার স্ত্রী ও আমাকে শরবত বানিয়ে দেয়, তবে বলতে হয়! না বললে পা নড়ে না!
ভালোই কৈছো দোস্ত। পা নড়বো কেমনে ? যেই হারে তোমার বৌ চারদিকে বাড়তেছে...! বাই দ্য ওয়ে, এক রিকশায় ২ জনের জায়গা হয়তো ?
বন্ধু, একটা ব্যাপার লক্ষ্য করলাম, ব্লগেই শুধু সত্য কথা বলা যায়। ভয় ডর লাগে না!
বন্ধু সাহাদাত উদরাজী আপনার শরবত কাহিনী পড়লাম। স্ত্রীর শরবত পান করি প্রায়শঃই। অন্যরকম এক স্বাদ বোঝানো যাবেনা বন্ধু।
তোমার ইন্ডিয়া সফর নামা- টা ধীরে ধীরে ছাড়ো এখানে। আমরাও একটু উজ্জ্বীবিত হই। সাধারন ঘটনা গুলোই লেখ যা সাধারনত পত্রিকা কিংবা বই তে আসে না।
স্ত্রীর শরবত পান করি প্রায়শঃই। অন্যরকম এক স্বাদ বোঝানো যাবেনা বন্ধু।
জন সমক্ষে এইটা তুমি কী কৈলা লিটন ? শরম পাইলাম...
লিটনটা আজকাল চরম বেয়াদপ হয়ে উঠছে।
আমাদের পরিবারে শরবতের চল আছে। বাইরে থেকে যে কেউ এলে এক গ্লাস শরবত ধরিয়ে দেয়া হয়।
আমি রোজ সকালে এক গ্লাস সয়াবিনের শরবত রেডি করে রেখে অফিস যাই। (রেসিপি : এক গ্লাস পানিতে ২ চা চামচ সয়াবিন গুড়া, পরিমাণমতো চিনি, একচিমটা লবণ, যেকোনো ফল একসাথে ব্লেন্ড করতে হয়। )
রাশীদা আফা, আপনার রেসিপিটা ট্রাই করতে হবে দেখছি। ভাল পুষ্টিকর মনে হচ্ছে। স্বাধ কেমন লাগে।
সরবতের কাহিনী পড়ে কেমন জানি ঠান্ডা ঠান্ডা অনুভূতি হইল।
কয়েকদিন আগে প্রেসক্লাবের উল্টাদিকে ইন্ডিয়ান স্টাইলে তৈরী করা লেবুর সরবত খাইলাম। মধু, অর্ধেক লেবু, বিটলবন আর বরফকুচিঁ মেশানো পানি।
নাহীদ ভাই, প্রেস ক্লাব এর উলটা দিকে যাব ভাবছি।
কলকাতায় দিনগুলো মাটি করবার জন্য আপনি নিজেই দায়ী। শুধু দোকান, বাজার আর সিনেমা দেখলে এই দশাই হবে।
বন্ধু, সবই ভাগ্য!
আসুবিধা নাই। আবার যামুনে। আপনাকে আমরা বন্ধু তে লিখার আমন্ত্রন জানাছি।
মন্তব্য করুন