ঘোরাঘুরি
বাংলাদেশের ৬৪ জেলা ঘোরা মানুষ আমি। স্কুল জীবন থেকেই আমার সারাদেশে ঘোরাঘুরি শুরু। কখনো এমনিতেই ঘুরতে যাওয়া। কখনো বাবার চাকরীর সুবাদে থাকা। আমার নিজের চাকরীর কারনেও অনেক জেলায় ঘুরেছি। আবার প্রথম আলোর সাথে দীর্ঘদিন জড়িত থাকার কারনেও দেশের অনেক জেলায় ঘুরতে পেরেছি। বিভিন্ন জেলায় ঘুরতে যেয়ে বিভিন্ন রকমের মানুষের সাথে মেশার এক অন্য রকম সুযোগ পেয়েছি আমি। কোথাও যেয়ে মনটা ভালো হয়ে গেছে। এত সুন্দর নিরিবলি ছিমছাম শহর। আবার কোথাও যেয়ে মেজাজ খারাপ হয়ে গিয়েছিল। সেই সব আজ কেবলই স্মৃতি। সুখের স্মৃতিই বেশি।
বন্ধু লিটনের সাথে ময়মনসিংহ যাই। ট্রেনে করে। সে এক অন্যরকম উত্তেজনা। জীবনে প্রথম একা একা বাসার বাইরে। তাও ট্রেনে করে। স্টেশনে নেমে তারপর চলে যাই কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে। কী বিশাল ক্যাম্পাস ! সারাদিন ঘুরে রাতের ট্রেনে আবার বাসার পথে। ফেরার পথে দুজনের কারো কাছে তেমন টাকা নেই। ট্রেনে টিকেট না করে চড়ে বসলাম। পথে টিটি ধরল। বললাম, ছাত্র মানুষ। টাকা নেই। কী আর করবেন তিনি। একটু মায়া হলো হয়ত। দু-চারটে ধমক আর উপদেশবানী শুনিয়ে ছেড়ে দিলেন। বাসায় আসার পর না বলে যাবার কারনে বাবার হাতের সেকী মার !
বাবা তখন কুষ্টিয়া মেহেরপুরে। একদিন মেহেরপুর ছেড়ে বন্ধু মুক্তা, মেলালের সাথে কুষ্টিয়া শহরে চলে এলাম। ট্রেনে করে কুমারখালী গেলাম। আরেক ট্রেনে ফিরলাম। তারপর কেয়া সিনেমা হলে বাংলা সিনেমা দেখলাম। গড়াই নদীর পাড়ে গিয়ে উদাস হয়ে বসে থাকলাম অনেকক্ষণ। সন্ধ্যা নামলো একসময়। বাসায় ফেরার তাড়া থাকলেও ফিরলাম না। কুষ্টিয়া রেল স্টেশনে ৩ বন্ধু মিলে রাত কাটালাম। কত শত বিচিত্র অভিজ্ঞতা আমাদের। পরদিন বাসায় ফিরলাম। মা'তো কেঁদে একাকার। রাতে বাবা ফিরে আবার মার। ততদিনে বাবার মার আমার কাছে ডাল-ভাত। ঘোরার নেশা আমার রক্তে।
চাঁদপুরে থাকার সময় স্কুল ফাঁকি দিয়ে ট্রেনে করে কুমিল্লা চলে যেতাম। আবার বিকালের ট্রেনে ফিরতাম। ট্রেনের দরজায় দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখতাম, সবুজ ধানক্ষেতগুলো কীভাবে পার হয়ে যাচ্ছে। আহা কী সুখ ছিল সে দেখাতে ! বাসায় টের পেতোনা কেউ। এরপর জীবনে কত ট্রেনে চড়েছি। কিন্তু সেই বাসা পালিয়ে ট্রেনে চড়ার মত সুখ আর পাইনি। আর কি পাব কোনোদিন ?
নারায়ণগঞ্জে থাকাবস্থায় বোস কেবিনের মিষ্টি কত যে খেয়েছি। আদর্শ মিষ্টান্ন ভান্ডারের পরোটা- ভাজির স্বাদ আজো জিভে লেগে আছে। লঞ্চে করে প্রায়ই মুন্সিগঞ্জ চলে যেতাম। আবার ফিরতাম। নদী আমাকে খুব টানতো। বাসার পাশেই ছিল শীতলক্ষ্যা। সেখানে প্রতিদিন গোসল করতাম। আমি আমরা দল বেঁধে। এভাবে গোসল করতে যেয়ে একদিন সুইটি আপার ভাই মিরন নদীতে ডুবে মারা গেল। মিরন বেঁচে থাকলে আজ কত্ত বড় হত। আমার ৩/৪ বছরের ছোট ছিলো ও...
ফরিদপুরে আমার এক বন্ধু থাকতো। একসময় আমরা একসাথেই থাকতাম। একদিন মেট্রিক পরীক্ষার পরে ফরিদপুর চলে এলাম। এবার অবশ্য বাবা-মাকে বলে। বাস স্ট্যান্ডে নামলাম। যদ্দুর মনে পড়ে সে স্ট্যান্ডের নাম 'গোয়লচামট'। সেখান থেকে রিকশায় কমলাপুর এলাকায়। বন্ধু শোয়েবদের বাসা। দুই বন্ধু মিলে অনেক মজা করলাম। ঘুরলাম। ওকে সাথে নিয়ে চলে গেলাম রাজবাড়িতে। ছোট শহর রাজবাড়ি। কী সুন্দর, ছিমছাম।
স্কয়ারে চাকরীর সুবাদে একদিন অফিসের সবাই মিলে গেলাম পাবনা। পাবনার শালগাড়িয়াতে ছিল স্কয়ারের ফ্যাক্টরি। সেখানে আমাদের কোম্পানির সেলস কনফারেন্স ছিল। ৩ দিনের সেই কনফারেন্সে কত না মজা করেছি। শেষ দিনে সবাই মিলে হিমায়েতপুরে পাগলদের দেখতে গিয়েছিলাম। আরেক বছর কনফারেন্স হলো- কক্সবাজার। সেবারই প্রথম আমার কক্সবাজার যাওয়া। কনফারেন্সের শেষ দিনে সমুদ্রে গিয়ে ২-৩ ঘন্টা সমুদ্রের নোনা জলে আমাদের সেকি লাফালাফি, দাপাদাপি আর ঝাপাঝাপি...
প্রথম চাকরীর পোস্টিং ছিল চট্টগ্রামে। সেখান থেকে তিন পার্বত্যজেলা বান্দরবান, খাগড়াছড়ি আর রাঙ্গামাটি যেতে হতো আমাকে। তখন শান্তি বাহিনীর যুগ। এই সব জেলাতে যেতে কতবার যে সেনাবাহিনীর লোকজন আমাদেরকে তল্লাশি করতো। রাতে ভয়ে ভয়ে হোটেলে থাকতাম। কখন না আবার শান্তিবাহিনীর লোক এসে ধরে নিয়ে যায় এই চিন্তায় ঠিকমত ঘুম হতো না। এই তিন জেলার মধ্যে আমার ভালো লাগতো রাঙ্গামাটি। হৃদের কী স্বচ্ছ পানি। রাঙ্গামাটি শহরের জায়গাগুলোর নাম কী সুন্দর। কাঁঠালতলী, বনরুপা, ভেদভেদি বাজার, রিজার্ভ বাজার...
আরো পরে যখন খাগড়াছড়ি গেলাম, তখন শান্তি বাহিনী নেই। আছে পুরো জেলা জুড়ে বাঙ্গালী অশান্তি বাহিনী। সেবার আলু টিলায় গেলাম। অন্ধকার গুহার এমাথা থেকে সে মাথা মশাল নিয়ে ২/৩ বার পার হলাম। কী ঠান্ডা পানি গুহার ভেতরে। চামচিকারা উড়ে যেত মাথার উপর দিয়ে। একটু ভয় লাগলেও আনন্দও বড় কম লাগতো না। খাগড়াছড়িতে আমার এক বন্ধু থাকে। সোনালী চাকমা। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় পড়া মেয়ে একটা নারী নেত্রী। কতদিন ওর সাথে দেখা হয়না !
সিলেটে গিয়েছি কতবার। পুরো সিলেট অঞ্চলের অলি গলি আমার ঘোরা। হবিগঞ্জ, মৌলভী বাজার, সুনামগঞ্জ, কুলাউড়া, বড়লেখা...। মাধবকুন্ড ঝরনার উপরে উঠে গিয়েছিলাম-পানির উৎস খুঁজতে...। কী পাগলামী। সাথে নতুন বিয়ে করা বৌ আমার। শ্রীমঙ্গলে অনেক চা-বাগান। সবই ফিনলে কোম্পানির। সেসব বাগানে আমার কত বন্ধুরা। কত পূর্ণিমার রাত যে চা-বাগানের বাংলোতে কাটিয়েছি- তার হিসেব নেই। শ্রীমঙ্গলে প্রচুর শীত, গরম আর বৃষ্টি হত। সেই সব উপভোগ করতাম প্রাণভরে। আহারে, আমার সেই সব সোনালী দিনগুলো...
যশোর জীবনে প্রথম যাই বিমানে চড়ে। উঠতে না উঠতেই জার্নিটা শেষ। যশোরের জামতলার রসালো মিষ্টি। কী যে মজার ! যশোরে একটা রাস্তার নাম কারবালা। কী সুন্দর আর ব্যতিক্রম নাম। সেখানের এক অফিসে চাকরী করতো আমার বন্ধু শিপার। যশোর পেরিয়ে বেনাপোল রোড। সেখানকার এক জায়গার নাম- নাভারন। শুনে এবং দেখে পুলকিত হই। ততদিনে 'গানস অব নাভারন' দেখা হয়ে গেছে। মধুসূদন, সাগরদাঁড়ি, সুলতান, চিত্রা নদী... হায়রে আজো কি তেমনি আছে ? খুলনা... আমরা ছড়া কাটতাম। কোন শহর খুলতে মানা ? নুরনগর, সোনাডাঙ্গা, নিউ মার্কেট কত আড্ডা দিয়েছি...
নেত্রকোনা গিয়েছি আর বালিশ খাইনি- সেটা কখনো হয়নি। কোনো এক দুর্গা পুজার সময় নেত্রকোনাতে ছিলাম। অসংখ্য পুজা মন্ডপ আর ধর্ম-বর্ণ সবার মহামিলন দেখে কী যে ভালো লেগেছিলো। ফেরার পথে শেরপুর গেলাম। সেখানে আবার গজনী নামের সুন্দর একটা জায়গা আছে। শেরপুর শহর থেকে ১০/১৫ কিলো দুরে। একবারে ভারতের বর্ডারের কাছে। মাঝে মধ্যে হাতির দল বেরিয়ে আসে জঙ্গল থেকে। তাদের পায়ের দাগ স্পষ্ট দেখি। কিশোরগঞ্জের দুলু ভাই। যতবার গেছি- হাওরের বড় বড় কৈ মাছ খাইয়েছেন। সেকি ভোলা যায়। সেইসব কৈ মাছ এখন আর টাকা দিলেও পাওয়া যায় না...
বরিশালে বিশাল বিশাল লঞ্চ যায়। সেরকম একটা বিরাট লঞ্চে করে একবার ভোর বেলায় বরিশাল যেয়ে হাজির। সেখানের আলী নামের এক হোটেলে নাস্তা খেলাম। এ এক অন্যরকম অভিজ্ঞতা। নাস্তার ইয়া বড় প্লেট। পরোটার সাথে ডাল-ভাজি এবং হালুয়া দেয়া হয়। যার যেটা খুশি খাবে। খেয়ে চমৎকৃত হই। সদর রোডের অশ্বিনিকুমার হলে একটা প্রোগ্রাম ছিল। সেটা শেষ করে মেডিকেল কলেজ দেখতে যাই। তারপর বিএম কলেজ। রাতে টাটকা ইলিশ দিয়ে ভাত খাই। তারপর আড্ডাই বন্ধুদের সাথে। অনেক রাতে ঘুমাতে যাই। খুব সকালে আবার ছুটি কুয়াকাটার পথে...
সিডরের পর পর পটুয়াখালী যাই ভয়াবহতা দেখতে। স্বজন হারানো মানুষের কান্না আর হাহাকার ! ৩ ছেলেকে হারিয়ে একজন বাবা সত্য নারায়ণ কী করে বেঁচে আছেন... এই সবের স্মৃতি আমাকে এখনো তাড়া করে ফেরে। সেখান থেকে বরগুনা। এখানকার অবস্থাও ভয়াবহ। তবে মৃতের সংখ্যা ছিল কম। সারা উপকূল এলাকা জুড়েই মানুষের কান্না। সেই তুলনায় আমরা কতই না ভালো আছি।
গোপালগঞ্জে ছোট বোনের শ্বশুর বাড়ি। সেখানে বেড়াতে যেয়ে মুফতে দেখে আসি টুঙ্গিপাড়া। যেখানে জাতীর জনক শেষ নিদ্রায় শুয়ে আছেন। গোপালগঞ্জে আরো একজন বরণীয় মানুষের দেখা মিলে। তিনি লড়াকু সাংবাদিক নির্মল সেন। একসময়ের লড়াকু এই সাংবাদিকের কী জীর্ণ শীর্ণ জীবন যাপন। তাঁকে দেখে মাদারীপুর হয়ে আবার এই যন্ত্রের শহরে প্রত্যাবর্তন।
রংপুরে যেয়ে এ জেলা সম্পর্কে আমার ধারনাটাই পাল্টে যায়। ভাবতাম, এখানে বুঝি সবাই মঙ্গাপীড়িত মানুষ। আসলে তা নয়। শহর পেরিয়ে গ্রামাঞ্চলের মানুষগুলো অনেক কষ্টে খেয়ে না খেয়ে, শীত-গ্রীষ্ম আর বর্ষায় কতই না কষ্টে দিন কাটাচ্ছে। আসলে কাটাতে বাধ্য হচ্ছে। এছাড়া আর কিছুই যে করার নেই তাদের। রংপুর থেকে কুড়িগ্রাম। তারপর নিলফামারী। সেবার নিলফামারীতে কী ভীষন গরম ! সারারাত একরত্তি ঘুমাতে পারিনি। ছোট শহর নিলফামারী। লোকজনকে দেখেই বুঝা যায়, এখানকার মানুষদের জীবন যাত্রার মান কত নিচে।
বন্ধু মুসা ইব্রাহীমের সাথে একদিন ওদের গ্রামের বাড়ি বেড়াতে যাই। সেটা ঠাকুরগাঁও। তো, তার পাশেইতো দিনাজপুর। গেলাম, কান্তজীর মন্দির দেখে ফেরার পথে গাছ থেকে পেড়ে স্থানীয় একজন আমাদের সাগরকলা খেতে দিলেন। সে কলার স্বাদ জীবনে আর কোথাও পাইনি। হয়ত পাবোও না। সৈয়দপুর দেখার লোভ সামলানো কঠিন ছিল। এখানে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় একমাত্র রেলওয়ে কারখানাটি দেখে হতাশ হলাম। কী নিদারুন অবহেলায় দিন দিন এ কারখানাটি রুগ্ন থেকে রুগ্ন হয়ে পড়ছে। কারো সেদিকে লক্ষ্য নেই। কী করে বিদেশ থেকে রেলের যন্ত্রাংশ আমদানী করবে- সেটাই সংশ্লিষ্ট সবার ভাবনা। তাতে যে নিজের পকেটে দুটো পয়সা আসবে !
পঞ্চগড় যাই দুটো কারনে। বাংলাবন্ধ বর্ডার দেখা এবং কাজী এন্ড কাজী টি-গার্ডেন দেখা। বর্ডারের পাশে এক ধরনের জিলাপী পাওয়া যায়। কী যে স্বাদ তাতে। কাজী এন্ড কাজী টি-ইস্টেটে একরাত ছিলাম। এখানকার একটা বৈশিষ্ট হচ্ছে- এখানে যারা থাকবেন, তারা মাছ-মাংশ খেতে পারবেন না। এখানে শুধু সব্জী খাওয়া হয়। কত রকমের যে সব্জী মেলে এখানে। রাতে পাহাড়ের ওপাড়ের দার্জিলিং শহরের বাতি দেখা যায়। অপরুপ সে দৃশ্য।
বগুড়ার দই খাবার লোভেই এই শহরে নামা। সেখান থেকে বাসে নওগাঁ। বন্ধু আসিফের বাড়ি। নওগাঁর আম অনেক মিষ্টি আর মজার। নওগাঁ পেরিয়ে ভেতরের রাস্তায় নাটোর। বনলতা সেনের জন্ম এই শহরে। হোকনা সেটা ভার্চুয়্যালি। নাটোর রাজবাড়ি, ওষুধি গ্রাম, লাঠি-বাঁশি সমিতি...। কালীবাড়ি রোডের কাঁচাগোল্লার কথা বলাই বাহুল্য। নাটোর ছেড়ে রাজশাহী। মামুর বেটার জেলা। রেশম শিল্প, মরা পদ্মা, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, সারদা পুলিশ ট্রেনিং সেন্টার... এইসব দেখতে দেখতে সময় শেষ। চাঁপাইনবাবগঞ্জ যেতে হবেনা ? ছোট শহর চাঁপাই। শহর পেরিয়ে যেতেই বিশাল বিশাল আম বাগান। সে বাগানে যেয়ে গাছ থেকে পেড়ে আম খাওয়া... আহ ! কয়জন মানুষের সে সৌভাগ্য হয়। আমি সৌভাগ্যবান। ফেরার পথে কানসার্ট বাজার। বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় আমের পাইকারি বাজার। কত জাতের আম যে পাওয়া যায় এখানে। তারপর বর্ডারের একদম কাছে- ছোট সোনা মসজিদ দেখে রাতের বাসে ফেরা।
কত লিখবো। এক এক জেলায় যেয়ে এক এক রকমের অভিজ্ঞতা। কত রকমের মানসিকতার মানুষের সাথে এক জীবনে আমার বিচরণ। এদের থেকে ভালোটা তুলে নিতে নিতে একসময় নিজেকে খুব ক্ষুদ্র আর তুচ্ছ মনে হতে লাগলো। হায় জীবন এত ছোট কেনো। নিজের দেশের মত সারা বিশ্বটাকে এভাবে দেখার বড় সাধ আমার। জানি, তা আর এই জীবনে পূর্ণ হবে না। তাতে কী ? এক জীবনে নিজের দেশে ঘুরে যা পেয়েছি- তাই বা কম কিসে ! আসলেই আমার দেশে, দেশের বেশিরভাগ মানুষগুলো অনেক ভালো। এই দেশটাকে আমি ভালোবাসি। ভালোবাসি এই দেশের আপামর মানুষগুলোকে...
কত বেড়ানোরে! আমার জীবনের এর সিকি ভাগও ঘটে নাই
এইটার জন্য আমার একমাত্র বৌটারেও ক্ষাণিকটা কৃতিত্ব দেয়া উচিৎ। বেচারি সারাজীবন আমাকে ছাড় দিয়েই গেলো। আসলে ঘোরাঘুরিটা আমার রক্তে মিশে আছে।
কিশোরবেলায় সুনীল সমরেশ বা জাফর ইকবাল পড়ে গল্পের নায়কদের যেমন হিংসা হতো এই লেখাটা পড়ে তেমনি আপনার উপর হিংসা হচ্ছে।
হা হা হা...

হিংসা ভালু না রাসেল !
তুমিও আল্লার নাম নিয়া শুরু কর... নাহয় কয়দিন পরে দুইজনে মিল্যাই শুরু কৈরো
আপ্নে আসলেই দুইন্নার ভাগ্যবান। আমি আজীবনই ঘরকুনা ব্যাং হইয়া রইলাম!
২বার সিলেট আর একবার কক্সবাজার ছাড়া কোথাও যেতে পারিনাই! তবে ঢাকার বাইরে প্রথমবার গেছিলাম, একলা সব বান্ধুস্থানীয়দের সাথে হোক না পরীক্ষা দিতে, কিন্তু যেই মজাটা করছিলাম ট্রেনে ভুলার মতোন না! 
হ, আমি ভাগ্যবান এই মানি। এক জীবনে কত কী পেলাম। জীবনটা এত ছোট কেনো ?
রাসেল বলাতে মনে পড়লো, সুনীলের পায়ের তলায় শর্ষে পড়ে রীতিমত বেদনাহত হয়েছি, এত ঘুরাঘুরি করেছে লোকটা মনে হৈছে ধরে থাপড়াই
(আমার জামাইটা একটা কুইড়া, আহারে! যদি সুনীলের মত ঘুরুইন্না একটা জামাই পাইতাম!)
আমারমত ঘোরাঘুরি করা একটা মাইনসেরে তুমি থাপড়াইতে চাইলা
তোমার জামাই একটা 'বুইড়া' ? কও কি লীনা ? আহারে...
আরে সুনীলের মত লোকরে থিউরিটিকাল থাপ্পড় দিতে চাইবো সেই সাহস আর বেরসিক আমি! এইটাতো সোহাগের কথা
আমার জামাই বুইড়া না, কুইড়া। আইলসা।
ওওওওও, বুঝলাম
এই ব্যপারে মাসুম ভাই আসলে ফয়সালা হৈবো। গুরু কী বলে শুনি। তারপরে আমি কমুনে।

মেসবাহ ভাই দেখি আমার মতো চুনুপুটির কমেন্ট রিপ্লাই দিতেও গুরুর খোঁজ করেন
আমারে পেচ্চাপেচ্ছিতে ফেললে আপনারে কিন্তু সংঘবন্ধ পেচ্ছাপেচ্ছিতে ফেলুম, সাবধান 
ওই কমেন্টের উত্তর মাসুম ভাই যেই শৈল্পিকভাবে দিতে পারবো, আমি সেই ভাবে পারুমনা বৈলাইতো গুরুরে খুঁজি
পেচ্ছাপেচ্ছি আমি বালা পাই
গুরু হায়ার করতেছেন, ছি, মেসবাহ ভাই ছি
জাটকা নিয়া শুরু করুম?
জাটকা ? পুলিশের বৌ হৈয়া এইটা কী কৈলা ? জানোনা, জাটকা ধরা, মারা, খাওয়া দন্ডনীয় অপরাধ... পুলিশরে বলো, বৈশাখ উপলক্ষ্যে তোমারে বড় দেইখা ইলিশ মাছ কিন্যা দিতে
ঘরে বাইরে জাটকা ব্যবহার করতেছেন, জাটকা নিয়া প্রকাশ্যে কথা বলতেছেন। এসবের জন্য আপনার কী আত্মসমালোচনা করা উচিত নয়, মেসবাহ ভাই?
আমরা জানি কী নিয়া কথা বলতেছিলাম ? কুইড়া না বুইড়া... আসো সেইসব নিয়া কথা বলি।
অথবা শরীফরে নিয়াও কথা বলতে পারি। ও কি দেশে ? তার উপন্যাস পড়ে একটা এসএমএস করেছিলাম... যায় নাই।
কিংবা ধর, দেশে এত লোডশেডিং ক্যানো ? এইসবও আমাদের আলোচনায় আসতে পারে...
(আমি আসলে গুরুর অপেক্ষায় আছি। বেটা কি এখনও অফিসে আসে নাই ? এবিতে লগ-ইন করছেনা কেনো ...)
ইয়ে মানে জাটকা বিষয়ে একটা লেকচার দিতাম চাইছিলাম। আচ্ছা একটা প্রশ্ন, জাটকা কি খাঁটি দেশী মানে পদ্মার না ফার্মের?
গুরু এলো বলে ! এই বিষয়েও তার জ্ঞান সীমাহীন
কৈ যাও, অপক্ষো কর
আমি আর কমু? তয় জানি লীনার একটাই মেয়ে। তারও বয়স মনে হয় ৫ বছর হইয়া গেল।
তাইলেতো লীনার কথাই ঠিক। তার জামাই একটা আস্ত 'কুইড়া'
আমরা মেয়েরা কত যে শখ পূরণ করতে পারি না!!
। আমি জীবনে মাত্র দুইবার বাসায় না বলে অনেক দূরে চলে গেছিলাম । মাইর খাইনাই কিন্তু ঝারি খাইছি ।
আপনি সত্যি ভাগ্যবান । আপনার আপনজনরা বোধহয় আরো বেশি ভাগ্যবান
থ্যাংকস লিজা। হ, আমরা ভাগ্যবান পরিবার
প্রত্যেক জেলা নিয়ে আলাদা করে লেখা দ্যান... আমরা জেলা ভিত্তিক আপনার অভিজ্ঞতা শুনি...
~
তার আগে বলেন আপনি কোন জেলার লোক ?
যেই জেলায় আপনে বউ আর বোনরে মোটরসাইকেলে নিয়া গভীর রাত্রে হাইওয়ে রেস্টুরেন্টে চা খেতে যেতেন
~
ও, আপনি নুরজাহানের প্রতিবেশি ?
~
থ্যাংকু জনাব
হায়রে কপাল আমার!!!

==================================
দোয়া করি, একদিন যেন সারা বিশ্বটাকে এভাবে এবিতে তুলে ধরতে পারেন!
আপনার কপালে কোনো সমস্যা ? ডাক্তার দেখিয়েছেন
সেই ফুটা দিয়া চোখের পানি ঢুকে, না বৃষ্টি পানি ?
হেহে! আচ্ছা বিপদে পড়লাম তো!!
কোনো পানি ঢুকে না। মাঝে মধ্যে কীটপতঙ্গ ঢুকে কুট কুট কামড়াতে থাকে। আর বলে, "মেসবাহ থেকে সাবধান!"
আমি আবার কী করলাম
এই যে! নিজে ঘোরাঘুরি করেন। আর আমার মতো ফুটা কপালিরে নিয়া মজা করেন!!
গুল্লি কৈরেননা। কপাল 'ফুটা' হৈয়া যাইবো
ঘামাইতেছেন ক্যান ? বাসায় ফ্যান চলেনা ?
ঘুরাঘুরির গল্প ভালো লাগলো
থ্যাংকু থ্যাংকু
চল সবাই মিলে এইবার শীতে ২/৩ দিনের ট্যুরে বের হই...
আমি রাজি আছি
হিংসিত
হিংসা ভালু না
আপনার ঘোরাঘুরিকে আমি বরাবরই হিংসা করি। এখনও হিংসিত।
হিংসা ভালু না
বেরিয়ে পড় ঘর ছেড়ে, কাজের ফাঁকে
মেসবাহ ভাই ঘুরতে যায় নাই গেছে বিভিন্ন এলাকার হোটেলের খাওয়ার মান জরিপ করতে- টাঙ্গাইলের চমচমের নাম তালিকায় না থাকায় তীব্রক্ষোভ প্রকাশ করলাম।
হ, মিসটেক হৈছে। টাঙ্গাইল শহরের একানী.....পাঁচানী এইরকম একটা বাজারে গেলে ইয়া বড় বড় চমচম পাওয়া যায়। সেইসব আমি খাইছি এবং আনছি...
আপনের এই রেকর্ডটারে একদিন আমি ব্রেক করবো বলে ভাবতেসি।
এরশাদ কি আবার ক্ষমতায় আসবো ? উত্তর যদি না হয়, তাইলে বাংলাদেশে জেলা বাড়াইবো কে ? আর যদি জেলা না বাড়ে তাইলে আপনিতো বড় জোর ৬৪ জেলাই ঘুরবেন... রেকর্ড ব্রেক করতে হৈলে এরশাদের বিকল্প নাই
বালিকারে আর কয় দিন থাকতে দ্যান...৬৪ এর নামতা মুখস্ত করতে হইবো
~
ডিমওয়ালা জাটকার কথা মনে পরে
বড় হলে আমিও এরকম ঘুরাঘুরি করবো
পোষ্টের নাম হওয়া দরকার ছিল ঘোরাঘুরি আর খাওয়াখাওয়ি
মন্তব্য করুন