ভালো করি-য়ে
অস্কার ওয়াইল্ডের একটা লেখা অনুবাদ করতে চেষ্টা করলাম, কি দাঁড়াচ্ছে বুঝতে পারছিনা। অনুবাদ করতে গিয়ে নিজের ভাষার ঝামেলাটা ভালোমতো টের পাওয়া যাচ্ছে, কতো কি জানার আর শেখার বাকি!
---------------------------------------------------
তখন ছিলো রাতের বেলা আর তিনি ছিলেন একাকী।
তিনি দূরে দেখতে পেলেন এক গোলাকার নগরীর দেয়াল এবং নগরীর অভিমুখে চলতে লাগলেন।
নগরীর কাছাকাছি আসবার পরে, তিনি শুনতে পেলেন ভেতর থেকে ভেসে আসছে খুশির দম্ভময় পদধ্বনি , আনন্দের হাসি আর অনেক বাঁশীর কোলাহল। দরোজায় করাঘাত করলেন তিনি আর কোন এক দ্বাররক্ষী দরোজা খুলে দিলো।
দেখতে পেলেন এক মর্মরে তৈরী বাড়ি, যার সামনেও মর্মরস্তম্ভ। স্তম্ভ থেকে ঝুলছিলো ফুলের মালা আর ভেতরে বাইরে জ্বলছিলো সেডার এর মশাল। তিনি ঢুকে পড়লেন বাড়িটিতে।
আর যখন তিনি স্বচ্ছ পাথরের রংমহলগুলো পেরিয়ে দীর্ঘ ভোজনকক্ষটিতে পৌঁছুলেন, দেখতে পেলেন লাল গোলাপের মুকুটে চুল ঢেকে আর লাল মদিরায় ঠোঁট রাঙ্গিয়ে সমুদ্র নীলাভ এক আসনে বসে আছেন কেউ।
তিনি তার পেছনে গিয়ে দাঁড়ালেন আর কাঁধে হাতের মৃদু স্পর্শ রেখে জিজ্ঞাসা করলেন, ''তুমি এমন করে বেঁচে আছো কেন?''
যুবাপুরুষ ঘুরে তাকালো আর তাকে চিনতে পেরে বললো, ''কিন্তু, আমি তো একসময়ে কুষ্ঠরোগী ছিলাম আর আপনিই আমাকে সারিয়ে তুলেছিলেন। অন্য কি ভাবে আমি বেঁচে থাকবো?''
তিনি বাড়ি থেকে বেরিয়ে রাস্তায় নেমে এলেন।
কিছুক্ষণ পর তিনি এক নারীকে দেখতে পেলেন যার মুখ এবং কাপড় বর্ণাচ্ছাদিত আর পা দু'খানি মুক্তোখচিত। তার পিছু নিয়ে শিকারীর মতো সাবধানী পায়ে এক যুবাপুরুষ দু'রং এর আলখাল্লা পরে এগিয়ে যাচ্ছে। নারীটির মুখমন্ডল ছিলো প্রতিমার মতো নিখুঁত আর যুবাপুরুষের চোখে জ্বলজ্বল করছে কামনার ছায়া।
তিনি দ্রুত তাদের অনুসরণ করলেন আর যুবাপুরুষের হাত স্পর্শ করে জিজ্ঞাসা করলেন, '' তুমি এমন করে এই নারীকে কেন দেখছো?''
যুবাপুরুষ ঘুরে তাকালো আর তাকে চিনতে পেরে বললো, ''কিন্তু, আমি তো একসময়ে অন্ধ ছিলাম আর আপনিই আমাকে দৃষ্টি ফিরিয়ে দিয়েছেন। আর কিইবা আমি দেখবো?''
তিনি দৌড়ে সামনে গেলেন আর সেই নারীর বর্ণময় পরিচ্ছদ স্পর্শ করে প্রশ্ন করলেন, '' এই পাপের পথ ছাড়া আর কোন পথে কি তুমি হাঁটতে পারোনা?''
নারীটি ফিরে তাকিয়ে তাকে চিনতে পেরে হেসে বললেন, ''আপনিই তো আমার সমস্ত পাপ ক্ষমা করে দিয়েছেন। আর এইতো আনন্দের পথে, আর কোন পথে হাঁটবো তবে?''
এরপরে তিনি নগরী থেকে বেরিয়ে এলেন।
নগরীর বাইরে রাস্তার ধারে দেখা গেলো এক যুবাপুরুষ বসে কাঁদছেন।
এগিয়ে গিয়ে তার দীর্ঘ চুলের গোছা স্পর্শ করে বললেন, ''তুমি কাঁদছো কেন?''
যুবাপুরুষ চোখ তুলে তাকালো, চিনতে পেরে বললো, '' কিন্তু আমি তো ছিলাম মৃত আর আপনিই আমাকে বাঁচিয়ে তুলেছিলেন। কান্না ছাড়া আর কি করার আছে আমার?''





এত কেতাবি শব্দ ব্যবহার করার কি স্পেশাল কোন কারণ আছে ? (মূল রচনার গাম্ভীর্যভাব বজায় রাখা বা এরকম কিছু ) জাস্ট কিউরিয়াস ।
মর্মর, দ্বাররক্ষী, যুবাপুরুষ ...
মূল গল্পটা পড়তে গিয়ে একটা কেতাবী আভাস আসছিলো, তাই বোধহয় আপনা থেকে চলে এসেছে।
গল্পটা কেমন যেন। পুরোপুরি ধরা যায় না। কিন্তু চমৎকার।
আর অনুবাদ ঝরঝরে লাগলো। মূলটা পড়া থাকলে এ বিষয়ে আরো বলতে পারতাম। শব্দচয়ন ভালো হওয়ায় পরিবেশটা ফুটেছে ভালো।
অনেকদিন পর আপনার লেখা পড়লাম।
আমার সম্প্রতি একটা বিশাল লাইব্রেরীতে এন্ট্রি জুটেছে, অস্কার ওয়াইল্ডের ফিকশন কালেকশান দিয়ে আজকেই শুভযাত্রা শুরু করেছি।
মূলটাও দিলাম ''http://www.satellite360.com/article/24/the-doer-of-good-oscar-wilde''। পড়লে বুঝবেন কেন লেখার শুরুতে ঘ্যানাইসি।
আমিও আগে অনুবাদ করতাম আনিকা। তখন যুতসই বাংলা শব্দ খুঁজে পেতাম না। মাথা হঠাৎ করে ফাঁকা হয়ে যেতো।
তুমিতো নিজেই কতো ভালো লিখো, অনুবাদের দরকার কি মিয়া?
ভালো হয়েছে অনুবাদ, সুন্দর
যখন ব্যাপক লিখতে ইচ্ছা হয় আর নিজের মাথা ছেঁচেও কিছু বের হয়না,তখন অনুবাদ স্বান্তনা পুরস্কার, তাছাড়া নিজের প্রিয় লেখাগুলো অন্যদের সাথে শেয়ার করার মজাটুকু তো আছেই।
একটু আঁটো-সাঁটো লাগছে । আর একটু কেতাবি না হয়ে ভাব বহুল হতে পারতো সাধারন থেকেই ।শুরুটায় একটা হোঁচট লাগল মনে হলো তবে লাইনের পর লাইন পরিপক্কতার প্রমান মিলেছা ঢের । অনুবাদ সাহিত্য আশা করছি আপনার থেকে । মন জুড়াবেন আগামীতে ।
ভালো হয়েছে! আর অনুবাদ খানিকটা নিরসই হয়। অনুবাদক ইচ্ছে করলে খানিকটা স্বাধীনতাও নিতে পারেন।
লেগে থাকলে ভালো করবেন! সেই সঙ্গে আপনার অনুবাদের ভক্ত হলাম ভবিষ্যতের জন্য। আমারও খুব ইচ্ছে হয় অনুবাদ করি। কিন্তু ডিকশনারি দেখতে দেখতে ক্লান্ত হয়ে পড়ি
আপনারটা দেখে ইকটু লোভ হলো- (অনুবাদের স্বাধীনতা দেখাতে-)
রাতের সময়টাতে তিনি ছিলেন একাকী, নিঃসঙ্গ! এবং দূরের বৃত্তাকার দেয়াল-ঘেরা শহরটি দেখতে পেয়ে সেদিকেই এগিয়ে গেলেন। শহরের উপকণ্ঠে পৌঁছুনোর পর শুনতে পেলেন সেখান থেকে ভেসে আসছে আনন্দের খুরধ্বণি, উৎফুল্ল হাসির উচ্ছ্বাস আর সম্মিলিত সেতারের ঐকতান। তিনি মূল দরজায় টোকা দিতেই পাহারাদারদের কেউ তা মেলে ধরলো।
It was night-time and He was alone. And He saw afar-off the walls of a round city and went towards the city. And when He came near He heard within the city the tread of the feet of joy, and the laughter of the mouth of gladness and the loud noise of many lutes. And He knocked at the gate and certain of the gate-keepers opened to Him.
বাহ ! বেশ তো ! ডিকশনারী দেখবার ক্লান্তি উপেক্ষা করে কিছু অনুবাদ করুন । আমরা উপভোগের আনন্দে উল্লসিত হই ।
একেবারে মেলেই ধরলো? @ জুসি ভায়া
আপনার স্বাধীন অনুবাদের চেয়ে এই পোস্টেরটা পড়ে ভালো লেগেছে বেশি।
মন্তব্য করুন