এক্সট্রা ম্যারাইটাল এফেয়ার্স
হিন্দী সিনেমার কাহিনীকারদের জন্য এক্সট্রা ম্যরাইটাল অ্যাফেয়ার এখন সবচেয়ে সহজ লভ্য উপজীব্য বিষয়। গত কয়েক বছর ধরে নানা ছবিতে বেশ তড়িৎকর্মা হিরোদের অভিনয়ে সেই বিবাহ বহির্ভুত প্রেম , মিলন , সঙ্গম বারংবার উঠে এসেছে। এই মুহূর্তে কয়কেটি মুভি যেমন মাস্তি , নো এন্ট্রি, হাই বেবী এগুলোর কথা মনে আসছে। প্রায় ক্ষেত্রে দেখা যাবে কযেকজন হিরো থাকবে। তাদের সুন্দরী স্ত্রীও থাকবে অনেকক্ষেত্রে এবং সেই হিরোগুলোর জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কর্ম হচ্ছে সুন্দরী মিস কিংবা মিজ কিংবা বিধবা যাই হোক মোট কথা পরস্ত্রী পটিয়ে তাদের সাথে আনন্দ ফুর্তি এবং শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন।
পাশ্চাত্য সভ্যতার ব্যাপন পক্রিয়ার দরুন বহুকামিতার প্রভাব এখন পূর্ব, দক্ষিণ উত্তর এমনকি মধ্য পৃথিবী জুড়ে মোটামুটি একটা সমান্তরাল রেললাইনের মত বিস্তার করে ফেলেছে বেশ আরও দশক কয়েক আগে থেকেই । সমাজ বিজ্ঞান/সোসলজির একটা বিষয় পড়তে হয়েছিল প্রকৌশল বিদ্যা অর্জনের কালে। সেখানে একটা লাইন পেয়েছিলাম এমন- হিউম্যান বিইংস আর ন্যাচারেলি পলিগ্যামি।
পলিগ্যামি শব্দের শাব্দিক অর্থই বহুগামি। পৃথিবীর স্তুপ এর পর স্তুপ কৃত গল্প উপন্যাস খুললে পরকীয়াই দেখা যাবে প্রেমের কাহিনীগুলোর ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশী আসন দখল করে আছে। বিখ্যাত বিখ্যাত প্রেম কাহিনী এই যেমন লাইলী মজনু, শিরী ফরহাদ এসব ঘটনার মধ্যেও পরকীয়ার অবাধ বিচরণ। তেমনী ধর্মীয় কাহিনী রাধাকৃষ্ণর প্রেমও এক্সট্রা ম্যারাইটাল এফেয়ার্সের মধ্যেই পড়ে।
সমাজে আনাচে কানাচে ঘুলি ঘুপচির ভীড়ে পরকীয়া ঘটনার অভাব নেই। একটু স্মৃতি হাতড়ালেই যে কোন পাঠক দেখবেন আপনার আশে পাশের, কাছের কেউ কিংবা আপনিই হযতো পরকীয়া কোন ঘটনার মাঝে স্মৃতিবদ্ধ। অথচ পৃথিবীর প্রায় তাবৎ ধর্মেই এই এক্সট্রা ম্যারাইটাল এফেয়ার্স কে নিগৃহিত কর্ম হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে। বলা হযেছে এ থেকে বিরত থাকতে। বহুগামিতার প্রাকৃতিক আচরণকে হয়তো মাথায় রেখে কিছু ধর্মে বহু বিবাহকে স্বীকৃতিও দিয়েছে। উদাহরণ স্বরূপ আমাদের ইসলাম ধর্ম। একটা নির্দিষ্ট সংখ্যক বহুগামিতা এখানে যায়েজ এবং অব্যশই বিবাহ পূর্বক। তবে তা আবার কেবল পুরুষ প্রজাতির মধ্যেই সীমাবদ্ধ। নারীদের বহুগামিতা লাভের সাধ এখানে স্পষ্ট নিষিদ্ধ যদি স্বামী মারা না যায়।
পাশ্চাত্য সমাজ আধুনিক মুক্তচিন্তা ঘরানার (যদিও মুক্ত ঠিক সে অর্থে না) নামে যে সমাজ ব্যবস্থার প্রচলন ঘটিয়েছে সেখানে বহুগামিতাকে অনেকেই মেনে নেয়, সেখানে দেখা যায় চিটিং না করলেই সব যায়েজ। আর উল্টো আমাদের এই প্রাচ্য এবং উন্নয়নশীল দেশসমূহে বহুগামিতার সাধ পূরণ করার সুযোগটি বর্তমানে প্রচলিত ( স্বল্প কিংবা ব্যাপক হার কিনা সেটা পরিসংখ্যান বিদদের বিষয়) যতটুকু হযেছে সেটা গোপনে, কাউকে চিটিং করে এবং সেটা আধুনিক কালে নারী পুরুষ দুইয়ের মাঝেই সীমাবদ্ধ।
পাশের দেশ ভারতের মুভি ও নাটকের কাহিনী সমূহের প্লটে পরকীয়া এবং এক্সট্রা ম্যারাইটাল এফেয়ার্সের ব্যাপকতা দেখে একটু হলেও ধারনা করা যায় তাদের সমাজে এই ঘটনার প্রকোপ এবং ব্যাপকতা বেড়েছে এবং গোপনীয়তাও কমেছে। সেখানে তো ২০০৯ সাল থেকে শুনেছি সমকামিতাও (অপ্রকাশ্যে যায়েজ করা হযেছে।)
আসলে হিন্দী মুভিতে এ বিষয় এই বারংবার ঘুরে ফিরে আসার কারনে হালের থ্যাঙ্ক ইউ সিনেমাও এর ব্যতিক্রম নয়। বরং এখানে তিন পুরুষের বিবাহ বহির্ভূত নারী সংগ অপবাসনা চরিতার্থের এক মহোৎসব তুলে ধরা হয়েছে। তিন পুরুষ হলো সুনীল শেঠী, ববি দেউল ও ইরফান খান। তিন জনেই বিবাহিত। বিবাহ বহির্ভূথ নারী সংগ ও নারী সঙ্গমের কাজটি তাদের জন্য প্রত্যহ খাদ্য গ্রহনের মতই।
এই মুভির সবচেয়ে সবচেয়ে যে বিষয়টি বিশেষভবে আমার দর্শনে ধরা পড়ল তা হলো- অক্ষয় কুমার এ যাবৎকাল পরকীয়া কর্মে ( মুভির পর্দায়) উচ্ছন্নে যাওয়া চরিত্র অভিনয় করেছে অনেকবার আর এবার এই মুভিতে সেই অক্ষয়ের রোল হলো নারীদের তাদের পরকীয়ারত স্বামীদের পরকীয়া কর্ম হতে ফেরানোর মাধ্যেম সাহায্য করা। সে নারীমুক্তি ডিটেকটিভ।
অক্ষয় মানে মুভির কৃষ্ণা সুনীল শেঠী, ববি দেউল এবং ইরফান খানের বউদের কাছে তাদের গোপন ও সুচতুর পরকীয়া বা বহুগামিতার খবর প্রকাশ করে দেয়। তবে সে যেহেতু নিজেও এই পথের পথিক ছিল এবং তার অপকর্মের কারনে তার বউটি আত্মহত্যা করেছিল তাই সে কেবল ফাঁস করে ক্ষান্ত হয় না বরং সে বহুগামী ও পরকীয়া আক্রান্ত পুরুষদের রক্ষার মহান ব্রতে মনোনিবেশিত।
এতে মনে হয় ইদানীয় আবার হিন্দী মুভির কাহিনীকাররা পরকীয়ার প্রকোপ থেকে সমাজকে মুক্তও করতে চাচ্ছে।
তবে এই ঘরানার মুভিগুলোতে বেশ হিউমার এবং কৌতূক সুড়সুড়ি থাকে। অনেক দর্শক দেখা যায় হিউমারের বশীভূত হয়ে আড়ালে এক্সট্রা ম্যারাইটাল এফেয়ার্সেও ঘটনায আসক্ত হযে পড়ে। ফলে এ মুভিগুলা মার্কেট পেয়েও যায়।
নেটে একটা সার্চ দিয়েছিলাম এই লিখে,
Why do people practice polygamy?
সার্চ এর ফলাফলে /wiki.answers.comথেকে পেলাম- ,
There are serious economic benefits to polygamy, as can be seen from the plant and animal world. People benefit in the same way. Most it has to do with your genetic success. The best males produce the most children who receive the benefit of genetic fitness.
হা হা হা। থ্যাঙ্ক ইউ।
এখনকার হিন্দী ছবি শুধু মাত্র বিব্রতকর এবং বিরক্তিকর কাহিনী তৈরী করছে। কিছু কিছু ছবি ব্যাতিক্রম। এই মুহুর্তে এই ঘরনার ছবি যা আমার মনে পরছে তা সত্যজিৎ রায়ের "পিকু" এর কথা। এই ছবিতে অবশ্যই কিছু বক্তব্য রয়েছে যা অতুলনীয়।
পিকু ছবিটা তো দেখা হয়নি।
এক সময় হিন্দি সিনেমা দেখলেও আজকাল তেমন একটা দেখা হয় না। তবে টিভি ইউটিউবের কল্যানে হিন্দি সিনেমার সাম্প্রতিক রূপ সম্পর্কে একটা প্রাথমিক ধারণা রয়েছে। আপনি ঠিক, বর্তমানে হিন্দি সিনেমার প্রধান উপজীব্য হল বিবাহ বহির্ভুত প্রেম। তবে মুভি যে সব সময় সমাজের আলোকে তৈরী হয় সেটা নাও হতে পারে। বাংলাদেশের সিনেমাগুলো দেখন না। এই জিনিস কি সমাজের কোথাও আছে?
ঠিক। তবে বাংলাদেশের সিনেমা কোথাও উদাহরণ হিসাবে আসার উপযোগ্য নয়। কারন কোন কাহিনীই থাকে বলে মনে হয়না। ফর্মুলায় অভিনেতা ফেলে ফেলে মুভি বানায় বাংলাদেশ।
হিন্দী ছবি কিছূটা কাহিনীর চেষ্টা করে বলে প্রতীয়মান হয়।
তবে এক্সট্রা ম্যারাইটাল এফেয়ার্স কিন্তু সমাজে বেড়েছে সত্যি।
হিন্দি সিনেমায় একবার কিছু একটা শুরু হলে লেবু তিতার মতোন চিপা শুরু হয়!!... আগে অনেক দেখা হতো হিন্দি সিনেমা, এখন কাহিনি শুনেই আর ট্রেলার দেখেই আগ্রহ মরে যায়!... আর সমাজের মূল চিত্র আমাদের এইখানকার সিনেমাগুলো তুলে ধরে না, আজগুবি জিনিসেই ভরা থাকে সেসব।
"তড়িৎকর্মা" নাকি "করিৎকর্মা" কোনটা হবে?... আমি জানতে চাইছি...
আর পোষ্ট ৪বার হয়েছে, এডিট করে দেন...
পরকীয়া বিষয়ক সিনেমালোচনা ভালু পাইলাম।
ইয়ে, মানে, পরকীয়া প্রেম জিনিসটা কি? আমার কাছে তো সব প্রেমকেই আপনকিয়া মনে হয়!
আপনি যার সাথে করবেন তার সাথে আরেকজন করলে সেইটা মেন হয় পরকীয়া।
আপনি সঠিক!
আমিত্ব বিচারে সবই আপনকীয়া আর আমির তার সাথে অন্যজন আসলেই পর বিষয়টা আসে।
(হিহি)
বেশিদিন তো হয় নাই বিয়া করছেন। এখনই এইসব নিয়া গবেষণা শুরু করছেন
আমি মাসুম ভাইয়ের পিছে দাড়ালাম
চারপাশে যে অবস্থা। বাঁচতে হলে জানতে হবে?
মন্তব্য করুন