অনেক স্মৃতির ইত্তেফাক
আমি ইত্তেফাকে কাজ করেছি প্রায় সাত বছর, সেই ৯৭ সালে শুরু। সে সময় ইত্তেফাক ছিল সাংবাদিকদের জন্য মক্কা। ওয়েজ বোর্ডের তুলনায় বেতন ছিল ৩০ শতাংশ বেশি আর দেয়া হতো বছরে ৬টা বোনাস। তার চেয়ে বড় কথা তখন ইত্তেফাকই ছিল দেশের এক নম্বর পত্রিকা। আমি ইত্তেফাক ছেড়ে আসি ২০০৪ সালে। ছাড়ার কারণ ছিল ইত্তেফাকই। মনে হচ্ছিল যে ভাবে চলছে তাতে এই পত্রিকার টিকে থাকা মুশকিল।
তারপর যতদিন গেছে, আমার মনে হয়েছে আমার সিদ্ধান্ত ঠিকই ছিল। অথচ সেরা পত্রিকা হয়ে থাকার সব ধরণের উপাদান ইত্তেফাকের ছিল। দেশের সেরা রিপোর্টারদের নেয়া হতো ইত্তেফাকে। আমার মতো দু-একটা ব্যতিক্রম তো থাকেই। আমার আগে শেষ ইত্তেফাকে লোক নেয়া হয়েছিল ১০ বছর আগে। বেশি বিজ্ঞাপন পেতো ইত্তেফাক। দেখতাম বিজ্ঞাপন বুথে দীর্ঘ লাইন।
ইত্তেফাকের রয়েছে দীর্ঘ ঐতিহ্য। ৫০ বছরের পুরোনো পত্রিকা। বাংলাদেশের প্রতিটি সংগ্রামে রয়েছে ইত্তেফাকের বিশাল ভূমিকা। আনোয়ার হোসেন মঞ্জু এরশাদ সরকারের মন্ত্রী ছিলেন, কিন্তু এরশাদ বিরোধী আন্দোলনের সময় ইত্তেফাক এরশাদের পক্ষ নেয়নি। এটা আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর কৃতিত্ব।
তারপরেও ইত্তেফাক ক্রমশ তার অবস্থান হারালো। এর বড় এবং একমাত্র কারণ দুই ভাইয়ের দ্বন্দ্ব। এই দ্বন্দ্ব দীর্ঘ সাতটা বছর আমি দেখেছি। এমন হয়েছে, আমাদের বলা হতো কাজ শেষ শেষ করে দ্রুত চলে যাও, মারামারি হতে পারে। আমরা চলে যেতাম। ইত্তেফাকে আমরা ডাকতাম বড় সাহেব বা ব্যারিষ্টার সাহেব আর ছোট সাহেব বলে। ঘটনাটা এরকম ঘটতো-সন্ধায় দেখা গেলো বড় সাহেব একটা চিঠি লিখলেন যে, আজ হতে প্রিন্টার্স লাইনে সম্পাদক হিসেবে আনোয়ার হোসেনের নাম যাবে না। এক ঘন্টা পর ছোট সাহেবের চিঠি-তার নাম ছাড়া পত্রিকা বের হবে না। ব্যস লেগে গেলো।
ইত্তেফাকে দুই ভাইয়ের দ্বন্দ্ব নিয়ে বহুবার মারামারি, খুন এবং একাধিকবার পত্রিকা বন্ধ হয়েছে। বড় সাহেবের অভ্যাস হচ্ছে সম্বোধন ছাড়া চিঠি লেখা। এবং বেশিরভাগ চিঠি ভাববাচ্যে লেখা হতো। আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর কাছে সব চিঠি আছে, তিনি সেটা নিয়ে বিশাল একটা বই বের করেছেন। মিটিং-এ সেসব চিঠি আমাদের দেখাতেন তিনি।
ইত্তেফাকের বেশিরভাগ মানুষ ছিল আনোয়ার হোসেনের পক্ষে, তার কারণও ছিল। ব্যারিষ্টার সাহেব টাকা পয়শার ব্যাপারে কৃপন। তার লক্ষ্য কম বেতন দিয়ে বেশি কাজ। আর মঞ্জু সাহেব বলতেন, আয় হলো সবাই ভাগ নেন। উদাহরণ দেই-নাজিমুদ্দিন মোস্তান ভাই আমার দেখা সেরা সাংবাদিকের একজন। অত্যন্ত সৎ। তাকে নিয়ে আহমেদ ছফা একটা উপন্যাসও লিখেছিলেন। সেই মোস্তান ভাই কাজ করা অবস্থায় অফিসে অসুস্থ্য হলেন। ডান পাশ অবশ হয়ে গেল। ছুটি শেষ হয়ে গেল। জয়েন করতে না পারলে বেতনও হবে না। মোস্তান ভাইকে একটু বিএনপি ঘরানার বলা হতো, সেই সুবাদে মঈনুল হোসেন ঘরানার। তাকে সবাই নিয়ে গেল বড় সাহেবের কাছে। তিনি বললেন, জিএম-এর কাছে নিয়ে যান, দেখেন উনি কি বলে, ইত্যাদি ইত্যাদি। তখন আকরাম ভাই (আকরাম হোসেন খান) বলেছিলেন, আমরা এসেছিলাম মানিক মিয়ার বড় ছেলের কাছে। তারপর মোস্তান ভাইকে নিয়ে যাওয়া হলো মঞ্জু সাহেবের কাছে। তিনি সব শুনে বললেন, মোস্তান সাহেব, আপনি আর কতটাকা নিবেন। এই অফিসে লাখ লাখ টাকা চুরি হয়, আপনি আর কি নিবেন। বাসায় যান, আপনি অফিসে আসতে পারেন কি না পারেন, বেতন প্রতিমাসে আপনার বাসায় চলে যাবে। তারপর আর মোস্তান ভাইয়ের বেতন নিয়ে সমস্যা হয়নি। এই যুগে এরকম কতজন বলতে পারবেন?
শুনেছি, সেই মোস্তান ভাইয়ের বেতন বন্ধ হয়েছে গত তত্বাবধায়ক সরকারের সময়, ব্যারিষ্টার ইত্তেফাকের দায়িত্ব এক হাতে নেয়ার পর। একসময় হ্যান্ড কম্পোজে ছাপা হতো পত্রিকা। কম্পিউটার এসে সেটি বন্ধ করে দিল। হ্যান্ড কম্পোজারদের চাকরি আর থাকে না। মঞ্জু সাহেব বললেন, যখন ইত্তেফাকের দুঃসময়, তখন এই লোকগুলো মাথায় করে পত্রিকা বিলি করেছে। এখন ইত্তেফাকের সুসময়। আর তাদের বিদায় করে দেবো। থাকুক ওরা। দীর্ঘদিন ইত্তেফাকের ভিতরের পাতা হ্যান্ড কম্পোজে ছাপা হয়েছে।
আরেকটা মজার তথ্য দেই। ইত্তেফাকের আয় বেড়েছে। সবাই দাবি করলো বেতন ১০ শতাংশ বাড়ানো হোক। এটা নিয়ে আন্দোলন। কেউ রাজী হননা। আন্দোলনের মুখে মঞ্জু সাহেব রাজী হলেন। এটা শুনে ব্যারিষ্টার সাহেব বললেন, কী!!! মঞ্জু দেবে ১০ শতাংশ, তাহলে আমি দেবো ২০ শতাংশ। সেই থেকে ইত্তেফাকে বেতন ৩০ শতাংশ বেশি। তবে এটিও ব্যারিষ্টার সাহেব বন্ধ করে দিয়েছিলেন ২০০৭ সালে, ৬ টা বোনাসও। মঞ্জু সাহেব এখন আবার এটা চালু করেছেন।
ইত্তেফাক ছিল এক সময় টাকার খনি। প্রচুর বিজ্ঞাপন পেতো। দুই ভাই কি করতো? ধরেন সকালে ব্যারিষ্টার সাহেব ফোন করে জিজ্ঞেস করলেন, নগদ কত টাকা জমা হয়েছে। হয়তো বললো ৬ লাখ। হুমুক দিতেন ৫ লাখ পাঠিয়ে দাও। সঙ্গে সঙ্গে খবর চলে যেতো মঞ্জু সাহেবের কাছে। আরও টাকা জমা হতো। তিনিও হুমুক দিতেন ৫ লাখ পাঠিয়ে দাও। তাদের এক বোনের ছেলে ইত্তেফাকের পরিচালক। তিনি দেখতেন যে মামারা ৫ লাখ করে নিয়ে যাচ্ছে। সেও তখন লোক পাঠিয়ে বলতো ৩ লাখ দিতে। এটা ছিল ইত্তেফাকের নিত্যদিনের ঘটনা।
এরশাদের সময়। এরশাদের মন্ত্রী তখন ইত্তেফাকের এক মালিক আনোয়ার হোসেন মঞ্জু। আরেক মালিক ব্যারিষ্টার মইনুল হোসেন। তখন ছিল এরশাদের পথকলি ট্রাস্ট। আনোয়ার হোসেন মঞ্জু এই ট্রাস্টে ইত্তেফাকের পক্ষে সম্ভবত ৩০ লাখ টাকা দান করলেন। এ নিয়ে দুই ভাইয়ের ঝগড়া। মুখোমুখি ঝগড়া। ঝগড়া করতে করতে তারা চলে আসলেন নিউজ রুমে। বার্তা সম্পাদক তখন সারোয়ার ভাই। নিউজ রুমে সব সাংবাদিক তখন উপস্থিত। সবার সামনেই তুমুল ঝগড়া। গালাগালিও চলছে। এক পর্যায়ে আনোয়ার হোসেন মঞ্জু খারাপ একটা গালি দেওয়ায় ব্যারিষ্টার মইনুল হোসেন চিৎকার করে বলে উঠলেন-তুই আমারে চাকর বাকরদের সামনে গালি দিলি। ইত্তেফাকে এই গল্প এখনও শোনা যায়।
ইত্তেফাক নিয়ে লিখতে বসলে মহাভারতসমান হয়ে যাবে। এই ইত্তেফাক কাল আনুষ্ঠানিকভাবে ভাগ হয়ে গেলো। ইত্তেফাক পেলো মঞ্জু সাহেব। ইত্তেফাক থেকে ব্যারিষ্টার সাহেবকে সরে যেতে হলো নিজের কারণেই। তার ছেলেও এর জন্য অনেকটা দায়ী। অনেক স্মৃতির এই ইত্তেফাক। ইত্তেফাক জড়িয়ে আছে বাংলাদেশের অস্তিত্বের সঙ্গে। এক সময় বলা হতো বাংলাদেশে ইন্সটিটিউশন আছে দুটি, ইত্তেফাক আর সেনাবাহিনী। ইত্তেফাক কি পারবে আগের জায়গায় যেতে?
ইত্তেফাকে এখনো অনেক সময় এমন খবর ছাপা হয় যা অন্য পত্রিকাগুলোতে খুঁজে পাওয়া যায় না। রিপোর্টিং এর জন্য ইত্তেফাকের ভক্ত আমি সবসময়।
তবে সেই আগের ইত্তেফাককে ফীরে পাওয়া অবশ্যই সম্ভব।
ইত্তেফাক একটা ব্র্যান্ড, হাউজ হোল্ড ব্র্যান্ড। দরকার নতুন করে সাজানো , কিন্তু পুরোনো ফুলগুলোকে রেখেই। দরকার টাকা ঢালা। আর নতুন মাথা যোগ করা মার্কেটিং ও সেলস এ।
ইত্তেফাকের সেরা জিনিষ ছিল ইভেন্ট কাভার। দিনে কোনো ঘটনা ঘটলে সেরা রিপোর্টটা হতো ইত্তেফাকের।
নিউজ ট্রিটমেন্টে ইত্তেফাকের উপর কাউরে দেখি নাই
নিউজ ট্রিটমেন্ট মাস্টার ছিলেন সারোয়ার ভাই। তিনি যাওয়ার পর এটার ধার অনেক কমে গেছে।
মনে হয়না ইত্তেফাক আবার তার জায়গায় যেতে পারবে। কারন আছে।
০ এখনকার পত্রিকাগুলো অনেক আধুনিক হয়েছে। সে তুলনায় উত্তেফাক তেমন আগাতে পারেনি।
০ মালিকানার দ্বন্ধতো আছেই
০ সার্কুলেশনের অবস্থা বেশ খারাপ
০ অফিস আদালত ছাড়া সাধারনত কেউ ইত্তেফাক রাখেনা
০ ফিচার খুবই দুর্বল
০ শুধু নিউজের উপর এখন আর পাঠকরা নির্ভর করেনা। সব আপডেট খবরই রাতে শোয়ার আগে টিভিতে জেনে যাচ্ছে
আশংকা করছি, ইত্তেফাকের অবস্থা এক সময়ের পাঠক রুচি বদলে দেয়া ভোরের কাগজের মত হয়ে যাবে। টিকে থাকবে, সেই গল্পের তেলাপোকার মত...
মঞ্জু কিন্তু স্মার্ট আছে... দেখা যাউক কতদুর নিতে পারে
টিকে থাকতে হলে পুরো ইত্তেফাককে পালটে যেতে হবে। মঞ্জু সাহেবের উপর সব কিছু নির্ভর করছে। এখন তো তিনিই সব।
ইত্তেফাকের রিপোর্টিং এখনও আমার ভালো লাগে
ভাগ হয়ে যাবার খবরে খারাপ লাগলেও ভালো লাগছে যে আর রক্তারক্তি হবে না।
ইত্তেফাকের রিপোটিং সেই আগের মতো আর তেমন নেই।
অল্প কিছু অংশ ছাড়া পুরাটাই অজানা ছিলো।
লোকটা তো চ্রম ছোটোলোক!!!
ইত্তেফাকের গল্পের শেষ নেই
ইত্তেফাকের সেই ফন্ট আর কাগজ জোস লাগতো...সবচাইতে বেশি মনে আছে এডগার রাইজ বারোজের টারজান
ভাংগু যা বলছ... পুরান কথা মনে করায়া দিলা ... আমার পত্রিকা পড়ার শুরু ঐ বারোঝ মিয়ার টারজান দিয়া ... তখন ইত্তেফাকে খালি ঐটাই পড়তাম... পরে আস্তে আস্তে খবরের দিকেও মনযোগ দিলাম... তয় বিরক্ত লাগতো ঐ দুইলাইন দিয়াই অত পৃষ্থার অমুক কলাম দেখুন ... পরে তো ভোরের কাগজ ই আইসা গেল..
হ, মলয় দা রোজ টারজান অনুবাদ করতো।
অনেক অজানা জানলাম! ইত্তেফাক হাতে নিতে মন চায় না!
সেই ইত্তেফাক তো আর নাই।
ইত্তেফাক আমাদের যুগের স্মৃতিময় পত্রিকা। তখনকারদিনের সবচেয়ে পরিচ্ছন্ন গেটআপ। তবে ইত্তেফাক বলতে এখনো প্রথমেই ভেসে উঠে "৮ম পৃ ৪র্থ কঃ দ্রঃ"
একসময় পত্রিকা বলতে ইত্তেফাক, ম্যাগাজিন বলতে বিচিত্রাকে বুঝতাম। কৈশোরে ইত্তেফাক প্রিয় ছিল সিনেমার বিজ্ঞাপনগুলোর জন্য।
ইত্তেফাকের জনপ্রিয়তায় ভাগ বসালো আজকের কাগজ এসে পত্রিকায় নতুন ধারা সৃষ্টি করে। "৮ম পৃ ৪র্থ কঃ দ্রঃ" ব্যাপারটা উঠে যায় বা কমে যায়।
একমত নীড়দা। দৈনিক বাংলাও অনেকে পড়ত। ছোটোদের জন্য একটা সাপ্তাহিক ছিল নাম কিশোর বাংলা। অধীর অপেক্ষায় থাকতাম রবিবারের জন্য।
'কিশোর বাংলা'... আরে এই পত্রিকাটার কথা ভুলে গেছিলাম। আমার নেশার মতো ছিল পত্রিকাটা। সাপ্তাহিক ছিল বোধহয়। রোমাঞ্চকর সব গল্প। ভুতের একটা সংখ্যা হয়েছিল। ওটা দিনরাত পড়তাম, এত মজার!
আহা। কিশোর বাংলার জন্য অপেক্ষায় থাকতাম। একবার কি একটা কুইজ জাতীয় বিষয়ে আমার নাম ছাপা হইছিল। ছাপার অক্ষরে সেই আমার প্রথম নাম দেখা।
ইত্তেফাকের নীতি ছিল প্রথম ও শেষ পাতায় সর্বোচ্চ সংখ্যক নিউজ দেয়া। এর একটা বড় কারণ ছিল এইটা একটা নিউজ ভিত্তিক পত্রিকা ছিল এবং ভিতরের পাতাগুলো দিনের বেলা ছাপা হতো। ফলে সন্ধ্যার পর যত নিউজ আসতো তা দিতে হতো প্রথম ও শেষ পাতায়। ফলে এভাবে নিউজ দিতে হতো।
স্মৃতি যদি ধোকা না দিয়ে থাকে তবে বলি অন্য প্রত্রিকাগুলো যখন চলিত ভাষায় ছাপাহত তখনও ইত্তেফাক সাধু ভাষায় ছাপা হত। ইত্তেফাকের নাম এবং এর ফন্ট ষ্টাইলে একটা গাম্ভীর্য ও মুরুব্বিয়ানার ছাপ পাওয়া যেত। যেন এক প্রাচীন ইতিহাসের স্বাক্ষী হয়ে থাকা কোন এক বিশাল বটবৃক্ষ। টারজান বাই এডগার রাইজ বারোজ, বাংলাসিনেমার বিজ্ঞাপন আর পাতার পর পাতা কালো ঘন ছাপার বিজ্ঞাপনের কারনে ইত্তেফাককে অন্য পত্রিকা থেকে সহজেই আলাদা করা যেত। ইত্তেফাক যদি আবার তার জনপ্রিয়তা ফিরে পায় তাহলে তার পুরনো পাঠক হিসেবে অবশ্যই গর্ববোধ করব।
ইত্তেফাকের সবচেয়ে উপভোগ্য বিষয় ছিল সাধু ভাষায় লেখা। যেদিন ঠিক হলো চলতি ভাষায় লিখতে হবে খুব মন খারাপ হয়েছিল।
ইত্তেফাক অনেকদিন পড়া হয় না বললেই চলে।আগে খুব সিনেমার এ্যাড দেখতাম, টারজানের কথাটা আমারো মনে আছে।
ববিতার ছবি দেখার জন্য ইত্তেফাকের চেয়ে ভাল আর কি ছিল?
'আমাদের বাড়িতে দুইটা পত্রিকা আসতো । একটা ইংরেজি আরেকটা বাংলা । বাবার সমানে প্রথমে বাংলা পত্রিকা খুলে বিশেষ কোন একটা আর্টিকেল পড়া হতো । পরে ওটা ইংরেজি পত্রিকায়
কিভাবে লেখা হয়েছে সেটা পড়া হতো । এভাবেই আমাদের ইংরেজি চর্চ্চা হতো বাড়িতে । কিন্তু 'ইত্তেফাক' পত্রিকার সাধুভাষা পড়তে গিয়ে আমরা ভাইবোনেরা প্রায় হেসে গড়িয়ে পড়তাম ।' স্মৃতিটা মনে পড়ে গেলো ভাই এই পোষ্ট পড়ে ! দুইভাইয়ের ঝগড়ায় তো তাইলে অফিসের লুকজন ব্যাপক আতঙ্কিত ও বিনোদিত হইতো বলা যায় ! হা হা হা..ভালা পাইলাম পুষ্টটা ।
বিনোদন আর আতঙ্ক দুইটাই ছিল। বিশেষ করে বার্তা কক্ষে খুন হওয়ার পর সবাই বুঝে গেছিল আরও খুন হতে কোনো বাধা নাই। পরিস্থিতিটা সেরকমই হতো। ভিতরে না থাকলে বুঝবেন না। আর বিনোদনেরও কম ছিল না।
লেখাটা ভালো লাগছে মাসুমভাই। পাবলিককে জানানো দরকার, ইত্তেফাক ্আমলে ্আপনি বিবাহ করছিলেন
ইত্তেফাক নানাবাড়ীতে রাখতো। সাধুভাষাটা জোস লাগতো। কচিকাঁচার আসর ছিলো সেরা আকর্ষণ। ঢাকাই সিনেমার বিজ্ঞাপন তো একেবারে চিত্তেফাক! যে দেখেনাই বিরাট মিস করছে। বস্তির ছাপড়া আর ঝুপড়ি টিস্টলের দেয়ালের শোভাবর্ধনে এই সচিত্র পাতার ভূমিকা চিরস্মরণীয়।
হ, দুঃখের ঘটনাটা মনে করাইয়া দিলেন। কি আর করা, এই সময় আমারে বিয়া করতে হইছিল।
আর সাধু ভাষায় লেখার কিন্তু আলাদা একটা মজা আছে। আমার দারুণ পছন্দ ছিল।
@চিত্তেফাক!!!!!!!!!!!!!!! নুশেরাপু, উত্তম ঝাঁজা!
ম্যালা কাহিনী !!!
এখন কি মালিক আনোয়ার হোসের মঞ্জু ?
ইত্তেফাক আমার ভাল লাগে না, বুড়াদের পত্রিকা মনে হয়
ছোটবেলার পছন্দ ইত্তেফাক। ৭ম পাতায় সিনেমার বিজ্ঞাপন। সিনেমা দেখতেতো যেতে পারতাম না ইত্তেফাকই ভরসা ছিল। কঁচিকাচার আস্র আর দাদুভাইতো ছিলেনই।
লেখার ভঙ্গিটা দারূন। লাইক
নাহ আর পারবে না । রিব্র্যান্ডিং করতে হবে , সেই চেষ্টা থাকবে বলে মনে হয় না ।
সারোয়ার বলতে গোলাম সারোয়ার বোঝাচ্ছেন মনে হয়?
যুগান্তর, সমকাল এর প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ।
ইত্তেফাকের সাধু ভাষা এখনও মিস করি। আমার নিজেরও সাধু ভাষায় লিখতে খুব মন চায়, কিন্তু তেমন ভালো আসে না। সাধু ভাষায় ইত্তেফাকের পাতায় খাইষ্টা কথাগুলো এখনও মনে পড়েঃ-
১। ইংল্যান্ডের ফুটবলার পল গাসকোয়েন একবার মাতাল হয়ে এক পুলিশরে গালি দিসিলো অ্যাসহোল বলে, ইত্তেফাকে সেই খবর আসলো এইভাবে--' পল গাসকোয়েন জনৈক নিরাপত্তাকর্মীকে পশ্চাদ্দেশের ছিদ্র বলিয়া তিরস্কার করিয়াছেন।'
২। বিল ক্লিন্টন আর মনিকা লিউনিস্কির প্রেম কাহিনির উপরে কেনেথ স্টারের রগরগে রিপোর্টের একটা লাইনের বাংলা অনুবাদ ছিল এরকম, ' প্রেসিডেন্ট স্বীকার করিয়াছেন যে তাহাদের অন্তরঙ্গতা মুখমেহন পর্যন্ত পৌঁছাইয়াছিল। তবে ইহাও দাবী করিয়াছেন যে তিনি ইহার জন্য মনিকার উপরে কোন প্রকারের চাপ প্রয়োগ করেন নাই, বরং মনিকা স্বইচ্ছায় তাহার উপর মুখমেহন প্রয়োগ করিয়াছিলেন। ক্লিন্টন তাহার কার্যালয়ে শৌচাগারের দরজায় হেলান দিয়া দাঁড়াইতেন এবং ..(আর লেখা উচিত হবে না)'
৩। একবার ম্যারাডোনার সাক্ষাৎকার নিতে গেল ইত্তেফাকের সাংবাদিক। ৯০ এর ইতালী বিশ্বকাপে। যে ইংরেজীতে জিগাইলো যে ম্যারাডোনার বাংলাদেশে আসার কোনো ইচ্ছা আছে কিনা, ম্যারাডোনা না বুঝে স্প্যানিশে জবাব দিল সি সি। পরদিন ইত্তেফাকের প্রথম পাতার সবচেয়ে বড় হেডিংটা ছিল--' সপরিবারে বাংলাদেশে আসছেন ম্যারাডোনা'
আজ এদ্দুরই থাক, আগামীতে আরও মনে পড়লে লিখুম। ইচ্ছা আছে ইনকিলাব এর হলুদ সাংবাদিকতা নিয়ে কিছু লেখার।
হাহাহাহাহাহা। এইসব নিয়া আলাদা পোস্ট দেন মামুন ভাই। এই কমেন্টা মুছে বরং আলাদা পোস্ট দিলে মজা বেশি হইতো।
খুব ভালো লাগল মাসুম ভাই
ফেসবুকে শেয়ার দিলাম
বলেন কী!

ভদ্রলোকের একটা বই বের হয়েছে না! “গনতন্ত্রের জয় চাহিয়াছিলাম” বা এই ধরনের কিছু একটা নামে! ঐ বইতে ইত্তেফাকীয় সাধু বাংলা পড়লাম অনেক দিন পর!
ইত্তেফাক মনে হয় পারছে।। গত এক বছরে সার্কুলেশন দ্বিগুন হয়েছে
মন্তব্য করুন