আবহমান
পত্রিকায় পড়লাম পরিচালক ঋতুপর্ণ ঘোষ বলেছেন, তিনি না পুরুষ, না নারী। তিনি তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ। এ কথা বলার পর ঋতুপর্ণ ঘোষ নিয়ে ফিসফাস অনেক কমে গেছে। আমি ঋতুপর্ণ ঘোষের এই অবস্থানটাকে সমর্থন করি।
বলতে দ্বিধা নেই, এই লোকটি সম্বন্ধে আমার ব্যাপক আগ্রহ। ব্যক্তি ঋতুপর্ণ ঘোষ নয়, তাঁর সিনেমা নিয়েই আমার ব্যাপক আগ্রহ। পরিচালক ঋতুপর্ণ ঘোষের বড় ধরণের ভক্ত আমি। সব চরিত্র কাল্পনিক ছবিটা দেখে আমি কিছুতেই বুঝতে পারছিলাম না, এই ছবিটা নিয়ে কিভাবে লেখা যায়। খেলা, দোসর বা তিতলী খানিকটা সহজ সিনেমা। সব চরিত্র কাল্পনিক ছবিটাকে সিনেমাকাব্য বলা যায়। কালপুরুষ ছবিটা দেখে যেরকম বিভ্রান্ত লাগে, সেরকম মনে হয়েছিল সব চরিত্র কাল্পনিক দেখে।
আজকের এই লেখার বিষয় অবশ্য তার নতুন ছবিটা, আবহমান। আবারও বলি আমি মুগ্ধ।
ছবিটা মুক্তি পাওয়ার আগে ঋতুপর্ণ একটা সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন আনন্দবাজারে। সেটা আগে পড়ি...(নির্বাচিত অংশ)
---------------------------------------------------------------------------------------
নায়িকা ও পরিচালকের প্রেম-অপ্রেম চিরকালীন
পত্রিকা: ঋতুপর্ণ ঘোষের সাক্ষাৎকার নেওয়া খুব ঝকমারি। কী ভাবে শুরু করে কোথায় শেষ করব...তার মধ্যে আবার ঐশ্বর্যা রাই, অমিতাভ বচ্চন, শর্মিলা ঠাকুর...কার প্রসঙ্গে কী জিজ্ঞেস করব...
ঋতুপর্ণ: (হেসে) আজকের দিনের মতো ওই তারকাদের প্রসঙ্গ মুলতুবি রেখে...
পত্রিকা: কেবল ‘আবহমান’ নিয়েই কথা বলি?
ঋতুপর্ণ: তাই ভাল। ‘আবহমান’ই আমার আসন্ন ছবি। এবং এই মুহূর্তে আমার প্রায়োরিটিও।
পত্রিকা: ‘আবহমান’ নামটা কেন?
ঋতুপর্ণ: কারণ, কতকগুলো ইটারনাল ইমোশন যা আবহমান কাল ধরে চলে... যেমন সৃষ্টি ও স্রষ্টার মধ্যে।
পত্রিকা: এ ক্ষেত্রে কি চিত্র পরিচালক ও নায়িকা?
ঋতুপর্ণ: হ্যাঁ। এক চিত্র পরিচালকের সঙ্গে তার ছবির নায়িকার প্রেম-অপ্রেম, ঘনিষ্ঠতা এবং কনফ্লিক্ট।
পত্রিকা: পরিচালক ও তাঁর নায়িকার চরিত্র দু’টি কারা করছেন?
ঋতুপর্ণ: দীপঙ্কর দে ও অনন্যা চট্টোপাধ্যায়। ছবিতে দীপঙ্কর যে সিনেমাটি বানাচ্ছেন, সেটি ‘নটী বিনোদিনী’। যেখানে আবার গিরিশ ঘোষ এবং নটী বিনোদিনীর সম্পর্ক। ...আসলে ঐতিহাসিক ভাবে দেখা গেছে চিত্র পরিচালক এবং নায়িকার মধ্যে একটা গভীর জটিল রসায়ন কাজ করে এসেছে বহু যুগ ধরে।
পরিচালকের হাতে যে কাদামাটির তাল থাকে, পরবর্তিকালে তার একটা স্বাতন্ত্র্য মন তৈরি হয়ে যায়। তৈরি হয় আলাদা সত্তা। এবং সেই জায়গা থেকে সে যখন ঘুরে দাঁড়ায় তখনই তৈরি হয় বিচ্ছিন্নতা...
আবহমান ছবির একটি দৃশ্যে মমতা শঙ্কর ও অনন্যা চট্টোপাধ্যায়
পত্রিকা: গল্পটা কী রকম?
ঋতুপর্ণ: ছবির প্রেক্ষাপট হচ্ছে, তরুণ দীপঙ্কর, (সেই অবস্থায় অবশ্য তাঁকে আমরা ছবিতে দেখি না) যখন উনি প্রথম ছবি করতে চেয়েছিলেন, ‘নটী বিনোদিনী’, তখন নায়িকা হিসেবে পেয়েছিলেন তরুণী মমতাশঙ্করকে। কিন্তু ছবিটা হয় না। মাঝখান থেকে ওদের দু’জনের বিয়ে হয়ে যায়। তিরিশ বছর পর ছবিটা আবার রিভাইভড হয়। দেখানো হয়েছে অনন্যা এক জন থিয়েটারের অভিনেত্রী, সে আসে। তাকে প্রথমে পছন্দ হয় না দীপঙ্কর দে-র। মমতাশঙ্করই তাঁকে গ্রুম করেন। অ্যাকচুয়্যালি মমতাই ওঁর মধ্যে পসিবিলিটিগুলো দেখতে পান। এবং অলমোস্ট এগিয়ে দেন। এবং তখনই তাঁদের মধ্যে একটা সম্পর্ক তৈরি হয়, যা তিরিশ বছরের মমতা-দীপঙ্করের দাম্পত্যে আঘাত করে।
পত্রিকা: আর যিশুর চরিত্রটা?
ঋতুপর্ণ: যিশু মমতা-দীপঙ্করের একমাত্র সন্তান। সঙ্গীতশিল্পী।
পত্রিকা: একটা কথা খুব জানতে ইচ্ছে করছে?
ঋতুপর্ণ: কী?
পত্রিকা: যে ঋতুপর্ণ ঘোষের বিগ স্টার ছাড়া মন ওঠে না, তিনি কী করে অনন্যাকে নায়িকা হিসেবে নিলেন, যিনি এক জন টেলিভিশনের অভিনেত্রী? আমরা তোঋতুপর্ণ মানেই ঐশ্বর্যা, বিপাশাকে অন্য রূপে দেখব বলে ধরে নিই...
ঋতুপর্ণ: এই ঋতুপর্ণই কিন্তু সুদীপ্তা চক্রবর্তী, টোটা রায়চৌধুরী, সঙ্গীত-শিল্পী শিলাজিৎ ও অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়কে অন্যতম প্রধান চরিত্রে নিয়েছে... মানুষ বোধহয় ভুলে গেছে। তবে হ্যাঁ, আমি স্টারদের খুব সহজে পেয়েছিও। কাঠখড় পোড়াতে হয়নি। তা সে কলকাতারই হোক কী মুম্বইয়ের। সেই জন্যেই মনে হয়েছে কেন আমি নিজেকে কেবল বাঙালি পরিচালক না ভেবে এক জন সর্বভারতীয় পরিচালক ভাবব না!
পত্রিকা: সে দিক দিয়ে ‘আবহমান’ কেমন ছবি? সর্বজনগ্রাহ্য?
ঋতুপর্ণ: খুব বাঙালি ছবি। এবং অনেকটা আমার পুরনো ছবিগুলোর মতো। ‘দহন’, ‘উনিশে এপ্রিল’, ‘বাড়িওয়ালি’র মতো।
পত্রিকা: একটি ইংরেজি খবরের কাগজে বেরিয়েছিল যে এটা নাকি সত্যজিৎ রায় এবং মাধবী মুখোপাধ্যায়ের সম্পর্কের কাহিনি?
ঋতুপর্ণ: যে ইংরেজি দৈনিক কাগজ এটা বার করেছে, তা হলে তারা খবরটা জানেন। আমার জানা নেই। আর আমার ধারণা আমি সত্যজিৎ সম্পর্কে যথেষ্ট ওয়াকিবহাল। কই এমন কিছু ঘটেছে বলে তো আমি কখনও শুনিনি! তা ছাড়া ফিল্মমেকার এবং তার সাবজেক্টকে নিয়ে অনেকগুলো ছবি করেছি আমি, ‘বাড়িওয়ালি’, ‘দ্য লাস্ট লিয়র’, ‘খেলা’। চতুর্থটা ‘আবহমান’। এত দিন অবধি তো কোনও জীবন্ত চরিত্রের নিদর্শন আমার সামনে দেওয়া হয়নি! এখন দেওয়া হচ্ছে কেন?
পত্রিকা: কারণ হয়তো পরিচালক এবং নায়িকা...
ঋতুপর্ণ: সে তো গুরু দত্ত-ওয়াহিদা রহমান, রাজ কপূর-নার্গিস, তা হলে বেছে বেছে এই দু’জন বাঙালি ভদ্রলোক-ভদ্রমহিলাকে টেনে আনা হচ্ছে কেন! এবং বার্গম্যান যেখানে ওপেনলি নায়িকাদের সঙ্গে সম্পর্কের কথা বলছেন... আসল কথা হল এই ধরনের সম্পর্ক ‘আবহমান’ ধরে চলে আসছে। আর তাই নিয়েই ছবি। যা চিরকালীন সত্যি!
---------------------------------------------------------------------------------------
আবহমান আসলে কার গল্প। সত্যজিত-মাধবীর গল্প, নাকি গুরু দত্ত-ওয়াহিদা রেহমানের গল্প। বলে রাখা ভাল, ঋতুপর্ণ গুরু দত্তের ক্লাসিক মর্যাদা পাওয়া ছবি কাগজ কি ফুলের রিমেক করতে চেয়েছিলেন হিন্দিতে। শেষ পর্যন্ত তা না করে বাংলায় করলেন, তবে হুবহু গল্প না, নিজের মতো করে। পরিচালক আর নায়িকা, স্রষ্টা ও সৃষ্টির মধ্যকার সম্পর্ক নিয়ে এই ছবি। মানুষের সাথে মানুষের সম্পর্ক নিয়ে ছবি।
বাস্তব জীবনে গুরু দত্ত প্রেমে পড়েছিলেন ওয়াহিদা রেহমানের। শেষ পর্যন্ত করুণ পরিণতি হয়েছিল সে সম্পর্কের। আত্মহত্যা করেছিলেন গুরু দত্ত। গুরু দত্তের কাগজ কি ফুলও ছিল এ গল্প নিয়েই। বলা যায় গুরু দত্তের নিজের কাহিনী কাগজ কি ফুল। বলা হয় একই ধরণের সম্পর্কের টানাপোরেণ ছিল সত্যজিৎ রায়ের জীবনেও, মাধবীকে নিয়ে।
আবহমান আসলে কার গল্প?
ছবিটিতে অসাধারণ বলার মতো অনেক কিছু আছে। খুব মনোযোগ দিয়ে না দেখলে বিভ্রান্ত হতে হবে সবাইকে। কেননা, এখানে আছে সিনেমার মধ্যে সিনেমা। এক সাথে তিন সময়ের গল্প এগিয়ে চলে, পাশাপাশি। পরিচালক মারা গেছেন সেই বাড়ির ঘটনা, শেষ দেখা দেখতে আসেন শিখা বা নায়িকা শ্রীমতি। টেলিভিশনে চলছে পরিচালকের সেই ছবি, যে ছবিতে নায়িকা করেছিলেন শিখাকে। আবার টেলিভিশনে চলা সেই ছবিটাও এগিয়ে চলে একসাথে। সিনেমোর গল্প দেখিয়ে পরিচালক আসলে পুরো গল্পটা বলা চেষ্টা করেছেন, প্রেম-অপ্রেম দেখিয়েছেন।
এভাবে গল্প বলা এবং তাকে স্বার্থক করা খুব সহজ বিষয় নয়। এখানেই পরিচালকের কৃতিত্ব। চিত্রনাট্য অভিনব এবং অসাধারণ। আর অসাধারণ হচ্ছে শিখা নামের মেয়েটির অভিনয়। অনন্যা তাঁর মূল নাম। সবাইকে ছাড়িয়ে গেছেন তিনি। পর্দায় যে কেউ চুম্বকের মতো আটকে রাথতে পারে তা দেখিয়েছেন তিনি।
বলে রাখি অনন্যা এই ছবি থেকে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন।
সিনেমাপ্রেমীরা এই ছবি না দেখে কিভাবে থাকবেন?
সিনেমাটা দেখার ব্যাপক আগ্রহ তৈরী হলো।মাসুম ভাই এর এসব পোষ্ট আমাদের জন্য উপকারী।
সিনেমাটা দেখো। অসাধারণ একটা মুভি।
হা হা হা এই ছবিটা আমি প্রায় ২/৩ মাস আগে দেখেছি।
পরিচালক ঋতুপর্ণ ঘোষের আমিও খুব বড় ধরণের ভক্ত।মাসুম ভাইয়ের রিভিউ পড়ে মনে হচ্ছে আবার দেখতে হবে আবহমান।
দেখছেন তো কিছু কন নাই কেন? কেমন লাগছে?
মাসুম ভাই এর পক্ষ থেকে এই ছবিটা সব্বাইকে গিফট দেয়া হোক ঃপি
মাসুম ভাইয়ের নগদ প্রাপ্তী থেকে কি ছবির ডিভিডি গিফট করা হবে... @টুটুল
আপনার মাধ্যমে মডুরে জানাই, এরপর থেকে ডিভিডি গিফ্ট না দিলে আর মুভি নিয়া পোস্ট দেবো না।
মাসুম ভাই যদি গিফট দেয় তাইলে ভাই আমিও হাত তুল্লাম.।এক কপি এই খানেও দিয়েন। ভাল লাগ্লো।
আমিও হাত তুললাম তাইলে
মাসুম ভাইয়ের লেখাটা ভালো লাগলো।
সিনেমাপ্রেমীরা এই ছবি না দেখে কিভাবে থাকবেন?
আসলেই। দ্রুত দেখে ফেলতে হবে।
দ্রুত দেখেন।
মাসুমভাই, প্রথমেই ব্যাপক ধন্যবাদ 'আবহমান' নিয়ে লেখবার জন্য
খুব ভালো লাগলো পড়ে।ঋতুপর্ণ ঘোষ, আমার খুব প্রিয় মানুষ হিসেবেও, সেলুলয়েডের পেছনের কারিগর হিসেবেও। মানুষটার সবচে' বড় গুণ হলো অসাধারণ রকমের অকপট হবার ক্ষমতা। অনেক সময়ই সেটা অনেকের চোখে 'অহমিকা' মনে হতে পারে, কিন্তু ওটাই তাঁর স্টাইল যা তাঁকে চমৎকার মানিয়ে যায় বলেই মানি। হয়ত পক্ষপাতদুষ্ট বলেই এরকম ভাবনা আমার- কি জানি!
আচ্ছা, আপনার মনে হয়নি আলোচিত সিনেমাটি(আবহমান) আর 'কালপুরুষ' এর মধ্যে কোথায় যেনো সূক্ষ্ণো একটা মিল আছে? কোথায়? সম্পর্কের টানাপোড়েন ঋতুপর্ণ ঘোষের খুবই প্রিয় বিষয় এবং তিনি তাঁর ক্যানভাসে সেটার ছবি নিখুঁতভাবেই ফোটাতে পারেন।
যদিও, 'সব চরিত্র কাল্পনিক' আর 'কালপুরুষ' এ যাদুবাস্তবতার একটা উপস্হিতি টের পাওয়া যায়। কিন্তু কালপুরুষের 'বাবা-মা আর সন্তানের' সম্পর্কের এই রেশটা 'আবহমানেও' গুনগুন করেছে নিজস্ব ধারায়। আমি যেন সেটার উপস্হিতি টের পেয়েছি। আমার ধারনা ভুলও হতে পারে। তবে এই সিনেমাতে এদের টানাপোড়েনটা এতোটাই উচুলয়ে বাঁধা ছিলো, যে সেটা দেখে মুগ্ধ না হয়ে উপায়ই থাকেনা। অন্ততঃ আমি হয়েছি রে ভাই।মানে বলতে চাইছি, কী ভীষণ নাইস ওয়েতে ডিল করতে দেখি' ব্যাপারটা কে বাবা দীপঙ্কের চরিত্রের ভেতর দিয়ে। যা আমাদের সাধারনের পক্ষে কঠিন সাধ্য বৈকি। নইলে ভাবুন তো ছেলে(যিশু) বাবা(দীপঙ্ক দে) এবং নায়িকা কে নিয়ে লেখছে (অসুস্হ বাবাকে নিয়ে ছেলে যখন কোলকাতার বাইরে গেলো, সে সময়কার কথপোকথন কথা মনে করতে অনুরোধ জানাই) সেটা তিনি দেখছেন একজন সৃষ্টিশীল মানুষের সৃষ্টি হিসেবেই। ওখানে তাদের 'পিতা-পুত্রের' সম্পর্কে সংঘাত ঘটেনি। আর ভালোবাসা ব্যাপারটা যে ঢাকঢোল পিটিয়ে প্রকাশ করবার বিষয় থাকেনা একটা পর্যায়ে গিয়ে , (সম্পর্কের একটা দীর্ঘসময় কাটিয়ে দেবার পর-কেবল বুঝে নিতে হয়, কারণ ওদের সেরকম সমঝোতা ছিলো বলেই দীপঙ্কর চরিত্রের বিশ্বাস-মমতা নারীসুলভ অভিমানে সেটা হারিয়ে ফেলেছিলেন, যা ফিরেও পান পরিচালকের ঘুমিয়ে যাওয়ার আগের কথপোকথনে বুঝি( বুঝবার ভুলও হতে পারে) সেটাও কি মুগ্ধকর ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন, ' শ্রীমতিকে ডাকছেন পরিচালক...মমতা শঙ্কর গিয়ে বিছানার পাশে বসলেন, বললেন ক্যামেরা লাইট সব রেডি........ঐ সমযকার কথপোকথনগুলোতে কী চরম প্রকাশ ঠিক না!
আর 'নটী বিনোদিনী এবং গরিশ ঘোষের' সম্পর্কের টানা পোড়েনের আড়ালে দীপঙ্কর চরিত্রের কিছুটা ঢাকা পড়ে, যা পরিচালকের গাড়ী ঐ নায়িকার গলির মোড়ে দেখা গেছে চরিত্রের মুখের কথাতেই দর্শককে মেনে নিতে হয়। যেখানে 'নটী বিনোদিনী আর গরিশ ঘোষের' সম্পর্ক ইতিহাসের পাতায় আশ্রয় পায় (সুনীলের কোনো একটা বইতে পড়েছিলাম এঁদের নিয়ে কাহিনী) কারণ, দীপঙ্করের চরিত্র আগাগোড়াই তার গাম্ভীর্য ধরে রাখতে সক্ষম হয়, কোথাও দেখা যায়নি তিনি সেভাবে নায়িকার প্রতি দুর্বল হয়েছেন। যতোটাই হয়ে পড়েন নায়িকা শ্রীমতি নিজেই। কারণটাও খুব সোজা, থেয়েটারের মেয়ে ওরকম করে তাকে গড়ে তোলার মনোযোগ কারো কাছেই এর আগে সে পায়নি, যেটা সে বিখ্যাত এই আর্টফিল্ম মেকারের কাছে পায়...আর টেলিফোন যে শুধুই ঐ নায়িকা একা করতেন না, সেটা বুঝাতেই মনে হয় পত্রিকার সম্পাদকের ফোন, এবং সবার ফোনেই দীপঙ্কর সমান মনোযোগ দেন, সেটা বোঝাতে ওয়াশরুমে গিয়ে কথাবলার ব্যাপারটা দেখানো, বলে মনে হয়েছে আমার।
ভুল বুঝেছি নাকি মিয়াভাই...জানালে খুবই কৃতজ্ঞ থাকবো। আমি নিজের মতো হাবিজাবি বুঝে নেই। যেহেতু কারো সাথে এসব শেয়ার করতে পারিনা। তাই আপনার এই পোষ্টে অনেককক বকবক করে গেলাম। আশা করি বিরক্ত হলেও সেটা প্রকাশ করবেন না
সবিনয়ে আরেকখান কথা বলি, এরকম প্রিয়তে ঠাঁই পাবার মতো পোষ্টের টাইপোগুলোর প্রতি যত্নবান হবার বিনীত অনুরোধ( ভাই রে বেয়াদপি নেবেন না প্লিজ লাগে
)
) ভালো থাকা হোক
" অটোগ্রাফ" সিনেমাটা কী আসছে ভাইজান? মনে হয় ভালো হবে মুভীটা, আমার দেখার ইচ্ছা আছে।আপনাকেও দেখবার এবং সেটার 'রিভিউ' দেবার অনুরোধ জানিয়ে গেলাম।
( পমিজ, ঐখানে এত্তো কথা কমু না
১. মীর প্রায়ই ঋতুপর্ণ ঘোষের নকল করে মজা করতো। একটা অনুষ্ঠানে দুজনের মুখোমুখি করা হয়। ঋতুপর্ণ নাকি মীরকে আচ্ছাসে ধোলাই দিছে। এই অনুষ্ঠানটা নাকি ব্যাপক আলোচিত। আমি দেখিনি, পড়লাম। এ সময় ঋতুপর্ণ অনেক কঠিন কঠিন এবং নিজের সম্বন্ধে অকপটে অনেক কিছু বলেছেন।
মজার ব্যাপার হল আবহমানের নায়িকা অনন্যা মীরের বিশেষ বান্ধবী।
২. ঠিকই বলেছেন মিলটার কথা। আর এ কারণেই আবহমান নিয়ে লিখতে গিয়ে আমার বার বার কালপুরুষ ও সব চরিত্র কাল্পনিকের কথা মনে পড়ছিল। আর সিনেমা কাব্যের খানিকটা ছোঁয়া আমি রেইনকোটেও পেয়েছিলাম। সেই যে ঐশ্বরিয়া যখন খাবার কিনতে গেল, তখন পুরো বাড়িটা ঘুরে ঘুরে দেখছিল অজয়। আর ব্যাকগ্রাউন্ডে একটা গান হচ্ছিল, সেই গানে গুলজারের নিজের গলায় বলা কিছু কথাও ছিল। অসাধারণ একটা গানের দৃশ্যায়ন ছিল সেটি।
৩. শুরুতে দিপঙ্করকে দেখে মনে হচ্ছিল এটা তো আসলে সৌমিত্রকে বেশি মানাতো। কিন্তু শেষ পর্যন্ত দেখে আমি আর মিস করিনি সৌমিত্রকে। খুবই ভাল অভিনয় করেছেন।
তবে দিপঙ্কর কতখানি শ্রীমতির প্রতি আশক্ত হয়েছিলেন সেটা নিয়ে একটু ধাধায় রেখে দিয়েছেন পরিচালক। তবে বিনোদনী সিনেমা এবং ছেলে ও শিখার কথাবার্তা শুনে মনে হচ্ছিল আসক্তি ছিল।
আবার শেষ দৃশ্যগুলোতে মনে হয় ভুল বোঝাবোঝির অবসান হয়েছে।
একটু ধোয়াশা তো আছেই।
৪. ঐ সংলাপগুলো মনে আছে?
শিখা অপ্রতীমকে বললো-আমার সাথে পপ্রেম করতে ইচ্ছা করে না
অপ্রতীম-না
শিখা-কেন, মা বকবে
অপ্রতীম-না
শিখা-বউ বকবে?
অপ্রতীম-না
শিখা-নিন্দে হবে?
অপ্রতীম-না
শিখা-তাহলে?
অপ্রতীম-আপনি তো প্রেম করবেন, ভালতো বাসবেন না। আর আপনি এতো ভাল অভিনয় করবেন যে, আপনি যে ভালবাসছেন না, প্রেম করছেন তাও বুঝতে পারবো না।
৫. বিশ্বাস করেন অনন্যার অভিনয় আমার অনেক চোখে লেগে থাকবে।
৬. আপনি দুই লাইনে মন্তব্য করবেন? তাইলে তো পোস্ট দেবো না।
৭, টাইপো থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারি না যে। অটোগ্রাফ দেখিনি।
আবহমান বাদে বাকিগুলো সব দেখা। এটা দেখে নিবো।
ডিভিডি আমিও এক কপি চাই। ছোট বলে আমাকে ভুলে যেয়েন না

এই নেন আপনাদের ডিভিডি দেখার লিঙ্ক।
ধুর লিঙ্ক কই????
http://www.boishakh.tv/featured/abohomaan-a-film-by-rituparno-ghosh/
বাহ। ভাল কাজ করেছেন।
নায়িকার একটা ভালো দেইখা ফডু দিতেন?
এই নেন
কি ব্যাপার মাসুম ভাই?সকালে এক ছবি বিকালে এক ছবি, কারন কি?
মডুর ভয়ে হাত পা................
লেখাটা পড়তে খুবিই ভালো লাগছে... :)
সিনেমাটা দেখার অনেক শখ জাগছে... :D
অনেকের সাথে ডিভিডি পাওনেরও হাউশ হইছে!... :bigsmile:
দেখে মুভিটা। অসাধারণ এক মুভি।
এদ্দিনে মুভিটা দেখলাম! দারুন লাগলো।
বাতিঘরের সাথে একমত যে, শেষের ঐ দৃশ্যটা যেখানে - রাগ-অভিমান ফেলে মৃত্যু সজ্জায় পরিচালকের সাথে উনার স্ত্রী'র বলা কথাগুলা, কি মমতায় তারে আস্বস্ত করছেন, যে হ্যা উনি এখনো কাজে ডুবেই আছেন, সবকিছু ভালো আছে! ভালো লাগছে ওটা।
দেখুম
দেখো
মাসুম ভাই দিন দিন বৃদ্ধ হইয়া যাইতেছে
সৌন্দর্য্য কোন ফটুক নাই
কথা ঠিক।
আপনেও নেন তাইলে

ঋতুপর্ণ ঘোষের ভক্ত আমিও।
রিভিউ ভাল লাগছে।
ধইন্যা
ঋতুপর্ণ ঘোষের ভক্ত আমিও।
রিভিউ ভাল লাগছে।
মাসুমভাই, ডিভিডি কেনার পর কয়েকদিন ধরে চেষ্টা করেও দেখার সময় পাচ্ছিনা। কারেন্ট থাকেনা, ক্লান্ত হযে পড়ি। তবে আজ দেখবই বলে ভাবছি। পেজ থ্রি ছবিটা কি দেখেছেন?
আমি বেশ কয়েকটা ডিভিডি কিনেছি সাম্প্রতিক সময়ের ভারতীয় বাংরা ছবির। কারোর প্রয়োজন হলে আওয়াজ দিতে পারেন।
আওয়াজ দিলাম। কি কি কিনছেন? প্রেজ থ্রি দেখছি। আমি কঙ্কনাকে ব্যাপক পছন্দ করি।
বৃদ্ধাঙ্গুলি উত্তোলনের ইমোটা বুঝে নেন
ঋতুপর্ণ ঘোষকে নিয়ে আমার কেআন আগ্রহ ছিল না,আগ্রহ তৈরী হলো...।
কেউ কি আমাকে "অস্তে গেলা বিনোদীনি" কবিতাটির লাইনগুলো risat.mail@gmail এই মেইল অ্যাড্রেসে পাঠাতে পারবেন?
মন্তব্য করুন