কোন সিপাহী, কোন জনতা, কিসের বিপ্লব
সেই ১৯৭৫ সাল থেকে শুনে আসছি ৭ নভেম্বর সিপাহী বিপ্লবের দিন। আর এই দিনটি সরকারি ছুটি থাকে, পালন করা হয় সংহতি দিবস হিসেবে। এই সংহতি সিপাহী আর জনতার।
কোন সিপাহী
১৯৭৫ থেকে ১৯৮১ পর্যন্ত রক্তাক্ত সময় নিয়ে অনেক বই লেখা হয়েছে। তবে সবই সাবেক সেনা কর্মকর্তাদের লেখা। একমাত্র ব্যতিক্রম ‘সৈনিকের হাতে কলম’। নায়েক সুবেদার মাহবুবর রহমানের লেখা। সুবেদার মাহবুব বিপ্লবী সৈনিক সংস্থার সভাপতি ছিলেন। এই সেই বিপ্লবী সৈনিক সংস্থা, যাদের হাত ধরে সমাজ বিপ্লব করতে চেয়েছিলেন কর্ণেল তাহের।
পুরো বইটি পড়ে আমি বড় ধরণের ধাক্কা খেয়েছি। এই যদি হয় বিপ্লবী সৈনিক সংস্থার প্রধান ব্যক্তির চিন্তা ভাবনা, তাহলে সেই বিপ্লব নিয়ে আতঙ্কিত হওয়াই স্বাভাবিক। সন্দেহ নেই সুবেদার মাহবুব অত্যন্ত সাহসী। কিন্তু বিপ্লবী কোনোভাবেই বলা যায় না। খানিকটা বিপথগামী বলা যায়। আর বড় ধরণের ভারত বিদ্বেষী।
সুবেদার মাহবুব, মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। পাকিস্তান থেকে ছুটি নিয়ে দেশে এসে যুদ্ধে যোগ দেন। যুদ্ধ করেছেন কাদের সিদ্দিকীর সাথে। সেই যুদ্ধের যে বর্ণনা তিনি দিয়েছেন তা ভয়াবহ, বিপজ্জনক এবং বিপর্যকর। যুদ্ধ শেষ।
সেই সময়ে কথা-‘টাঙ্গাইলে ফেরার পর কাদের সিদ্দিকী সবাইকে নির্দেশ দিলেন সরকারের কাছে অস্ত্র জমা দিতে। হঠাৎ করে কাদেরের এই নির্দেশ শুনে ছেলেদের মধ্যে একটা বিদ্রোহের সূচনা হল। সবাই স্থির করল, কেহই অস্ত্র জমা দিবে না। প্রয়োজনে আমরা কাদের সিদ্দিকীকে শেষ করে দিব।’
সেই অস্ত্র গোপনে দিয়ে দেওয়া হল ভাসানী ন্যাপের মুসাকে। রাতের বেলা ৩০/৪০টা গরুর গাড়ি ভর্তি করে অস্ত্র সরিয়ে ফেলা হল। ‘দেখে দেখে ভাল ভাল অস্ত্র সরায়ে ফেলা হল। আর বাকি ছেলেদের বললাম তোমরা ইচ্ছা করলে যার যার মত অস্ত্র নিয়ে যেতে পার। ভবিষ্যতে কাজের জন্য। অস্ত্রাগারের দরজা খুলে দেওয় হল। সারারাত্রি যে যা পারল অস্ত্র নিয়ে গোপন করল।’
এরপর সুবেদার মাহবুব চলে যায় রক্ষী বাহিনীতে। সেখানেও আছে নানা কীর্তি। পরে আবার সামরিক বাহিনীতে ফিরে আসে।
আরেক জায়গায় লিখেছেন, ‘টাঙ্গাইলে কাদের ও আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে যার যার কাছে গোপন অস্ত্র ছিল তা দিয়ে ২ জন যুবক একটা ডাকাত বাহিনী সংগঠিত করলো। এই সংবাদ পেয়ে আমি ঢাকা ক্যান্টনমন্টে থেকে টাঙ্গাইলে ডাকাত বাহিনীর সাথে দেখা করি। দেখতে পাই ঐ বাহিনীর অধিকাংশ ছেলে আমার নিজের।..........আমি সবাইকে উদ্দেশ্য করে বললাম, ভাই সাহেবরা আপনারা যে উদ্দেশ্যে আজ টাঙ্গাইলে ২০০ জন লোক নিয়ে ডাকাত বাহিনী গঠন করেছেন, যদি কিছু মনে না করেন আর আমাকে আপনাদের ভাই হিসেবে গ্রহণ করেন তা হলে আমি সবার কাছে কৃতজ্ঞ থাকবো।’
এই সুবেদার মাহবুবই তাহেরের বিপ্লবী সৈনিক সংস্থার সভাপতি এবং মাহবুবই রাত ১২টার পরে প্রথম গুলি ছুড়ে সিপাহী বিদ্রোহের সূচনা করেছিল। বলে রাখা ভাল এই মহান বিপ্লবী সুবেদার মাহবুব তাহেরের বিরুদ্ধে রাজসাক্ষী হয়ে পুরস্কার হিসেবে মস্কোতে বাংলাদেশ মিশনে চাকরি পেয়েছিলেন। এখন তিনি সপরিবারে জার্মানিতে আছেন।
বিপ্লব হবে, রক্ত ঝড়বে না-তা কী করে হয়। সাম্প্রতিক বিডিআর বিদ্রোহের নৃশংসতা দেখে যারা আতকে উঠেছিলেন তাদের বলি যে, বাংলাদেশে এটিও অনেক পুরানো ঘটনা। সিপাহী বিপ্লব ছিল হত্যা উৎসব। অ্যান্থনি মাসকারেনহাস বলেছেন, এই সময়ে সেনাবাহিনীতে অফিসারের সংখ্যা ৩০ শতাংশ কমে গিয়েছিল।
ব্রিগেডিয়ার শাখাওয়াত লিখেছেন, ‘এদের মধ্যে হামিদা নামে এক লেডি ডক্টর আর একজন ডেন্টাল সার্জন করিমকে সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত আক্রোশে হত্যা করা হয়। আর দুজন অফিসার ক্যাপ্টেন আনোয়ার আর লে. মোস্তাফিজ যারা বাংলাদেশ হকি ক্যাম্পে প্রশিক্ষণ নিচ্ছিল তাদেরকে টিভি স্টেশনের কাছে তাড়া দিয়ে নিয়ে হত্যা করা হয়।’
এবার খালেদ হত্যা প্রসঙ্গ। লে. কর্ণেল হামিদ লিখেছেন,
'৭৫ সালের ৭ নভেম্বর রাত ১২ টায় বঙ্গভবনে সিপাহী বিপ্লবের খবর পেয়ে জেনারেল খালেদ কর্নেল হুদা ও হায়দারকে সঙ্গে নিয়ে প্রথমে ব্রিগেডিয়ার নুরুজ্জামানের বাসায় যান। সেখান থেকে শেরে বাংলা নগরে অবস্থিত ১০ম বেঙ্গল রেজিমেন্টে যেতে সিদ্ধান্ত নেন। উল্লেখ্য, ১০ম বেঙ্গলকে বগুড়া থেকে খালেদই আনিয়েছিলেন তার নিরাপত্তার জন্য। পথে ফাতেমা নার্সিং হোমের কাচে তার গাড়ি খারাপ হয়ে গেলে তিনি হুদা ও হায়দারসহ পায়ে হেটেই ১০ম বেঙ্গলে গিয়ে পৌছেন। উক্ত ইউনিটের কমান্ডিং অফিসার ছিলেন কর্নেল নওয়াজিস । খালেদের আগমনের খবর পেয়ে তৎক্ষণাত তিনি টেলিফোনে টু ফিল্ডে সদ্যমুক্ত জেনারেল জিয়াউর রহমানকে তার ইউনিটে খালেদের উপস্থিতির কথা জানান । তখন ভোর প্রায় চারটা। জিয়ার সাথে ফোনে তার কিছু কথা হয় । এরপর তিনি মেজর জলিলকে ফোন দিতে বলেন। জিয়ার সাথে মেজর জলিলের কথা হয়।
ভোরবেলা দেখতে দেখতে সিপাহী বিদ্রোহের প্রবল ঢেউ ১০ম বেঙ্গলে এসে পড়ে। পরিস্থিতি কর্নেল নওয়াজিসের নিয়ন্ত্রনের বাইরে চলে যায়। আফিসার মেসে বসে খালেদ-হায়দার -হুদা সকালের নাস্তা করছিলেন। হুদা ভীত হয়ে পড়লেও খালেদ ছিলেন ধীর, স্থির, শান্ত। হায়দার নির্ভীক নির্বিকারভাবে পরাটা মাংস খাচ্ছিলেন। এমন সময় মেজর জলিল কয়েকজন উত্তেজিত সৈনিক নিয়ে মেসের ভিতর প্রবেশ করে। তার সাথে একজন বিপ্লবী হাবিলদারও ছিল।
সে চিৎকার দিয়ে জেনারেল খালেদকে বলল-"আমরা তোমার বিচার চাই"! খালেদ শান্তকণ্ঠে জবাব দিলেন," ঠিক আছে , তোমরা আমার বিচার করো। আমাকে জিয়ার কাছে নিয়ে চলো।"
স্বয়ংক্রিয় রাইফেল বাগিয়ে হাবিলদার চিৎকার করে বললো-"আমরা এখানেই তোমার বিচার করবো।"
খালেদ ধীর স্থির । বললেন, " ঠিক আছে , তোমরা আমার বিচার করো ।" খালেদ দু'হাত দিয়ে তার মুখ ঢাকলেন।
ট্যারর-র-র-র ! একটি ব্রাস ফায়ার । মেঝেতে লুটিয়ে পড়লেন সেনাবাহিনীর চৌকস অফিসার জেনারেল খালেদ মোশাররফ যার ললাটে ছিল বীরযোদ্ধার জয়টিকা , মাথায় ছিল মুক্তিযুদ্ধের বীর উত্তমের শিরোপা আর মাথার বাম পাশে ছিলো পাকিস্তানী গোলন্দাজ বাহিনীর কামানের গোলার গভীর ক্ষতচিহ্ন।
কামরার ভেতরেই গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রাণত্যাগ করলেন আগরতলা ষড়যন্ত্রমামলার অন্যতম আসামী, মুক্তিযুদ্ধে ৮নং সেক্টরের সাবসেক্টর কমান্ডার বীর বিক্রম কর্নেল নাজমুল হুদা।
কর্নেল হায়দার ছুটে বেরিয়ে যান কিন্তু সৈনিকদের হাতে বারান্দায় ধরা পড়েন । উত্তেজিত সৈনিকদের হাতে তিনি নির্দয়ভাবে লাঞ্চিত হন । তাকে সিপাহীরা কিল ঘুষি লাথি মারতে মারতে দোতলা থেকে নিচে নামিয়ে এনে ব্রাশ ফায়ারে হত্যা করে।'
প্রশ্ন হচ্ছে জিয়া মেজর জলিলকে কি বলেছিলেন?
মে.জে. মইনুল হোসেন চৌধুরী লিখেছেন, ‘আজও ভাবলে গা শিউরে ওঠে যে, ঢাকা সেনানিবাসের সৈনিকদের যদি সেদিন নিয়ন্ত্রণে আনা না যেত, তাহলে সারা দেশে সামরিক-বেসামরিক পর্যায়ে একটা নেতৃত্বহীন ভয়াবহ উচ্ছৃঙ্খল শ্রেনী সংগ্রাম শুরু হয়ে যেত। সৈনিকদের সেদিনের শ্লোগানই ছিল সিপাহি সিপাহি ভাই ভাই, অফিসারদের রক্ত চাই।’
প্রশ্ন হল, সিপাহীদের মধ্যে আর কারা ছিল। হাবিলদার মেজর আবদুল হাই মজুমদার ছিলেন বিপ্লবী সৈনিক সংস্থার সদস্য। তার এক বছর জেল হয়েছিল। তিনি দাবি করেন যে, ‘ঐ অফিসারদের হত্যা করেছে পাকিস্তান প্রত্যাগত সৈনিকেরা।’
সন্দেহ নেই, কেবল সিপাহী না, হত্যাযজ্ঞে অফিসাররাও ছিলেন। সিনিয়র অফিসারদের নির্দেশে এসব হত্যাকান্ড হয়েছিল। আর এই সুযোগ তৈরি হয়েছিল বিখ্যাত এই সিপাহী বিপ্লবের সময়। বিপ্লবী সৈনিকরা তালিকা তৈরি করে হত্যাউৎসবে মেতে উঠেছিল।
মনে রাখা প্রয়োজন, রশীদ-ফারুকরা অনুগত সৈন্যদের ফেলে রেখে দেশ ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন। এসব সৈন্য ৩ থেকে ৭ নভেম্বর পর্যন্ত ছিল অসহায়। এরাও সক্রিয় হয়ে উঠে ৭ নভেম্বর। পাকিস্তান ফেরতরাও যোগ দেয় বিপ্লবীদের সাথে।
শাহ মোয়াজ্জেমকে জেলে ভরেছিল খালেদ মোশারফ। সেই শাহ মোয়াজ্জেম জেল থেকে মুক্ত হন। না, বিচারে খালাস পাননি, সৈন্যরা জেলখানায় ঢুকে অনেক জাসদ নেতা, তাহের উদ্দিন ঠাকুর ও তাকে বের করে নিয়ে আসে।
তিনি লিখেছেন, ‘তারা (সৈনিকরা) তখন মহাউল্লাশে বলতে থাকল, স্যার বাড়ি যাবেন পরে, আগে রেডিওতে চলেন। গভর্ণমেন্ট গঠন করবেন। মোশতাক সাহেব আবার প্রেসিডেন্ট হবেন। আপনারা বড় মন্ত্রী হবেন। তারপর বাড়ি যাবেন। আপনারা জেলে ছিলেন। জানেন না বাইরে সিপাহী আর জনতা এক হয়ে বিপ্লব করেছি। ভারতের দালালদের খতম করে দেওয়া হয়েছে। তারা মোশতাক সাহেব ও জিয়াউর রহমানকে ক্ষমতাচ্যূত করে বন্দী করেছিল। আমরা তাদের মুক্ত করে এনেছি। মোশতাক সাহেব রেডিও অফিসে রয়েছেন। এখুনি নতুন সরকারের ঘোষণা দেওয়া হবে।..... নাজিমউদ্দিন রোডের বাড়িগুলোর দোতলা থেকে, ছাদ থেকে আমাদের ট্রাক লক্ষ্য করে ফুল ছুঁড়ছে, মালা ছুঁড়ে মারছে। হাততালি দিচ্ছে। চারদিকে সিপাহী-জনতা জিন্দাবাদ, বাংলাদেশ জিন্দাবাদ। ‘নারায়ে তকবির-আল্লাহ আকবর’ ধ্বনি আবার ফিরে এসেছে। জয় বাংলা ধ্বনি তিরোহিত।’
বলতে দ্বিধা নেই, তাহেরের বিপ্লবের একটা বড় উপজীব্য ছিল ভারত বিরোধীতা। কর্নেল তাহের তার জবানবন্দীতেও বলেছেন, 'তেসরা নভেম্বরের পর কি ভয়ার্ত নৈরাজ্যজনক পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে এ জাতির জীবন অতিবাহিত হচ্ছিল তা সবারই জানা।......এটা সবার কাছে স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল যে, খালেদ মোশাররফের পেছনে ভারতীয়দের হাত রয়েছে।’
ইতিহাস সাক্ষী তাহেরের এই কথার কোনো ভিত্তি এখনও খুঁজে পাওয়া যায়নি। ইতিহাস আরও সাক্ষী বঙ্গবন্ধু মারা যাওয়ার পর খুনীদের সাথে রেডিও স্টেশনে তাহেরও ছিলেন। ইতিহাস আরও সাক্ষী দেবে যে, খালেদ মোশাররফের অভ্যুত্থানে একটি লাশও পড়েনি।
কোন জনতা
সিপাহীদের সাথে তাহলে জনতাও ছিল। কিন্তু ওরা কারা? জাসদতো ছিলই। আরও অনেকে যুক্ত হয়েছিল। বামপন্থী অন্যান্য দল আগে কিছু না জানলেও খবর পেয়ে ৭ নভেম্বর মাঠে নেমেছিল।
হায়দার আকবর খান রনো লিখেছেন, ‘রাতের মধ্যে আমি কাজী জাফর ও মেননের সঙ্গে যোগাযোগ করলাম। সিদ্ধান্ত নিলাম, এই অভ্যুত্থানে আমাদের অংশ নিতে হবে। কিন্তু কিভাবে? কারা করছে তাও জানি না। যাই হোক, আমরা ভোর থেকে রাস্তায় থাকবো। সকাল থেকেই আমাদের সকল শক্তিকে সমবেত করে ঢাকার রাস্তায় থাকতে হবে। পরদিন সকাল ৯ টার মধ্যে টঙ্গী থেকে কয়েক হাজার শ্রমিক মিলের ট্রাক দখল করে ঢাকায় উপস্থিত হল।’
আরও তো অনেকে নেমেছিল। এরা কারা। জনাব রনো আরও লিখেছেন, ‘পরদিন যখন অভ্যুত্থানকারী সৈনিকরা ও তরুণ ছাত্ররা নানা ধরণের বিপ্লবী শ্লোগান দিচ্ছে, তখন জুম্মার নামাজের পর একদল লোক খন্দকার মুশতাকের ছবি নিয়ে বের হয়েছিল। এত দ্রুত মুশতাকের ছবি এলো কোথা থেকে? তাহলে আগের রাতেই মুশতাকের ছবি ছাপানোর বা জোগাড় করার ব্যবস্থা করা হয়েছিল?’
জামায়াতসহ যেসব পাকিস্তানপন্থী দলগুলো নিষিদ্ধ ছিল তারা এই দিন কৈ ছিল। নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে এরচেয়ে বড় সুযোগ তো ঐ সময় ছিল না। সুতরাং সিপাহী-জনতার সেই বিপ্লবে এরাও ছিল জনতা।
কিসের বিপ্লব
জাসদ নেতা শাহাজাহান সিরাজ ১৯৮০ সালে একটি রাজনৈতিক রিপোর্টে বলেছিলেন, ‘বস্তুত ৭ নভেম্বর আমরা কী করতে চেয়েছিলাম তা জনগন জানতো না। ....সত্য বলতে কী অভ্যুত্থান সম্পর্কে আমাদেরও তেমন স্পষ্ট ধারণা ছিল না।’
জাসদ নেতা মাহবুবুর রব সাদী বলেছেন, ‘৭ নভেম্বরের ঘটনাবলী দ্বারা আমরা বুর্জোয়া রাষ্ট্রশক্তির অর্ন্তদেশে গভীর ক্ষত সৃষ্টি করেছি এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। ওই দুরূহ কাজটি সম্পন্ন করার জন্য আমরা অবশ্যই বিপ্লবী কৃতিত্বের দাবিদার হতে পারতাম। কিন্তু ঘটনাটি যেভাবে ঘটেছে অবশ্যই বিপ্লবী কৃতিত্ব তো দূরের কথা, বিপ্লবী রাজনীতির ইতিহাসে আমাদেরকে নৈরাস্যবাদী অপকীর্তির জন্য দায়ী থাকতে হবে।’
তিনি আরেক জায়গায় বলেছেন, ‘বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে আমাদের কার্যকলাপের মধ্যে ডানপন্থী সুবিধাবাদের ঝোঁকের অস্তিত্ব থাকলেও প্রায় সর্বত্র প্রাধান্য বিস্তার করে বিরাজিত ছিল যে ঝোঁকটি তা হচ্ছে বামপন্থী হঠকারিতা।’
সেইসব বিপ্লবীরা এখন কোথায়?
শাহাজাহান সিরাজ: বিএনপি নেতা, অন্যতম দুর্নীতিগ্রস্ত বলে পরিচিত
আসম আবদুর রব-এরশাদের গৃহপালিত বিরোধী দলের নেতা
এম এ জলিল-ইসলামী সৈনিক অবস্থায় মারা যান, শেষ দিবে মূল ব্যবসা ছিল আদম ব্যবসা।
আল মাহমুদ-জামায়াত পন্থী কবি।
হাসানুল হক ইনু-নৌকা প্রতীকের সাংসদ।
সহায়ক গ্রন্থ
১. শতাব্দী পেরিয়ে-হায়দার আকবর খান রনো। তরফদার প্রকাশনী।
২. বলেছি বলছি বলবো-শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন। ঐতিহ্য
৩. এক জেনারেলের নিরব সাক্ষ্য: স্বাধীনতার প্রথম দশক-মে.জে. মইনুল হোসেন চৌধুরী (অব.)। মাওলা ব্রাদার্স।
৪. বাংলাদেশ রক্তের ঋণ-অ্যান্থনি মাসকারেনহাস। হাক্কানী পাবলিশার্স
৫. সশস্ত্র বাহিনীতে গণহত্যা: ১৯৭৫ থেকে ১৯৮১-আনোয়ার কবির। সাহিত্য প্রকাশ
৬. বাংলাদেশের রাজনীতি: ১৯৭২-৭৫-হালিম দাদ খান। আগামী প্রকাশনী
৭. একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ: রক্তাক্ত মধ্য-আগস্ট ও ষড়যন্ত্রময় নভেম্বর-কর্ণেল শাফায়াত জামিল। সাহিত্য প্রকাশ
৮. বাংলাদেশ:রক্তাক্ত অধ্যায় ১৯৭৫-৮১-ব্রি. জে. এম সাখাওয়াত হোসেন। পালক প্রকাশনী।
৯. তিনটি সেনা অভ্যুত্থান ও কিছু না বলা কথা-লে. ক. এম এ হামিদ। শিখা প্রকাশনী
১০. সৈনিকের হাতে কলম-নায়েক সুবেদার মাহবুবর রহমান। আলীগড় প্রকাশনী।
১১. অসমাপ্ত বিপ্লব: তাহেরে শেষ কথা-লরেন্স লিফসুলৎস। নওরোজ কিতাবিস্তান
ভাল হইছে পোষ্ট দিয়া। অনেক নতুন কিছু জানলাম। জানার দরকারও ছিল।
পারলে জিয়ার বন্দী হওয়ার কাহিনীও দিয়েন।
জিয়াকে মুক্ত করার দলে ছিলেন মেজর মহিউদ্দিন (আর্টিলারি)। চেনা যায়? বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার আসামী, ফাঁসিও হয়েছে।
এতোগুলো সোর্স থেকে জটিল ঘটনাপ্রবাহ গুছিয়ে কাজ করা বড় কঠিন! সুবেদার মাহবুবের কাহিনী তো ভয়াবহ।
সেইসব বিপ্লবীরা কে কোথায়- আসম রব যে হাসিনার প্রথম মেয়াদের জাতীয় ঐকমত্যের সরকারে পশু না কী যেন মন্ত্রী ছিলেন সেটা বাদ গেছে।
পোস্টে টাইপো রয়ে গেছে। কিছু টাইপো শব্দের অর্থ পাল্টে দিচ্ছে। নায়েব->নায়েক, বিপদগামি->বিপথগামী ইত্যাদি
সুবেদার মাহবুবের বইটা পারলে পুড়া পইড়েন। ভয়াবহ কী জিনিষ টের পাইবেন।
হ পশু মন্ত্রী ছিলেন।
টাইপো ঠিখ করলাম। তবে নায়েব আমি ইচ্ছা করেই লিখেছিলাম। কারণ বইটায় নায়েবই লেখা আছে।
নায়েবই তাহলে ঠিক? সুলতানী আমলের পর এই পদবী যে জামাতের আমীর ছাড়া আর কারো থাকতে পারে আন্দাজ ছিলো না... কতো অজানারে
সুবেদার মাহবুবের বইয়ে আছে, ৭ নভেম্বর বিপ্লবী সৈনিক সংস্থা সিদ্ধান্ত নেয় যে বিপ্লব সফল, সুতরাং নিয়মানুযায়ী এখন মাহবুবেরই রাষ্ট্রপ্রধান হওয়ার কথা। কিন্তু মাহবুব নিজে রাজী হননি বলে এই সিদ্ধান্ত আর কার্যকর হয়নি।
এইটুক পড়ে আমি টাসকি খাইছি।
অনেক কিছু জানলাম
ধন্যবাদ।
আসলেই দারুণ একটা কাজ হয়েছে এটা। এত এত সোর্স থেকে এরকম একটা জটিল বিষয়কে এভাবে ব্যাখ্যা করা চাট্টিখানি কথা নয়।

আরও অনেক কিছু লেখা যেত। কিন্তু সময় ছিল না। আর পাপিস্ট ডেভু ও মডুর কারণে মেজাজ খারাপও হইছে। একবার সরাসরি লিখে পোস্ট করার পর দেখি পোস্ট গায়েব। ফলে আবার নতুন করে সব লিখতে হইছে।
মাসুম ভাই কে স্যালুট ।
৭ই নভেম্বর নিয়ে তেমন কিছুই জানতাম না আসলে। অনেক কিছুই জানলাম।
ধন্যবাদ পড়ার জন্য।
ক্রাচের কর্ণেল পড়ে অনেকেই তাহেররে নবী-রাসূল মেনে বসে। ঐ আমলের সেনা কর্তাদের কারো মতিগতিই নিজ স্বার্থের বাইরে বলে মনে হয় নাই।
আসলে সেই সময়টা ছিল বিপ্লবের দশক। শ্রেনীসংগ্রাম, সমাজতন্ত্র, চীন, নক্সালবাড়ি- এগুলো ছিল সে সময়ের বিষয়। এটা আমি মানি যে তাহের আদর্শ বিপ্লবী ছিলেন। কিন্তু তাঁর সিদ্ধান্তগুলো সঠিক তো ছিলই না, হঠকারীও বলা যায়।
একটা বিষয় খালি খেয়াল রাখতে বলি। তাহেরে সখ্য ছিল জিয়া, রশীদদের সাথে। খালেদ বা শাফায়াত জামিলদের সাথে না। রশিদ ক্যু করে তাহেরকে খবর দিয়েছিলেন। কেন তাহেরকে খবর দিতে হলো? কেন রশীদ তাহেরকে বিপজ্জনক মনে করলো না?
আর যে ভারত বিরোধীতা করেছিলেন তাহের তার ভিত্তিও খুঁজে পাওয়া যায় না।
অনেক ধন্যবাদ মাসুম ভাই।
শেয়ার দিলাম লেখাটা।
ওকে ভাইয়া
মাসুমভাই, যদি পারেন তাহলে এটা নিয়ে ক্রোনোলজিকালি একটা সিরিজ লিখতে পারেন কিনা দেখেন। যদি সময় পান আর কি। এই সময়টা নিয়ে সবারই জানার অসম্ভব আগ্রহ, কিন্তু সঠিক তথ্যের খুবই অভাব, বিশেষ করে সবদিক একসাথে নিয়ে কোন লেখা চোখে পড়েনি।
লেখাটা ফেবু'তে শেয়ার দিলাম। অনেক ধন্যবাদ।
সিরিজ করা আমার জন্য কঠিন। সময়ের অভাব একমাত্র কারণ। সবগুলো মিলিয়ে লিখতে গেলে অনেক সময় লেগে যায়। তবে বিশেষ বিশেষ ঘটনা নিয়ে আরও লেখার ইচ্ছা আছে।
কথার কথা ... একটা ফুটবল ম্যাচ হলো ব্রাজিল আর আর্জেন্টিনার মধ্যে ... মাত্র ৯০ মিনিটের এই ম্যাচটা একই সাথে দেখা হাজার (কিংবা লক্ষ-কোটি) দর্শকের কাছে ফুটে উঠবে ভিন্ন ভিন্ন আঙ্গিকে ... কারো দৃষ্টিতে এই খেলোয়ারটা সেরা, কারো দৃষ্টিতে ওই খেলোয়ারটা, কারো দৃষ্টিবাণ রেফারীর প্রতি, কারো দৃষ্টিতে গ্যালারীই সেরা ... ইতিহাস জিনিস টা সেরকমই কিছু
...তাহের সম্মন্ধে একটা সময় যে মোহ ছিলো এখন আর সেরকমটা নাই
...উদ্ভুত পরিস্থিতি সামাল দেওয়াতে খালেদ মোশাররফ পারঙ্গমতা দেখাত পারেন নাই
...যে কোন দেশের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা বা রাস্ট্রনায়কের অদূরদর্শিতা, ভুল সিদ্ধান্ত অনেকগুলি পর্যায়ক্রমিক ঘটনার জন্ম দেয় - আর সেটার মূল্য ব্যক্তিকে ছাপিয়ে গোষ্ঠি ও রাস্ট্র কে দিতে হয় বহুগুনে । ১৯০৫ কিংবা ১৯৪৭ এ এই অঞ্চলের নেতাদের সিদ্ধান্তগুলি আরো হাজার বছর ধরে পর্যায়ক্রমিক ক্রিয়াশীল ঘটনার জন্ম দিয়ে যাবে
মুজিব, জিয়া, তাহের, খালেদ এমনকি কাদের সিদ্দিকী, মেজর জলিল, কাজী জাফর, শাহাজাহান সিরাজ, আসম রব - জীবনের খেলায় কেউ এক-দুইটা কেউবা আরো কিছু বেশী ভালো ম্যাচ খেলেছেন কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাদের ভুল খেলাগুলি শুধু তাদের নিজেদের করুণ পরিনতিই ডেকে আনেননি, করুণতর করেছেন রাস্ট্রকে
~
একমত।
খালেদ মোশাররফের অনেকগুলো ভুল ছিল। ভাগ্যও তার পক্ষে ছিল না।
খালেদ ক্যু করেও ক্ষমতা নেননি। বরং মোশতাককে প্রয়োজনে রাখতে চেয়েছিলেন। কিন্তু জেল হত্যার ঘটনা জানার পর মোশতাককে বিদায় নিতে হল। খালেদ বোকার মতো সেনা প্রধান হওয়ার জন্য দেন দরবার করে সময় নষ্ট করেছিলেন। এছাড়া খালেদ পাকিস্তানপন্থী, পাকিস্তান ফেরত ও ফারুকপন্থী সেনাদের মনোভাব বুঝতে চেষ্টা করেননি।
জিয়াকে সেনানিবাসে আটক রাখাও ছিল ভুল সিদ্ধান্ত।
চূড়ান্ত সর্বনাশটা করেন তার মা ও ভাই। আওয়ামী লীগের মিছিলে এই দুজন ছিলেন, ফলে তিনি আবার আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় আনছেন এই গুজব জোড়ালো হয়।
মুজিব, জিয়া, তাহের, খালেদ রা মারা যায়, বহাল তবিয়্যতে বেঁচে থাকে (নাকি বেচে থাকে) শফিউল্লাহ, ইনু, মওদুদ রা ।
যা কিছু বেচে, বেঁচে থাকাটাই যদি হয় জীবনের সার্থকতা, এবং সেটা যদি হয় অতিরীক্ত ৩৫ বছর, তাহলে এরাই সার্থক ।
~
বেচে আর বেঁচে? ভাল বলছেন।
ইনুর লেখা পড়লাম ২/১ দিন আগে। খালেদ মোশারফের হত্যায় দুই ক্যাপ্টেনকে হত্যাকারী হিসেবে চিহ্নিত করছেন উনি, তারা জীবিতো আছেন।
সুবেদার মাহবুব নায়েব সুবেদারই ছিলেন, উনি ইপিআর থেকে আসা। কাদেরীয়া বাহিনীতে ছিলেন যা কাদের সিদ্দিকীর বই এ বেশ কবার এসেছে। কাদেরীয়া বাহিনীর বেশির ভাগইতো পরে রক্ষি বাহিনীতে যোগ দেয়।
৭ ই নভেম্বর আদৌ সিপাহী জনতার বিপ্লব ছিলো না, ছিলো ক্ষমতা দখলের পাল্টা অভ্যুত্থান। জিয়ার খল চরিত্রে বিভ্রান্ত না হলে তাহেরই হতেন নায়ক, ফাঁসিতে না ঝুলে তিনিই হতেন রাস্ট্রপতি। সেনাবাহিনীতে মুক্তিযোদ্ধা হত্যা ও নির্মুল করা কিন্তু শুরুটা সে সময়েই।
বিপ্লবের নামে চরম বাম ও চরম ডানের যৌন মিলন ছিলো সেটা, যার ফসল জিয়ার ক্ষমতা দখল।
১০ বেঙ্গলের লে কর্নেল নওয়াজিসই জিয়া হত্যায় ফাঁসিতে মারা যাওয়া ব্রিগেডিয়ার নওয়াজিস।
ক্যাপ্টেন আসাদ ও মেজর জলিল। শোনা যায় এর পর দ্রুত এদের প্রমোশন হয়েছিল। তারা দুজনেই পরে দেশ ছেড়ে চলে যান। জিয়ার সাথে জলিলের কি কথা হয়েছিল সেটা জানতে পারলেই অনেক কিছুবোঝা যাবে।
জিয়া অনুসারীরা বলছেন জিয়া সে সময় রক্তপাত চাননি। কিন্তু জিয়ার পরবর্তী ইতিহাস বলে রক্তপাত ঘটানো জিয়ার হবি হয়ে গিয়েছিল। জিয়া কত সেনা মেরেছেন সেই সংখ্যা কতো? ৫ হাজার? ১০ হাজার? নাকি আরও বেশি?
স্যালুট বস, জানতাম কিছুটা... এতটা জানতাম না...
জানান কোনো শেষ নাই।
ধন্যবাদ বস
অনেক কিছু জানা হলো...
মোশতাকের বাড়ি তো নাজিমুদ্দিন রোডে বা তার কাছেই?????
আগা মাসি লেন এ
মজার ব্যাপার হল, ঐ দিন ঠিকই মোশতাক রেডিও ভবনে গিয়েছিলেন। সেখানে প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন আবার প্রেসিডেন্ট হিসেবে বক্তৃতা দিতে। এই দফায় অবশ্য তাহের তাকে গলাধাক্কা দিয়েই বের করে দেন।
এমনও বলা হয় প্রেসিডেন্ট থাকাকালীণ সময়ে কর্ণেল গাফফার মোশতাককে চর মেরেছিলেন।
আরো জানতে চাই।
চেষ্টা চলিবেক।
স্কুলের অংক পরীক্ষায় প্রথম যে অংকটা থাকতো সেটি নানান যোগবিয়োগগুনভাগব্রাকেটচিহ্নসহ নানান জটিল বস্তুর সমাহারে গঠিত। এবং কোন রসিক মাষ্টর তার নাম দিয়েছিল সরল অংক। বাচ্চাদের জন্য এর চেয়ে বড় তামাশা আর হয় না। পচাত্তরের দ্বিতীয়ার্ধের ঘটনাগুলোও অনেকটা সেই সরল অংকের মতো।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট থেকে ৭ নভেম্বর পর্যন্ত সময়টা এইদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে ধোঁয়াশাগ্রস্থ অংশ। এমনকি যারা ওই সময়ে নানা ঘটনায় অংশ নিয়েছে তাদের কাছেও অস্পষ্ট অনেক কিছু। এই লেখা পড়ে অনেক ধোঁয়াশা দুর হয়। কেবল একটা রহস্যই বোঝা যায় নি। জিয়া কেন সিপাহী জনতা (!)র বিপ্লবীদের প্রথম পছন্দে পরিণত হয়েছিল হঠাৎ করে?
মজার ব্যাপার হল, আমি অংকে কাচা ছিলাম, একমাত্র সরল অংকটাই নির্ভুল করতে পারতাম।
যাই হোক........
ধরেন একটা বাসা। সেই বাসায় ৫ টা রুম। প্রতিটা রুমে তাশের জুয়া খেলা হচ্ছে। জিয়া হচ্ছে এমন একজন খেলোয়ার, যিনি প্রতিটি রুমের প্রতিটি টেবিলে নিজের তাশ রেখে এসেছেন। ফলে একটা না একটায় তো জেতা যাবেই।
মুক্তিযুদ্ধের সময় তাহের ও জিয়া ছিলেন একই সেক্টরে। তাহের যখন ভারতের মাটিতে না, বাংলাদেশের মাটিতে ঘাঁটি করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন তখন জিয়া তাকে সমর্থন দিয়েছিলেন। সেই থেকে সখ্যতা শুরু।
সুবেদার মাহবুবরে বইতে আছে, তাহের জিয়ার নাম প্রস্তাব করার পর প্রশ্ন তোলা হলে তাহের জিয়ার পক্ষে সাফাই গেয়েছিলেন।
আর কি কি সখ্যতা ছিল জানা নেই।
জুয়া সংক্রান্ত মন্তব্যটা লাইক করলাম। কোথায় যেনো পড়েছিলাম, জিয়া সঠিক সময়ে সঠিক জায়গায় ছিলেন। এইটাই মনে হয় তার সবচেয়ে বড় গুণ। জানি না তার ভাগ্যই তাকে টেনে তুলেছিলো কিনা।
ফেসবুকে শেয়ার দিলাম।
সেই কালুরঘাট বেতারকেন্দ্রের আগ থেকে শুরু সঠিক জায়গায় থাকা। যার শেষ হয়েছে মৃত্যুতে... অবশ্য উনার কবর আবার জায়গামতো নিয়ে আসা হয়েছে
জিয়া কাউকেই না বলতেন না।
Very nice. Thanks a lot.
ধন্যবাদ
এসব বই পড়া হয় না কখনো। তাই খুব ভালো জানাও হয় না ঘটনাগুলো সম্পর্কে।লেখাটা পড়ে অন্ততঃ সৈনিকের হাতে কলম বইটা পড়ার আগ্রহ তৈরী হলো।
মাসুম ভাইকে ধন্যবাদ কারণ অনেক কিছুই জানলাম, যা জানতাম না। এরকম লেখা মাঝে মধ্যেই দিবেন সময় পেলে।
তালিকার ১০টা বইই পড়ো। তাড়াহুড়ার কিছু নাই। আস্তে আস্তে পড়ো।
পারলে জিয়ার বন্দী হওয়ার কাহিনীও দিয়েন। ৭ই নভেম্বর নিয়ে তেমন কিছুই জানতাম না আসলে। অনেক কিছুই জানলাম।
৭৫ থেকে ৮১ পর্যন্ত সময়ের কথা লিখতে বসলে লেখা যায় অনেক কিছু। সময় করে ও পেলে লিখবো।
বস এখন সরাসরি প্রিয়তে নিচ্ছি। পরে কিছু প্রশ্ন করবো। অনেক কিছু জানতে ইচ্ছা করে।
অপেক্ষায় থাকলাম।
ঠিক আছে, অনেক ভাল লেখা।
কিন্তু আরও একটু বিস্তারিত আঙ্গিকে চাইছি। ওই কদিনের ঘটনা সম্পর্কে যা জানি সবই ধোয়া ধোয়া। ধোয়া ছাড়া জানতে চাই।
তাই বিস্তারিত লেখা চাই।
ধোয়া ধোয়া এখনও আছে।
যেমন, বাকি সবার বই পড়লে মনে হবে সে সময়ে সবচেয়ে প্রতিবাদি ছিলেন সাফায়াত জামিল। তিনি কিছুতেই মানেননি বঙ্গবন্ধু হত্যা ও ৭ মেজরের কান্ডকীর্তি এবং মোশতাককে। এমনকি মোসতাককে অস্ত্রও ধরেছিলেন। ওসমানী না থাকলে হয়তো মেরেই ফেলা হতো।
আবার হামিদের বইতে আছে তার সন্দেহ বঙ্গবন্ধু হত্যার কথা জামিলও জানতেন।
এরকম ধোয়া ধোয়া অনেক আছে। সব প্রশ্নের উত্তর কখনোই জয়তো জানা যাবে না।
কত অজানারে। আরো পড়তে হবে বুঝতে পারছি। ধন্যবাদ মাসুম ভাই, লেখা ভাল লাগলো।
আরে অতিথি আফায় যে!
তালিকা ধইরা পড়েন
ওহ!! দারুন দারুন!!
মন্তব্য করার নাই, ধন্যবাদ ভাই।
ধন্যবাদ বিলাই
৭ নভেম্বর নিয়ে অনেক কনফিউসন আমার ভেতর। আপনার লেখা সেই কনফিউসন অনেকখানি দূর করেছে, তবে এখনো কিছু কিছু জায়গা ঝাপসা। ভাইয়া, ৭ নভেম্বর নিয়ে বিস্তারিত আরো কিছু লেখা কি দেবেন?
ধন্যবাদ।
হামিদের মইতে আছে রশীদ তারে বলছিল যে জিয়া ১৫ আগস্ট ঘটনার পর পরই প্রেসিডেন্ট হইতে চাইছিল।
কিছু ঝাপসা কখনো দূর হবে না মনে হয়।
প্রিয়তে জমাইলাম। কোনো একদিন কাজে আসবে।
ভাই অনেক কিছু জানলাম। বাংলাদেশের বিপ্লবীরা ড্রইং রুম কমিউনিস্ট। সবাই চিন্তা করতে ভালবাসী। কিন্তু চিন্তাকে বাস্তব রুপ দিতে পারি না। ৭ ই নভেম্বর রাজনৈতিক নেতাদের শাসন পরিচালনার বর্থ্যতার ফল। জিয়া কেবল সুযোগ নিয়েছে। জিয়ার জায়গায় অন্য কেউ হলে ও খুব পাথক্য হত না। আমার ব্যক্তিগত মতামত হল পাকিস্তান ফেরত সেনা সদস্যদের কিছুতেই বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে অন্তভূক্ত করা ঠিক হয়নি। অফিসারদের ইগো সমস্যা হয়ত এ ৭ই নভেম্বর এর আরেক কারন। আমাদের কমান্ডারা কেউ মেজরের উপর ছিল না। সবারই চাওয়া পাওয়া ছিল।শেখ মুজিবর প্রধানমন্তী না হলে তারা তার কাছে অকপটে বন্ঞনার কথা বলতে পারত। তাছাড়া যুদ্ধের সময় সত্যিকারভাবে নেতৃত্ব দেওয়া নেতারা প্রভাব বলয়ের বাইরে চলে যাওয়ায় অনেক সুবিধাবাদী ছড়ি ঘোরাতে থাকে যা তারা মানতে পারেনি।
যত যাই বলা হোক আমি কর্নেল তাহেরকে অন্তর থেকে শ্রদ্ধা করি ও ভালোবাসি।তার জন্য আমি গর্বিত!এ ভালোবাসা আবেগের!
সুপার্ব! কিছু কিছু জানতাম এই বিষয়ে, মানিক ভাইয়ের লেখা থেকে। আপনে সব একাট্টা করছেন।
বিপ্লব না, ঐটা ক্ষমতা দখলের ফন্দি, এইটা আমিও বিশ্বাস করি।
খালেদ জরুরত সে যাদা নরম আর বোকা।
জিয়া জরুরত সে যাদা হার্ড আর কৌশলী।
আর তাহের.. মানুষ এমন উজবুক হয়?
মাসুম ভাই, আপনাকে ধন্যবাদ। ওই সব দিনের ঘটনা প্রবাহ এত জটিল, এক এক জন তার নিজের মত করে এক এক সময় এক এক কথা বলে। এলোমেলো ইতিহাস রচনা করে শুধুই বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা হয়েছে। এর মধ্যে আপনার এই প্রয়াস সত্যিই প্রশংষা যোগ্য।
উপরে উল্লেখিত বইগুলির pdf ভার্সন পাওয়া যাবে কি ?
কারো জানা থাকলে আওয়াজ দিবেন দয়া করে । ।
ধন্যবাদ সবাই কে ।
বাংলাদেশের ৭১ পরবর্তী রাজনীতি নিয়ে বইগুলোর পি ডি এফ লিঙ্ক দিলে খুব খুশি হতাম।
মন্তব্য করুন