কেবলই আমাদের কথা
১.
আমার মেয়ে প্রিয়ন্তী। ক্লাশ টুতে পড়ে এখন। গত দুই ঈদে সালাম করে যত টাকা পেয়েছে সব একটা বাক্সে রেখে দিয়েছে। সেখান থেকে চুপটি করে ৫০ টাকা নিয়ে সেদিন স্কুলে গেলো। স্কুলে ওই দিন বইমেলার শেষ দিন ছিল। মেলা থেকে একটা বই কিনে লুকিয়ে রাখলো সে। ছোট মানুষ তো, ২০ এপ্রিল পর্যন্ত অপেক্ষা করার ধৈর্যটুকু রাখতো পারলো না। সন্ধ্যায় বইটি বের করে মনোযোগ দিয়ে লিখলো, ' আদরের দুষ্টু ভাইকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা-প্রিয়ন্তী, ২০/০৪/২০১২'।
আমরা যখন বড় হয়েছি, তখনও এভাবে ভাবতে পারতাম না। আমার মনে আছে আমার স্ট্যাম্প সংগ্রহ করার সখ ছিল। একবার আমার ছোট ভাইয়ের জন্মদিনে সেই স্ট্যাম্প অ্যালবাম সুন্দর করে রঙিন কাগজে মুড়িয়ে দিয়ে দিয়েছিলাম। আবার এক মাস পরেই সেটা ফেরতও নিয়ে নেই।
২.
আমার ছেলে রাইয়ান, এবার প্লে- গ্রুপে পড়ছে। আপুর সঙ্গে তার রাজ্যের কথা। স্কুলে যা হয়, সব আপুকে বলা চাই। আর তার বেরসিক আপু আমাদের বলে দেয়।
সেদিন স্কুল থেকে এসে যথারীতি তার আপুকে সেদিনকার ঘটনা বলে দিল। আর আমরা শুনলাম রাতে।
রাইয়ান বলেছে, তাদের স্কুলে নতুন একটা মেয়ে এসেছে। মেয়েটি আগের স্কুলটায় যে সুন্দর মেয়েটা ছিল, তার চেয়েও সুন্দর। নতুন এই সুন্দর মেয়েটির সঙ্গে এখন সে বন্ধুত্ব করতে চায়। কিন্তু মেয়েটা অনেক দুষ্টু।
৩.
বউকে বললাম, কিছু টাকা জমলে দেশের বাইরে থেকে বেড়িয়ে আসি। শুনেই লাফাতে লাগলো দুই ছেলে মেয়ে। কনা (আমার বউ) বলে দিল বাচ্চাদের নেওয়া হবে না, ভাল লেখাপড়া করে নিজেদেরই যেতে হবে।
কিছুক্ষণ পর রাইয়ান এসে বললো, 'মা, আমাকে নাও, আমি না কখনো বিদেশ দেখি নাই'।
রাতে বাসায় ফেরার পর আমাকে বলে, 'বাবা, তোমরা আমাদের না নিলে না নিতে পারো, কিন্তু বড় হয়ে আমি তোমাদের নিয়ে যাবো।'
জানতে চাইলাম, 'কাকে কাকে নিবা?'
বললো, বাবা আর মাকে।
বললাম, 'আপুকে নিবা না?'
রাইয়ান-উহু, আপু তো তার জামাইয়ের সঙ্গে যাবে।
৪.
প্রিয়ন্তীকে ওর মাই পড়ায়। আলাদা টিচার নেই। বাচ্চাদের পড়াতে গেলে যা হয়, মাঝে মধ্যেই রাগারাগি পর্যায়ে চলে যায়। কণা সেদিন রাগ হয়ে চলে এসেছে। আমার মেয়ের আবার অল্পতেই চোখে পানি চলে আসে, কিছুই বলা যায় না। মা চলে আসায়, তার চোখে পানি চলে আসলো।
এসে মাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে কাঁদতে বললো, 'আমাকে যদি আর না পড়াও, তাহলে আমার লেখাপড়া ভাল কেমনে হবে? আর ভাল না হলে বড় হয়ে ভাল চাকরি কেমনে করবো? ভাল চাকরি করতে না পারলে বড় হয়ে তোমাদের তাহলে আমি কেমনে দেখবো?'
৫.
আরও অনেক দিন আসলেই বেঁচে থাকতে সাধ হয়
আহালে মামনীটা... দুইটাই চান্দের মত সুন্দর
বাপের মতো তো তাই
১।বই! এইটুকুন পিচ্চি উপহার দিচ্ছে বই! এরা আসলেই এখন অন্যরকম করে ভাবে। আমরা তো আরো বড়ো হবার পর বই দেয়া শুরু করছি।

২। ওররে! বাবাতো দেখি ব্যাগের ভারে কাইত! তবে চিন্তার দৌড়ে দেখি লাইনেই আছে
হ, এরা বইয়ের ভারে ক্লান্ত। এতো ভাড়ি ব্যাগ নিতে হয় তাদের যে, আমারই নিতে হাত ব্যথা করে
রাইয়ান বলেছে, তাদের স্কুলে নতুন একটা মেয়ে এসেছে। মেয়েটি আগের স্কুলটায় যে সুন্দর মেয়েটা ছিল, তার চেয়েও সুন্দর। নতুন এই সুন্দর মেয়েটির সঙ্গে এখন সে বন্ধুত্ব করতে চায়। কিন্তু মেয়েটা অনেক দুষ্টু।
বাবার মত হ য়েছে রাইয়ান
কেন, আপনে দুষ্টু?
... আহারে....
** ভাইজান ভাবীরে কন পিিচ্চগুলারে যেন বেশি বকাবকি না করে....পিচ্চি দুইটারে অনেক অনেক আদর...
দোয়া কইরেন
রাইয়ানের নাম মাসুম রাখা হোক
হিংসা করা ভালু না টুটুল
আমাদের ঋহান যেইভাবে শিলা কি জাওয়ানী দেখে মাথা ঝাকায় তাই দেখে আমি রাইয়ান কে জিজ্ঞাসা করছিলাম - "শিলা কি জাওয়ানী" দেখেছে কিনা।
রাইয়ান তো লজ্জায় গালটাল লাল করে তীব্র ভাবে বললো - এই না না না না ... আমি এইসব দেখি না।
ঠিকি আছে টিভির শিলাকে না দেখে স্কুলের সুন্দরীদের দেখা অনেক বেশি বাস্তবমুখি , ছেলে বুদ্ধিমান
ব্যাপক বুদ্ধিমান
রাইয়ান আর প্রিয়ন্তী,
দুজনার জন্যই অনেক অনেক আদর আর ভালবাসা..
অনেক অনেক অনেক ভাল লাগা একটা পোষ্ট।
রাইয়ান বড় হয়ে মাসুম ভাইয়ের নাম রাখবে
আমি তো নিতান্তই মানুষ
ভাতিজার চিন্তা দেখি পুরাই মাসুমীয়।

হিংসা ভাল না
সত্যিই দেখুন না, এখনকার বাচ্চাদের বেড়ে ওঠার ধরন, চিন্তার ধরন সবকিছুই আলাদা। কিন্তু আমরা বাচ্চাদের জগতটার কোনো খোজ খবরই রাখতে পারি না, এতে বাচ্চাদের কতোটা ক্ষতি হয় জানি না, কিন্তু আমরা বঞ্চিত হই অনেক কিছু থেকেই। সত্যিই মাসুম, 'অনেকদিন বেচে থাকার ইচ্ছেটা ' প্রবল করে দেয় বাচ্চাদের এই কাজগুলো।
প্রিয়ন্তী এবং রাইয়ানকে অনেক অনেক আদর ।
পুরাই একমত
ছেলে তো বাবার মতই হয়েছে!
সবাইকে নিয়ে সুখে আনন্দে শতবছর বেঁচে থাকেন।
আরও বাঁচতে তো সাধ হয়ই
আমার দুই ভাতিজা ভাতিজীর জন্য অনেক ভালোবাসা !
আপনাদের জন্য সুখের জীবন কামনা করছি, সবটা ক্ষণ ধরে।
আপনাদের কথা খুব ভালো লাগলো...
দেবদূতদের গল্প!
দেবদূতরা আসে আমাদের ধুলোমলিন ঘরে নির্মল সরলতা নিয়ে, আমাদের ঘর ও জীবন আলোর বন্যায় ভাসে... আমরা নতুন করে বেঁচে উঠি...
ভাল বললেন কামাল ভাই
মজার তো আপনাদের কথা
পুচ্কি উসতাদকে দেখে ধন্য হলাম
কি সুইট পিচ্চি । কি পাকনা কথা বার্তা ।
রাইয়ানকে তো আমার সবসময়ই জোস্ লাগে। খুব্বি স্মার্ট কিড! আর প্রিয়ন্তীটা একটা মায়াবতী পুরা।
মাসুম ভাই আপনারে হিংসাই।
হিংসাইয়েন না, আপনারও দিন আসবে
একটা পরিবারের ৪ জন সদস্য। ৩ জনকে আমরা চিনি। আরেকজনকে না চেনানোর কারনে এই পোস্টের লেখকরে মাইনাস দিতে মঞ্চায়...
ওরা দুজন ভালোভাবে বেঁচে বর্তে বেড়ে উঠুক।
খালি ঘরের ভিতর নজর
আরও অনেক দিন আসলেই বেঁচে থাকতে সাধ হয়
ঠিক বাজি
মন্তব্য করুন