অলীক
রাত যত বাড়ে, হাস্নুহেনার সৌরভ তত ছড়াতে থাকে। ঘোর লাগা সেই নির্জনতার মাঝে হঠাৎ কোথাও বেজে ওঠে মৃদু পায়েলের আওয়াজ।
ছেলেটি দেখে অন্ধকারে এক জোড়া চোখ জ্বল জ্বল করছে। একটু ভয় ভয় করে কি ওর.. কিন্তু সে তো শুধু শুধু মেয়েটির কাছে আসেনি, সে তার স্বপ্নগুলোর সন্ধানে এসেছে। ওর স্বপ্নের দল ওকে একা ফেলে মেঘদলের সাথে চলে এসেছিল। মেঘদের সাথে যেদিন আবার দেখা হলো, ছেলেটি দেখল সব মেঘেরাই ফিরেছে শুধু ওর স্বপ্নগুলো বাদে। “কী করে তার সন্ধান মিলবে মেঘদল!" আমি আমার স্বপ্নদের কী করে আবার ফিরে পাবো! ছেলেটির আর্তস্বরে মেঘদল হতচকিত হয়ে ভিজিয়ে দিল তাকে। মুখে পিঠে বুলিয়ে দিলো বৃষ্টিপরশ। কাছে এসে জানাল, করতোয়া নদীর ধারে স্বপ্নরা রয়ে গেছে আগুনচোখো মেয়েটির কাছে। অমাবস্যার রাতে শুধু তুমি গিয়ে একবার নতজানু হলেই মেয়েটি তোমার স্বপ্ন ফিরিয়ে দেবে।
নদীর নাম করতোয়া, এইটুকু মাথায় রেখে শুরু হয় তার পথচলা। দিনের পর দিন সে পথ হাঁটে তার হারিয়ে যাওয়া স্বপ্নসুখের সন্ধানে। ক্রমে ক্রমে ক্লান্ত হয়ে আসা শরীরে সে একদিন এসে বসে এক হাস্নুহেনা গাছের পাশে। চোখ ঘুমিয়ে জড়িয়ে আসছিল তার, দুদন্ড জিরিয়ে নিতে ধীরে ধীরে এগিয়ে গিয়ে বসল সে নাম না জানা এক নদীর পাশে। চোখ দুটো সে শূন্যে মেলে দিল, দেখল পড়ন্ত বেলার তেজ মরে আসা রোদের আঁচে মাথার উপর বৃত্তাকারে উড়ছে কতগুলো শঙ্খচিল। চক্রাকারে যেন বৃত্তের পর বৃত্তকে রচনা করে চলেছে সেই সব চিল। বৃত্তবন্দী খেলায় নিজেকে জড়িয়ে ফেলে ভারমুক্ত লাগছিল বেশ, কিন্তু আলো নিভে যেতেই চারদিক অন্ধকারে নিমজ্জিত আর ঠিক তার কিছু পরই হাস্নুহেনা তাকে সৌরভ দেয়, মাতাল করে, সেই সৌরভ যত বাড়ে রাত তত গভীর হয়, নির্জনতার সৌরভে লীন হতে হতে সে পায়েলের মৃদু আওয়াজ শোনে, মগ্নতা থেকে জেগে উঠতে উঠতে সে অনুভব করে আর কারও উপস্থিতি।
ভালো করে সে মেয়েটিকে দেখার চেষ্টা করে আঁধারবেলায়. নজর করতেই আবছা চোখে পড়ে মালার মতো মেয়েটির গায়ে জড়িয়ে যত স্বপ্নের বিচ্ছুরণ। অপার্থিব আলোকে মেয়েটির জ্বলে ওঠা চোখ দুটোর দিকে তাকিয়ে থাকতে গিয়ে সে তার স্বপ্নের কথা, নতজানু হবার কথাও বিস্মরিত হয়। মেয়েটি তার মায়াবী হাত দুটো বাড়িয়ে দেয়, ছেলেটি এগিয়ে আসে, মেয়েটি পিছিয়ে যায়,মোহাবিষ্ট ছেলেটি সামনে এগুতে থাকে.. আর তখনি ভোজবাজির মত মেয়েটি হঠাৎই মিলিয়ে যায়...।
** আমরা বন্ধুতে প্রথম পোস্ট দিচ্ছি। বলার কথা এইটুকুই.... আমার মাঝে মাঝেই লেখালিখি থেমে থাকে, কোন লেখাই আসে না। এই সময়টা বড় বিড়ম্বনার, এবারের সময়কাল বড় দীর্ঘ, তবু আজ চেষ্টা করলাম,হয়ত কিছুই দাঁড়ায়নি তবু এ আমার বেরিয়ে আসার চেষ্টা।
আমরা বন্ধুর সব ব্লগারদের জন্য শুভ কামনা।
এইটাকে মনে হয় "রাইটার্স ব্লক" বলে।

ব্যাপার্না। রাইটার্স ব্লক হইলেও চিন্তা নাই, ব্লগার্স ব্লক না হইলেই হল। বেশি বেশি কমেন্ট করবেন, তাইলেই আর ব্লগার্স ব্লক হবে না।
লেখা ভালৈছে। তয়, নিক "মেঘ" বইলা মেঘেদের প্রতি যেমন পক্ষপাত দেখাইলেন, দিলে বড়ই চোট পাইলাম

আমরা ব্ন্ধুতে স্বাগতম।
অ:ট: আপনি কি সামু'র "মেঘ" আপু??
ami kee montobbo korbo? eto shundor lekha pore ar kichu korte iccha korche naaaaaaaaaaaa.
ধন্যবাদ, কিন্তু নামটাই যে জানলাম না।
প্রথম পোস্ট পড়া এবং কমেন্টের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ মুক্ত বয়ান আপনাকে। কথাটা রাইটার্স ব্লকই যা আমাকে ঘনঘন বিরক্ত করে মারে। ব্লগার্স ব্লক হবে না আশা করি।
সামুর মেঘ আপু যথার্থ মেঘকন্যা, আর আমি শুধু মেঘ। ভালো থাকবেন।
প্রথম লেখাতেই তো মন মাতিয়ে দিলেন ।
রাইটার্স ব্লক যেন না হয় , সেই দোয়া করি।
সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ সাঈদ।
স্বাগতম আমরা বন্ধুতে।প্রথম লেখা পড়েই মুগ্ধ হলাম। তাও বলেন লেখা আসে না। এমন লেখা আরো চাই।
জয়িতা, কী বলি, ভালো লাগছে আপনাদের পেয়ে।
বাহ
স্বাগতম আমরা বন্ধু ব্লগে
প্রথম লেখা পড়েই মুগ্ধ হলাম
আশা করছি সাথে থাকার সময়গুলো মুগ্ধতায় কাটবে
ভাল থাকুন
অনেক ধন্যবাদ, আপনাদের মন্তব্যে উৎসাহ বোধ করছি।
আপনিও ভালো থাকুন।
মাঝে মাঝে আমিও স্বপ্ন হারিয়ে ফেলি। কোথায় যে হারিয়ে যায়!
হুম! একসময় এরকম কল্পনা করতাম। এই কল্পনাগুলো বড় মধুর ছিল।
পান্থর মন্তব্য পেয়ে ভালো লাগলো। আমি তো এমন স্বপ্ন এখনও দেখি।
কী অদ্ভুত সুন্দর বর্ণনা!! মুগ্ধ হলাম।
আমি তো আপনার লেখা পড়ে মুগ্ধ
মন্তব্য রেখেছেন বলে খুব ভালো লাগল।
বাহ। সুন্দর তো। আমাদের এখানে স্বাগতম।
ধন্যবাদ আপনাকে।
মালার মতো মেয়েটির গায়ে জড়িয়ে যত স্বপ্নের বিচ্ছুরণ ......... দারুন লেখা

ধন্যবাদ নাহীদ।
প্রথম লেখাতেই তো মন মাতিয়ে দিলেন ।
তানবীরা, চেনা লাগছে। আপনি কি সচলের তানবীরা!!
আপনার ব্লগস্পট ভালো না। কমেন্ট করা যায় না। আর কফি হাউসের আড্ডা, চতুর্মাত্রিকগুলোর সিস্টেম ভয়াবহ জটিল। যে কারণে একটা জরুরী কথা অনেকদিন ধরে বলতে চাচ্ছি বলতে পারছি না। কথাটা হলো, এখানে নতুন লেখা নেই কেন?
মীর, ব্লগস্পটে কমেন্ট মডারেশন অন রেখেছি। আপনি যে কফিহাউস, চতুর সব ঘুরে এসেছেন জানতাম না।
আমি লিখি না অনেক দিন। মানে লিখতেই পারি না একেবারে। যখন যা লিখি চতুরে দিই, লোটাকম্বলে দিই কেননা সেখানে ৩৬ ঘন্টা, ৭২ ঘন্টা বেধে দেওয়া নেই, কাজেই বেশ স্বাধীন লাগে।
তার উপর ২০ আগস্ট বাবা চলে গেলেন হুট করে, আমরা এখনও সেটা মেনে নিতে পারছি না।
তবে মীর, আপনার এই আন্তরিকতাটা এত বেশী ভালো লাগছে যে চোখ ভিজে আসছে ভাই। অনেক ভালো থাকুন।
আপনার বাবার খবরটা জানতাম না। আপনার জন্য কষ্ট হচ্ছে। ওস্তাদ আপনাকে সহ্য করার শক্তি দিন।
আর একটা কথা, এবি'তে সময়সীমা নিয়ে মডুদের কড়াকড়ি যেমন আছে, তেমনি আমরা বন্ধুরাও কিন্তু আছি। মডুদের কথা ভেবে একদমই লেখা দেবেন না, কিন্তু বন্ধুদের কথাটি ভাববেনও না, তা কি ঠিক?
আমি একটু কথা বেশি বলি, বিষয়টাকে মার্জনার দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ জানিয়ে আরেকটা কথা বলে দিই, চতুরে আপনার করা ব্যানারগুলো এত্ত সুন্দর! আমার মনে একটা সুপ্ত ইচ্ছে তৈরী হয়েছে ওগুলো দেখে দেখে। কখনো আপনার মতো ব্যানার তৈরী করতে পারলে এবিওয়ালাদের কাছে ঝুলানোর জন্য পাঠাবো।
শুভেচ্ছা নিরন্তর আপু।
আসলে আমিও ভেবেছি ব্যাপারটা, দেখি আবার লেখা শুরু করলে এখানেও দেব। আমার মতো করে ব্যানার তৈরী! মজা লাগছে শুনে যে আমার কাজকেও কেউ ফলো করতে চাইলো-----আমি ব্যানার করতে ভালোবাসি, আজকে এখানেও একটা পাঠিয়েছিলাম মাদার তেরেসার জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে, কিন্তু এবি বোধহয় পছন্দ করেনি।
মাদার তেরেসার জন্মদিন ছিলো গতকাল। আর আপনার কাজ ফলো করি না মানে? আপনার মতো গ্রাফিক্সের কাজ জানলে তো আমি আপনার মতো একটা ব্লগ খুলতাম, আপনার মতো একটা পত্রিকার সাজ-সজ্জার দায়িত্ব নিতাম, নানা ধরনের ডিজাইন করে চারিদিক অস্থির করে ফেলতাম।
তাহলে আসুন দেখি এইরকম অস্থির করে তুলতে আরেকটা ইপত্রিকার উদ্যোগ নেওয়া যায় কি না।

ক্যামনের কী! শুধু চাই ইচ্ছা।
মীর, ফরাসী ভাষা শিখতে চাই, কিন্তু কোথাও গিয়ে ক্লাস করা সম্ভব না, পারলে আপনার ইমেল আইডি দেবেন আর হেল্প করতে পারবেন কিনা জানাবেন। শুভেচ্ছা-
ইচ্ছার কুনো অভাব নাই। হেল্প করতে পারুম মানে? হেল্প করতে আমি চারপায়ে খাড়া। (আমার বুদ্ধিবৃত্তিক স্তর চারপেয়ে প্রাণীদের কাছাকাছি) সো ক্যাপ্টেন্সি করতে হবে আপনাকে, রাজি থাকলে জানান।
আর আগে ইপত্রিকা, পরে ফ্রেঞ্চ, উখে?
আমি তো ডিজাইনের বাইরে কিছুই জানিনা তেমন, তবে চেষ্টা করতে দোষ কি! একজন ডেভু যদি এগিয়ে আসেন তাহলেই হয়ে যায়।
এতো সুন্দর লেখাটা আমি মিস করে গিয়েছিলাম! মেঘ আপনার লেখা নিয়মিত পড়তে চাই। খুব বিষণ্ণ সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন, এ শোকের সান্ত্বনা হয় না। শুধু প্রার্থনা করি বাবার আত্মা শান্তির জন্য।
নুশেরা পাশে থাকার জন্য ধন্যবাদ। সত্যিই খুব বিষণ্ণতা চারদিকে।
এখন কেমন আছেন? মন ভালো করেন, কঠিন সময় কাটিয়ে উঠেন, এই কামনা করি----
শাওন, ভালো থাকার চেষ্টা তো করি। বাবা শুধু আমার বাবা বলে নয়, হাজারো লোকের কাছে শুনলে বুঝতেন তিনি কী ছিলেন, কতটা আলো দিয়ে গেছেন। বাবাকে নিয়ে কোনদিন হয়ত লিখব, সে ল্যেখাগুলো এখানেই দেব।
মন্তব্য করুন