ইন্টারনেট
ইন্টারনেট নামক বস্তুটার সাথে আমার প্রথম দেখা-সাক্ষাৎ হয় ২০০১ সালে। তখনো নিশ্চিত ছিলাম না এইটা দিয়া কি করা যায়, খালি জানতাম ভাল-খারাপ অনেক কিছু করা যায়! তখন কলেজে পড়ি, এক বন্ধু ধরে নিয়ে গেল কাছাকাছি এক সাইবার ক্যাফেতে। হাতে ধরে বুঝাইল কেমনে এক্সপ্লোরার খুলে ওয়েবসাইট নামে কিছু একটা খুলতে হয়। ও-ই বসে থেকে আমার একটা ইমেইল খুলে দিল। আমি তো মহা উত্তেজিত! শালার ইন্টারনেটে আমার একটা ঠিকানা আছে! সেটা আবার পাসওয়ার্ড দিয়ে আটকানো! সুতরাং পাসওয়ার্ড জিনিসটা মহা গুরুত্বপূর্ণ। তাই নিজে নিজের পাসওয়ার্ড ঠিক করার সাহস হলো না, বন্ধুকে বললাম তুই আমার জন্য ভাল দেখে একটা পাসওয়ার্ড ঠিক করে দে!
ধীরে ধীরে শিখলাম কেমনে কি করতে হয়। এরপরে মাথায় কুরকুর করতে থাকলো বাসায় ইন্টারনেট নেয়ার জন্য। তখনকার দিনে ডায়াল-আপই ভরসা। দুই ভাই মিলে অনেক চিন্তাভাবনা করে সাহস করে একটা মডেম কিনেই ফেললাম। বাসায় আম্মারে বুঝাইলাম দেখ ইন্টারনেট নিলে বিদেশে মামার সাথে বেশি বেশি যোগাযোগ করা যাবে, আরো অনেক সুবিধা-ইত্যাদি হাবিজাবি। এরপরে অনেক গবেষণার পর সস্তা দেখে একটা প্রিপেইড কার্ড কিনলাম। এরপরে ব্যাপক সতর্কতার সাথে যাবতীয় নির্দেশাবলী মেনে ডায়াল করে দেখি কানেক্ট হয় না। লে হালুয়া। কোনভাবেই কিছু হয় না। ভাবলাম আমাদের মদন পেয়ে নষ্ট মডেম ধরায় দিল নাকি? যাক, ওইভাবে ফালায় রাখলাম কিছুদিন। এরপরে আবার কি মনে করে একদিন গুতাগুতি করতে করতে দেখি কানেক্ট হয়ে গেল! আসলে একটা অপশন সিলেক্ট করতে ভুল করছিলাম। সে কী উত্তেজনা! বাসা থেকে ইন্টারনেট! হা হা … এখন মনে পড়লে হাসিই পায়। একসময় সেই টিমটিমা স্পীডের ইন্টারনেট ছিল বিলাসিতা, আর এখন বলতে গেলে জীবন আটকে আছে ইন্টারনেটে। কিছুদিন আগে দেশ ছাড়ার আগ পর্যন্ত অবশ্য একটা জিনিসের কোন পরিবর্তন দেখি নাই- সেই টিমটিমা স্পীড!
বাংলাদেশ ছেড়ে পৃথিবীর উল্টাপাশে আসার পর দেখেশুনে একটা ভাল ইন্টারনেট প্যাকেজ পছন্দ করলাম, ৬ মাসের প্রোমোশনাল অফার রেট-এ। ফোন দিয়া বললাম তোমাদের এই প্যাকেজের লাইন নিতে চাই, কি করতে হবে বল। বলল ইন্টারনেটের লাইন নিতে হইলে তোমার কেবল কানেকশনও(ডিশ আরকি) নিতে হবে। অ্যাঁ! আমি নতুন আসছি, আমার তো টিভিই নাই, আমি কেবল কানেকশন দিয়া কি করব? বলে- না, কেবল কানেকশন ছাড়া তোমারে লাইন দেয়া যাবে না। এরমানে হচ্ছে মাসে মাসে আজাইরা কেবলের জন্য টাকা গচ্ছা। বুঝায় বলার চেষ্টা করলাম দেখ এই ঘটনা, আমার কেবল লাগবে না-কিসের কী, কয় এইটা কম্পানী পলিসি, আমাদের কিছু করার নাই। ইচ্ছা করতেছিল ফোনের ভিতর দিয়া বেটির গলা চাইপা ধরি। শেষমেশ কইলাম ঠিকাসে, বাঁশ যখন দিবাই কি আর করুম। অর্ডার করতে গেলাম, বলে ইন্সটলেশন ফী কিন্তু ‘এত’ টাকা। শুইনা আমার হাত থেকে ফোন পড়ে যাওয়ার অবস্থা, কয় কি!! ইন্সটলেশন ফীই তো ৬ মাসের বিলের সমান! আমি বলি কেমনে কি, এইটা তো জানতাম না। বেটি জানাইল অফারে নাকি এইটা লেখা ছিল। আমি খুঁজে দেখি প্রায় অদৃশ্য রকমের ছোট ফন্টে লেখা ইন্সটলেশন ফী এত। শালার সবখানেই সেই “শর্ত প্রযোজ্য”- খামাখা খালি আমাদের দেশের দোষ। মেজাজ এমন খারাপ হইল, বললাম ঠিকাসে আমি চিন্তা করে দেখি, পরে জানাব। এরপরে ইন্টারনেটে ওদের চ্যাট এজেন্টের সাথে কথা বললাম (এইখানে এই জিনিসটা ভাল, চাইলে ইন্টারনেটে বসে ওদের এজেন্টের সাথে চ্যাট করে করে আলোচনা করা যায়)। ওই ব্যাটায়ও একি কথা কইল যে কেবল লাইন নিতেই হবে। কি আর করা। বাঁশ খাইতেই হবে। জিজ্ঞেস করলাম ইন্সটলেশন চার্জ কত? যেইটা বলল সেইটা দেখি ওই বেটি যা বলছে তার অর্ধেক! কাহিনী বুঝলাম না, কিন্তু দেরি না করে দিলাম অর্ডার। জানাইল ১ সপ্তাহ পরে অমুক দিন বিকাল ৩টা থেকে ৫টার মধ্যে তোমার বাসায় গিয়ে কানেকশন দিয়া আসবে। বাসায় আসার আধা ঘন্টা আগে ফোন করে শিওর হবে বাসায় আছি কিনা। ভেরি গুড। হাই স্পীড ইন্টারনেট পাওয়ার খুশিতে দিন গুনতে থাকলাম। ওদিকে ওপরওয়ালা মুচকি হাসলেন, রোসো বাছা, এত তাড়া কিসের?
সেটা ছিল ছুটির দিন। আমি দুপুরের দিকে একটু বাইরে গেছিলাম কাজে, কাছেই। ফোন দিলেই চলে আসব এই হচ্ছে প্ল্যান। সাড়ে তিনটার দিকে এক ব্যাটা ফোন দিয়া বলল সে ইন্টারনেটের লোক। আমি বললাম ঠিকাসে, তুমি তো আধা ঘন্টার মাঝেই আসবা, আমি এখনি বাসায় যাচ্ছি-১৫ মিনিটের মধ্যে বাসায় থাকব। ওই ব্যাটা কয় আমি তো তোমার বাসার সামনে! মানে! তোমার অফিস থেকে না কইল তুমি আসার আধা ঘন্টা আগে ফোন দিবা? ওই ব্যাটা আকাশ থেকে পড়ছে, বলে না তো। আমি বাসায় লাইন দিতে আইসা ফোন দেই। যাই হোক না প্যাচাইয়া বললাম তুমি দাঁড়াও আমি ১৫ মিনিটের মাঝে আসতেছি। কইল ঠিকাসে। তাড়াতাড়ি বাসায় এসে ঢুকতে গিয়ে দেখি দরজার হাতলে সুন্দর করে এক কাগজ লটকায় রাখছে – “সরি, উই মিসড ইউ”!!!
খাঁটি বাংলায় কইষা কয়েকটা গালি দিয়া আগে মাথা ঠান্ডা করলাম। এরপরে ওদের অফিসে ফোন দিয়া জানাইতেই বলে হ্যাঁ তোমারে তো বাসায় পায় নাই। মেজাজটা এমন গরম হইল। যাই হোক, বললাম দেখ আমি এখন বাসায়- আজকে সারাদিন আছি, পাঠায় দেও লাইন দিতে। ফোনের ঐপার থেকে কী-বোর্ডের খটাখট আওয়াজ পাইলাম, বুঝলাম স্কেজুল দেখতেছে। তারপরে কইল, আমাদের পরবর্তী ফাঁকা স্লট হচ্ছে ৭ দিন পরে। আগামী অমুক দিন আমাদের লোক যাইতে পারবে! কয় কী! চিল্লাচিল্লি লাগায় দিলাম, বললাম দেখ আমার ২ দিনের মাঝে ইন্টারনেট লাগবে যেমনেই হোক। সে ভাঙ্গা রেকর্ডের মত একি কথা বলে যাচ্ছে। আমিও সমানতালে চেঁচাইতে থাকলাম। শেষমেশ বলে তুমি কি ভোরবেলা বাসায় থাক? আরে উজবুক, আমি কি তোমাদের মতন নাকি যে ভোরবেলা গার্লফ্রেন্ডের বাসায় থাকি? বলল ঠিকাসে তাইলে ৩ দিন পরে অমুক দিনে সকাল ৭টা থেকে ৯টার মধ্যে আবার তোমার লাইন দিতে যাবে। লম্বা শ্বাস নিয়া বললাম, ওকি ডোকি- সাতসকালের ঘুমটা মাটি করবা আরকি। নিজের ঠেকা বলে কথা।
বহুত কষ্টে তিন চার রকমের অ্যালার্ম দিয়া চোখ ডলতে ডলতে ৭টার দিকে উঠলাম। এরপরে বসে থাকতে থাকতে আবার ঘুমায় পড়তেছি, শালার লাইনম্যানের আর দেখা নাই। কি মনে করে পৌণে নয়টার দিকে বাসার বাইরে আসতেই দেখি দরজায় যত্ন করে ঝুলায় রাখসে - "সরি, উই মিসড উই"!!! রাগের চোটে মাথা কাজ করতেছিল না, কি করব বুঝতে পারতেছিলাম না। প্রথমে নোটিশটা কুচি কুচি কইরা ছিঁড়লাম। মেজাজ ঠান্ডা হওয়ার বদলে দেখি আরো চড়ে গেল। গালি যা জানি দিতে দিতে দিলাম ফোন, আজকে আমার একদিন কি ওদের একদিন কি ইন্টারনেটের একদিন। যথারীতি তারা সুমিষ্ট কণ্ঠে জানাইল দেখ তুমি তো আজকেও বাসায় ছিলা না। ওরে বেবুনের দল, বাসায় ভূতের মত জেগে বসে আছি, বলে কিনা বাসায় ছিলাম না। গলায় মধু ঢেলে বলে, আমাদের এজেন্ট তো তোমারে ফোন দিসিল, তুমি ফোন ধর নাই কেন? এইবার সত্যিই মেজাজটা চড়ল। ঝাঁঝাল গলায় বললাম, চাপা মার কেন? আমারে কেউ ফোন দেয় নাই। বলে, না-তোমারে ফোন দেয়া হইসে। আমি কাটাকাটা স্বরে কইলাম, দেখ এইটা আমার ফোন-তোমার থেকে আমি ভাল জানি আমারে ফোন দিছে কি দেয় নাই। ইউ ক্যান চেক ইট। ইট'স ইয়োর ফল্ট। এখন কি করবা কর। বেটি খানিকক্ষণ চুপ করে থাকার পর বলে, তুমি আরেকটা দিন রিস্কেজুল কর। দাঁত কিড়মিড় করে মনে মনে গালি দিতে দিতে হঠাৎ কি মনে হইল- জিজ্ঞেস করলাম আচ্ছা আমার ফোন নাম্বারটা বল দেখি। বেটি সিস্টেম ঘাইটা যে ফোন নাম্বার দিল- সেইটা আমার ফোন নাম্বারের ধারেকাছেও না!
এই তাইলে কাহিনী! এইবার ধরলাম-সিস্টেমে ফোন নাম্বার বদলায় গেল কেমনে? আগেরদিন তো ঠিকই ফোন দিল, এরপরে কি ভূতে নাম্বার পালটায় দিল নাকি? বলে কি জানি হয়ত সমস্যা হইছে। শেষমেশ নতুন করে নাম্বার দিলাম, বললাম এখন শীগগিরি আমার লাইন দিয়া যাও- এইটা কিন্তু তোমাদের দোষ ছিল। বেটি অনেকক্ষণ ঘাটাঘাটি কইরা ৩ দিন পরে একদিন দিল, এর আগে নাকি তাদের 'স্লট' নাই। হুঁহ! কি আর করা!
লেখা বেশি লম্বা হয়ে যাচ্ছে, শেষ করি। কাহিনী অবশ্য শেষ; অবশেষে সেই মাহেন্দ্রক্ষণে ব্যাটে-বলে হওয়ার পর ইন্টারনেটের লাইন পেয়ে 'বাধিত হইলাম' যাকে বলে। একটা শিক্ষা হল, বিদেশেও সবকিছু যে একেবারে মাখনের মত মসৃন গতিতে হয় তা না, মাঝে মাঝে খানিকটা কাঠ-খড়ও পুড়াতে হয়। আর এই লেখার মোরাল হচ্ছে, মাঝে মাঝেই আপনাদেরকে এইরকম আবজাব লেখা পড়তে হতে পারে, নিজ গুণে ক্ষমা করে দিবেন।
(এখন সবখানে ইন্টারনেটকে অন্তর্জাল বলা হয়, আমি অবশ্য ইন্টারনেটই লিখলাম। আপনারা চাইলে পালটে দিব)
এই ছিরি-ছাদহীন লেখা পড়ে শেষ করতে পারছেন? অনেক ধন্যবাদ।
এটা কিন্তু কোথাও লেখা আমার প্রথম ব্লগ।
বিশ্বাস করা কঠিন। সত্যিই খুব গুছিয়ে লিখেছেন, সাবলীল লেখা। নিয়মিত পড়তে চাই এমন লেখা।
ধন্যবাদ। লিখতে চেষ্টা করব, কিন্তু আমি দুনিয়ার আইলসা, লিখতে কষ্ট লাগে
ধন্যবাদ। কিন্তু সবাই বুড়া আঙ্গুল দেখিয়ে চলে যাচ্ছে কেন?
প্রথম লেখায় ছক্কা হাকাইলেন
স্বাগতম
এইখানে বুড়া আঙ্গুল ছাড়া আর কোন আঙ্গুলের ইমো নাই
যাউক অবশেষে আপনার ব্যাটে বলে হৈলো... দ্যাশে থাকে পাট্টি দিকে কৈতাম... তয় মাফ নাই ... দ্যাশে আইলে আওয়াজ দিয়েন
লেখা উমদা হৈছে কৈলাম...
দেশে আসিলে দেখা হইবে নিশ্চয়ই।
আপাতত পাট্টির বদলে পিকনিক করেন
<<এটা কিন্তু কোথাও লেখা আমার প্রথম ব্লগ।>>
সেই উপলক্ষ্যে পার্টি দেন একটা। আফটার অল প্রথম ব্লগ বলে কথা।
পার্টি কি দিব, আপনারা তো নিজেরাই পিকনিক করে বেড়াচ্ছেন
।
তা-ও বললেন যখন, তখন কেক খান
আর এই লেখার মোরাল হচ্ছে, মাঝে মাঝেই আপনাদেরকে এইরকম আবজাব লেখা পড়তে হতে পারে, নিজ গুণে ক্ষমা করে দিবেন।
এইরকম আবজাব লেখা আরো পড়তে চাই...
পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
পিলাচ
থ্যাংকু। পিলাচ পকেটস্থ করলাম
।
হাঃহাঃহাঃ কাহিনী কিন্তু বেশ মজারু হইছে।
এরকম আরো চাই।
প্রথম লেখা হিসেবে
প্রথম লেখা হিসেবে শুভেচ্ছা সহযোগে স্বাগতম
(আগেরবার পুরাটা আসে নাই)
অনেক ধন্যবাদ। গ্লাসে করে কি লালপানি দিলেন, খেয়ে তো মাথা ঘুরতেছে!
প্রথম পোস্ট পড়ে টাশকি খায়া গেলাম। এত মজাদার হইছে যে এক টানে পড়লাম। আপনে ফাটায় ফেলবেন মনে হইতেছে। আমার প্রথম পোস্ট ছিল তিন লাইনের। তা লিখতেই জান পেরায় বারায় গেছিল। সেই পোস্ট মাইনষে তো দূরের কথা কাউয়ায় ও ঘুরতে যায় নাই।
হা হা হা ...
ধন্যবাদ পড়ার জন্য। আপনার বাঙ্গালির গরব আরো পড়তে চাই।
লিখা ভালা পাইছি......
থ্যাংকু। কমেন্টও ভালা পাইছি
মানুষের বিনয় কত!!! এটা নাকি আবজাব লেখা!!!
ভাইডি, এইরাম আবজাব লিখাই দিয়েন। লেখা ব্যাপক ভালা পাইলাম।
থ্যাংকু থ্যাংকু! উৎসাহ পাচ্ছি, আরো হাবিজাবি লিখে ভরায় ফেলার জন্য।
বাহ.সুন্দর লেখা। একদমই নড়বড়ে না।
ধন্যবাদ। বাঁশ ঠেকা দিয়া কোনমতে লেখাটারে সোজা রাখছি
বেচারারে নড়বড়ে পাইয়া কতো কষ্ট দিলো। লান্নত ঐগুলোকে
হা হা হা ... বেচারারা জানলও না যে কত বড় অভিশাপের মুখে পড়তে যাচ্ছে
থ্যাংকু, পড়া আর কমেন্টানোর জন্য।
তাই নিজে নিজের পাসওয়ার্ড ঠিক করার সাহস হলো না, বন্ধুকে বললাম তুই আমার জন্য ভাল দেখে একটা পাসওয়ার্ড ঠিক করে দে!
বেকুব ছিলাম তখন
এখন কি সকুব হইছেন
এখন মনে হয় ইয়াকুব হইছি
এইটা কী সকুব আর বেকুবের মাঝামাঝি?
হতে পারে
সারা দুনিয়ার গিয়াঞ্জাম দেখি খাইতে একইরকম
সেইটাই! কোথাও শান্তি নাইরে পাগল
অসম্ভব সুন্দর লেখা! সেইসব নড়বড়ে দিনের গল্প আরও শুনতে ইচ্ছুক।
মন্তব্য করুন