এক.
অনেকদিন হয়ে গেল কিছু লিখি না। ঋণখেলাপীর মত খালি পড়েই যাই, মাঝেমধ্যে ২-১টা কমেন্ট করেই ফুটি, লিখা আর হয় না। কোনদিন দেখব মডুরা ঋণখেলাপীর মামলায় ঝুলায় দিছে। ব্যস্ত থাকি, তাই বলে সময় যে একেবারেই পাই না, তা না। মাঝে মধ্যে লিখতে ইচ্ছা হলেও কি নিয়ে লিখব সেইটাও ঠিক করতে পারি না। লিখে অভ্যাস নাই তো। নিজেরে নিয়া লিখারও তেমন কিছু নাই, ঘুরেফিরে সেই একই সরলরেখার মত দিনকাল। আজকে মোটামুটি নিজেরেই নিজে ঠেসে বসাইছি, লেখ শালা কিছু। দেখি আবজাব কি পয়দা করতে পারি...

দুই.
শীত যায় যায় অবস্থা। টানা কয়েকমাসের পরে তাপমাত্রা এখন বেশ ভাল। বাইরে বের হলেই হাত-পা-মাথা ঢাকাঢুকি নিয়া চিন্তা করতে হয় না। দিনগুলা ফাটাফাটি রকমের সুন্দর। ঝলমলে রোদ, হালকা বাতাস। দেশে থাকতে এই সময়টা আমার খুব পছন্দের ছিল, শীতের শেষে ফাল্গুনের শুরুর না শীত না গরম দিনগুলা। বিকালগুলা লম্বা হতে শুরু করত, সারাদিনের কামকাজ শেষে কিছুটা সময় নিয়ে বিকেলটা উপভোগ করা যেত। আরো মজা হত স্কুলে পড়ার সময়। বছরের প্রথমদিকে মাসদুয়েক হাফ-ক্লাস থাকত, ছুটি হইলেই সোজা মাঠে গিয়া ক্রিকেট। আমি অবশ্য মোটামুটি সব খেলাতেই "বিশেষজ্ঞ" ছিলাম, কিন্তু তাতে কি -উৎসাহের কোন কমতি ছিল না। ইদানিং সময় পাইলে বিকালবেলাগুলা এদিক-ওদিক হাঁটাহাটি করে কাটানোর চেষ্টা করি, উদ্দেশ্যহীনভাবে হাঁটাহাটি করতে মজাই লাগে। ভার্সিটি এলাকা, চারদিকে নানান দেশের নানান বর্ণের মানুষ - বুঝি যে শুধু আমি না, এই সময়টায় সবাইই চঞ্চল হয়ে ওঠে, দলবেঁধে দেখি সবাই আড্ডা দেয়। কালকে বিকালবেলায় হঠাৎ করে ঝালমুড়ি খাইতে খুব ইচ্ছা করতেছিল ... আফসোস ...

তিন.
বাংলাদেশের খেলা দেখতেছি। তামিম মাত্র আউট হয়ে গেল। আমি বুঝি না, কোন একটা কারণে বাংলাদেশ কখনোই ইংল্যান্ডের সাথে সুবিধা করে উঠতে পারে না। সময়ে সময়ে অন্যান্য দলের সাথে ভাল খেললেও এদের সাথে কি হয় কে জানে। ওয়ানডে ম্যাচগুলাতে আশা করছিলাম একটায় জিতলেও জিততে পারে, ২য় টায় কাছাকাছি গিয়াও হইল না। অবশ্য এই টেস্টে এমনিতেও তেমন একটা উচ্চাশা ছিল না, টেস্ট শুরুর এক দিন আগে দল থেকে যদি  "আমি খেলুম না, গোস্যা করছি" বইলা পোটলা বাইন্ধা বাড়িতে রওনা দেওয়ার মত খেলোয়াড় থাকে তাইলে দলের মোটিভেশন নিয়া হতাশ হওয়া ছাড়া আর কি করতে পারি। বোর্ডের সমস্যা থাকতে পারে (থাকাটাই স্বাভাবিক); তারপরও রকিবুলের এই জাতীয় মনোভাব গ্রহণযোগ্য না। এখন নাকি আবার দলে ফিরতে চায়। এইটা তো মহল্লার ক্রিকেট না যে সকালে কইলাম কাট্টি, জীবনেও খেলুম না তোগো লগে - বিকালেই আবার ভাব। কয়দিন আগে মাশরাফিও রাগ দেখায়া দল থেকে আপাতত বিদায় নিছে। বহু বছর ধরে ক্রিকেট দেখি, ৯৭ আইসিসি সেমিতে জিতার পর রাস্তায় রঙ খাইয়া নাচতে নাচতে স্কুলে গেছি, এই এতদিন পরে আমরা ভাল কিছু আশা করতেই পারি। দলে এইসব আউল-ফাউল ইগো প্রব্লেম থাকলে দ্রুত ঝেটাইয়া বিদায় করা হোক। এহ হে, লিখতে লিখতে শাহাদাতও গেল ...

চার.
লন্ডনে গত ১১মার্চ হয়ে গেল বিবিসি গ্লোবাল রেইথ এওয়ার্ড (BBC Global Reith Award) অনুষ্ঠান। এইখানে বিবিসির সারা বিশ্বে ছড়ানো-ছিটানো কর্মীদের মধ্য থেকে বিভিন্ন ক্যাটেগরিতে সেরা পারফর্মারদের নাম ঘোষনা করা হয়। মনোনয়ন আগেই দেয়া ছিল। এইবার একটা বিশেষ কারণে এইটার প্রতি আমার আগ্রহ ছিল, বছরের সেরা নতুন ট্যালেন্টে একজন বাংলাদেশি তরুণ মনোনয়ন পেয়েছিল। শিহান জুবেরি। প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল আরেক পারস্য তরুণ, তাহির কাদেরী। উপস্থাপক এইটাকে বলছিল "outstanding work by a newcomer to the global news" । শিহান BBC Buzz অনুষ্ঠানের উপস্থাপক হিসেবেই বেশি নাম করেছে। এছাড়াও ছোটখাট স্টোরি রিপোর্টিং , এডিটিং, ফিল্ম মেকিং এর সাথে জড়িত আছে। বাংলাদেশে বসেই কাজ করছে শিহান।

শিহান জিতে নিয়েছে এই পুরস্কার। একজন বাংলাদেশী হিসেবে আমি গর্বিত। প্রাণচাঞ্চল্যে ভরপুর এর তরুণের জন্য অনেক অনেক অনেক অভিনন্দন। নিচে দুইটা ছবি আর পুরা অনুষ্ঠানের ভিডিওর লিঙ্ক দিলাম, শিহানের অংশটুকু দেখতে চাইলে ১:০৮:৪৭ সময়ে চলে যান। ছবি দুইটাই ফ্লিকার থেকে মারা, আর কোথাও ছবি পাইলাম না।

ছবি ১:

ছবি ২:

ভিডিও লিঙ্ক:
http://www.bbc.co.uk/atw/reith_awards_2010/watch.shtml

শেয়ার করুনঃ

 |   |   |