প্রলাপ
(উপযুক্ত শিরোনাম খুঁজে না পেয়ে 'প্রলাপ' হিসেবে চালিয়ে দিলাম। পরবর্তীতে আবারো শিরোনামহীনতা কিংবা শিরোনামহীনমন্যতায় ভুগলে প্রলাপ-১, ২, ৩ এইভাবে গ্যাটিস মেরে চালিয়ে দেওয়ার ইচ্ছা রাখি )
এক.
আরামের দিন শেষ হয়ে আসছে। মন-মেজাজ কিঞ্চিত খারাপ থাকে তাই ইদানিং। জানুয়ারি মাসটা পুরা আক্ষরিক অর্থেই শুয়ে বসে কাটিয়ে দিলাম। বাইরে পড়তে এসেও এরকম ছুটি পাওয়াটা মোটামুটি অপরাধের পর্যায়ে পড়ে(!), অন্যান্য জায়গায় বন্ধুরা যখন জানুয়ারি মাস থেকেই নতুন সেমিস্টারের ঘানি টানতেছে, আর আমি সেখানে গা-হাত-পা ছড়িয়ে "ওই পিচ্চি, চা দে তো আরেকটা!" মুডে কাটিয়ে দিচ্ছি। সমস্যা একটাই, চা দেয়ার কেউ নাই- পিচ্চিকে হাঁক দেয়ার পর নিজেকেই পিচ্চির ভূমিকায় নেমে চা বানিয়ে আনতে হয়। আমার এখানে জানুয়ারি মাসে ছোট একটা সেমিস্টার চলে- ভাগ্যক্রমে আমার নিজের ক্লাস কিংবা কামলাগিরি কোনটাই নাই। আর মাত্র এক সপ্তাহ; এর পরেই আবার সেই হাবিয়া দোযখ। ছুটির শেষে এসে খুঁজে বের করার চেষ্টা করতেছি কি কি করলাম; দেখি যে এর থেকে কি কি করার কথা ছিল কিন্তু করি নাই তার লিস্টি করা সহজ। টু-ডু লিস্টের শুরুতেই ছিল রান্নাবান্নার মহান পরিকল্পনা- ভাবছিলাম যেহেতু ক্লাস-টাস নাই, ছুটিতে ধুমায়ে রান্না করতে করতে টমি মিয়া টাইপ কিছু হয়ে যাব। ঘটনা ঘটছে পুরাপুরি উল্টা; আসার পর টুকটাক যা শিখছিলাম, মনে হয় তাও গেছে। রান্না বান্নায় কামেল ভাই-বোনেরা সহজ দেইখা কিছু রেসিপি ছাড়েন, আমরা দেশের দুস্থ সন্তানেরা একটু ভালমন্দ খেয়ে পরে বাঁচি ...
দুই.
বইমেলা শুরু হয়ে গেল। মেজাজটা এজন্য আরো বেশি খারাপ। সেই ক্লাস ওয়ান-টু থেকে ফেব্রুয়ারি মাস মানেই বইমেলা, বইমেলা মানেই আমার আর ভাইয়ার সারাবছরের জমানো টাকা এক ঝটকায় খরচ করে ফেলা। গত ১৭-১৮ বছরে এর ব্যতিক্রম ঘটে নাই, এইবার ঘটতে যাচ্ছে। প্রতি বছর কয়েকবার করে যাওয়া হত। নিজে একবার, বন্ধুদের সাথে একবার, বই দেখতে একবার, বই কিনতে একবার- এরকম উছিলা আরকি। অবশ্য গত কয়েক বছর ধরে বই পড়া অনেক কমে গেছে, এই টাউট ইন্টারনেট সব সময় খেয়ে নিচ্ছে। গাট্টি গাট্টি বই কেনা হয় ঠিকই, কিন্তু সব আর পড়া হয়ে ওঠে না। অথচ আগে দুই হাত ভরে বই কিনলেও গোগ্রাসে গিলতে গিলতে দেখা যেত ফেব্রুয়ারি শেষ হওয়ার আগেই সব পড়া শেষ! তারপরও - যত যাই হোক, বইমেলা হচ্ছে বইমেলা, বইমেলায় গেলেই শান্তি শান্তি লাগে। এবার যাওয়া হবে না(আর কবে যাওয়া হয় সেইটাই তো অনিশ্চিত!) এইজন্য মনমেজাজ ভাল নাই। যে বইমেলায় আমি যেতে পারব না; সেইটা বন্ধ করে দেয়া হোক। এক দফা এক দাবী!
তিন.
আমরা বন্ধুতে আমি নতুন। শুধু এইখানে না, অন্য কোথাওই আমি লিখি নাই। তবে বাংলা ব্লগগুলার পাঠক হিসাবে আছি অনেক আগে থেকে, কিন্তু অনিয়মিতভাবে আরকি। আমরা বন্ধুতে কয়দিন ঘুরাঘুরি করে যা বুঝলাম, এইখানে সবাই দেখি সবাইকে চিনে, সম্ভবত সামুব্লগ থেকে কিংবা আমরা বন্ধুর ইয়াহু গ্রুপ থেকে। বিভিন্ন পোস্টের কমেন্টে যেইভাবে আলোচনা হয়; তাতে বুঝাই যাচ্ছে একে অপরের নাড়িনক্ষত্র পর্যন্ত জানে, সবারই একটা আলাদা 'ক্যারেক্টার' আছে যেটা বেশিরভাগ ব্লগারই ওয়াকিবহাল! ওইসবখানে মাথা চুলকে চলে যাওয়া ছাড়া আর কিছু করার থাকে না- কারণ কি নিয়ে কথাবার্তা হচ্ছে সেইটাই তো ধরতে পারি না ... হা হা হা। ব্যাপার না, আস্তে আস্তে নিশ্চয়ই সবই বুঝিতে পারিব ...
চার.
বেচারা উন্নয়নকর্মী এমনিতেই সবার অভিযোগের ঠেলায় মনে হয় কাহিল; তারপরেও একটা অনুরোধ করি। আগে একটা কমেন্টেও বলেছিলাম। দুই পাশের প্যানেলের মাঝে এই যে লেখার জায়গাটা, যেইখানে লিখি আর কমেন্ট করি আরকি, সেইটা আরেকটু চওড়া করে দেখলে কেমন হয়? আমার কাছে এখন কেমন জানি চিপা চিপা লাগে। এটা অবশ্যই সবার সিদ্ধান্ত, আপনারা কি বলেন?
এক... আমি আপ্নারে পানি গরমের রেসিপি দিতারি
দুই... আপ্নার দাবির লগে সহমতের উপ্রে একমত
তিন... হ... তয় ইন্তারনেত এরম এক্টা জিনিষ যে কয়েক দিনেই আপ্নারে আপন কৈরা ফেলাপে
... আরে আম্রা হৈছি না?
চার... কলাম বাড়াইলে আম্রা যাহারা ক্ষুদ্র লেখা দিয়া পেজ ভরাইয়া ফেলি তাগোর পোস্ট তো ছুডু হৈয়া যাইপে
যাউকগা.. উন্নয়ন কর্মীর দোয়া চাই
পানি গরমে কি কি মসলা লাগবে সেইটা বলেন
কলাম বাড়াইলে আম্রা যাহারা ক্ষুদ্র লেখা দিয়া পেজ ভরাইয়া ফেলি তাগোর পোস্ট তো ছুডু হৈয়া যাইপে
ভাল তো, সবাই বড় বড় লেখা দিবে
ধন্যবাদ, পড়ার জইন্য।
পানি গরম করার জন্য চুলার ওপর বসানোর আগে পাতিলে তলা ভালো করে মুছে নেবেন; পাতিলের তলায় এইছটুও থাকে (সোজন্যে নুশেরাপু)
উনি ক্ষিপ্ত , কিন্তু তাহা খুবই যুতসুই উপায়ে......খ্যাপার মাঝে অনেককিচর প্রতি গভীর ভালবাসা প্রকাশিত।
মামুন ভাই, কার কথা বললেন? আমি মনে হয় আপনার কমেন্টটা ঠিক বুঝি নাই ... (মাথা চুলকানোর ইমো দরকার একটা)
থ্যাংকু ...
উনি ক্ষিপ্ত , কিন্তু তাহা খুবই যুতসুই উপায়ে......খ্যাপার মাঝে অনেক কিছুর প্রতি গভীর ভালবাসা প্রকাশিত। ো
প্রলাপ খুবই পছন্দ হয়েছে। এই নামে সিরিজ চলতেই হবে।
১. টম ওরফে আড্ডাবাজ ভালো রাঁধেন। আপনাকে অন্য ব্লগ থেকে ব্যাচেলরোপযোগী রেসিপির লিংক দিয়েও উনি হেল্প করতে পারেন। বিমা ওরফে বিষাক্ত মানুষ ডিম ভাজা এক্সপার্ট। ড়াশু ওরফে রাশেদ খিচুড়ি পারেন। তাদের দেখামাত্র ছাই দিয়ে ধরবেন।
২. ইয়ে মানে এইবারের বইমেলাটা মাফ করে দেন, সামনের বার থেকে একদফা একদাবী... (কারণ আছে, যথাসময়ে বুঝবেন)
৩.টুটুল, রায়হান, মাসুম, পিয়াল, ভাস্কর, মুকুল, নজরুল- এরকম যাদের নিয়মিত এখানে দেখেন এনারা বাংলা ব্লগের প্রস্তর যুগের ব্লগার... অথচ দেখেন শিল্পবিপ্লব থেকে শুরু করে তথ্যপ্রযুক্তি সব যুগের ব্লগারদের উনারা কী চমৎকারভাবে গ্রহণ করেছেন। আর আপনি তো এসেই ছক্কা পেটানো ব্লগার। মাঝেমধ্যে মন্তব্যগুলো পড়লেই সব জলবৎ তরলৎ।
৪. কথা ঠিক... এলসিডি মনিটরের চওড়া স্ক্রিনে আরও বেশী সরু লাগে...
অ.ট. আপনি কোন্ দেশে আছেন?
এইটা কিন্তু সিরিজ না! লেখার চাইতে লেখার নাম দেয়া দেখি বেশি কষ্টকর, তাই আবজাব যাই লিখি সব এক নামে ফেলার একটা দুই নাম্বারী বুদ্ধি কেবল
১. গুড, জানা থাকল, এরপরে দেখা পাইলেই হয়, ছাই হাতে ক্যাঁক...
... হ্যাঁ মন্তব্য পড়ি তো, আশা করি কয়দিনেই পুরাপুরি একই গোয়ালের গরু হয়ে যেতে পারব 
২. হা হা... বুঝতে পারছি মনে হয়
৩. মাত্র আইলাম, সিঙ্গেল নিতে গিয়া রান আউট হই হই অবস্থা ... আর আপনেরা কন ছক্কা
অ.ট.উ. আম্রিকায় আছি।
নুশেরাপু ব্লগরেসিপির ক্ষেত্রে এত জনের নাম নিলেন আর আমার এসো রান্না শিখির কথা বললেন না
আরে সেইখানে আমি তোমার উপদেষ্টা ছিলাম না? নিজেরটা নিজমুখে ক্যাম্নে বলি, আশা ছিলো আসবাবপত্র নয় বিলাই কেউ আইসা বলবে।
এই জামানায় নিজের ঢোল নিজেরেই পিটাইতে হয়; অন্যরে পিটাইতে দিলে ঢোল ফাটি যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে
আপনেরা ঢোল-করতাল যাই পিটান, তাড়াতাড়ি 'এসো রান্না শিখি' এইখানেও শুরু করেন, না খেয়ে মরার অবস্থা রে ভাই
। আমি মনযোগী 'ছোট্ট বন্ধু' হব, প্রমিস। আর মাঝে মাঝে আপনাদের 'খালামণি খালামণি' করে ডাক পাড়ব
। আর মিঠু-মন্টিরেও যোগাড় কইরেন
।
অনুষ্ঠান হিট হইলে তখন কানু'স কিচেন নামে ইউটিউবে ছাড়া হবে
। (নুশেরা আপু দেখছেন আমি কমেন্ট পড়ি
)
http://www.somewhereinblog.net/blog/mahaque/28880403
http://www.somewhereinblog.net/blog/mahaque/28905105
http://www.somewhereinblog.net/blog/shamseerblog/28998380
http://www.somewhereinblog.net/blog/shopnojoyiblog/28965555
http://www.somewhereinblog.net/blog/shopnojoyiblog/28925623
http://www.sachalayatan.com/ekakini/14450
http://www.sachalayatan.com/ekakini/14587
এগুলো হলো কমেন্ট পড়ার পুরস্কার। ভালো কথা, এসব পোস্টও কমেন্ট সহই পড়তে হবে।
থ্যাংকু থ্যাংকু ... এইগুলা ট্রাই করতেই বছর পার হয়ে যাবে নিশ্চিত ...
নুশেরা, সচলের বিবাগিনী কি এবিতে আছেন?
মনে হয় না। ওনার সাথে আমার পরিচয় নাই, গুগল সার্চ দিয়ে পোস্টগুলো পেয়েছিলাম।
প্রলাপ তো ভালই লাগলো। শুরুতে ভাবলাম পাগলের প্রলাপ কিনা। যাই হোক একমাস আরাম আয়েশ করার মতো ভাগ্য এই কালে কয়জনের ভাগ্যে জুটে। আপনিতো দেখি ভীষণ ভাগ্যবান। সাব্গতম জানাইয়া গেলাম।
হ্যাঁ, ভাগ্য আসলেই ভাল আমার। অবশ্য কয়দিনের মাঝেই সুদে-আসলে উসুল হয়ে যাবে
স্বাগতম সানন্দে গৃহীত হইল, ধন্যবাদ।
আপনাকে দিয়ে হবে। ধুমায়া লিখতে থাকেন। হাত পা খুইল্যা লিখতে থাকেন। আমরা ভালো পাঠক।
থ্যাংকু পড়ার জন্য। হাত-পা গুলা সব আইলসা হয়ে গেছে, কথা শুনতে চায় না
...
এইরম প্রলাপ লিখতে থাকেন দেখবেন একসময় সবাই আপনেরেও চিনা নিবো বাকীগো মতোন...
সেইটাই ... ইন্টারনেটের দুনিয়াটা বড়ই ছোট ...
আপনি ছবি তোলেন? ছবিপোস্ট দেন কিছু ...
প্রলাপ ভালো লাগল। আমি নিচ থেকে পড়া শুরু করেছি। যত উপরে গেছি তত অমিল পেয়েছি!
ধন্যবাদ পড়ার জন্য
। নিচ থেকে পড়ে কি অমিল পেলেন সেইটা বলেন এখন ...
ভালো লাগলো প্রলাপ। চলুক নিয়মিত।
আমরা সবাই একসময় নতুন ছিলাম। এখন সবাই সবার দোস্ত বন্ধু। আপনারেও স্বাগতম।
আপনের জানুয়ারি মাসের মতো ফেব্রুয়ারিটা যদি আমি বেকার কাটাইতে পারতাম, তাইলে বড়ই আনন্দ হইতো। বইমেলায় কাটায়ে দিতে পারতাম।
ধন্যবাদ। হ্যাঁ, আছি তো আপনাদের সবার সাথে- ওই যে উপ্রে একবার বললাম-কয়দিনেই দেখবেন একি গোয়ালের গরু হয়ে যাব। নামই হচ্ছে 'আমরা বন্ধু', বন্ধু হইতে আর কতক্ষণ। মজা পাচ্ছি খুব এইখানে ভার্চুয়ালি আড্ডাবাজি করে।
ফেব্রুয়ারি আনন্দে কাটান, বইমেলায় ইচ্ছামত ঘুরাঘুরির শুভেচ্ছা রইল।
নড়বড়ে, আমিও কিন্তু এখানে অনেককেই চিনি না। আস্তে আস্তে বন্ধু হচ্ছি। এ ব্যাপারটাও কিন্তু থ্রীলিং। শংকরের কতো অজানারে মনে করেন।
সেইটাই। ইন্টারনেটের দুনিয়াটা খুবই অদ্ভুত, চিনি না জানি না- কিন্তু একসময় কী-বোর্ডের ওইপাড়ে থাকা মানুষ আর পাশের বসে থাকা বন্ধুর মাঝে কোন তফাত থাকে না। আমিও বন্ধু হয়ে যাচ্ছি ধীরে ধীরে, অনেক ধন্যবাদ পড়ার জন্য।
ব্লগার সোহেল কাজির একটা সিরিজ আছে প্রলাপ নামেই।
তাই নাকি! চোখে পড়ে নাই। তাহলে তো নতুন নাম খুঁজতে হবে।
ধন্যবাদ।
মন্তব্য করুন