"LIKE" একটি অন্তর্জাল ভিত্তিক সামাজিক ব্যাধি !!!
নয়া একখান অসুখের প্রাদুর্ভাব দেখা যাইতাছে ইদানিং।
মানুষ যেমন আজকাল আর তার নিজের সামাজিকতার শারীরিক সংযুক্তি অন্তর্জালের মাঝে বদলি করেছে। তেমনি অন্তর্জালের মাঝে দেখা দিয়েছে কিছু রোগের প্রাদুর্ভাব। তার মধ্যে একটি হলো “LIKE” ম্যানিয়া। এই রোগ এখন মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়েছে অন্তর্জালের প্রতিটি কোনায় কোনায়। অন্তর্জালের ফেইস বুক নামক সামাজিক পরিবেশটিতে এর আক্রমন হয়েছে সবচেয়ে বেশী।
এই রোগের আক্রান্ত ব্যক্তির আচরন সাধারনত দুই ধরনের হয়। এক ধরনের আছেন যারা তাদের স্ট্যাটাস বা পেইজ গুলুতে প্রচুর পরিমানে “LIKE” পেতে চান তা যেভাবেই হোক। এই শ্রেণীর রোগিদের রোগের লক্ষন হল এরা কোন না কোন ফেবু পেইজ-এর এডমিন। ওনারা তাদের “LIKE” এর ক্ষুধা মেটানোর জন্য বিভিন্ন ধরনের পন্থা অবলম্বন করে থাকেন। যেমন- স্ট্যাটাস দিলে নিচে লিখে দেন ‘ভাল লাগলে “LIKE” চাপেন’ কিংবা জোক পেজের হলে বলেন আপনি হাসি থামাতে না পারলে “LIKE” টিপেন। এদের মধ্যে রাজনৈতিক কিছু পেজ আছে যারা সরকারের সব নেতিবাচক কাজের ফিরিস্তি তুলে ধরেন, সেটি ঠিক কি বেঠিক দেখার কোন চিন্তা ওনাদের থাকেনা কিন্তু বেশী বেশী “LIKE” এর আশায় খবর-টিকে পারসোনা থেকে মেকআপ করাতে ভুলেন না একটুকুও। সবচেয়ে মারাত্মক হলো বিভিন্ন ধর্ম ভিত্তিক পেজের রোগিরা। তারা অনুরোধের বালাই করেন না, তারা রীতিমত হুমকি দিয়ে নিজেদের লাইকান। যেমনঃ- একটা কার্ড তৈরি করে ওটাতে লিখেন “গড-কে ভালোবাসেন তো LIKE চাপেন” বা গডের বানী লিখে হুমকি দেন “LIKE” করেন নাহলে আপনি শয়তানের পুত্র, নরকের দ্বার আপনার জন্য খোলা সাথে চিরকাল ভার্জিন থাকার নিশ্চয়তা”।
আমাদের দুর্বল চিত্তের ফেবু ইউজাররা ধর্মকে ভালোবেসেই নাকি ভার্জিনিটি হারানোর লোভেই জানিনা, একনাগারে “LIKE” –ইয়ে যান। ভুবন বিখ্যাত ছাগুরাই মোটামুটি এই শ্রেণীর বেশীর ভাগ অংশটা দখল করে রাখেন।
দ্বিতীয় ধরনের আছেন যারা “LIKE” কোথায় দিতে হয় তাইই জানেন না। ওনারা যেখানেই পারেন সেখানেই “LIKE” –ইয়ে যান। হয়তো কেউ লিখলো “ক্ষুধার জ্বালায় মারা যাচ্ছি” কিংবা “আমার দাদাজান আজ সকালে ইহজগৎ ত্যাগ করেছেন” সঙ্গে সঙ্গে দেখা মিলবে এই শ্রেণীর রোগীদের। ছোট্ট করে একটা “LIKE” –ইয়ে পাশে দাড়িয়ে মুচকি হাসবেন। ভাবটা এমন যে “আমিতো এমনি এমনিই LIKE দেই”। নিজের সবচেয়ে কাছের বন্ধুর কাছ থেকে এই রোগের লক্ষন আশা করা মোটেও অমুলক নয়।
আরেক ধরনের “LIKE” রোগ আছে যার লক্ষন শুধু পুরুষ নামক শ্রেণীর মাঝেই দেখা যায়। এই রোগে যে পুরুষ আক্রান্ত হন তাকে দেখা যায় বিপরীত লিঙ্গের কোন ফেবু বন্ধুর যেকোন আপডেট সেটা ছবি, স্ট্যাটাস, সম্পর্ক উন্নয়ন...... যাইই হোক না কেন “LIKE” –ইয়ে যাবেন নিশ্চিত। এই রোগিরা শুধু দেয়ালের “LIKE” চাবিতে “LIKE” –ইয়েই ক্ষান্ত হোন না ইভেন্ট সম্পর্কে খুঁটিনাটি জানার প্রবল আগ্রহ দেখান এবং সব কিছুতেই তারা “LIKE” প্রকাশ করেন। যেমনঃ কোন নারী লিখলো “মুখ ধুয়ে বিছানায় ঘুমুতে আসলাম। ও মা কি যে ভালো লাগছে!” তখন এই শ্রেণীর রোগীদের দেখা যায় মুখ, পানি, বিছানা, ঘুম, ভালো প্রচন্ড আগ্রহ দেখাতে যা প্রকাশ করান কমেন্ট অপশনে “LIKE” –নোর মাধ্যমে।
প্রথম শ্রেণীর রোগীদের মাঝে সম্প্রতি এই রোগের সাইড ইফেক্ট হিসাবে শেয়ার করার আবেদন জানানোর লক্ষন দেখা দিয়েছে মারাত্মক হারে। বিশেষজ্ঞদের মতে হয়তো এই সাইড ইফেক্ট অদূর ভবিষ্যতে আলাদা রোগ হিসাবে দেখা দিলে অবাক হওয়ার কোন কারন থাকবে না।
পুনশ্চঃ আমার এই লিখাটি ভালো লাগলে “LIKE” –ইতে ভুলবেন না যেন।
লাইকাইলাম
এই লেখাটা কাইল পড়ুম। লাইক দিয়া গেলাম।
আপনারেও ধরছে এই ভাইরাস??
লাইক দিলাম
লেখা ভাল লেগেছে
লাইক দিলাম
মন্তব্য করুন