আমার প্রথম "প্রেম"
খুব একটা ভালো ছাত্র ছিলাম না কখনোই। টেনে টুনে পাস করাটাই ছিলো মুখ্য। দশম শ্রেণীর ফাইনাল পরীক্ষায় স্যার ডেকে বলেছিলেন “ দয়া হলো তাই পাশ করেছিস। নাহয় যাহান্নামে বসে অংক করতি। এই হলো আমার পড়ালেখা নিয়ে স্যারের দেওয়া সার্টিফিকেট। যা হোক আজ আর কোন পড়ালেখা নয় প্রেম বিষয়ে কথা বলব। বিশুদ্ধ প্রেম। আমার প্রথম প্রেম।
এই প্রেমের মহাপরিকল্পনা হয়েছিলো সুদূর রোমের মন্ত্রী সভায়। আর এর কারিগর ছিলেন ভেনাস পুত্র কিউপিড। সময় টা ছিলো ১৯৯৪-এ এক শীতের ভোর। সুর্যিমামা উঁকি না দিলেও আমার বায়োলজিক্যাল এলার্ম (আমার দাদু মশাই) আমাকে সজাগ করে দেয় রোজকার রূটিন মাফিক। স্কুলের পাঠ চুকিয়ে জীবনের প্রথম হার্ডেল (এস এস সি) পেরোনোর জন্য কোমর বেঁধে প্রস্তুতি চলছে তখন। চারপাশ থেকে ক্যালকুলাস, সিরাজ-উদ-দৌলা, হৈমন্তী, নিউটনরা আক্রমন করে চলেছে অবিরামভাবে। কিন্তু ভোরের এই সময়টা ছিলো আমার প্রিয়। নিশ্চুপ ভোরে ভারী থেকে হাল্কা হয়ে আসা কুয়াশা আর সবচেয়ে মনোহর জিনিসটা ছিলো আমাদের উঠুনে শিশির ভেজা সাদা লালচে কমলা রঙের শিউলি ফুলের চাদর। এরাই ছিলো আমার তখনকার সারাদিনের ব্রেইন ওয়ার্কের জ্বালানী।
সব কিছুই স্বাভাবিক ভাবেই চলছিল। হঠাৎ একদিন বাদসাধলো এক বেবি ট্যাক্সি। ভোরের মৌনতা ভেদ করে আমাদের গেইটে এসে দম ফেলে সে। হুম, এভাবেই আমার জীবনের প্রথম মনোরানীর আবির্ভাব। সম্পর্কেআমার আত্মার কাছের। কিন্তু তখনই সে আমার আত্মার ধারে কাছে আন গিয়ে সরাসরি মনোরাজ্যের সিংহাসনে গিয়ে হাজির। সেই থেকেই শুরু ওনার কড়া নাড়া আমার মন মন্দিরে। সেবার তার অবস্থান ছিলো ক্ষণিকের মাত্র। বান্দরবান লক্ষ্য নিয়ে যাত্রা করা ঢাকা নিবাসী রানীর ট্রানজিট ছিল আমাদের বাসা। ফিরতি পথে তাদের বাহক ট্রেনের সব জোগাড়যন্ত করার দায়িত্বছিল সদ্য মনহারানো এই অধমের উপড়। তাদের যাত্রা পথে বাসা থেকে ষ্টেশন অব্দি শীতের সাথে কুনসুটি আমার মনোরাজ্যের পুরোটাই দখল করিয়ে দেয়। সেবার তাদের ট্রেন চলতে শুরু হতেই হৃদয় নিংড়ানো শব্দটার মহার্থ সর্বাঙ্গে টের পেলাম। সেই শুরু। কিশোর বয়সে বিপরীত লিঙ্গের প্রতি মহাকর্শন-কে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে প্রায় ৬ মাস কোন নারী প্রতি তাকাইনি। তারবিহীন দুরালাপনি বিহীন সেই যুগে প্রতি সপ্তাহে ২টা চিঠি লেখা হতো প্রায়। কিন্তু দুঃখের বিষয় ছিল আমার প্রতি নিয়ত বড় হতে থাকে চিঠির বিপরীতে তার গুলো আনুপাতিক হারে ছোট হয়ে আসত। অবশেষে প্রায় দেড় বছর এমন বড় ছোট খেলার পরে নিজের করে পেয়েছিলাম তাকে। তখন দিন গুলো ছিল ঠিক স্বপ্নের মত। প্রায় ৩০০ কি মি দূরত্ব আমাদের মধ্যে কোন দূরত্ব তৈরি করতে পারেনি......
তবে সে সব কিছু আজ ইতিহাস। আমার প্রথম প্রেমের ইতিহাস।
হায় প্রেম হায়রে ভালবাসা। তা মাঝি ভাই নয়া যেইটা চালায়তেছেন সেইটার ইতিহাস একটু শুনাইতেন তাইলে ভাল লাগতো।
মাঝি হাল ছাড়া নৌকায়
নয়া ঘাটের দেখা না পাই...।
ভুগোল ইতিহাস কি করে হলো সে কথাতো বললেন না (
মাঝে যে ঘসেটি বেগমের আবির্ভাব হয়েছি্ল ____ তাই
তো সেটা আপনি পাঠককে জানাবেন না? আরো কচি প্রাণ ধোকা খেয়ে যাওয়ার আগে তাদেরকে শেখানো আপনার দায়িত্ব না?
ইতিহাস-এ মাল মসলা কম।
মসলা কিন্তু নিজের মইধ্যে-ই রাখলেন...
পরবর্তি পর্বে মসলা রাখা হবে
আপনি দারুণ লেখেন তো! কিছু টাইপো বাদ দিলে লেখাটা ভালো লেগেছে।
আপনার মন দেখি একবার মন্দির হয়েছে, বাকিসময়গুলোতে রাজ্য! সেজন্যই এটা ইতিহাস হয়েছে! রাজ্য হারায়, মন্দির হারায় না! বা বলা যায় - রাজ্য হারিয়ে গেলেও মন্দির থেকে যায়! অল্প বয়সে না হয় বোঝেননি, এখন নিশ্চয়ই...
ধন্যবাদ।
নয়া মাঝি একটু এদিক ওদিক তো যাবেই।
কিশোর বয়সের মন ঠিক কাদা মাটির মতোই ছিল। তখনতো নানা রুপ নিতোই।
জগতের সকল প্রেম বেঁচে থাকুক তাদের মত করে
আমীন
হাহা
ভাল লেগেছে । নতুন করে ইতিহাস লেখা হোক , আরেকটু খোলাসা করে
আশা করি লেখা হবে।
দুর, ভাবছিলাম কেজি ক্লাসের প্রেমের কাহিনী কৈবেন ! কৈলেন ১০ ক্লাসে পড়ার সময়কার কাহিনী... ততদিনেতো আমরা ৪/৫ টা শেষ করছিলাম
যাকগে, লেখা ভালো পাইছি
হা হা হা ক্লাস ১০ এর শেষ পর্যন্ত প্রেম-কে না বলে পন করেছিলাম (পাইনা তাই খাইনা টাইপ আর কি) ... তারপরেরটা তো জানালাম
আপনার লেখার হাত খুব সুন্দর। দ্বিতীয়, তৃতীয়... প্রেমের গল্পও লেখেন
প্রেম একবারই এসেছিল নিরবে ....
আরো বিস্তারিত লেখা উচিত ছিল,
পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায়..
ভাই ব্যাক্তিগত কিছু রাখবেন না বুঝি!!
সবুরে মেওয়া ফলে
মন্তব্য করুন