ব্লগর ব্লগর।
সকাল প্রায় সাড়ে ছটা বেজে গেল। এখনও মোটামোটি বিনা কারনেই কম্পিউটার স্ক্রীন সামনে নিয়ে জেগে বসে আছি। আজকে শনিবার। সকাল সকাল উঠার তাড়া নেই। তাই বেশী দেরী হয়ে গেল ঘুমাতে ঘুমাতে। এমনিতেও গত কসপ্তাহ ধরে সকাল ৫টার আগে ঘুমাতে পারছি না। এমন না যে আমি খুব তাড়াতাড়ি ঘুমাই। বরং রাত বারোটা আমার সন্ধা রাত একেবারে পিচ্চিকাল থেকে। কিন্তু ইদানিং জেগে থাকার সময়টা বাড়তে বাড়তে তিনটা থেকে পাচটায় চলে গেছে। গত বছরের শেষে বাড়তি কিছু টাকার লোভে প্রায় ছমাস সপ্তাহে দুরাত করে একটা রিটেইল ষ্টোরে কামলা দিতে গিয়ে এই অবস্থা। এখন সেটি আর করছি না, তবুও সকাল পাচটা বাজানোর অভ্যাসটা যাচ্ছে না আর। ভাবছি টোপাজ (যে স্টোরে কামলা দিয়েছিলাম) এর বিরুদ্ধে দুইতিন মিলিয়ন ডলার এর ক্ষতিপুরন মামলা করে দেব আমার ঘুমের বারোটা বাজানোর জন্যে।
অদ্ভুত একটা রোগ হয়েছে আমার । নামটা খটোমটো Temporomandibular joint disorder বড় করে হা করতে পারি না, শক্ত কিছু চিবুতে পারি না। এটার নাকি কোন ওষুধও নেই। কয়েক সপ্তাহে সেরে যাবে এমনিতেই। এখন সেটা ঠিক কসপ্তাহ এ সাড়বে সেটার গ্যারান্টি কেউ দিচ্ছেনা। চোয়াল এর জয়েন্টে একটা কব্জা নড়েচড়ে গেছে। এই জন্যে চোয়াল বেশী নড়াচড়া করলে ব্যাথা হয়। তাই এমন ভাবে থাকতে হয় যাতে ব্যাথাটা না হয়, ব্যাথা যত হবে, ঠিক হয়ে যাবার দিন তত দীর্ঘ হবে। মাঝে মধ্যে মনে হয় ডানকানের মধ্যে কেউ কাগজ ভরে দিয়েছে। কানটা পুরো ভরাট মনে হয়, সেটিও সেই জয়েন্টের ভেজালেরই ফল। কিভাবে এই আজিব রোগটা বাধালাম সেটি খুজতে গিয়ে বেরুল, আবার সেই ঘুমের কীর্তি। বিছানায় শুয়ে শুয়ে ল্যাপটপের দিকে চেয়ে থাকতে থাকতে একেবারে সকালের দিকে টায়ার্ড হয়ে কখনও কখনও অপ্রস্তুত হয়ে ঘুমিয়ে পড়ি, এমনটা বেশ কয়েকদিনই ঘটেছে। সকালে উঠে দেখি এমন হয়েছে যে আধো হেলান দেয়া অবস্থায় ঘুমিয়েছি। এই বেমক্কা ষ্টাইলে ঘুমোনোতেই চোয়ালে চাপ পড়ে কলকব্জা নড়েচড়ে গেছে। টোপাজের বিরুদ্ধে মামলাটায় ক্ষতিপুরনের অংকটা আরো বাড়াতে হবে বলাই বাহুল্য।
গল্পগুজব লিখব ভাবছি। ইদানিং মনে হচ্ছে বাচ্চাকালে আমি ভালই লিখতাম, অন্তত বয়সের তুলনায়। যত বুড়া হচ্ছি তত অকমর্ন হচ্ছি। গত কয়েকবছরে আস্তে আস্তে একটা আস্ত গাধাতে পরিনত হয়েছি। ষোলসতের বছর বয়েসে টাংকি মেরে দিন কাটানোর সময় কিন্তু তখন কতকিছু করেছি, যা আপাতদৃষ্টিতে সেই বয়সীদের জন্যে কঠিন আতলামী, গল্পটল্প লিখেছি যা এখনও পড়ে ভালই মনে হয়। আর এখন গত ছসাত বছরে দুইপাতা অখাদ্যও লিখা হল না। দিনগুলো আজাইরাই কেটে যাচ্ছে। ভাল গল্প টল্প না লিখতে পারি, অন্তত ফাউ কিছু গালগপ্প তো লিখার চেষ্টা তো করা যেতে পারে! মাথায় প্লট গিজ গিজ করছে, বিক্রি করলে বসুন্ধরার মত হাউজিং কোম্পানি দাড় করিয়ে দেয়া যাবে। কিন্তু লিখতে গেলেই সব ফকফকা। এতটাই অনভ্যাস আর অকমর্নতা।
ওকে। আজকে থামি। ছটা আটত্রিশ বেজে গেছে। কখন ঘুমাবো আর কখনই বা ঘুম থেকে উঠব কে জানে। দুপুরে আবার কাজিনের বাসায় দাওয়াত আছে। বাংলাদেশে থেকে কাজিনের শ্বশুর আসছেন বেড়াতে, আজকেই নামবেন ডাবলিন। সবাই মিলে খানাদানা হবে ।
অযথাই কতগুলো লাইন লিখে ওয়েবের জায়গা নষ্ট করলাম। অবশ্য সমস্যা নাই, টাকা তো লাগে না লিখতে ব্লগে, এটা একটা বিরাট সুবিধা। সম্পাদকও নাই, যে কেটে দেবে, মজাই আসলে।
ফাউ কটা লাইন লিখে যা ভাল হল তা হচ্ছে অনেক অনেক দিন পরে একটানা কটা লাইন লিখতে পারলাম। আস্তে আস্তে হয়ত একটা অভ্যস তৈরি হবে। তখন সুন্দর সুন্দর করে লিখতে শিখতে পারব। হাটি হাটি পা পা করেই না মানুষ শিখে।
দ্রুত সুস্থ্য হয়ে উঠুন, এই কামনা করি.....
কয়েক সপ্তাহ তো লাগবেই। তবে এটা তেমন কোন বলার মত রোগ না। থাকলেও তেমন কিছু বোঝা যায় না।
ভালো হয়ে উঠুন!
ভালো থাকুন।
লেখা ভালো লেগেছে।
ধন্যবাদ ।
ব্লগর ব্লগর ভাল লাগলো
দ্রুত সুস্থতা কামনা করছি।
অনেক ধন্যবাদ
সামুর আমলেই জেনে গেছি তুমি কত ভাল লিখো!
তাই চেষ্টা করলেই পারবা আবার।
চেষ্টাটা করাটাই সবচাইতে বড় সমস্যা হয়ে গেছে।
তোমার সমস্যাটা আমার ছোট বোনের হইছিলো। কিছুদিন পরেই ঠিক হয়ে গেছিলো সেটা। টেনশন নেয়ার কিছু নাই।
ধুমায়া লেখতে থাকো.... আমার মত পাব্লিক পাঁচ বছর ধরে শুধু মাত্র লিরিক লিখে যাচ্ছি!!! আর তোমারটা তো ইউনিক লিখা
আমারটা তেমন সমস্যা করছে না, খালি বড় করে হ্যা করলে বা বেমক্কা কিছু জোরে চিবুলে ব্যাথা। ব্যাপারটা আমার কাছে ভালই ঠেকছে। গালভরা একটা রোগ আছে বলতে পারছি, আবার সেটি কোন ঝামেলা করছে না। ভালই তো ব্যাপারটা ।
বর্ষার গানের বুকের কি হল?
মজার ছলে লিখলেও কথাগুলো অনেকের জন্যই সত্যি।
ভাল থাকবেন
আমার বেলায় সত্যিটা বেশ ভোগাচ্ছে।
শুভকামনা।
অসংখ্য ধন্যবাদ। শুভকামনাটা আমার ভীষন দরকার এখন।
মন্তব্য করুন