অনৈসলামিক স্ট্যাটাস - ৩
বাংলায় কি পড়ানো হয় মাদ্রাসাগুলোতে? শুধু অ আ ক খ? বাংলা সাহিত্য পড়ানো হয়, যেমন স্কুল-কলেজের পাঠ্যপুস্তকে বাংলা সাহিত্য রয়েছে। ওটার কথা উঠলে তো নাউজুবিল্লাহ। রবীন্দ্রনাথ ওনাদের কছে বিধর্মী। এমনকি জাতীয় কবি নজরুলও যায়েজ নয়। আর সাহিত্যচর্চা মানেই বেশরিয়তি কাজ। সুতরাং যা বাংলা শিখতেছে, তা তাদের আরবী-উর্দুর প্রচারের কারণে।
যে শিক্ষায় নিজেকে চেনা যায় না, নিজের জাতির ইতিহাস-ঐতিহ্য-মুক্তিযুদ্ধকে জানা যায় না, সেটা কুশিক্ষা। মাদ্রাসাগুলোতে মানুষ তার নিজের জাতিকে চেনা তো দূরে থাক, নিজেকে চেনার সুযোগ নেই। কেননা ধর্মের নিম্নমানের এবং স্থান বিশেষে বিকৃত চর্চার মাধ্যমে এক ধরণের দাসত্বের বেড়াজালে নিজেদের এবং নিজেদের মানুষদের বন্দী করার রুচিহীন শিক্ষা চলে। এ বন্দীত্বটা মনোজগতের, চেতনার।
একমাত্র নিজস্ব সাহিত্যই মানুষকে তার নিজেকে এবং জাতিকে নিজেদের কাছে পরিচিত করতে পারে। তার বালাই মাদ্রাসাগুলোতে নেই। শুধু ধর্মের মুক্তবুদ্ধিহীন, বদ্ধ চর্চার কারণেই মাদ্রাসার মানুষগুলো ধীরে ধীরে নিজের প্রাণস্পন্দন হারিয়ে ফেলে এক ধরণের মৃত মানুষে পরিণত হয়। এই আপাতঃ মৃত মানুষগুলোকে আর স্বাভাবিক মানুষ মনে হয় না। সময়ে সময়ে তারা ভয়ংকর হয়ে উঠে।
মাদ্রাসার প্রতি আপনার সমালোচনা দেখে মনে হল ; আপনি একজন নাস্তিক /অমুসলিম। আপনি যদি নাস্তিক হন তাহলে শুনুন - পরকালে আপনাদের কোন হিসাব নেই। কারণ - ইন্দুর, বান্দরের কোন হিসাব দিতে হবে না।
আর যদি আপনি অমুসলিম হোন- আপনার ও কবর, হাশর নেয়। ভাল কাজ করলে, আবার মানুষ হয়ে ভাল ঘরে জন্ম নিবেন। আর পাপকাজ করলে জন্ম নিতে হবে কুকুর, বিড়াল হয়ে। (আমার আশংকা হয় যেভাবে পাপকাজ বেড়ে গেছে, আগামী দশ বছরের মধ্যে সব কুকুর বিড়াল না হয়ে যায়)
আপনার আশংকাটা সত্যি এহসান! কুকুর-বিড়াল জন্ম হওয়া অনেক ভাল, ইসলামী জঙ্গী হওয়ার চাইতে। ইসলামী জঙ্গীরা তো রগ কাটে, গলা কাটে, পেট্রোল দিয়া মানুষ পোড়ায়, বোমা মারে, চাঁন্দে সাঈদীরে দেখা গেছে বলে পুলিশরে পিডাইয়া মারে (নাউজুবিল্লাহ্), পৃথিবীর ইতিহাসে এক সাথে সবচেয়ে বেশি কুরআন পোড়ায়। এর চাইতে সব কুকুর-বিড়াল হইলে জগতটা একটু শান্তি পাইবো।
এখন প্রশ্ন হইলো, আপনি জান্নাত চান না, জাহান্নাম চান? জান্নাত চাইলে মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থাকে প্রকৃত ন্যায় এবং সত্যের পথে আলোকিত করতে হবে। অবশ্যই পরম করুণাময় আল্লাহ চান, মানুষের ইহকাল এবং পরকালের কল্যান সাধিত হোক। তাই সত্যিকারের শিক্ষা পাইয়া মাদ্রাসার মানুষেরা জঙ্গী মুসলিম আচরণ হইতে দূরে থাকিলে মানুষের ইহকাল এবং পরকালে কল্যান সাধিত হইবে। আর যদি জাহান্নাম চান, তবে মাদ্রাসা শিক্ষার মধ্যে যে ভেজাল ঢুকিয়াছে তাকেই ন্যায় এবং সত্যের পথে প্রকৃত শিক্ষা বলিয়া গ্রহণ করুন। জঙ্গী হইয়া উঠুন। আস্তাগফেরুল্লাহ!
ইসলামী জঙ্গী আবার কি? জঙ্গীর সাথে ইসলামের কোন সম্পর্ক নায়।
ইসলামের যে কোন বিষয় সমাধানের জন্য আমরা তো মাদ্রাসার ছাত্র -শিক্ষকের শরণাপন্ন হই ; এখন তাঁরাই যদি অসত্যের পথে থাকে আমরা যাবো কোথায়? আপনাকেউ তো চিনি না! মাদ্রাসা জাহান্নামে চলে যাচ্ছে (নাউজুবিল্লা) আর আপনি এতো বড় সত্যি টা লুকিয়ে রেখেছেন? এর জন্য আপনাকেই জাহান্নামে জেতে হবে। জলদি নাম ঠিকানা আর দিন তারিখ দিন, ওয়াজ মাহফিলের আয়োজন করি।
জঙ্গীর সাথে ইসলামের সম্পর্ক নাই, ভাল বলিয়াছেন। তবে বাংলা ভাই, শায়েখ আব্দুর রহমান, তালেবান, আল-কায়েদা - তারা কারা? তাদেরকে কেন জঙ্গী মুসলিম বলা হয়?
আমি তো কোন সত্য লুকিয়ে রাখি নাই। বরং আপনারাই লুকিয়ে জঙ্গী আদর্শ মাদ্রাসায় ঢুকিয়েছেন। তাই বোমা তৈরি করতে গিয়ে মাদ্রাসায় বোমা বিস্ফোরণ হইলে আপনাদের মাদ্রাসার ছাত্র মারা যায়। আহত হইয়া হাসপাতালে ভর্তি হয় এবং মাদ্রাসার শিক্ষক গ্রেফতারের ভয়ে গা ঢাকা দেন। বুঝিয়াছেন, নাকি আরো বলিব?
জ্বী জাহান্নাম তো আপনারাই এই পৃথিবী তৈরি করিয়া ফেলিয়াছেন, সেদিকে কি নজর আছে?
আলিয়া মাদ্রাসায় সাহিত্য পড়ায় না? ক্বাওমীতে পড়ায়না সেটা জানি। বাংলা সাহিত্য না পড়ানো খুবই বাজে ব্যাপার।
কিন্তু আপনার লেখায় "কেননা ধর্মের নিম্নমানের এবং স্থান বিশেষে বিকৃত চর্চার মাধ্যমে এক ধরণের দাসত্বের বেড়াজালে নিজেদের এবং নিজেদের মানুষদের বন্দী করার রুচিহীন শিক্ষা চলে।" লিখলেন, মানে কি ধর্মের উচ্চমানের শিক্ষা দিলে আপনার আপত্তি নেই নাকি ধর্মের শিক্ষা মানেই নিম্নমানের? কোনটা বুঝালেন?
ইংরেজী মাধ্যমেও তো বাংলা সাহিত্য চর্চা হয়না, সেটা নিয়ে আপনার কোন ধড়ফরানি নাই কেন?
আপনার নামটা চমৎকার! নরাধম!!!
"আলিয়া মাদ্রাসায় সাহিত্য পড়ায় না?"
- কি সাহিত্য পড়ায়, নরাধম?
ধর্মের কোন ধরণের শিক্ষা বুঝাইলাম? বুঝলেন না, নরাধম। নীচের লেখাটা পড়ুন:
“হেফাজতের মূল আস্তানা হাটহাজারী মাদ্রাসায় ভর্তির সময় সব ছাত্রকে উর্দুতে লেখা একটি হলফনামায় সই করতে হয়। মাদ্রাসাশিক্ষার্থীরা কতটা দাসত্বশৃঙ্খলে আবদ্ধ তা বুঝতে এ হলফনামাই যথেষ্ট। এতে ছাত্ররা শপথ নেয়,কোনো ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশ নিবে না,কোনো ছাত্র সংগঠনে যুক্ত হবে না,অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানের প্রকাশিত সংবাদপত্র,সাময়িকী ও বই পড়বে না,অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানে কোনো পরীক্ষা দেবে না, টেলিভিশন দেখবে না,খেলাধূলাসহ যে কোনো ধরনের পাঠ্যবহির্ভূত কাজে (এক্সট্রা কারিকুলার) অংশ নেবে না, মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের যেকোনো শাস্তি মাথা পেতে নেবে ইত্যাদি!” দেশের সব কওমি মাদ্রাসায় একই ব্যবস্থা চালু আছে বলে জানিয়েছেন হ্যাম্পটন ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক মুমতাজ আহমদ। (মাদ্রাসায় দাসত্বের অবসান হোক, মুজতবা হাকিম প্লেটো, মে ১১, ২০১৩)"
- কি বুঝলেন এখন?
"ইংরেজী মাধ্যমেও তো বাংলা সাহিত্য চর্চা হয়না, সেটা নিয়ে আপনার কোন ধড়ফরানি নাই কেন?"
- এত যখন জানেন, আল্লাহ্ যখন আপনারে বিদ্যা-বুদ্ধি দিছে, তবে দায়িত্বটা আপনে নেন না কেন? আপনার ব্লগে 'ইংরেজী মাধ্যমেও তো বাংলা সাহিত্য চর্চা হয়না' এ বিষয়ে একটা লেখা লিখবার মুরোদ নাই? এই নিইয়া আপনার ধড়ফরানী যখন আছে, তখন দায়িত্বটা অন্যেরে না চাপায় দিয়া নিজে লেখেন। না কি অন্যের ব্লগে আইসা তরপাইতে ভাল্লাগে? অন্যের চরকায় তেল না দিয়া, নিজের চরকায় ঢাললে ইহকাল-পরকালে কল্যাণ সাধিত হবে।
ভালো বলেছেন
মন্তব্য করুন