ক্ষমা করো বাবা
এয়ারপোর্টের ভিতর একটা কোনের চেয়ারে বসে অপেক্ষা করছি। আর একটু পর চলে যাব হাজার মাইল দূরে। প্রিয়জনেরা গেইট পর্যন্ত দিয়ে গেছে। বুক ফেটে গেছে ছেড়ে আসতে তবু চোখ ফাটে নি। আড়াই বছর পর দেশে ফিরে গেছি। জীবনসঙ্গী করেছি একজনকে। ২২ দিন একসাথে সংসার করেছি। এখন তাকে রেখেই চলে যাচ্ছি। আর পারলাম না। কোলের ব্যাগে মুখ লুকিয়ে কেঁদে ফেললাম। হয়ত অনেকে দেখছে। দেখলে দেখুক। এত কষ্ট প্রিয়জনদের ফেলে দূরে যেতে আগে বুঝি নি। ভাবতে ভাবতে আকাশের দিকে তাকালাম। যেখানে মনের কথা সব বাবাকে বলি।
হঠাৎ বুকের ভিতরে অন্যরকম একটা কষ্টে মোচড় দিল। আমার বাবা যখন আমাদের ছেড়ে চলে যান বাবারও কি এমন কষ্ট হয়েছিল? ঐটা কি আরও তীব্র ছিল না? ছোট বেলা থেকে বাবার উপর অনেক অভিমান আমার, কেন আর একটা দিন অপেক্ষা করল না? কেন আমাকে দেখে গেল না? আজ মনে হচ্ছে, সেই শেষ মুহূর্ত্বে বাবা নিশ্চয়ই ভেবেছে আমার কথা আমাদের কথা। মা ভাই সবার কথা। প্রিয় জীবনসঙ্গী যাকে আর কোনদিন দেখবে না। বড় মেয়ে যে খুব একরোখা আর জেদী। এখন কে তার জিদটাকে প্রশ্রয় দিবে?ছোট মেয়েটা , যে রাতে ঘুমায় না।অদ্ভুত অদ্ভুত বায়না করে, কে শোনবে তার বায়না? কে তাকে কোলে নিয়ে ঘুম পারাবে? আর যে এখনও পৃথিবীর আলোই দেখল না, সে কি ছেলে , নাকি মেয়ে? তার মুখটা একবার দেখা হল না। সবাইকে ফেলে, শেষ দেখাটাও না দেখে চলে যেতে কি কষ্টই না হয়েছে নিশ্চয়ই। আর আমি সেই বাবার উপর এতদিন পর্যন্ত অভিমান নিয়ে ছিলাম? আমাকে ক্ষমা করো বাবা। ক্ষমা করে। সত্যিই আমি জানতাম না প্রিয়জন থেকে দূরে গেলে কেমন লাগে। ক্ষমা করো।
কেমন আছেন।
মন খারাপ হলো লেখা পড়ে!
ভাল আছি। মন খারাপ করে দেওয়ার জন্য সরি।
মন্তব্য করুন