রক্ত দিবো, জীবন দিবো, তেল-গ্যাস দিবো না!!
গ্যাস বিক্রী করতে রাজী হয় নাই বইলাই আওয়ামি লীগ নাকি ২০০১ সালে ক্ষমতায় আসতে পারে নাই। ২০০৮ সালে আওয়ামি লীগের অবিসংবাদিত জয়ের পেছনে কোন বিষয়টা বড়ো ভূমিকা রাখছে শেখ হাসিনা নিজেই সেইটা অনুমানের জন্য ইঙ্গিত দিছেন কয় দিন আগে। কনকোফিলিপসের সাথে চূক্তি পশ্চিমা শাসকগো কাছে দেওয়া তার প্রতিদান। আর তাই ৩ জুলাইয়ের সফল অর্ধ দিবস হরতালে দমন-পীড়ন-নির্যাতন-প্রেফতার চলবো এইটাই স্বাভাবিক। রাজধানী থেইকা এর আগে চারদলীয় জোটের হরতালেও আগে এমন দেদারসে লাঠিচার্জ কিম্বা গ্রেফতারের ঘটনা ঘটে নাই।
তেল-গ্যাস বিকাইয়া দেওয়ার চক্রান্তে বিএনপি'ও যেহেতু আওয়ামি লীগের মতোই দালালিপনায় আছে তাই অনৈতিক গ্যাস চূক্তির বিরুদ্ধে ডাকা হরতালে তাগো কোনো মাথা ব্যথা নাই। ৩ জুলাইয়ের হরতাল ছিলো একেবারেই জনগণের হরতাল সেইটা হরতাল চলাকালে ঢাকার রাজপথে মানুষের অবস্থান দেখলেই অনুমেয় হয়। এই হরতাল এই দেশের মানুষের অস্তিত্ব টিকাইয়া রাখার হরতাল, এই হরতাল এই দেশের মানুষের জীবন-জীবিকার হরতাল।
হরতাল কর্মসূচীর শুরু থেইকাই তেল-গ্যাস রক্ষা জাতীয় কমিটির নেতা-কর্মীগো গ্রেফতার শুরু হইছে। পেটোয়া বাহিনীর লাঠিচার্জ চলছে তারুণ্যের বিক্ষোভে। যেইসব বামপন্থী নেতাকর্মীরা এই হরতালের সমর্থনে মিছিল-সমাবেশ করছে তাদেরও গ্রেফতার করা হইছে। সরকার ভাবতেছে বামপন্থী নেতাকর্মীগো দমন করতে পারলেই এই আন্দোলন শেষ হইয়া যাইবো। তারা আসলে ভুলের স্বর্গে বাস করতেছে। এই আন্দোলনের মূল শক্তি কখনোই বামপন্থী রাজনৈতিক দলগুলি না। সাধারণ মানুষের ক্ষুব্ধ প্রাণের প্রতিবাদ তারা কিভাবে ঠেকাইবো! ঘরে ঘরে গিয়া গ্রেফতার সন্ত্রাস চালাইতে হইবো তাদের।
আজকে ঢাকার রাজপথের দিকে সুস্থ্য মানসিকতায় তাকাইলেই আওয়ামি ফ্যাসিস্টরা বুঝতে পারতো এই আন্দোলন বিএনপি-চারদল-ইসলামী জোটগুলির মতোন সুবিধাভোগী কোনো অবস্থান না। পাশবিকতায় অন্ধ হইয়া যাওয়া হাসান সাঈদ সুমনের মতো তারাও জনতার চক্ষু উৎপাটনের চেষ্টা চালানের চেষ্টা কইরাও রাজপথ আন্দোলন শূন্য করতে পারে নাই। এই দেশ আওয়ামি-বিএনপি'র না, এই দেশ দালাল রাজনীতিবিদদের না, এই দেশের মালিকানা জনগণের। জনগণের ট্যাক্সের টাকায় এই দেশের প্রশাসন চলে। সাধারণ মানুষের রক্ত-ঘামে এই দেশের উন্নয়ণের চাকা ঘোরে।
আজকের হরতাল আওয়ামি-বিএনপি'র ক্ষমতালিপ্সু রাজনীতিবিদদের প্রতি হুশিয়ারী। পশ্চিমা শাসকগো কান্ধে ভর কইরা এক দুইটা নির্বাচন পার কইরা দেওয়া যায়। কিন্তু তাদের ভবিষ্যত শেষ পর্যন্ত এই দেশের সাধারণ মানুষরাই নির্ধারিত করবো। কনকোফিলিপস-টাল্লো-কেয়ার্ন-শেভরন এই দেশ চালানের কোনো অধিকার রাখে না। দেশের সম্পদ রক্ষার মিশনে জনতার ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন তাদের পশ্চিমেই ফিরাইয়া দিবো।
একাত্তরে পাকিস্তানি হানাদাররা নির্দয় গণহত্যায়ও এই দেশের মানুষের অধিকার আদায়ের আন্দোলন-মুক্তিযুদ্ধ-স্বাধীনতা যুদ্ধ ঠেকাইতে পারে নাই, জনবিরোধী স্বৈরশাসকের পেটোয়া বাহিনীও মানুষরে রাজপথ থেইকা সরাইতে পারবো না!
যেকোনো ফ্যাসিস্টের মতোই আওয়ামিরাও তকমা লাগাইতে শুরু করছে। তেল-গ্যাস রক্ষা জাতীয় কমিটির আন্দোলনরে বিদেশি প্রভূগো খুশি করার আর ইসলামী ধান্দাবাজদের সাথে একসূত্রে গাঁথা আন্দোলন কইয়া বেকুবের মতোন কিছু একটা বুঝ দেওয়ার চেষ্টা করছে আওয়ামি স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী টুকু।
http://banglanews24.com/detailsnews.php?nssl=bf7d6e0ed610603413adf5691602b99e&nttl=2011070302032947384&toppos=2
বিএনপি এই চরম আন্দোলনের সময়ে এই হরতালে সমর্থন জানাবার সাহসটুকুও করতে পারে নাই।
আওয়ামি আর বিএনপি'র মধ্যে যে কেবল বানানগত পার্থক্য বিদ্যমান, সেইটা দিন দিন প্রমাণিত হইতেছে...
ক্ষমতালোভী আওয়ামী-বিএনপির দেশ বিরোধী চরিত্র আরেকবার জাতির সামনে উন্মোচিত হলো। আমাদের স্বঘোষিত 'দেশপ্রমিক' প্রধানমন্ত্রী তার দেশপ্রেমের নমুনা ন্যাক্কার জনক পুলিশী নির্যাতনের মাধ্যমে ভালোই প্রদর্শন করলেন।এই বোনটির অপরাধ হলো সে তার দেশকে ভালোবাসে, সে সত্যিকারে এক জন দেশ প্রেমিক ।
পুলিশী নির্যাতনের আরো কিছু দৃশ্য।এদের অপরাধ এরা দেশের সম্পদ বিদেশীদের হাতে তুলে দেয়ার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছিল। এরা শেখ হাসিনার মতো কপট দেশপ্রেমিক নয়।
দিনমজুর নিকের অন্যতম ব্লগার অনুপম সৈকত শান্ত এবং ফিরোজ আহমেদ গ্রেপ্তার হয়েছেন। দিনমজুর আমাদের অনেকেরই প্রিয় ব্লগার। ব্যক্তিগত পরিচয় না থাকলেও তাদের দেশপ্রেম ও অনেক চিন্তাভাবনার সমর্থক আমি। ফিরোজ আহমেদের সঙ্গে ব্যক্তিগত পরিচয় আছে। প্রতিভাবান একজন মানুষ। মুক্তি চাই আজকের হরতালে গ্রেপ্তার হওয়া সবার।
গ্রেফতারকৃত সকল আন্দোলনকারীর অবিলম্বে মুক্তি চাই। আমাদের বন্ধু সংস্কৃতি মঞ্চের সদস্য নাসরীন সিরাজ অ্যানি'ও গ্রেফতার হয়েছে বলে জানলাম গীতি আরা নাসরীন মারফত। সকাল থেকে সে হরতাল আপডেট দিতেছিলো কিন্তু এক পর্যায়ে পুলিশ নামের সন্ত্রাসীরা তাকেও গ্রেফতার করে...
পৃথিবী শাসনের আমেরিকানদের এখন মূলনীতিই বুঝি গৃহযুদ্ধ সৃষ্টি.......তবে কি আমরাও ?
ব্লগার দিনমজুর মুক্তি পাইছে...
ছবি গুলো খুবই দুঃখজনক।
৩ জুলাইয়ের হরতাল ছিলো সত্যিকারের হরতাল। বিএনপি এই আন্দোলনে সমর্থনও জানায় নাই। অন্য সময় হরতাল সফল হয়েছে, মানুষ স্বতঃস্ফুর্ত ভাবে হরতাল পালন করেছে বলে বলে নেতারা মুখে ফেনা তুলে ফেলে।
মন্তব্য করুন