২০টা ফেইসবুক স্টেটাস...
১.
নেমে এলো তবে ঝড়
উড়ে গেলো শহরের আঁধার আচল
উন্মুক্ত মাতাল শহরে ধুলো ওড়ে
উড়ে যায় ঘামে জবজব যুবকের
পোষা কাঁদাখোচা...বিনে পয়সার পাখি।
২.
জলে ভেসে তবে এসেছি নগরে
সম্বিত ফেরার পর ছবি দেখে চিনে নেয়া যাবে
এই ভেবে মুখ গুজে রেখেছি আঁধারে
কখন ধাতস্থ হবো নাগরিক চালাকিতে
কখন শিখে নেবো শহুরে বাবুয়ানা
সব বলে পথ নির্দেশনা দেবে বিদেশী ইন্সট্রাক্টর।
ওরা নাকি আমাদের চেয়ে পথ ঘাট ভালো চিনে
আর তাই সম্বিত বিষয়ে যেসব ধারণা ছিলো
ভুলে গেছি... মাটিতে বিছানো অন্ধকারে চোখ রেখে
ভাবি, পীচ ঢালা পথ আর পাথরে বিশ্বাস রাখতে জানলে
আমিও নগর বাউলের সাজে, নিয়নের তীর দেখে
পৌছে যেতে পারতাম লক্ষ্যের কাছাকাছি...
৩.
রুপালী জ্যোছনা বিভ্রান্তি ছড়ায়, অযত্নের অসমান পথ
আমাদের পাতি রসায়নে যেনো মসৃণতা হয়ে ধরা দেয়
হোচট খেয়েছি যতোবার, ততোবার বিলা খাই পথে,
কখনো বা চাঁদের উপর...শহুরে হুংকারে শাপশাপান্ত করেছি
তাহাদের, নিজেদের চোখ অথবা মনন নিরাপদ হেফাজতে রেখে।
৪.
অপেক্ষার সময়টাতে অনেক গাছপালা মেলে দেই,
কল্পনার সীমানা পেরিয়ে ঢুকে যাই অনধিকারে,
তাই বলে ভেবে বসো না যে সেসব আমার
সত্যি সত্যি চাই। আমি তখন পাহাড় চূড়ায়
গড়েছি ছোট্ট লগ কেবিনটারে। তার ব্যালকনিতে
ঝুলিয়ে দেয়া দোলনায় দোল খেতে খেতে
সুগন্ধি চায়ের কাপে চুমুক আলতো করে।
তোমাকেও নিয়ে যাই কখনো সখনো...
তুমি তরমুজ কেটেছো হীরক ছুড়িতে।
হঠাৎ আঙুলে লাল রেখা ভেসে উঠলে বুঝি
কেটে গেছে...জীবনের তাল-স্বপ্নের বিভ্রান্ত বলিরেখা।
এসব আমার প্রত্যাশার তালিকায় ছিলো না কখনো,
সত্যি করে এসব চাহিদা থাকলে আমি হয়তো
পাহাড়ের কাছে মিনতি জানিয়ে একদিনের জন্য
তারে আমার করে নিতাম, একদিনের জন্য হলেও
টম কাকার সাদাঘরটাকে ধার চাইতাম...
একদিনের জন্য হলেও তোমার পাশে বসে থাকতাম
ব্যর্থ বিড়ালের মতো।
৫.
শৈশবে কুড়িয়ে পাওয়া কড়িটার গায়ে
অন্য কারো নাম লেখা ছিলো...
তবুও কেনো জানি একেবারে
একান্ত নিজের বলে আগলে রেখেছি তারে।
সেই হারানো কড়িটা যার ছিলো
সেও কি ভাবেনি কড়িটার কথা আমার মতোই!
৬.
ভোরের বাতাস কেমন আনমনা কাঁধ ছুঁয়ে যায়
চমকে উঠে পেছনে তাকিয়ে দেখি,
দূরত্ব বেড়েছে দ্বিগুনের বেশি...
খিল খিল করে হেসে ফেলে কেউ;
শব্দটাকে চেনা মনে হলেও সতর্ক জেনে গেছি
ভাবনার সীমানা ডিঙিয়ে কখনো আসেনা রেলগাড়ি।
৭.
ঝড়ো বালুকনা তবে ঝরে যাক;
বৃষ্টির বিলাসী পতনে বাজুক
পুরোন দিনের সব কথা তবে...
৮.
ফিরে আসতে বলবোনা চাকারে!
তবে থেমে যাবে সভ্যতা-এগিয়ে যাওয়া...
আমিই না হয় গিয়ে দাঁড়ালাম তার পাশে
না হয় দৌড়তে থাকি সভ্যতার গতিপথে, অনায়াসে।
৯.
পথের গা থেকে ঘামের গন্ধ ওঠে নতুন ধানের মতো;
এমন শুকানো ত্বক কখন কিভাবে স্বেদসিক্ত হলো
ভেবে এই বেলাটা কাটিয়ে দেই, রাত পেরিয়ে ভোরের
আলো এসে থমকে দাঁড়ালে না হয় জানালাটা খুলে দেয়া যাবে।
জানালার সাথে কপাটের কি সম্পর্ক লেখা আছে?
কাজলে কাজলে খুঁজে আমি কেবল জলের কথা
জেনেছি-মেনেছি...জানা বোঝা বলে আসলে কখনো
কিছু থাকে না জীবনে, সবটাই মেনে নেয়া নিয়মের
ব্যর্থ অথবা সফল ছায়াছবি। কেউ কেউ তারে নিয়তি বলেছে...
১০.
আঙুলে ছুঁয়েছি জল...প্রার্থনার প্রহরে তোমারে এনে দেবে তার স্রোতধারা। নদীর এপারে বসে আমি তারা গুনি-ঢেউ গুনি-জলপিপি গুনতে গুনতে মনে হয় ডুবে গেলে তুমি আবার ওপারে ফিরে যাবে...সাতার কি ভুলে গেছো?
১১.
পথ ভুলে পড়ে আছি গুলশানে
কোথাও যাবার কথা ছিলো সেই কবে থেকে
কোনো এক সনাতন গাছ কালীর ছায়ায়
ঝড়-বৃষ্টি-রোদ্দুরের স্মৃতি ভুলে কাটিয়ে দেবার
কথা ছিলো জলমহাল আর নোনা জল ভালোবেসে,
অথচ অবিবেচক পড়ে আছি পথ ভুলে গুলশানে
শহরের সকল ঝা চকচকে দেয়ালে দেয়ালে ঘেরা
গোলকধাঁধাঁর দিক খুঁজে পেতে ঘাম ঝরে; তবু পথ
মুখ বের করে করুনারে দেখা দেয় নাই...
১২.
আমি কি পোকার মতো ঢুকে যেতে চাই!
তারপর ঘরের গন্ধ পাল্টে দিয়ে নিজের খুশিতে
ভেবে নিতে পারি ঘরখানা আমার?
সে যদি নিজের ঘরে ছুঁয়ে থাকে অন্য কোনো দুঃখ
আমি বরং অপেক্ষা করি দূরে থেকে
কখনো সুযোগ মিলে গেলে দুঃখের কিছুটা ভাগ
চেয়ে নেয়া যাবে;
১৩.
না ঘুমানোর আয়োজনে বিছানা সাজাই;
তারপর রাতভর কিলবিল পোকার মতোন
আলোর রেখায় এবাড়ি-ওবাড়ি...
১৪.
সূর্য্যটাকে ডুবে যেতে দেখলেই কেমন অসহায় লাগে।
মনে হয় ঘরে ফিরে যেতে হবে।
ঘর মানে বেকার বিছানা,
ঘামে আর ঘুমে মিলেমিশে কাদা খোঁচা;
যেখানে অনেক ফুটপ্রিন্ট ফুটে থাকে...
পরিচয়হীন সব পায়েরা কখনো
চলে গেছে কাদা পার হয়ে দূর ইতিহাসে।
১৫.
দেয়ালে ঠেকেছে পিঠ,
তাহলে দেয়াল বনে যাই
পেছনে ছুটছিলো যারা, তারা
এসে ফিরে যাবে আমায় না পেয়ে।
কেউ কখনো দেয়াল খুঁজে বেড়িয়ে সময়
নষ্ট করতে চায় না; দেয়াল বাঁধায়
আটকে পড়া শিকারের খোঁজে কেউ আসে,
কেউ আসে দেয়ালের ওপারে কল্পিত পথ
যদি পাওয়া যায় টপকে গেলে, এই ভাবনায়...
১৬.
যেহেতু বৃষ্টির দেখা নাই
তাই মেঘ দেখে দেখে ভাবি
একদিন জলের উচ্ছ্বাসে মুখ রেখে
স্বপ্নপূরণ করে নেয়া যাবে, দেখো!
১৭.
সরীসৃপের মতোন ঠাণ্ডা তোমাকে জড়িয়ে
ঘুম দেয়া যেতো এই গরমের রাতে...
১৮.
সন্ধ্যা কাটানোর জন্য মানুষের খোঁজে নামার মতোন
বিরক্তিকর বয়সে পৌছে যেতে হয় ধীরে ধীরে
মানুষেরা খুব বেশি খুঁজবেনা ব্যস্ততাকে...
তার চেয়ে ভালো ব্যস্ত না থাকার অভিনয়,
নিজেকে সুলভ করে দেয়া...
১৯.
পাগলের ছাড়া আর কারো পায়ে বেড়ি পরানো দেখিনি।
আমাদের পায়ে বেড়ি নেই! বেড়ি নেই!
তবুও আমরা শহরের গণ্ডী ছাড়িয়ে কখনো
অন্য কোথাও যাবার অধিকার রাখি নাই যেনো।
পাগলটারে আটকে রাখা হয় চার দেয়ালের ঘরে
আমরা আটকে আছি শহরের সীমানায়
তার উপর রাতের বেলা সীমানার চিহ্ন খালি চোখে
দেখা যায় না...ইনফ্রারেড চশমায় ভিন রঙা শহরের প্রান্তরেখা।
২০.
I am jailed in rain...
afraid of losing datas.
if I had a raincoat
it would be a matter of time
to break the prison
and get out of this
terrible alienation,
the luxury of being alone...
১ ও ২ বেশ ভাল।
৩-এ 'বিলা' শব্দের ব্যাবহার ভাল লাগেনি।
৪ ও ভাল লেগেছে।
৫ অসাধারণ।
৬ এর শুরুটা বেশ, শেষ টা বুঝিনাই।
৭ ও ৮ মোটামুটি।
৯ এর শেষটা দারুন।
১০ বুঝিনাই।
১১'র চিন্তাটা ভাল লেগেছে।
১২ অতটা না, একটু অসমাপ্ত মনে হল।
১৩- ছোট্ট সুন্দর।
১৪ ও ১৫ বেশ ভাল।
১৬'র জন্য ভালবাসা।
১৭'য় দুইটা বিপরীত ধর্মের মিলটা চোখ কেড়েছে।
১৮ অনেক সুন্দর।
১৯-এ শহরের জায়গায় মনের সীমানায় হলে আরও ভাল হত মনে হয়।
২০-এর শুরু আর শেষ আরও ভাল কিছু পাবার আশা জাগিয়েছিল।
একসাথে ভাবলে, পুরো লেখাটাই চমৎকার। এমন আরও চাই। প্রিয়তে রেখে দিলাম।
এই লেখাটা পোস্টানোর জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। ভাল থাকুন।
কিছু কিছু আগেই ফেসবুকে পড়েছিলাম। শুধু কবিতা মানে স্টেটাস লিখহলেও পারেন কিনতু
ভালো লেগেছে অনেক
:)ভাল
মন্তব্য করুন