দবিরের বৈদেশ যাত্রা- এক
ইমিগ্রেশন অফিসারের সামনে গিয়া দবির তার সবুজ পাসপোর্টটা দিলো। পাসপোর্টটা খুলে অফিসার একবার দবিরের দিকে, একবার পাসপোর্টের দিকে চাইলো। দবির মনে মনে কৈলো- খাইছে !
মুখে কৈলো, কোনো অসুবিধা অফিসার ?
গম্ভীরভাবে অফিসার কৈলেন, দেখতেছি...
অনেকক্ষণ ধৈরা অফিসার পাসপোর্ট দেখলেন। তার দেখার ভাবে মনে হৈলো বেটা লেখাপড়া জানেনা। অথবা এমন কিছু তার চোখে পড়ছে যে, সে সিদ্ধান্ত নিতে পারতেছেনা। দবিরও ধৈর্য্যের পরীক্ষা দিতে শুরু করলো।
আপনের কাছে কত ডলার আছে ? হঠাৎ কৈরা অফিসার জিগাইলো।
দবির কৈলো, ৭০০ ডলার।
এর বেশি নাইতো ? আবার জিগাইলো সে।
না, তয় বাংলাদেশি ৩/৪ শ টাকা আছে।
এই প্রথম বিদেশ যাইতেছেন ?
জ্বি না, এর আগে আরো ৫ বার গেছি...
কিন্তু প্রতিবারই আপনে বাসে কৈরা গেছেন। এইবারই প্রথম বিমানে যাইতেছেন।
জ্বী ।
তা, কেনো যাইতেছেন মালয়েশিয়া ?
বেড়াইতে।
কয়দিন থাকবেন ?
৭/৮ দিন।
তারপর কি ফিরা আইবেন ? নাকী থাইকা যাবেন ?
অবশ্যই ফিরা আসবো... থাকবো কেনো ?
না মানে, এইভাবে অনেকে ট্যুরিস্ট হিসাবে যায়তো। এরপর আর ফিরা আসেনা...
আমি ফিরা আসবো... বেশ জোর দিয়ে বললো দবির।
অফিসারকে একটু বিভ্রান্তই মনে হলো। আরো কিছুসময় কিছু না বলে দাঁড় করাইয়া রাখলেন দবিররে। একসময় পাসপোর্টটা ফিরৎ দিলেন।
কৈলেন, অল দ্য বেস্ট।
থ্যাংকু কৈয়া দবির পাসপোর্ট আর ব্যাগ লৈয়া এয়ারপোর্টের ভিতরে চইলা গেলো।
অফিসারের এতক্ষণ ধৈরা জেরা করনের পরে দবিরের কঠিন বাথরুম চাপলো। চাপনেরই কতা। টেনশনে পড়লে নাকী মাইনসের বাথরুম চাপে। এদিক ওইদিক তাকাইলো দবির বাথরুমের খোঁজে। কোনো দিকেই না দেইখা শেষতক এক লোকেরে জিগাইলো-
ভাই, বাথরুমটা কোনদিকে ?
ভদ্রলোক কৈলেন, সোজা ডাইনদিকে একশ গজের মত গিয়া তারপর বায়ে যাইবেন। গলির শেষ মাথায়...
থ্যাংকু কৈয়া আবার দবির রওয়ানা হৈলো বাথরুমের সন্ধানে। একটু জোরেই হাঁটতে হৈলো তাকে। বিমান ছাড়ার সময় আছে আর মাত্র ৩৫ মিনিট। ভদ্রলোকের কথামত প্রথমে ডাইনে এবং পরে বায়ে গিয়া বাথরুমের সন্ধান পাওয়া গেলো। ব্যাগ কাঁধে নিয়াই দবির প্রাকৃতিক কাজ সারলো। আশে পাশে অনেকরেই বিড়ি খাইতে দেইখা তারো বিড়ি খাইতে ইচ্ছা হৈলো। আরো সময় আছে হাতে। ধীরে সুস্থে বিড়ি শেষ করলো দবির। এরপর এই পথ সেই পথ ঘুইরা এরে তারে জিগাইয়া অবশেষে নির্দ্দিষ্ট বিমানের কাউন্টারে আইসা জানলো- বিমান ছাড়তে এক ঘন্টা দেরি হৈবো...
এই এক ঘন্টা কী করবো বেচারা দবির। পকেট থেইকা মোবাইল বাইর করলো। বন্ধ মো্বাইল আবার চালু করলো। বন্ধু- বান্ধবরে ফোন করলো। বাসায় বৌরে ফোন করলো। আর কোনো কাম নাই। চেয়ারে বৈসা সামনের বড় পর্দার টেলিভিশন দেখতে লাগলো। ন্যাশনাল জিওগ্রাফিতে বিভিন্ন পশুগো কাজ-কাম দেখতে দেখতে একসময় ঘুমাইয়া পড়লো দবির। কতক্ষণ ঘুমাইছে কৈতে পারবো না। এক মহিলার ডাকে ঘুম ভাঙলো। ভদ্রমহিলা জিগাইলেন-
আপনি মালয়েশিয়া যাবেন না ?
জ্বী, উত্তর দিলো দবির।
জিএমজি এয়ার লাইন্সে ?
দবির এবারো বললো, জ্বী।
আপনার ফ্লাইটের সময় হয়ে গেছে, আসুন আমার সাথে...
ভদ্রমহিলারে ফলো কৈরা এয়ারপোর্টের ভিতরে ঢুকলো দবির। তারপর থামানো একটা বাসে উঠলো। এরমধ্যে বাস প্রায় ভর্তি হয়ে গেছে। পিছনের দিকে একটা সিটে গিয়ে বসলো দবির। ২/৩ মিনিট বাস চললো। তারপরে থামলো। সবাইর নামা দেখে দবিরও নামলো বাস থেকে। তারপর লাইন ধরে সবার সাথে বিমানে উঠলো। নিজের সিট আর খুঁজতে হৈলো না। হাসিমুখে আগাইয়া আসলো এয়ার হোস্টেস। সিটে বসার পরে কীভাবে সিট বেল্ট বাঁধতে হৈবো তাও কৈয়া দিলো সুন্দরী মহিলা। বিমানের ইঞ্জিন স্টার্ট নিলো। চলা শুরু করলো। আর মনে মনে আল্লার নাম জপা শুরু করলো দবির। শুরু হৈলো দবিরের বিদেশ যাত্রা...........
মাশাল্লাহ! দবিরের বিমান যাত্রার বর্ননা দিয়েন কিন্তুক।
আর কাউরে পারলে এয়ারপোর্টে পাঠায়েন রিসিভ করার জন্য। দবির বোকা হৈলে সে লোকরে খুইজা পাবে, চালাক হৈলে সোজা হাইটা চৈলা যাবে।
দবির অতটা বোকা না, যতটা ভাবছেন
চলুক
একটা ফেসবুক স্ট্যাটাস পড়ছিলাম, তার সাথে এই লেখার কোন যোগসূত্র আছে?
হ, থাকলে থাকতেও পারে
দবিরের বৈদেশ যাত্রা সাফল্যমন্ডিত হোক -- বলেন আলহামদুল্লিলাহ।
আলহামদুলিল্লাহ

আলহামদুলিল্লাহ।
পরের পর্ব দেন।
আইচ্ছা, মনে থাকবো
১। জেরা করলে কি বাথরুম চাপে!?
২। ব্যাচারা দবির পাঁচ ছয়বার মালেশিয়া গেছে এখনো বিড়ি খাই ক্যান? সিগারেট থুয়ে
৩। তার যাত্রা শুভ হোক।
১. অন্যের চাপে কীনা, জানিনা। দবিরেরতো চাপলো...
। সিগেরেট আর বিড়ি একই কতা।
২. দুর মিয়া, দবির ৫-৬ বার মালয়েশিয়া গেছে- আপনেরে কে কৈলো ? ৫-৬ বার বিদেশ গেছে, তাও বাসে বর্ডার ক্রস করে...
৩. হ, তার যাত্রা শুভ হোক
আপনে এখন কই? দেশে না মালয়েশিয়া?
কৈ থাকলে আপনের সুবিধা ?
মালয়েশিয়া যাইতে মন্চায়
আমারও
আলহামদুলিল্লাহ। Smile
পরের পর্ব দেন।
দবিরের লগে কতা হৈলে কমুনে পরের কাহিনী লেকতে
জিএমজি এয়ারলাইন্সের হোস্টেসদের সম্পর্কে নাতিদীর্ঘ উচ্চধারণা তৈরি হলো..
এই ছবির লগে দবিরের ম্যালা মিল পাইলাম।

মন্তব্য করুন