দুর্্যোগ, দুর্বিপাক, কেলেঙ্কারি...
১।
পরশুদিন আমার ক্যামেরা হাত থেকে পড়ে গিয়ে আর কাজ করছে না। সেটার ঝামেলাটা কী বুঝার জন্যে তখন তখনই আই ডি বি নিয়ে যাচ্ছি। যাওয়ার পথে এক বন্ধুর সাথে দেখা করে যাবো, ওকে ইন ডোর স্টেডিয়ামের সামনে দাঁড়াতে বলেছি। হেঁটে হেঁটে যাচ্ছি। হঠাত দেখি এক সিকিউরিটি গার্ড আমাকে হাত দিয়ে ফুটপাথ থেকে নেমে যেতে বলছে। অন্য সময় আমি গার্ড বা পুলিশের কথায় খুব একটা পাত্তা না দিলেও কী মনে করে যেন তখনই ফুটপাথ ছেড়ে দিলাম, আর তখনই একটা ইট এসে ধুপুস করে নিচে পড়লো। উপরে তাকিয়ে দেখি নতুন বিল্ডিং তৈরি হচ্ছে।
২।
আমার ভার্সিটি লাইফের সব থেকে আপন বন্ধুদের একজন রায়হান মাহমুদ। কাল সকাল সকাল আমার আরেক বন্ধু সুব্রত ফোন দিয়ে আতঙ্কিত স্বরে বললো "রায়হানের আম্মু এক্সিডেন্ট করছে"। দৌড় দিলাম ঢাকা মেডিকেল। গিয়ে শুনি লালবাগের পাশে এক আন্ডার কন্সট্রাকশান বিল্ডিং এর চার তলা থেকে ইট এসে উনার মাথায় পড়েছে। দারুন আহত অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে রাখা হয়েছে, প্রায় চব্বিশ ঘন্টা হয়ে গেল। উনার জ্ঞান এখনো ফিরলো না। উনাকে নিয়ে দৌড়াদৌড়ির কারনে টের পাই নি, বাসায় এসে শুনলাম যে ভূমিকম্প হয়েছে।
ফেসবুক খুলে "ভূমিকম্প ইস্যু"তে যথারীতি মেজাজ চরম খারাপ হয়ে গেল।
৩।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইমার্জেন্সিতে আমি গতকাল প্রথমবার গিয়েছিলাম। আমি হতবাক হয়ে গেছি। আন্টির জায়গায় আমার আম্মাকে কল্পনা করে বুঝলাম, আম্মু যদি এইভাবে অসহায়ের মতন হাসপাতালের লবিতে পড়ে থাকতেন, আর আমরা সবাই "এখনই ডাক্তার আসবে, এখনই নার্স এসে বলে যাবে কী করতে হবে" এরকম সুদূরপ্রসারী চিন্তাভাবনা করতে থাকতাম তাহলে আমি চাইতাম যে মরে যাই। এই ঘটনা নিজের ক্ষেত্রে সহ্য করা মুশকিল।
আব্বু রংপুরের একজন প্রভাবশালী চিকিৎসক, চাচু সহকারী অধ্যাপক হিসাবে কাজ করছেন জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউটে। দুইজনকেই অসহায় মনে হলো। তাঁদের কথার মানে একটাই। "ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল" একটা আলাদা জগত। বাইরে থেকে এখানে কিছু করার নাই। দালালগুলাকেই ম্যানেজ করতে হবে। ওরা স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কথাও শুনে না।
৪।
হাসপাতাল থেকে বাইরে চা-বিড়ি খাওয়ার জন্যে বের হয়েছি। দেখি বেশ ধোপ-দুরস্ত দুই জন মহিলা সময় নিয়ে কাপড়ের ভাঁজ ঠিক করতে করতে গাড়ি থেকে নামছেন। তাঁদের গাড়ির কারনে পিছনে থাকা এম্বুলেন্সটা ঢুকতে পারছে না।
কমন সেন্স চিরকাল আনকমন ছিল। এখনো আছে। সামনেও থাকবে।
আজ ঝুম বৃষ্টি সাথে কালবৈশাখী দিয়ে দিন শুরু হয়েছে। অন্যদিন হলে খুব খুশী থাকতাম। এই আবহাওয়া আমার খুব প্রিয়। কিন্তু আজ আমার চোখে রায়হানের চেহারা ভেসে উঠছে।
কমন সেন্স যে আসলেই আনকমন বাংলাদেশে গেলে বুঝা যায়।
আপনার বন্ধু রায়হানের মা তাড়াতাড়ি সুস্হ হয়ে উঠুক এই কামনাই করি।
বাংলাদেশের মানুষ মানে তো আপনি, আমি, আমরা সবাই। আমাদের কালেক্টিভ কমনসেন্সহীনতা মানেই বাংলাদেশের মানুষের কমনসেন্সের অভাব।।
ঠিক ।
হুম।
স্বপ্ন দেখতে আর ভালো লাগে না। এই জন্যেই কখনও বড় হতে চাই নি।
আপনার বন্ধুর মা দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠুন।
এই শুভাশিসটা ওই পরিবারের জন্যে আসলেই এখন খুব বেশি দরকার।
আপনার বন্ধুর মা দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠুন।
ধন্যবাদ তানবীরাপ্পি।
মাঝে মাঝে মনে হয় আমাদের জীবনের কোন দাম নেই। যেই বিল্ডিং থেকে ইট পড়েছে তাদেরও কোন মাথা ব্যাথা নাই, চিকিৎসকদেরও কোন তাড়াহুড়া নাই। আজব একটা অবস্থা।
সবাই যদি বুঝতো যে একদিন না একদিন সবাইকেই এই চিপায় পড়তে হবে।
চারিদিকে মৃত্যুফাঁদ!!
কমন সেন্স চিরকাল আনকমন ছিল। এখনো আছে। সামনেও থাকবে।
কথাটা পছন্দ হইছে
চারিদিকে মৃত্যু ফাঁদ!!!
আসলেই।
মন্তব্যের জন্যে ধন্যবাদ লিজাপু। দোয়ামামনি কেমন আছে? ওর জন্যে আমার অনেক দোয়া থাকলো।
এখন কেমন আছে সেই আন্টি?
জগতের সকল ''মা'' ভালো থাকুক সেই কামনা রইলো।
===========
দূর্যোগ দূর্বিপাক কেলেংকারী তাড়াতাড়ি দূর হোক।
দুর্যোগ, দুর্বিপাক, কেলেঙ্কারি> > > শেষ হবে না, শেষ হবে না।
রাসেল ভাইয়া, নববর্ষের শুভেচ্ছা।
আন্টি দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠুন।
আন্টির অবস্থা এখন বেশ ভালো।
তবে ৭২ ঘণ্টা এখনো কাটে নাই।
পাচ সেকেন্ডের জন্য আমিও এমন এক দুর্ঘটনার হাত থেকে বাচছি!
অবস্থা আসলেই মর্মান্তিক!
আসলেই মর্মান্তিক।
স্যূ করা দরকার এইসব ডেভেলপার কোম্পানির মালিকদেরকে।
মীর ভাইয়া, ওরা স্যু রে ডরাইলে তো হইতো ই।
কমন সেন্স যে আসলেই আনকমন
আসলেই।

মন্তব্য করুন