কুসংস্কার লইয়া ভাবনা চিন্তা-১
আম্রা সবাই মোটামুটি বড় হইয়া উঠছি নানা রকম কুসংস্কাররে আশ-পাশে সঙ্গী কৈরা। ফলো করছি কিনা সেইটা মূল কথা না, মূল কথাটা হইলো আমাদের বাইড়া উঠনের একখান অইন্যতম অনুষঙ্গ আছিলো কুসংস্কার। ছোটকালে সেগুলারে লইয়া ভাবনা চিন্তা করতাম না, ময়-মুরুব্বিতে কইছে বইলা মাইনা নিতাম। এই বয়সে আইসা হাতে পায়ে কাজকাম কম থাক্লে এগ্লা নিয়া চিন্তা ভাবনা করনের চেষ্টা চালাই। সেইখান থিকাই আসলে এই লেখাটা আইছে। লেখার উদ্দেশ্য কুসংস্কার গুলারে সুসংস্কারে রূপান্তর বা অইরাম কিছু না, জাস্ট নিজের মনের ভিত্রের ভাবনা গুলারে শেয়ার করন।
কুসংস্কারঃ- ঘরের ভিতরে স্যান্ডেল বা জুতা উলটাইয়া থাক্লে ঝগড়া হয়।
সাম্ভাব্য ব্যাখ্যাঃ- এই কুসংস্কারটা মূলতঃ মানুষের ভিত্রের গোছালো মনোভাবরে প্রাধান্য দিয়া রচিত হইছে বইলাই আমার ধারণা। সাধারণ স্যান্ডেলরে ঠিকমতো গুছাইয়া রাখতে যেই মানুষের খেয়াল নাই, তার গোছানো হওনের সম্ভাবনা কম। সো ঐ অগোছালো মানুষের লগে গোছানো স্বভাবের মানুষের উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের চান্স তৈরি হইয়াই যায়।
কুসংস্কারঃ- রাইতের বেলা বাইরে গেলে চুল ছাইড়া যাওন ঠিক না, ভুতে ধরে।
সাম্ভাব্য ব্যাখ্যাঃ- এইটার লগেও পরিচ্ছন্নতার একটা যোগসূত্র রইছে বইলা আমার ধারণা। গেরাম-গঞ্জে আগেকার দিনে কারেন ফারেন আছিলোনা, ইনফ্যাক্ট অহনো ঠিকমতো নাই। সাথে সাথে ঝোপঝাড়ও বেশি আছিলো। তো রাইতের বেলা লম্বা চুল খুইলা বাইরে গেলে ঝোপঝাড়ে জড়াইয়া যাওনের সম্ভাবনা থাকে। আবার হঠাত কৈরা চুল কোন জংলায় আটকায়া গেলে ভয় পাওনের ব্যাপার থাকে। সেই ভয় থিকা হিস্টিরিয়া বা আগের দিনের ভুতে ধরা হওন সময়ের ব্যাপার মাত্র।
চলবো..........
হ ঠিক কৈছেন।
রাতে নখ কাটা ভালো না। এইটারও পরিচ্ছন্নতার সাথে যোগসূত্র আছে মনে হয়।
ভালো সাবজেক্ট ধরছেন! ব্যাখ্যা যেমনই হোক, সংস্কার/কুসংস্কারের মধ্যে সামাজিক ইতিহাসের অনেক অনুষঙ্গ থাকে। এইগুলো লিপিবদ্ধ করে রাখাও একটা জরুরী কাজ। চলতে থাকুক...
চালিয়ে যান ... দেখা যাক কুসংস্কার কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়
"আন্ডা খাইলে পরীক্ষায় আন্ডা পাওয়া", "বাইরে বের হবার সময় বাধা পড়লে একটু অপেক্ষা করে যাওয়া" এগুলা নিয়াও কিছু বইলেন...
অনেকেই রাতের বেলা সুঁই চাইলে দেয় না।এর ব্যাখ্যা কি?
কত্ত আছে! কালো বিলাই, গালে হাত, ঘর থেকে বের হওয়ার সময় অমুক পা..
ডান হাত চুলকাইলে টাকা আসে
বাম হাত চুলকাইলে খরচ হয়
ডান পায়ের তালু চুলকাইলে বেড়াইতে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরী হয়
খালি আন্ডা না ... পরীক্ষার দিন কলা খাওয়াও বারন ছিল
আর বিখ্যাত হইলো... প্রাতকালে .... অপ্রিয় কারো মুখ দর্শন মানে দিনটাই কুফা
কত যে কুসংস্কার আছে দুনিয়ায় । লেখাটা নিয়মিত দিয়েন ।
বাম চোখ লাফাইলে নাকি বিপদ আসে!!
সুইঁইয়ের মতো রাতের বেলায় চুনও বিক্রি করে না অনেকে। কেন কে জানে!!
আবার কোথাও রওনা দেয়ার সময়, হাচিঁ দিলে/পিছন থেকে ডাকলে কুযাত্রা হয়!!
রাতে খালি হাড়ি বাড়িতে ঢুকায় না। রাতে কারো বাড়ি থেকে হলুদ ধার করা যায় না। রাতে ঘর জ়হাট দেয়া যায় না। রাতে শাক খাওয়া যায় না, রাতে করল্লা খাওয়া যায় না।
মঙ্গলে ঘোঙ্গল, বুধে মানা
বৃহষ্পতিতে যাওয়াই চলেনা
শুক্রবার জুম্মার দিন
শনিবার শনি পিছনে লাগে
রবিতে ভাবতে হয়
সোমে যাত্রা শোভা পায়।
আর কিছু মনে পরছে না। তবে আপনার সেন্ডেল উলটানো থাকলে ঝগরা হয় এর অর্থ এটাও হতে পারে , অসাবধানে পায়ে লেগে বয়স্ক বা বাচ্চারা পরে যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে তা অনেক সময় বাড়াবাড়ি রকমের দূর্ঘটনা ঘটাতে পারে।
চলুক
ব্যাখ্যা দুইটা আমার পছন্দ হইসে।
আর,
গর্ভবতী অবস্থায়.....
"বাইরে যাওয়ার আগে কিছু খেয়ে গেলে বাম হাত দিয়ে মুখ মুছে যেতে হবে"
"বাইরে গেলে সাথে একটা রসুন, এক বক্স দেয়াশলাই.. ইত্যাদি সঙ্গে রাখতে হবে"
"রাতে বাররুমে গেলে মাথায় ঘোমটা দিয়ে যেতে হবে"
নবজাতকের.....
"কাথা-কাপড় সন্ধ্যার পর বারান্দায় রাখা যাবে না, নতুবা বাচ্চাএ জ্বীনে ধরবে"
"বাচ্চার কাপড় সন্ধ্যার পর ধুয়ে দিলে কাপড়ের ঠান্ডা বাচ্চার গায়ে লাগবে"
"বাচ্চার কোন জন্মদাগ থাকলে সেদিকে মা তাকাতে পারবে না, নয়তো বাচ্চার অসুখ হবে"
আরো কত কত কত কত কত আজগুবি কথা যে শুনলাম। হায়রে!
স্বামীর নাম ধইরা ডাকা ঠিক না
মন্তব্য করুন