যদি আসে তব কেন যেতে চায়, দেখা দিয়ে তব কেন গো লুকায়
............................................................................................................................................................................................................................
যখন তোমার সঙ্গে আমার হলো দেখা
লেকের ধারে সঙ্গোপনে
বিশ্বে তখন মন্দা ভীষণ
রাজায় রাজায় চলছে লড়াই উলুর বনে
লেকের ধারে না, ছেলেটার সঙ্গে মেয়েটার দেখা ক্লাশে। দেখা বলা হয়তো ঠিক না। বলা যায়, ছেলেটা মেয়েটিকে প্রথম দেখলো ক্লাশ রুমে।
ছেলেটি খোঁড়েনি মাটিতে মধুর জল
মেয়েটি কখনো পরে নাই নাকছাবি
ছেলেটি তবুও গায় জীবনের গান
মেয়েটিকে দেখি একাকী আত্মহারা
মেয়েটি একাকী আত্মহারাই থাকে। নতুন ক্লাশ। কেউ কাইকে চেনে না। তবুও মেয়েটির কোনো দ্বিধা নেই। সে সবার সঙ্গে মেশে কথা বলে। লাজুক ছেলেটি কেবল দূর থেকে দেখে। নামও জানে না। কেবল জানে রোল ২৬। ছেলেটির রোল ১৯।
একদিন ছেলেটিকে উৎফুল্ল দেখা যায়। ছেলেটিকে বলি, খবর কি? কোনো উত্তর দেয় না। ছেলেটি তার বন্ধুকে বলে। তার বোনটি যে বন্ধুর মতোই। রোল ২৬ এখন রোল ১৯ এর সঙ্গে অনেক কথা বলে।
দিন যায়, রাত যায়। ছেলেটিকে মাঝে মধ্যে জিজ্ঞেস করি মেয়েটির কথা। ছেলেটি বলে না। ছেলেটির মা একদিন ছেলেটির বাবাকে বলে, 'তোমার ছেলের পছন্দ আছে, ক্লাসের সেরা মেয়েটিকে পছন্দ করেছে। লেখাপড়ায় সেরা, দেখতেও সেরা।'
আরও দিন যায়। ছেলেটির বন্ধুর মতো সেই বোনটাই খবর দেয়। বলে, রোল ২৬ এখন আর রোল ১৯ এর সঙ্গে কথা বলে না। আজকাল বেশি কথা বলে রোল ১০ এর সঙ্গে। তাই রোল ১৯ এর মন একটু খারাপ।
আমার কাতর চোখ, আমার বিমর্ষ ম্লান চুল –
এই নিয়ে খেলা করে: জানে সে যে বহুদিন আগে আমি করেছি কি ভুল
পৃথিবীর সবচেয়ে ক্ষমাহীন গাঢ় এক রূপসীর মুখ ভালোবেসে,
তারপর আরও দিন যায়। যেতেই থাকে। বছরও চলে যায়। আবার নতুন ক্লাশ। মেয়েটি চলে যায় অন্য শাখায়। মেয়েটিকে আর দেখা যায় না।
কি বা হায়, আসে যায়, তারে যদি কোনোদিন না পাই আবার।
নিমপেঁচা তবু হাঁকে : ‘পাবে নাকো কোনোদিন, পাবে নাকো
কোনোদিন, পাবে নাকো কোনোদিন আর।’
নতুন ক্লাশে ছেলেটি যাচ্ছে এক মাস হয়ে গেল। উত্তুরে হাওয়া বইছিল সেদিন। ছেলেটি ক্লাশ শেষ করে আসলো। এবার আমিই জানতে চাইলাম-রোল ২৬ আর আসে না?
ছেলেটি আমার দিকে তাকিয়ে হেসে বললো, আসে তো। অন্য শাখায়। গোলাপি একটা টুপি পরে আসে এখন।
আমি মুচকি হেসে বললাম, এখনও সেই রোল ২৬ এর কথা মনে আছে? আবার খুঁজে খুঁজে বেরও করেছো?
ছেলেটি এবার বললো-''আরে আমি না, রোল ৯ আছে না, সেই যে দুষ্টু ছেলেটা, ও খালি দেখে কে টুপি পরে আসলো, কার মাথায় দুই ঝুটি.........
ছেলেটি আবার খোঁড়ে মাটি খোঁড়ে জল
মেয়েটি আবার নাকে পরে নাকছাবি
ছেলেটির চোখে মেয়েটির বরাভয়
মেয়েটিকে দেখি একাকী আত্মহারা
পাদটীকা: ছেলেটি আমার ছেলে রাইয়ান, প্লে গ্রুপ থেকে এবার কেজিতে উঠলো। মেয়েটির রোল এখন কত জানিনা। এই প্রথম কোনো বাবা তার ছেলের এই গল্প লিখলো।
আহা..ভাগ্যবান পুত্র
~
তাকে এইটা নিয়া ব্যাপক খেপানো হয়
আহারে ভাতিজা
প্রথম ভালো লাগা
আহা, কি 'মিষ্টি' করে বললেন প্রথম ভালো লাগার কথা রাসেল।
পোলাডা মিষ্টি ছাড়া কিছুই জানে না।
লজ্জা পাইয়া মনে হয় ভাগছে
কিসের লজ্জ্বা মাসুম ভাই। লজ্জ্বা পাইলে কি আর বিয়া করতাম।

আপনে এখানে মিষ্টি কই পাইলেন? একবুক হাহাকার নিয়ে কইলাম।
অফটপিকঃ দৌড়ের উপর ছিলাম।
বিয়া কইরা লজ্জা ভাঙছে নাকি আগেই ভাঙা ছিল
হাহাহা। শেষে এসে হাসতে হাসতে চোখে পানি চলে আসছে । ছেলে বাবার নাম রাখবে

আরো অনেক মিষ্টি ঘটনা ঘটতেই থাকুক রাইয়ানের ।
মাসুম ভাই, বুঝলেন তো বয়স হইছে যে! তবে রাইয়ান বড় হয়ে এই লেখা পড়লে ভালোলাগায় ভরে যাবে ছেলেটা
কাল রাতে আমাকে রাইয়ান জিগায়, বাবা, আমার ছেলে মেয়ের নাম কি রাখবো?
বললাম-ছেলে হলে নাম রাখবা মাসুম আর মেয়ে হলে কণা।
ছেলে সঙ্গে সঙ্গে পালটা প্রশ্ন করলো-যদি কেউ জানতে চায় দাদা-দাদীর নাম কি তাহলে কি বলবো?
আল্লহ্!! ও এখনই সব ভেবে রাখছে ।
অনেক বড় হোক ।
রাইয়ান বাবা তো দেখি বাপের নাম উজ্জ্বল করবো
মাশাল্লাহ
বাপ তো মাসুম, জন্ম থেকেই
গল্প কি অনেক মিষ্টি হইছে!
রাইয়ানের অনেক পাকনামি গল্প শুনেছি আগে কিন্তু এইটা সবচেয়ে দারুন, পাকনামি না বেশ সুইট!
হ, তার সাঙ্গে ঘন্টা পর ঘন্টা নানা বিষয় নিয়ে আলাপ করা যায়, সব প্রশ্নর উত্তর আছে তার
বাপকা বেটা!
অন্তত দুইআড়াই বছর আগেই রাইয়ানের এইসব কাজকর্ম সম্পর্কে ভবিষ্যতবানী করেছিলাম
ফলে গেল দেখে ভালই লাগছে।
খুজে বের করলাম, দুই না, চার বছর আগের কমেন্ট ছিল ওটা
RoNty Chowdhury এই পুলার লেডিকিলার হইপে। নির্ঘাত। মাইগড! কি ঠোট, কি চোখ!!!
21 May 2009 at 18:21 ·
লিংক দেন
https://www.facebook.com/photo.php?fbid=30368087259&set=pb.608892259.-2207520000.1359971401&type=3&theater
রন্টির কথা তো পুরাই ফিট
রন্টি তো দেখি পুরাই ঠিক।
রাইয়ানের পিতৃভাগ্য অসাধারণ!
দারুন হৈছে গল্প, বেশি বেশি ভাল।
দোয়া কইরেন। তয় সামলে যেন থাকে
লেখাটা কিন্তু জব্বর অইছে।নতুন ধরনে, গদ্য ও পদ্য মিলিয়ে গল্প। বাইচতার জন্য দোয়া করি, বাপের মুখ যেন উজ্জ্বল করে।
দোয়া কইরেন। পড়ার জন্য ধন্যবাদ
বুঝতে হবে রাইয়ান - ঢাকার পোলা ভেরি ভেরি স্মার্ট
তাইতো দেখকাছি
আমি আরো ভাবতেছিলাম সেই পুরোনো সাগর-সাথীর গল্প নাকি!
পরে তো যা দেখলাম আশ্চর্য হইসি বললেও কম বলা হবে...
আসলেই এই প্রথম কোনো বাবা তার ছেলের এই গল্প লিখলো।
আপনার ছেলের প্রশংসা করার জন্য সামনে অনেক সময় পাবো মাসুম ভাই, আমি বরং আপনার প্রশংসাই করি। আমি ভাবতাম নেক্সট জেনারেশন সবসময় বেশি স্মার্ট হয়। টেকনিক্যাল কারণেই সেটা হওয়ার কথা। কিন্তু ভাবনাটায় একটা বড় ধাক্কা দিয়ে গেলেন আপনি। আপনি নিশ্চিত থাকতে পারেন, আপনার পরের অনেক জেনারেশনই এত স্মার্ট আইডিয়া জেনারেট করতে ব্যর্থ হয়েছে। আর কিছু বলার নাই।
ও আরেকটা কথা বলি। সাংবাদিকতা করে বহুত টাইম নষ্ট করছেন। আপনার আসলে জায়গা সাহিত্য। মানে সাংবাদিকতা করে কোনো কিছু কম অর্জন করসেন, এমন বলতেসি না। বাংলাদেশে সাংবাদিকতা করে যা পাওয়া সম্ভব, সবই প্রায় পেয়েছেন। কিন্তু আমি বলতে চাচ্ছিলাম, আপনি সাহিত্য না করে সাহিত্যকে বঞ্চিত করছেন। সিরিয়াসলি।
যাক্ অনেক কথা বলে ফেললাম। ছেলে-মেয়ে-ভাবীকে নিয়ে ভালো থাইকেন। শুভেচ্ছা রইলো।
একমত না! সাংবাদিকতার যে হাল, তাতে সাহিত্যিকদের এখন বেশি বেশি সাংবাদিকতায় আসা উচিত।
এই ছেলে কয় কী! সাহিত্য আমার কর্ম না। সাহিত্যের ভাষাও আমার জানা নেই।
তারপরেও প্রশংসা শুনতে ভাল লাগে। থ্যাংকস
একমত।
খুব মিষটি মাসুম ভাই। লেখায় পাচ তারা। অসাধারণ লাগলো।
রবিবারে আমার মেয়ে বলে, মামা-খালা-কাজিন সবার বিয়েই সে দেখতে পারলো, শুধু পাপা- মামারটা বাদ দিয়ে
রন্টি ভাই জিন্দাবাদ
রাইয়ান রক্স!
বড় হইয়া পোলা যে বাপের থিকাও বেশী মাসুম হইবো সেইটা এখনি বুঝা যায়
আমি তো অরিজিনাল মাসুম
আহা মাসুম বাচ্চাটার মাসুমিয়াত গল্প কি সুন্দর ভাবে প্রকাশ করেছেন মাসুম ভাই
পারভীন আপা? স্বাগতম
এক্সেলেন্ট! এক্সেলেন্ট!
ভাবানুবাদ: দারুণ! দারুণ!
থেংকু থেংকু
লেখার আবেগ সত্যিই চমৎকার। রাইয়ান আধুনিক বাবা-মা পেয়েছে। একটি জিনিস আমার বেশ মজার লাগছে, কবিতাগুলো বড়দের, কিন্তু একটি ছোট্ট বাচ্চার সাথে কত অনায়াসে মানানসই করে দিলেন! রাইয়ান বিষয়ক সিরিজ চলতেই থাকুক।
আমার তো কবিতা পড়ার স্টক বেশি না। তাই হাতের কাছে যা পাইছি আর যা মনে ছিল
চমৎকার গল্প!
বড় হোক ভাতিজা, বাবা-মার মুখ উজ্জ্বল করুক।
দোয়া কইরেন
মন্তব্য করুন