ঈদ আনন্দের সেকাল-একাল
ছোটবেলার ঈদের দিনগুলো একেবারে অন্যরকম ছিল। ঈদের পোষাক কেনার পর থেকেই শুরু হত উত্তেজনা। নতুন জামা-কাপড়, জুতা-স্যান্ডেল সব আলমারীতে লুকিয়ে রাখতাম পুরনো হয়ে যাবে এই ভেবে । ২৯ রোজার পর থেকে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করতাম চাঁদ দেখার জন্য। চাঁদ দেখা গেলেই খুশীতে আটখানা হয়ে পড়তাম আর পরেরদিন অর্থাৎ ঈদের দিনের প্ল্যান-প্রোগ্রাম চিন্তা করতাম। ২৯ রোজা না হয়ে যদি ৩০টা হতো, তখন খুব মন খারাপ হত, ইস! আরেকটা বেশী রোজা রাখতে হবে । চাঁদরাতে কখনোই ভালো ঘুমাতে পারতামনা, একধরণের উত্তেজনা কাজ করত ঈদের দিন সারাবেলা কিভাবে কাটাব, কোথায় কোথায় বেড়াতে যাব এই ভেবে। আমার বেড়াতে যাওয়ার মূল উদ্দেশ্য ছিল সেলামী আদায় করা, যত বেশী আত্মীয়দের বাড়ী যাওয়া যায়, তত বেশী সেলামী আদায় করা যাবে -- শুধুমাত্র এই উদ্দেশ্যেই আত্মীয়দের বাড়ী বেড়াতে যেতে একপায়ে খাড়া থাকতাম সবসময় । সেলামী আদায়ের এই ফন্দিটা আমার মনে হয় ছোটবেলায় সবার মনের মধ্যেই কাজ করে। নতুন কড়কড়ে নোট পেয়ে তার ঘ্রাণ নেয়ার মুহুর্তটা ছিল সত্যিই অসাধারণ এক সুখানুভূতি। সারাদিন মোটামুটি সব জায়গায় বেড়ানো শেষে , খাওয়া দাওয়া করে মোটামুটি ভালই সময় কেটে যেত। পরিবারের সব সদস্য তখন একসাথে থাকতাম বলে আনন্দের মাত্রাটা ছিল অন্যরকম, সবার সাথে একসাথে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিয়ে মনের মাঝে একটা স্বর্গীয় অনুভূতি কাজ করতো।
এখনকার দিনের ঈদগুলো একেবারেই অন্যরকম। সারা রমজান মাসেই অফিস নিয়ে ব্যস্ততায় দিনের বেলা সময় কেটে যায়। ঈদের শপিং করলাম কি করলাম না সেটা নিয়ে কোন অনুভূতিই কাজ করেনা। যেমন এবারের ঈদই আমার জীবনে প্রথম যেখানে নিজের জন্য কোন কেনাকাটা করিনি। আসলে ঈদের কেনাকাটা নিয়ে কোন অনুভূতিই আর নিজের মাঝে অবশিষ্ট নেই। আমার স্ত্রী'র জন্য অবশ্য ঈদের কাপড় কিনেছি, তা নাহলে সংসারে আগুন লেগে যাওয়ার সমূহ সম্ভাবনা থাকতো, সেধে সেধে কে আর নিজের ঘরে আগুন লাগাতে চায় আপনারই বলুন ।
ঈদের দিন তেমন কোথাও যেতেও আর ইচ্ছে করেনা। ছোটবেলার মত কেউ আর সেলামীও দেয়না তেমন , তাছাড়া বয়স বাড়ার সাথে সাথে ধীরে ধীরে কেমন যেন ঘরকুনো হয়ে পড়ছি, দরকার ছাড়া কোথাও যেতেও ইচ্ছে করেনা। ঈদের দিনে বাইরে কোথাও যাওয়ার চাইতে ঘরে শুয়ে-বসে, টিভি দেখে, ল্যাপটপ নিয়ে পড়ে থাকতেই এখন বেশী ভাল লাগে। সামাজিকতার অনুভূতিগুলো ধীরে ধীরে ভোঁতা হয়ে যাচ্ছে। ছোটবেলার মত পরিবারের সব সদস্য এখন একসাথে থাকিনা, এটাও একটা বড় কারণ ঈদকে সেভাবে আর উপভোগ না করা।
ঈদ নিয়ে স্মৃতিচারণের কোন ইচ্ছে ছিলনা, তারপরও ল্যাপটপে বসে বসে অফিসের একটা কাজ করছি, কাজের ফাঁকে মনে হল, কিছু একটা লিখে ফেলি ঈদ বিষয়ক, কেউ পড়ুক বা না পড়ুক, আস্তাকুঁড়ে ফেলে দিক - তাতে আমার কি যায় আসে? নিজের অনুভূতিগুলোতো লিখে রাখতে পারলাম, এটাই বা কম কি!!!
ঈদ মুবারক নাঈম ভাই। স্মৃতিচারণ দারুণ হয়েছে! অফলাইনে একবার আর অনলাইনে একবার লাইক দিয়েছি
আমার কাহিনীও প্রায় সেইম বস্। ঈদের দিন বাসায় শুয়ে-বসে, টিভি-কম্পিউটার চালাবো। ভাবতেই ভাল্লাগতেসে। আমার এমনকি হুটহাট ঘরে আগুন লেগে যাবার সংকটও নাই। এইদিক থেকে আপনের চেয়েও সুখে আছি। আর এইবার নিজের জন্য কিনছি শুধু একখান পায়জামা। বাকী সব পাইছি গিফট্।
ঈদ মুবারক মীর ভাই.............আগুন এখন লাগার সম্ভাবিলিটি না থাকলেও ভবিষ্যতে তো লাগার টাইম আসবে, তখন বুঝপেন ঠ্যালা কারে কয় ।
তখন আপনারা যারা অভিজ্ঞ লুকজন আছেন তারা বুদ্ধি-পরামর্শ দিয়া হেল্পাইবেন
ঈদ কোথায় করতেসেন? চট্টগ্রাম নাকি?
হাহাহা....হেল্পামু মাইনে, কুপায়া ফালামু এক্কেরে, খালি আওয়াজ দিয়েন
হ ভাই, ঈদে চাটগাঁতেই আছি।
আগ্রাবাদের জাম্বুরি ফিল্ডে কি এখনো ঈদের জামাত হয়? আমি ছোটবেলায় ওখানে অনেক ঈদের নামাজ পড়সি। চিটাগাং সে সময় বড় মনোরম ছিলো। এখন অবশ্য কেমন হইসে জানি না।
জাম্বুরী ফিল্ডের ঈদের জামাতের খবর অবশ্য বলতে পারবনা, আমার বাসা আগ্রাবাদ থেকে বহু দূরে। যদিও আগ্রাবাদ সিডিএ তে যাওয়া হতে পারে ঈদের দিন, আমার এক মামা থাকেন ঐ এলাকায়।
আহারে সিডিএ এলাকা এককালে আমার চারণভূমি আছিলো গো ভাইজান।
স্মৃতি তুমি বেদনা
ঈদ মোবারাক
আপনাকেও ঈদের শুভেচ্ছা মায়াবতী ।
নাঈম হুজুর এর আগেও স্মৃতিচারন করতে গিয়া আমার কাহিনী লেখছিলো , এবারও তাই লেখলো শুধু বউ বিষয়ক অভিজ্ঞতা বাদে
ঈদ মোবারক নাঈম ভাই
ঈদ আনন্দে কাটুক
মিয়া মস্করা করেন, আমি আমার আপ্নের কাহিনী লেখুম কুন দুঃখে??? এইডা আমার কাহিনী । যাই হোক আপনাকেও ঈদ মুবারক, ঈদ আনন্দে সারাদিন উচ্ছলতায় কাটুক, এই দোয়া করি।
সেই দিন আর নাই। মনে পড়লেই চোখ ভিজে যায়।
সেটাই।
ঈদ মোবারক
ধন্যবাদ, ঈদের শুভেচ্ছা আপনাকেও।
ঈদ মোবারক নাঈম ভাই!
আমার ঈদ গুলোও আপনার মতই! কেমন জানি পান্সে হয়ে যাচ্ছে! বড়(!) হয়ে গেলে হয়তো ঈদ গুলো এমনই হয়! কাল সকাল থেকে কাজেই ছিলাম, ডেস্ক ছেড়ে কোথাও যাওয়া হয়নি খুব একটা! মাঝে মধ্যে টিভি তে কি হচ্ছে তা দেখা হইসে! বন্ধু দের কে বলাই ছিল আমার সাথে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় বা দেখা করতে চাইলে বাসায় চলে আসে যেনো! তাই হচ্ছে, বিকেল থেকে বন্ধু দের কে নিয়ে নিজ রুমেই আড্ডাবাজি! আমি মনে করছিলাম ঘরকুনো ঈদ হয়তো শুধু আমারই করা হয় এখন তো দেখছি এমন আরো অনেকেই করছেন!
সাধে কি আর মানুষ শৈশবকে মিস করে!!!
আমি অবশ্য এখন যারা শৈশবে আছে তাদের আনন্দ-উত্তেজনা দেখি- নিবিড়ভাবে। দারুণ মজা লাগে ওদের কাণ্ডকারখানা দেখতে।
হুমম...তাদেরকে দেখে নিজের শৈশব নিয়ে নষ্টালজিকতায় ভূগতে খারাপ লাগেনা.....
শিশুকাল ছিলো ভালো জৈবন কেনো আসিলো
কেনো যে আসিলো সেইটা তো এখন হাতে-কলমে টের পাইতেসেন
ছেলেবেলার ঈদ আপ্নাতেই ফিরে আসে না, নিজেই ফিরিয়ে আনতে হয়। শুভকামনা।
কিভাবে ফিরিয়ে আনব, আমার কাছে তো আর টাইম-মেশিন নাই রে ভাই ।
ঈদ মোবারক।
পোলার বাপ পিচ্চিরে নিয়ে লেখা দেন
আসিতেছে , অয়েট এন্ড চি
আরেকটা অভিযোগ আপনি আমরা বন্ধু'র ফেসবুক গ্রুপ থেকে ভাগছেন কেন?
=================
পিচ্চিরে নিয়া পোস্ট দেন জলদি।
ঐখানে সব জ্ঞানী ব্যক্তিদের ভীড়ে আমার মত নাদান না থাকাই ভাল তাই ভাগছি ।
পিচ্চি একটু অসুস্থ, ইনশাল্লাহ্ সুস্থ হোক, তারপর ২/১ দিন পর ম্যারাথন পোষ্ট দিব ইনশাল্লাহ্ ।
কোনো কালেই শান্তি পাইলাম না!
মন্তব্য করুন