নুরেন'এর ব্লগ
দেশের জন্যে ভালোবাসা-২
অনেককিছু বলার ছিলো,কিন্তু আমি বলতে পারতেছি না,আমি বাকরুদ্ধ।গত কয়েকদিন থেকেই আমার কথা বলা বন্ধ।না,আমি বাকস্বাধীনতা চাই না,কারন তা আমার আছে।কিন্তু আমার বলার মুখ নাই,মান নাই,স্মমান নাই,আমি ৫২ নিয়ে গর্ব করি পাকিস্তানের প্রশংসা করে,আমি ৭১ নিয়ে মাথা উঁচু করে যুদ্ধাপরাধীদের হাস্যজ্জল চেহারা দেখি,তাদের কর্মকান্ডের পুনরাবৃত্তি দেখি দেশটার অধঃপতন হিসেবে।আমার বাবা মা আমাকে এদেশ থেকে বের করে দিতে চায়।
দাঁতবিস্তৃত হাসি
আজকে আমার পাঁচবছরের হোষ্টেল জীবনের অন্যতম একটি দিন।আমি মোটামুটি সু এবং কু ভাবে পরিচিত হোষ্টেলে।সু ভাবে পরিচিত কারন যত আকাজ কুকাজ এর প্ল্যান আমার রুমে সম্পন্ন হয়,নয়তো যারা করে আসে তারা আমার বিপুল সমর্থন পায়।হোষ্টেল মনিটর হওয়ার কারনে পরিস্থিতি সামলানো কোন ব্যাপার হয় না।আর কু ভাবে পরিচিত আমার খামখেয়ালীপনার জন্যে,দিনের বেশিরভাগ সময় অনশন করে,মাঝে মাঝে ই সকলের আত্না উড়িয়ে হস্পিটালে ভর্তি হয়ে,রাতবিরাতে গভীর অন্ধকারে উপশহরের রাস্তায় হেঁটে বেড়িয়ে আর হোষ্টেলের দেয়ালে,জানালায়,মেঝেতে রঙের বন্যা ছড়ায়ে। যাই হোক,এতোকিছুর পরেও হোষ্টেলে টিকে আছি মানুষজনের ভালোবাসার জন্যে।সে রুমে কাজ করা খালাদের হোক,বন্ধুদের হোক আর ক্যান্টিনের কাজ করা ছোট ছোট বাচ্চাগুলার হোক।
দেশের প্রতি ভালোবাসা -১
বলি,এই দেশটার হচ্ছেটা কি!খুব বেশিদিন আগের কথা না,মাত্র ৪০ বছর আগের কথা,দেশটাকে স্বাধীন করা হয়েছিলো।যে স্বাধীনতার যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এখনো চলছে।কার ভুলে যাওয়ার কথা না।সেই স্বাধীন দেশে আজকের যারা নীতি নির্ধারক একটা মানুষের চেহারাও যুদ্ধক্ষেত্রে কেউ দেখেনি।টেলিভিশনে দেখা তো দূরে থাক রেডিওতে কথা শুনেই তাদের উপর আস্থা রেখে সাধারন মানুষ যুদ্ধ করতে ঝাঁপায়ে পরেছিলো।কই তখন যখন ছাত্ররা দেশের অবস্থা নিয়ে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় করতো সরকারি দল মামলা দায়ের করে বসে থাকতো এমন তো কোনো নজির দেখা যায়নি।তাইলে আজ যখন একটা কলেজের ছাত্র প্রধানমন্ত্রীকে কটুক্তি করে কথা বলেছে দেখে তার নামে মামলা দায়ের করার কথা একজন মাননীয়া মন্ত্রী মহোদয়া পত্রিকায় উল্লেখ করেছেন তখন কি তিনি ভুলে গেছিলেন যে এই দেশ স্বাধীন হয়ার পর যে সংবিধান হয়েছিলো তাতে নাগরিকের অধিকারে বাকস্বাধীনতা কথাটি লেখা ছিলো।কোনো সরকার নিঁখুত হতে পারেনা।আজ যারা আছে তাদের প্রতি মানুষের ভালোবাসাটা অন্যরকম।তাদের কাছে দাবিটা অন্য রকম।এইটুকু যদি তারা না বুঝে পদক্ষেপ নেয় তাহলে বুঝতে হবে তারা ভালোবাসাটা অনুধাবন ই করতে পারেনি।সময় থাকতে থাকতে তাদের অনুভব করাটা দরকার।
মেজাজ খারাপের কচড়া !!
ভোররাত ৩টায় ঘুমিয়ে যখন আপনি ৬টায় উঠে পরবেন,মানে আপনাকে ক্লাশের জন্যে উঠতে হবে তখন আপনার মেজাজ খারাপ হবে।
যখন ৭টার বিভীষিকাময় গাইনী ক্লাশে যাওয়ার জন্যে রাতের ঘুমের জামা-পাজামার উপর এপ্রন গলিয়ে,লেকচার খাতাটা নাকে মুখে গুজঁতে হবে তখন আপনার মেজাজ খারাপ হবে।
ক্লাশে মাননীয় টিচার ঢোকার পর ঢুকতে গেলে মুখের উপর দরজা লাগিয়ে দেয়া হবে এই ভয়ে যখন হুরোহুরি করে সিঁড়ি দিয়ে নামতে হয় তখন মেজাজ খারাপ হবে।
যখন বসার জন্যে যথারীতি ফ্যানের নিচের আরামদায়ক সিটটি দখল হয়ে যাবে তখন মেজাজ খারাপ হবে।
যখন ক্লাশে ঢোকার সব দৌড়-ঝাপ শেষ করে বান্ধবীর পাশে বসে কুটুর কুটুর করে গল্প করবেন ও সেই মুহুর্তে আপনাকে জানানো হবে আজ আর কোনো ক্লাশ হচ্ছেনা তখন মেজাজ খারাপ হবে।
ক্যান্টিনে খেতে বসে আবিষ্কার করলেন খাওয়া নেই তখন মেজাজ খারাপ হবে।
কফির জন্যে ভালোবাসা না ভালোবাসার জন্যে কফি !!!
আমাদের বাড়িতে প্রচলিত অনেকগুলো বদভ্যাসের মধ্যে একটি হলো চা-কফি খাওয়া।এক্টু লক্ষ্য করুন,যদিও পানীয়;পান না করা বলে খাওয়া বলছি।কারণটা হলো এই যে,সবাই মুড়ি-মুড়কির মতো চা কিংবা কফি গিলে যায়।দুবেলা ভাত না খেলেও সমস্যা নাই।কিন্তু ইহা ছাড়া জীবন অচলপ্রায় অবস্থা হয়।আমাদের বাসার এই নাটকের প্রথম এবং প্রধান নায়িকা আমার মা।বলাই বাহুল্য,তিনি এদেশের নামকরা এক মহিলা কলেজের গণিতের প্রফেসর।ভাবসাব দেখলে মনে হয়,দুনিয়ার তাবৎ জ্ঞানসাম্রাজ্য তাঁর হাতের মুঠোয়।তাঁর দীর্ঘদিনের অভ্যাস,দুপুরের খাবার না খেয়ে একমগ চা গেলা।এম্নিতে যদি আমরা দুই ভাইবোন দুপুরের খাবারটা একাধদিন স্কিপ করে যেতে চাই,তখন তাঁর জ্ঞানের কচকচিটা শুনিয়ে আমাদের প্রাণ অতিষ্ঠ করে দেন।প্রথমে কয়েকদিন কানে তুলো গুঁজে বিরস মুখে খেয়ে নিতাম।দিঙ্কতক বাদে,কচকচিটা শুরু হলেই আমরা দুই ভাইবোন চোখে চোখে কথা সেরে নিতাম।এরপর দুজনেই একসাথে মাকে জিজ্ঞেস করতাম,"মা ,ভাত খা
একটু আত্নপ্রসাদ...
লেখালেখিটা আসলে আমার ধাতে আসেনা।এই একটা প্রেস্ক্রিপ্সন,দুই একটা রোগীর হিস্ট্রি ওইটুক পর্যন্তই।কিন্তু সেদিনের কথাগুলো আমি না লিখে পারিনি।মাঝমাঝেই লাল খাতাটা খুলে বার করে একপলক দেখি লেখাগুলো।অপ্টু হাতের লেখা,কিন্তু অনুভুতিটা ষোল আনা খাঁটি।
অন্য সব দিনগুলোর মতনই ছিলো।নিজের নিয়মে চরে বেড়ানো নির্মল সকাল,কাঠফাঁটা রৌদ্রের দুপুর,দক্ষিনা বাতাসে ভরপুর হেলে ওঠা সূর্যের বিকেল।কিন্তু কিছুই আমার মনকে স্পর্শ করছিলো না।ঘুর্ণাক্ষরেও টের পাইনি,ওইদিনটি আমার জন্যে এক অন্যরকম দিন।
এ বছরের শুরুর দিকের ঘটনা।প্রচন্ড মানসিক অশান্তিতে ঘুরে বেরাচ্ছি।কোঙ্কিছুতেই থই খুঁজে পাচ্ছিনা।কাউকে বলার নেই,বুঝানোর নেই,শুধু স্বস্তি খুঁজে বেড়ানো।এর জন্যে যা অনাবশ্যক ছিলো তার সবটাই পূর্ণ করে ফেলেছি।শুধু আবশ্যকটাই খাতার শেষ পৃষ্ঠার মতো রয়ে গেছিলো।