স্মৃতির ফুলে বৃষ্টি ছুঁলে পরে, আমার ঘরে গন্ধ টলোমলো-২
অনাকাঙ্খিত বিলম্বের জন্য কান ধরে উঠবস করছি- এক, দুই, তিন, চার...
আমার ক,খ শেখা সোবহান স্যারের কাছে। ভদ্রলোক কোন স্কুল কলেজের শিক্ষক ছিলেন না, শুধু টিউশানি করাতেন। তিনি প্রতিদিন সন্ধ্যায় বাসায় এসে পড়িয়ে যেতেন, পড়তাম আমি আর তন্দ্রা।সোবহান স্যারের কাছে পড়াকালীন কোন স্মৃতি আমার ভয়াবহ দূর্বল মস্তিষ্কে এখন আর বিশেষ কিছু নেই, শুধু মনে আছে একবার আমার আর তন্দ্রার ভেতর এবিসিডি, কখগঘ এইসব লেখা নিয়ে একটা প্রতিযোগীতার মতো হয়েছিল। তাতে কী একটা পুরুষ্কারের ব্যাবস্থাও ছিল। প্রতিযোগীতায় কে জিতেছিল সে কথা না ই লিখলাম...
নার্সারী, কেজি এই সব পিচ্চি ক্লাস ডিঙিয়ে আমাকে সরাসরি ক্লাস ওয়ানে ভর্তি করিয়ে দেওয়া হল।তন্দ্রার ঠ্যালা আরো বেশী, সে ভর্তি হলো ক্লাস টুতে। তন্দ্রা অবশ্য আমার থেকে বছর খানেকের বড় ছিল।
আমার প্রথম স্কুলটির নাম ছিল নওয়াপাড়া পাইলট গার্লস স্কুল।চমকে উঠলেন? চমকানোর দরকার নাই, নাম গার্লস স্কুল হলেও এই স্কুলে ছেলেরা ফাইভ পর্যন্ত পড়তে পারতো। ছেলেদের ব্যাপারে সম্পূর্ণ উদাস থেকে স্কুলের এরকম নাম করণের রহস্য আমার কাছে পরিস্কার না, শ্রদ্ধেয় ড. আজাদ স্কুল কর্তৃপক্ষের এহেন নারীবাদে কি মনোভাব পোষণ করতেন কে জানে?
আন্তরিক দুঃখের সাথে জানাচ্ছি "ফার্স্ট ডে ইন" স্কুল এর কথা আমার একটুও মনে নেই, হাজার চেষ্টা করেও মনে করতে পারলাম না, মস্তিষ্ক দূর্বল হওয়ার বহুত জ্বালা...
আমাদের গার্লস স্কুলটি কিন্তু খুব সুন্দর ছিল, ছবির মত সুন্দর উপমাটি স্কুলটির জন্য খুবই উপযোগী।বিশাল একমাঠ ঘাস, লাল ইটের উঁচু পাচিল, মাঝারি ধরণের ইটের বেড়া ঘেরা কাস্ঠল গাছের সারি, লাল টিনের চকচকে ক্লাস বিল্ডিং, চোখ বুজলে মনের পর্দায় পরিষ্কার ভেসে ওঠে এখনো।
ছোট্ট একটা ঘটনা দিয়ে আজকে শেষ করব-
একবার আব্বু আমাকে নীল রঙের একটা চমত্কার পিংপং বল কিনে দিলেন। পরদিন বলটা স্কুলে নিয়ে গেলাম, এসেম্বিলি ক্লাসের সময় বলটা টুপ করে পকেট থেকে পড়ে মাটিতে ড্রপ খেয়ে লাফিয়ে উঠলো। বাশের মতো লম্বা একটা স্যার নির্দয়ের মতো বলটা অনেক দূরে, স্কুল বাউন্ডারিরও ওপারে ইয়া জোরে ছুড়ে মারলো। বল হারানোর শোকে আমি ফত্ করে কেঁদে ফেললাম। এসেম্বিলির পর বাশ স্যার এসে আদর টাদর করে দিয়ে বললো-"আজকে তোদের ক্লাসে সুন্দর সুন্দর গল্প শোনাবো, তোর বল হারানোর জরিমানা ।" আমার ভারি রাগ লাগলো, এতো সুন্দর বল হারানোর দুঃখ কি গল্প শুনে ঘোঁচে? কিন্তু বাশস্যারের ক্লাস শেষ করার পর আমার মনে হলো প্রতিদিন একটা পিং পং বল হারানোর বিনিময়ে যদি এমন দারুন দারুন গল্প শোনা যেত!
চলবে...
এক কথায় চমৎকার লাগলো। আপনার দূর্বল স্মৃতী শক্তিকে সাধুবাদ জানাই। অপ্রোয়জনী জিনিস ফেলে দিয়ে সে প্রোয়জনীয় ঘটনা মনে রাখে।
ধন্যবাদ।
পরের পর্বের অপেক্ষায় থাকলাম।
বেশ ভালো লাগলো।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ
.
.
আপনার স্কুলের নামটা পড়ে
অসম্পূর্ণ মন্তব্য....
তবুও ধইন্যা...
হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খাচ্ছি তাই অসম্পূর্ণ
গড়াগড়ি খাচ্ছেন নো প্রবেলম, কিন্তু জল কাদা হতে সাবধান, বৃষ্টি বাদলার দিন বলে কথা..,
ভালো লাগল।
আপনার ভালো লেগেছে জেনে আমারও ভাল লাগল। ধন্যবাদ।
গার্লস স্কুলে যাওয়ার অভ্যাসটা কি টিকে গেছিল?
না না এভাবে বইলেন না...
লাজটুকু কেড়ে নিলে হবে গো মরণ...
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
বেশ, বেশ
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ
আপনার ভাই কপাল একটা। ক্লাশ ওয়ান থেকেই মেয়েদের সাথে...
আগের পর্বটা পড়েন মেসবাহ ভাই।তাইলে বুঝবেন মেয়ে ভাগ্য ক্লাসওয়ান থেকে না.।

সব তার ইচ্ছা...
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
হিংসিত হইয়েন না ভাই সাহেব, সব বিধির বিধান...
স্যারতো দয়া মায়াওয়ালা ছিলেন দেখা যায়
তা বটে...
মন্তব্য করুন